পুরুষের সুন্নাত মোতাবেক কাফন
পুরুষের জন্য সুন্নাত মোতাবেক কাফন তিনটি। যথা-
(১) লিফাফাহ (চাদর) ,
(২) ইযার (তাহবন্দ) ও
(৩) কামীস (জামা) ।
(১) লিফাফাহ (চাদর) ,
(২) ইযার (তাহবন্দ) ও
(৩) কামীস (জামা) ।
মহিলাদের সুন্নাত মোতাবেক কাফন
মহিলাদের জন্য সুন্নাত মোতাবেক কাফন পাঁচটি। যথা-
(১) লিফাফাহ,
(২) ইযার,
(৩) কামীস,
(৪) সীনাবন্ধ ও
(৫) ওড়না।
(১) লিফাফাহ,
(২) ইযার,
(৩) কামীস,
(৪) সীনাবন্ধ ও
(৫) ওড়না।
কাফনের বিস্তারিত বিবরণ
কাফন-দাফনের নিয়মাবলী |
(২) ইযার অর্থাৎ তাহ্বন্দ: মাথার চুল থেকে পায়ের তালু পর্যন্ত হতে হবে অর্থাৎ লিফাফাহ হতে এতটুকু পরিমাণ ছোট হতে হবে যা বন্ধনের জন্য অতিরিক্ত রাখা হয়েছিল।
(৩) কামীস বা জামা: গর্দান থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত হতে হবে এবং সামনে ও পিছনে উভয়দিকে সমান হতে হবে। এতে কল্লি ও আস্তিন থাকতে পারবে না। পুরুষদের কামীস কাঁধের উপরিভাগে আর মহিলাদের কামীস সীনার দিকে ছিড়তে হবে।
(৪) সীনাবন্ধ: এটা মহিলাদের স্তন থেকে নাভী পর্যন্ত হতে হবে। তবে রান পর্যন্ত হওয়াই উত্তম*। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮১৮ পৃষ্ঠা)
-----------------------------
*সাধারণত প্রস্তুতকৃত কাফন ক্রয় করা হয়, এতে মৃতের দেহ অনুযায়ী সুন্নাত সম্মত সাইজ হওয়া জরুরী নয়। এটাও হতে পারে এত লম্বা হয় যে, অপচয়ের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হযে যায়। তাই সতর্কতা এত রয়েছে; থান থেকে যেন প্রয়োজন অনুযায়ী কাপড় কাটা হয়।
-----------------------------
মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়ার নিয়মাবলী
আগরবাতি বা লোবান বাতির ধোঁয়া দ্বারা তিন বা পাঁচ বা সাতবার গোসলের খাটে ধোঁয়া দিতে হবে অর্থাৎ তিন বা পাঁচ বা সাতবার আগর বা লোবান বাতিকে খাটের চারপাশে ঘুরাতে হবে। অতঃপর মৃত ব্যক্তিকে খাটের উপর এভাবে শোয়াতে হবে যেভাবে কবরে তাকে শোয়ানো হয়। কাপড় দ্বারা নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত সতর ঢেকে রাখতে হবে। (বর্তমানে গোসল দেয়ার সময় সাদা কাপড় দ্বারা মৃত ব্যক্তির সতর এমনভাবে ঢেকে রাখা হয়, যার ফলে পানি ঢালার সাথে সাথেই তার লজ্জাস্থান ভেসে উঠে। তাই খয়েরী বা গাঢ় রঙের কোন মোটা কাপড় দ্বারা তার সতর এমনিভাবে ঢেকে রাখতে হবে, যাতে পানি ঢালার পর তার লজ্জাস্থান ভেসে না উঠে। কাপড় ডাবল করে দিয়েই সতর ঢেকে রাখা উত্তম।) অতঃপর গোসলদানকারী ব্যক্তি নিজ হাতে একটি কাপড় জড়িয়ে প্রথমে তাকে উভয় দিকে ইস্তিন্জা করাবেন (অর্থাৎ পানি দ্বারা তাকে শৌচ কর্ম করাবেন) তারপর নামাযের অযুর মত তাকে অযু করাবেন অর্থাৎ তিনবার মুখমন্ডল, কনুইসহ তিনবার উভয় হাত, অতঃপর মাথা মাসেহ ও তিনবার উভয় পা ধুইয়ে দিবেন। মৃত ব্যক্তিকে অযু করানোর সময় প্রথমে উভয় হাত কবজি পর্যন্ত ধৌত করা, কুলি করানো ও নাকে পানি দেয়া আবশ্যক নয়। তবে কোন কাপড় বা রুইয়ের পুটলি ভিজিয়ে তা দ্বারা দাঁত, মাড়ি ঠোঁট ও নাকের ছিদ্র ইত্যাদি মুছে দেয়া উত্তম। তারপর মৃত ব্যক্তির চুল, দাঁড়ি থাকলে তা ধুইয়ে দিবেন। অতঃপর মৃত ব্যক্তিকে বাম কাতে শোয়ায়ে কুল (বরই) পাতা দিয়ে গরম করা পানি, আর তা পাওয়া না গেলে বিশুদ্ধ মৃদু গরম পানি মাথা থেকে পা পর্যন্ত তার শরীরে উপর এমনিভাবে ঢেলে দিবেন যাতে পানি তক্তা পর্যন্ত পৌছে যায়। অতঃপর তাকে ডান কাতে শোয়ায়ে অনুরূপভাবে পানি ঢেলে দিবেন। তার পর হেলান দিয়ে তাকে বসিয়ে পেটের নিচের অংশের উপর আস্তে আস্তে হাত দ্বারা মালিশ করবেন। পেট হতে কিছু বের হলে তা ধুইয়ে পরিস্কার করে দিবেন। এমতাবস্থায় তাকে পুনরায় অযু ও গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। অতঃপর মাথা থেকে পা পর্যন্ত তার শরীরের উপর তিনবার কাপুরের পানি ঢেলে দিবেন এবং কোন পবিত্র কাপড় দ্বারা তার শরীর আস্তে আস্তে মুছে নিবেন। মৃত ব্যক্তির সমস্ত শরীরে একবার পানি প্রবাহিত করা ফরয আর তিনবার প্রবাহিত করা সুন্নাত। (মৃতের গোসলদানে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত করবেন না। মনে রাখবেন! আখিরাতে এক বিন্দু বিন্দুর হিসাব হবে)
পুরুষকে কাফন পরানোর পদ্ধতি
আগর বা লোবান বাতির ধোঁয়া দ্বারা কাফনকে এক বা তিন বা পাঁচ বা সাতবার ধোঁয়া দিবেন। অতঃপর কাফন এমনভাবে বিছাবেন যে, প্রথমে খাটে লিফাফা অর্থাৎ বড় চাদর, এর উপর ইযার বা তাহবন্দ এবং এর উপর কামীস রাখবেন। অতঃপর মৃত ব্যক্তিকে কাফনের উপর শোয়ায়ে তাকে কামীস পরাবেন। এখন দাঁড়িতে (আর দাঁড়ি না থাকলে চিবুকে) ও সমস্ত শরীরে সুগন্ধি মালিশ করে দিবেন। কপাল, নাক, হাত, হাঁটু ও পা ইত্যাদি অঙ্গ যা দ্বারা সিজদা করা হয় তাতে কাপুর লাগিয়ে দিবেন। অতঃপর তাহবন্দ প্রথমে বাম দিক থেকে তারপর ডান দিক থেকে জড়াবেন। শেষে লিফাফাহ বা চাদরও প্রথমে বাম দিক থেকে তারপর ডান দিক থেকে জড়াবেন মাথা ও পায়ের দিকে বেঁধে দিবেন। যেন ডান দিকের অংশ উপরে থাকে।
মহিলাদেরকে কাফন পরানোর নিয়ম
মহিলাদেরকে কামীস পরিধান করিয়ে তাদের চুলগুলোকে দুইভাগে বিভক্ত করে কামীসের উপর দিয়ে বুকের উপরে রেখে দিবেন। তারপর অর্ধ পিঠের নিচে ওড়না বিছিয়ে তা মাথার উপর দিয়ে এনে মুখের উপর নিকাবের মতো করে দেন, যেন বুকের উপর থাকে। ওড়নার দৈর্ঘ্য হতে হবে অর্ধ পিঠ থেকে বুক পর্যন্ত এবং প্রস্থ হতে হবে এক কানের লতি থেকে অপর কানের লতি পর্যন্ত। কতিপয় লোকেরা মহিলারা জীবদ্দশায় যেভাবে মাথায় ওড়না পরিধান করতো সেভাবেই মহিলাদেরকে ওড়না পরিধান করান। কিন্তু এটা সুন্নাতের পরিপন্থী। অতঃপর পুরুষদের ন্যায় ইযার ও লিফাফাহ জড়াবেন। অবশেষে সবগুলোর উপরে স্তনের উপরিভাগ থেকে রান পর্যন্ত সীনাবন্ধ জড়ায়ে সূতা বা রশি দ্বারা বেধে দিবেন*।)
-----------------------------
*আজকাল মহিলাদের কাফনেও লিফাফাই সবশেষে দেয়া হয়। যদি কাফনের পর সীনাবন্দ রাখা হয় তবুও কোন সমস্যা নেই কিন্তু উত্তম হলো, সীনাবন্দ সবার শেষে দেয়া।
-----------------------------
জানাযার নামাযের পর দাফন*
*(জানাযা উঠানোর পদ্ধতি এবং জানাযা নামাযের পদ্ধতি নামাযের আহকাম থেকে অধ্যয়ন করুন)
(১)জানাযার লাশবাহী খাট কবরের নিকট কিবলার দিকে রাখা মুস্তাহাব যাতে মৃত ব্যক্তিকে কিবলার দিক থেকে কবরে নামানো যায়। কবরের পায়ের দিকে জানাযার খাট রেখে মাথার দিক থেকে মৃত ব্যক্তিকে কবরে নামাবেন না (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮৪৪ পৃষ্ঠা)।
(২) প্রয়োজনানুসারে দুইজন বা তিনজন সবল ও নেককার ব্যক্তি কবরে নেমে লাশ নামাবেন। মহিলার লাশ মুহরিম ব্যক্তিই নামাবেন। মুহরিম না থাকলে অন্যান্য আত্মীয়রা, তারাও না থাকলে কোন পরহেজগার ব্যক্তির মাধ্যমে মহিলার লাশ কবরে নামাবেন (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা)।
(৩) মহিলার লাশ কবরে নামানোর সময় থেকে তক্তা লাগানোর সময় পর্যন্ত কোন কাপড় দ্বারা কবর ঘিরে রাখবেন।
(৪) মৃত ব্যক্তিকে কবরে নামানোর সময় এ দোয়াটি পাঠ করবেন:
بِسْمِ اللهِ وَ بِا للهِ وَعَلٰى مِلَّتِ رَسُوْلِ اللهِ
(তানবিরুল আবছার, ৩য় খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা)
(৫) মৃত ব্যক্তিকে কবরে ডান কাতে রেখে তার মুখ কিবলার দিকে করে দিবেন এবং কাফনের বাঁধনগুলো খুলে দিবেন। কেননা, এখন আর বাঁধনের প্রয়োজন নেই, বাঁধন না খুললেও কোন অসুবিধা নেই। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা)
(৬) কাঁচা ইট* দ্বারা কবরের মুখ বন্ধ করে দিবেন। মাটি নরম হলে কবরের মুখে কাঠের তক্তা ব্যবহার করাও জায়েজ। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮৪৪ পৃষ্ঠা)
-----------------------------
(*কাঁচা ইট কবরের অভ্যন্তরীণ অংশে আগুনে পোড়া ইট লাগানো নিষেধ। কিন্তু অধিকাংশ জায়গায় এখন সিমেন্টের দেওয়াল সমূহ এবং লেপের রেওয়াজ রয়েছে। এজন্য সিমেন্টের দেয়াল এবং সিমেন্টের তকতা সমূহের ঐ অংশ যা ভিতরের দিকে থাকবে তা কাঁচা মাটির কাদা দ্বারা লিপে দিবে। আল্লাহ্ তাআলা মুসলমানদের আগুনের প্রভাব থেকে হিফাযত রাখুক।
اٰمِين بِجا هِ النَّبِىِّ الْاَمين صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم
-----------------------------
(৭) তারপর কবরে মাটি দিবেন এ ক্ষেত্রে মুস্তাহাব হলো, উভয় হাত দ্বারা মাথার দিক থেকে তিনবার মাটি ফেলা। প্রথমবার ** مِنْهَا خَلَقْنٰكُمْ বলবেন, দ্বিতীয় বার **وَفِيْهَا نُعِيْدُكُمْ ও তৃতীয়বার وَمِنهَا ***نُخْرِجُكُمْ تَارَةً اُخْرٰى বলবেন। অবশিষ্ট মাটিগুলো কোদাল ইত্যাদি দ্বারা ফেলবেন। (জওহারা, ১৪১ পৃষ্ঠা)
-----------------------------
(*আমি মটি থেকেই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি) (**আর তাতে তোমাদেরকে প্রতার্বতণ করানো হবে) (***আর এর থেকে তোমাদেরকে পূনরায় বের করা হবে)
-----------------------------
(৮) যতটুকু মাটি কবর থেকে বের করা হয়েছিল, তার চেয়ে অধিক মাটি কবরে ফেলা মাকরূহ। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা)
(৯) কবর উটের কুঁজের ন্যায় ঢালু করবেন। চার কোণা বিশিষ্ট করবেন না। (যেমন বর্তমানে দাফনের কিছুদিন পর অনেকেই ইট ইত্যাদি দ্বারা কবরকে চার কোণা বিশিষ্ট করে থাকে। (রদ্দুল মুখতার, ৩য় খন্ড, ১৬৯ পৃষ্ঠা)
(১০) কবর মাটি থেকে এক বিঘত উচুঁ বা এর চাইতেও সামান্য উচুঁ করবেন। (প্রাগুক্ত, ১৬৮ পৃষ্ঠা)
(১১) দাফনের পর কবরের উপর পানি ছিটিয়ে দেয়া সুন্নাত। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৯ম খন্ড, ৩৭৩ পৃষ্ঠা)
(১২) এছাড়াও কবরে জন্মানো গাছের চারা ইত্যাদিতে পানি দেয়ার উদ্দেশ্যে কবরে পানি ছিটানো জায়েজ।
(১৩) বর্তমানে কতিপয় লোক বিনা প্রয়োজনে কবরে যে পানি ছিটায়, এটা মন্দ ও নাজায়িয, ফতোওয়ায়ে রযবীয়া শরীফ, ৯ম খন্ড, ৩৭৩ পৃষ্ঠার মধ্যে তা অপচয় হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
(১৪) দাফনের পর কবরের শিয়রে الٓـمّٓ থেকে مُفْلِحُوْنَ পর্যন্ত এবং পায়ের দিকে اٰمَنَ الرَّسُوْلُ থেকে সূরার শেষ পর্যন্ত পাঠ করা মুস্তাহাব। (জওহারা, ১৪১ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াতে, ১ম খন্ড, ৮৪৬ পৃষ্ঠা)
(১৫) কবর তালক্বীন করবেন। (তালকীনের নিয়ম পূর্বে বর্ণিত হয়েছে)
(১৬) কবরের শিয়রে দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হয়ে আযান দিবেন। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ১৮৪ পৃষ্ঠা)
(১৭) কবরের উপর ফুল দেয়া উত্তম। কেননা, যতদিন পর্যন্ত এ ফুল তাজা থাকবে, তা তাসবীহ পাঠ করবে। এতে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পাবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৫ম খন্ড, ৩৭০ পৃষ্ঠা)
নির্বোধ শিশুদেরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়াকে হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে
নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “তোমরা মসজিদ সমূহকে শিশু, পাগল, ক্রয়-বিক্রয়, ঝগড়া-বিবাদ, উচ্চ স্বরে কথা বলা, শরীয়াতের শাস্তি কার্যকর করা ও তাওবারী ব্যবহার করা থেকে রক্ষা করো।” (ইবনে মাযাহ, ১ম খন্ড, ৪১৫ পৃষ্ঠা, হাদীস৭৫০)
শিশুর প্রস্রাব ইত্যাদির কারণে মসজিদে অপবিত্র হওয়ার আশঙ্কা থাকলে এরূপ শিশু ও পাগলকে মসজিদে নিয়ে যাওয়া হারাম। আর মসজিদে অপবিত্র হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে তাদরেকে মসজিদে নিয়ে যাওয়া মাকরূহ। যে সমস্ত লোক মসজিদে জুতা নিয়ে যায়, তাদের জুতায় নাজাসাত আছে কিনা তা ভালভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি জুতায় নাজাসাত থাকে, তাহলে তা ভালভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। আর জুতা পরিহিত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করা বেয়াদবী। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৯২ পৃষ্ঠা) শিশু, পাগল, অজ্ঞান ও জ্বিনগ্রস্থ রোগীকে ঝাঁড় ফুঁকের জন্যও মসজিদে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শরীয়াতের অনুমতি নেই, শিশুদেরকে ভালভাবে কাপড়ে জড়িয়েও মসজিদে নেয়া যাবে না। যদি শিশু ইত্যাদিকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার মত ভুল আপনার থেকে সংঘটিত হয়ে থাকে, তাহলে দয়া করে অনতিবিলম্বে তাওবা করে ভবিষ্যতে আর কখনও তাদেরকে মসজিদে না নেয়ার প্রতিজ্ঞা করে নিন।
এ অধ্যায়টি পাঠকালে কারো সাথে মসজিদে তার শিশু সন্তান থাকলে তার প্রতি আমার সন্নিবদ্ধ অনুরোধ, সে যেন তাড়াতাড়ি তার শিশু সন্তানকে মসজিদের বাইরে নিয়ে আসে। তবে হ্যাঁ মসজিদের আঙ্গিনায় শিশুদেরকে নেয়া যাবে, যদি তাদেরকে নিয়ে মসজিদের ভিতর দিয়ে যেতে না হয়।
তাহিয়্যাতুল অযু
অযু করার পর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ শুষ্ক হওয়ার পূর্বে দুই রাকাত নামায আদায় করা মুস্তাহাব। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৫৬৩ পৃষ্ঠা) হযরত সায়্যিদুনা উকবা বিন আমের رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی عَنْہُ থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন: নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি অযু করে এবং ভালভাবে অযু করে জাহের ও বাতেনের সাথে মনোযোগী হয়ে দুই রাকাত (নফল নামায) আদায় করবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।” (সহীহ মুসলিম, ১৪৪ পৃষ্ঠা, হাদীস- ২৩৪) গোসলের পরেও দুই রাকাত নামায মুস্তাহাব। অযু করার পর ফরয ইত্যাদি পড়লে তাহিয়্যাতুল অযুর স্থলাভিষিক্ত হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৫৬৩ পৃষ্ঠা) মাকরূহ সময়ের মধ্যে তাহিয়্যাতুল অযু ও গোসলের পরের দুই রাকাত নামায আদায় যাবেনা।
صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب! صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد
--------
লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত নামায বিষয়ের এনসাইক্লোপিডিয়া ও মাসাইল সম্পর্কিত “নামাযের আহকাম” নামক কিতাবের ৩০৬-৩১৩ নং পৃষ্ঠা হতে সংগৃহীত। কিতাবটি নিজে কিনুন, অন্যকে উপহার দিন।
যারা মোবাইলে (পিডিএফ) কিতাবটি পড়তে চান তারা ফ্রি ডাউনলোড করুন অথবা প্লে স্টোর থেকে এই কিতাবের অ্যাপ ফ্রি ইন্সটল করুন
বাংলা ইসলামীক বইয়ের লিংক এক সাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন
মাদানী চ্যানেল দেখতে থাকুন