আপডেট
সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপণমুক্ত সাইট। শিখুন-জানুন বিরক্তিছাড়া।
বাংলা ভাষায় অলাভজনক বৃহত্তম ইসলামিক ওয়েবসাইট বানানোর প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী জীবন টিম। আসছে মোবাইল অ্যাপলিকেশন... সাইট www.islamijibon.net
মাসাইল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মাসাইল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কেন ঈদে মিলাদুন্নবী ﷺ পালন করবেন?

 ১২ই রবিউল আওয়াল পবিত্র মিলাদুন্নবী صلى الله عليه وسلم


কুরআনের বাণী-
‘হে রসুল صلى الله عليه وسلم! আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া (ফজল ও রহমত) প্রাপ্ত হয়ে আনন্দ প্রকাশ কর। এটি উত্তম সেই সমুদয় থেকে যা তারা (আমল ও সম্পদ) সঞ্চয় করেছে।’ (সুরা ইউনুস-৫৮)।

অন্য এক আয়াতে বর্ণিত- আমি আপনাকে বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি। ' (সুরা-২১ আল আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭)।
এর দ্বারা বুঝা যায় সবচেয়ে বড় রহমত আমাদের নবী। নবীকে, নবীর নূরকে যেদিন পেয়েছি (প্রথম আয়াত অনুযায়ী) সেদিনটা সবচেয়ে বড় খুশির তথা ঈদের দিন বটে। আল্লাহর নির্দেশ, খুশি প্রকাশ করা।

সন্তান আল্লাহর রহমত, দয়া। সেটা তো শুধু একটি পরিবারের জন্য মাত্র। এই দয়া প্রাপ্তিতে পিতা-মাতা কত খুশি হয়। আর নবী صلى الله عليه وسلم তিনি তো সমগ্র জাহানের রহমত। সেই রহমত প্রাপ্তিতে খুশি হবো না কি নাখোশ হবো?

শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

প্রসঙ্গ: ফয়যানে জুমা (পর্ব-৩)

দুই জুমার মধ্যবর্তী দিন সমূহে নূর

হযরত   সায়্যিদুনা   আবু   সাঈদ   رَضِیَ   اللہُ   تَعَالٰی  عَنۡہُ   থেকে বর্ণিত;  নবী করীম, রউফুর রহীম,  রাসূলে   আমীন  صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی   عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم ইরশাদ     করেন:  “যে    ব্যক্তি   জুমার  দিন  ‘সুরা কাহাফ’  পাঠ  করবে,  দুই  জুমার  মধ্যবর্তী  দিন  সমূহ তার  জন্য নূর
দ্বারা আলোকিত থাকবে।” (আস সুনানুল  কুবরা লিল বায়হাকী, ৩য়  খন্ড,  ৩৫৩ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৫৯৯৬) 

ফয়যানে জুমা: জুমার নামাযের ফযিলত ও মাসাইল
কা’বা পর্যন্ত নূর

অপর  বর্ণনায়   রয়েছে;“যে  ব্যক্তি  জুমার  রাতে  (অর্থাৎ   বৃহস্পতিবার   ও    শুক্রবারের     মধ্যবর্তী  রাতে) ‘সুরাতুল কাহাফ’ পাঠ করবে, তার জন্য সেখান   থেকে   কা’বা   শরীফ     পর্যন্ত     নূর    দ্বারা আলোকিত  হবে।”  (সুনানে  দারমী,  ২য়  খন্ড,  ৫৪৬ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৪০৭) 


প্রসঙ্গ: ফয়যানে জুমা (পর্ব-২)

প্রত্যেক     জুমার      দিন      ১      কোটি      ৪৪      লক্ষ  জাহান্নামীদের মুক্তি

সুলতানে  মদীনা  صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  ইরশাদ  করেন:  “জুমার  দিনের    রাত-দিন  ২৪ ঘন্টার মধ্যে এমন   কোন  ঘন্টা  নেই, যার মধ্যে প্রতিনিয়ত  ৬ লক্ষ দোযখীকে  মুক্তি দেয়া হচ্ছে  না,    যাদের     উপর    জাহান্নাম     ওয়াজীব      হয়ে  গেছে।”    (মুসনাদে      আবু    ইয়ালা,    ৩য়    খন্ড, ২৯১, ২৩৫ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৪২১, ৩৪৭১) 

কবরের আযাব থেকে মুক্ত

প্রিয়  আক্বা,  মক্কী  মাদানী  মুস্তফা,  হুযুর   পুরনূর  صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم   ইরশাদ    করেন:  “যে   ব্যক্তি    জুমার   দিন    কিংবা    জুমার      রাতে মৃত্যুবরণ করবে, সে কবরের আযাব থেকে মুক্তি পাবে    এবং    কিয়ামতের    দিন    সে    এমনভাবে  উঠবে      যে,      তার      উপর      শহীদদের      মোহর  থাকবে।”    (হিলআতুল    আউলিয়া,    ৩য়    খন্ড,  ১৮১ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৬২৯) 


প্রসঙ্গ: ফয়যানে জুমা (পর্ব-১)

জুমার দিন দরূদ শরীফ পাঠের ফযীলত

নবীদের         সুলতান,         রহমতে         আলামিয়ান,  সরদারে   দো-জাহান,  মাহবুবে   রহমানصَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি আমার   উপর   জুমার   দিন    দুইশত    বার    দরূদ শরীফ পাঠ   করবে, তার  দুইশত বছরের গুনাহ্ মাফ   হয়ে    যাবে।”  (জমউল   জাওয়ামেয়  লিস সুয়ূতী, ৭ম   খন্ড, ১৯৯ পৃষ্ঠা, হাদীস-২২৩৫৩) 

صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                     صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

প্রিয়      ইসলামী     ভাইয়েরা!    আমরা     কতই    না সৌভাগ্যবান   যে,    আল্লাহ্   তাআলা     তাঁর   প্রিয় হাবীব    صَلَّی    اللّٰہُ    تَعَالٰی    عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ    وَسَلَّم    এর  ওসিলায়         আমাদেরকে         বরকতময়        জুমার  নিয়ামত      দ্বারা      ধন্য      করেছেন।     আফসোস! আমরা অকৃতজ্ঞরা অন্যান্য দিনের মতো জুমার  দিনটিকেও  অলসতার  মধ্যে  অতিবাহিত  করি।  অথচ  জুমার দিন ঈদের দিন, জুমার দিন সকল দিনের সরদার, জুমার দিনে জাহান্নামের আগুন প্রজ্বলিত করা  হয় না, জুমার রাতে জাহান্নামের দরজা  খোলা হয়  না, জুমাকে কিয়ামতের   দিন নববধূর     মতো     উঠানো     হবে,     জুমার     দিনে  মৃত্যুবরণকারী   সৌভাগ্যবান মুসলমান শহীদের  মর্যাদা  লাভ  করে  এবং  কবরের  আযাব  থেকে   নিরাপদ  হয়ে যায়। প্রসিদ্ধ মুফাসসির, হাকীমুল উম্মত     হযরত   আল্লামা   মুফতী   আহমদ   ইয়ার খাঁন       رَحْمَۃُ        اللّٰہِ      تَعَالٰی       عَلَیْہِ      এর      বর্ণনা অনুসারে;“জুমার দিন হজ্ব হলে সেটার সাওয়াব সত্তরটি  হজ্জের  সাওয়াবের   সমপরিমাণ    হবে।  জুমার    দিনের    একেকটি   সৎকাজের   সাওয়াব সত্তরগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। (যেহেতু জুমার দিনের মর্যাদা অনেক বেশি, তাই) জুমার দিনে গুনাহের শাস্তিও   সত্তর গুণ   পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। (মীরআত, ২য় খন্ড, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬ পৃষ্ঠা) 

মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৭

নামাযের প্রায় ৯৬টি সুন্নাত

তাকবীরে তাহরীমার সুন্নাত সমূহ


(১) তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো,
(২) এ  সময়  হাতের  আঙ্গুলগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা। (অর্থাৎ না একেবারে মিলিয়ে রাখবেন, না ফাক   রাখবেন)   
(৩)  উভয়   হাতের   তালু  ও আঙ্গুলগুলোর   পেট   কিবলামূখী   রাখা।   
(৪)  তাকবীরের সময় মাথা না ঝুঁকানো,
(৫) তাকবীর শুরু করার পূর্বেই উভয় হাতকে কান পর্যন্ত উঠিয়ে নেয়া,
(৬)  কুনূতের তাকবীর ও 
(৭) দুই  ঈদের তাকবীর  গুলোতেও   এগুলো   সুন্নাত।  (দুররে  মুখতার, রদ্দুল মুহতার,  ২য় খন্ড,    ২০৮ পৃষ্ঠা) ইমামের উচ্চস্বরে اَللهُ اَكْبَرُ বলা,
(৯) سَمِـعَ  اللهُ لِمَنْ حَمِدَه এবং 
(১০) সালাম বলা  (প্রয়োজনের অতিরিক্ত আওয়াজকে উঁচু করা মাকরূহ)  (রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড,  ২০৮ পৃষ্ঠা)
(১১) তাকবীরের পরপরই হাত   বেঁধে  ফেলা  সুন্নাত। (অনেকেই তাকবীরে উলার  পর  হাত ঝুলিয়ে   দেয় অথবা কনুই  ঝুলিয়ে দেয় অথবা কনুই  দু’টি পিছনের   দিকে একবার ঝাঁকি  দিয়ে  তারপর হাত বাঁধে।  তাদের এ কাজ   সুন্নাতের  পরিপন্থী) ।   (দুররে মুখতার, রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ২২৯ পৃষ্ঠা) 

শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭

কুরবানীর চামড়া সংগ্রহকারীর জন্য ২২ টি নিয়্যত এবং সতর্কতা

নবী করীম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দু’টি বাণী:

(১) “মুসলমানের নিয়্যত তার আমল থেকে উত্তম।”(মুজাম কবীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৮৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৫৯৪২)

(২) “ভাল নিয়্যত বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেয়।”(আল ফিরদাউছ বিমাছুরিল খাত্তাব, ৪র্থ খন্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৬৮৯৫)
কুরবানীর চামড়া সংগ্রহ
দু’টি মাদানী ফুল: 
 ভাল নিয়্যত ছাড়া কোন ভাল কাজের সাওয়াব অর্জিত হয়না।
 ভাল নিয়্যত যত বেশি, সাওয়াবও তত বেশি।

পশুর এমন ২২টি অংশ, যা খাওয়া যায়না

“ফয়যানে সুন্নাত” ১ম খন্ডের ৪০৫-৪০৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে: আমার আক্বা আ‘লা হযরত, ইমামে আহমদ রযা খাঁন رحمة الله عليه বলেন: হালাল পশুর সব অংশই হালাল কিন্তু কিছু অংশ আছে যা খাওয়া হারাম, নিষিদ্ধ অথবা মাকরূহ। যেমন: (১) রগের রক্ত (২) পিত্ত (৩) মূত্রথলি (৪, ৫) পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গ (৬) অন্ডকোষ (৭) জোড়া, শরীরের গাঁট (৮) হারাম মজ্জা (৯) ঘাড়ের দো পাট্টা, যা কাঁধ পর্যন্ত টানা থাকে (১০) কলিজার রক্ত (১১) তিলির রক্ত (১২) মাংসের রক্ত, যা যবেহ করার পর মাংস থেকে বের হয় (১৩) হৃদপিন্ডের রক্ত (১৪) পিত্ত অর্থাৎ ঐ হলদে পানি যা পিত্তের মধ্যে থাকে (১৫) নাকের আর্দ্রতা (ভেড়া-ভেড়ীর মধ্যে অধিক হারে থাকে) (১৬) পায়খানার রাস্তা (১৭) পাকস্থলি (১৮) নাড়িভূড়ি (১৯) বীর্য (২০) ঐ বীর্য, যা রক্ত হয়ে গেছে (২১) ঐ বীর্য, যা মাংসের টুকরো হয়ে গেছে (২২) ঐ বীর্য, যা পূর্ণ জানোয়ার হয়ে গেছে এবং মৃত অবস্থায় বের হয়েছে অথবা জবেহ করা ছাড়া মারা গেছে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২০তম খন্ড, ২৪০-২৪১ পৃষ্ঠা)

>>Donate Us<< ⬅ Click For More...



বিবেকবান কসাইরা এসব হারাম বস্তু বের করে ফেলে দিয়ে থাকে কিন্তু অনেকের তা জানা থাকে না কিংবা অসাবধানতাবশতঃ এরকম করে থাকে। তাই আজকাল প্রায় অজ্ঞাতবশতঃ যেসব জিনিস তরকারীর সাথে রান্না করা হয়, সেগুলোর পরিচয় প্রদানের চেষ্টা করছি।

রক্ত

জবাই করার সময় যে রক্ত বের হয় সেটাকে “দমে মাসফূহ” (প্রবাহিত রক্ত) বলা হয়। তা অপবিত্র, খাওয়া হারাম, জবাই করার পর যে রক্ত মাংসের মধ্যে থেকে যায়, যেমন- ঘাড়ের কাটা অংশে, হৃদপিন্ডের ভিতর, কলিজা, প্লীহা ও মাংসের আভ্যন্তরিণ ছোট ছোট রগের মধ্যে, এসব যদিও নাপাক নয় তবুও এসব রক্ত খাওয়া নিষিদ্ধ। তাই রান্না করার পূর্বে এগুলো পরিস্কার করে নিন। মাংসের মধ্যে কিছু জায়গায় ছোট ছোট রগে রক্ত থাকে তা চোখে পড়া খুবই কঠিন। রান্নার পর ঐ রগগুলো কালো রেখার ন্যায় হয়ে যায়। বিশেষতঃ মগজ, মাথা, পা ও মুরগীর রান ও ডানার মাংস ইত্যাদির মধ্যে হালকা কালো রেখা দেখা যায়, খাওয়ার সময় তা বের করে ফেলে দিন। মুরগীর হৃদপিন্ডও সরাসরি রান্না করবেন না, লম্বাতে চার ভাগ করে কেটে ফাঁক করে প্রথমে সেটার রক্ত ভালভাবে পরিস্কার করে নিন।

কসাইদের জন্য ২০টি মাদানী ফুল (করণীয়)

(১) প্রথমে কোন অভিজ্ঞ মাংস বিক্রেতার তত্ত্বাবধানে জবেহ ইত্যাদির কাজ শিখে নিবে, কেননা অনভিজ্ঞের জন্য এ কাজ জায়েয নেই। এ কারণে কারো পশুর মাংস এবং চামড়া ইত্যাদিকে প্রচলিত নিয়ম থেকে সরে গিয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(২) অভিজ্ঞ কসাইরও উচিত, তাড়াহুড়া করতে গিয়ে অসাবধানতাবশতঃ চামড়ার সাথে প্রচলিত নিয়মের চেয়ে বেশি মাংস লেগে থাকতে না দেয়া। এভাবে নাড়িভূড়ি বের করার সময়েও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী, যেন অযথা মাংস ও চর্বি এর সাথে চলে না যায়। এমনকি খাওয়ার উপযুক্ত হাঁড়গুলোও ফেলে না দিয়ে টুকরো টুকরো করে মাংসের সাথে ঢেলে দিন এবং অভিজ্ঞ মাংস বিক্রেতারও নিয়ম বহির্ভূত মাংস ও চামড়ার ক্ষতি করা জায়েয নেই।

কুরবানীর মাংস বন্টন করার বিস্তারিত জেনে নিন

কুরবানীতে আকীকার অংশ

কুরবানীর গরু বা উটে আকীকার অংশ হতে পারে। (রদ্দুল মুহতার, ৯ম খন্ড, ৫৪০ পৃষ্ঠা)


সম্মিলিত কুরবানীর মাংস ওজন করে বন্টন করতে হবে

একাধিক ব্যক্তি মিলে গরু দিয়ে কুরবানী করলে মাংস ওজন দিয়ে বন্টন করা আবশ্যক। অনুমান করে মাংস বন্টন করা জায়েয নেই, এরকম করলে গুনাহগার হবে। বেশি বা কম হলে সন্তুষ্টচিত্তে একে অপরকে ক্ষমা করে দেওয়াও যথেষ্ট নয়। (বাহারে শরীয়াত থেকে সংক্ষেপিত, ৩য় খন্ড, ৩৩৫ পৃষ্ঠা) তবে যদি অংশীদার সকলেই একই ঘরে বসবাস করে, মিলে-মিশে বন্টন করে এবং এক সাথে খায় অথবা অংশীদাররা নিজেদের অংশের মাংস নিতে না চায়, এমতাবস্থায় ওজন করে ভাগ করার প্রয়োজন নেই।

অনুমানের ভিত্তিতে মাংস বন্টনের দু’টি কৌশল

যদি অংশীদাররা নিজেদের অংশের মাংস নিয়ে যেতে চায়, তাহলে ওজন করার ঝামেলা ও পরিশ্রম থেকে বাঁচতে চাইলে নিম্নলিখিত দুটি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন।
১) জবেহ করার পর ঐ গরুর সম্পূর্ণ মাংস এমন একজন বালেগ মুসলমানকে দান করে মালিক বানিয়ে দিবে, যে তাদের সাথে কুরবানীতে অংশীদার নয়। এখন সে অনুমান করে সবাইকে মাংস বন্টন করে দিতে পারবে।

বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭

কুরবানীর পদ্ধতি

(কুরবানী হোক কিংবা এমনি অন্য কোন জবেহ হোক)
আমাদের দেশে এই নিয়মটা চলে আসছে যে, জবেহকারী কিবলামূখী হয় এবং পশুকেও কিবলামূখী করা হয়। কিবলা যেহেতু আমাদের পাক ভারত উপমহাদেশের (WEST) পশ্চিম দিকে, সেহেতু পশুর মাথা (SOUTH) দক্ষিণমুখী করতে হবে। যাতে পশুকে বাম পাজরে শোয়ালে এটির পিঠ (EAST) পূর্ব দিকে হয় এবং তার মুখমন্ডল কিবলামুখী হয়ে যায়। আর জবেহকারী নিজের ডান পা পশুর গর্দানের ডান অংশের (গর্দানের নিকটবর্তী অংশের) উপর রাখবে এবং জবেহ করবে। জবেহকারী নিজের কিংবা পশুর মুখমন্ডল কিবলামূখী না করলে মাকরূহ হবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২০তম খন্ড, ২১৬ ও ২১৭ পৃষ্ঠা)
কুরবানীর পদ্ধতি ও দোআ

কুরবানীর পশু জবেহ করার পূর্বে নিম্নলিখিত দোয়া পাঠ করবেন

إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيفًا ۖ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ
{কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: আমি আমার মুখমন্ডল তাঁর দিকে ফিরালাম একমাত্র তাঁরই জন্যে, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। একমাত্র তাঁরই হয়ে এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভূক্ত নই। (পারা-৮, সূরা- আনআম, আয়াত- ৭৯)}

ঘোড়ার আরোহী (কুরবানীর পূর্ণাঙ্গ মাসআলা মাসাইল)

হযরত সায়্যিদুনা আহমদ বিন ইছহাক رحمة الله عليه বলেন : আমার ভাই দরিদ্র হওয়া সত্বেও আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যতে প্রতি বছর কুরবানীর ঈদে কুরবানী করতেন। তাঁর ইন্তিকালের পর আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, কিয়ামত সংগঠিত হয়ে গেছে আর মানুষ তাদের নিজ নিজ কবর থেকে বের হয়েছে হঠাৎ আমার মরহুম ভাইকে একটি সুন্দর বিচিত্র বর্ণের ঘোড়ায় আরোহী অবস্থায় দেখলাম। তাঁর সাথে আরো অনেক ঘোড়া ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম : ‘হে আমার ভাই আল্লাহ্ তাআলা আপনার সাথে কি ধরনের আচরণ করেছেন? তিনি বললেন : ‘আল্লাহ্ তাআলা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’ (জিজ্ঞাসা করলাম) “কোন আমলের কারণে?” উত্তরে বললেন: “একদিন কোন এক গরীব বৃদ্ধা মহিলাকে সাওয়াবের নিয়্যতে আমি একটি দিরহাম দান করেছিলাম, ঐ দানই কাজে এসেছে।” আমি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম: “এগুলো কিভাবে পেলেন?” উত্তরে বললেন: “এই সব ঘোড়া আমার কুরবানীর ঈদের (আমার দেওয়া) কুরবানীর পশু এবং যেই ঘোড়ায় আমি আরোহণ করেছি তা আমার জীবনের প্রথম কুরবানী।” আমি জিজ্ঞাসা করলাম: “এখন কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন?” তিনি উত্তরে বললেন: “জান্নাতের উদ্দেশ্যে”। এই কথা বলে তিনি আমার দৃষ্টি থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। (দুররাতুন নাছেহীন, ২৯০ পৃষ্ঠা) 
আল্লাহ্ তাআলার রহমত তারঁ উপর বর্ষিত হোক এবং তাঁর সদকায় আমাদের বিনা হিসাবে ক্ষমা হোক। 

صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد

প্রিয় নবীর ﷺ চারটি বাণী

(১) “কুরবানী দাতার কুরবানীর পশুর প্রত্যেকটি লোমের পরিবর্তে একটি করে নেকী অর্জিত হয়।” (তিরমিযি, ৩য় খন্ড, ১৬২ পৃষ্ঠা, হাদীস- ১৪৯৮)

শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০১৭

অযু ও বিজ্ঞান (পর্ব-৭)

অযুর রহস্য শুনার কারণে ইসলাম গ্রহণ

এক  ব্যক্তির  বর্ণনা:  “আমি  বেলজিয়ামে  কোন  এক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অমুসলিম শিক্ষার্থীকে ইসলামের     দাওয়াত দিলাম।       সে       জিজ্ঞাসা করলো:   “অযুর মধ্যে   কি কি বৈজ্ঞানিক রহস্য  আছে?” আমি নির্বাক হয়ে যাই। তাকে একজন আলিমের নিকট নিয়ে গেলাম কিন্তু তাঁর কাছেও এর  কোন জ্ঞান  ছিল  না।  অবশেষে  বিজ্ঞানের  জ্ঞান    রাখেন    এমন এক   ব্যক্তি    তাকে   অযুর যথেষ্ট সৌন্দর্য বর্ণনা করলো কিন্তু গর্দান মাসেহ করার     রহস্য   বর্ণনা   করতে    তিনিও অপারগ হলেন।  এরপর  সে  অমুসলীম  (বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী) চলে যায়। কিছু  দিন পর  এসে বলল, “আমাদের      প্রফেসর লেকচারের মাঝখানে  বলেছেন, “যদি  গর্দানের পৃষ্ঠদেশে  ও  দু’পার্শ্বে  দৈনিক কয়েক ফোটা  পানি  লাগিয়ে    দেয়া হয়  তাহলে    মেরুদন্ডের    হাড়  ও দূষিত     মজ্জার  সংক্রমণ  থেকে সৃষ্ট ব্যাধি সমূহ  থেকে  নিরাপদ থাকা যায়।”    এটা     শুনে অযুর    মধ্যে    গর্দান মাসেহ্   করার   রহস্য  আমার  বুঝে  এসে   যায়। অতএব  আমি মুসলমান  হতে  চাই    এবং  শেষ পর্যন্ত বাস্তবেই সে মুসলমান হয়ে গেলো।

صَلُّوْا عَلَی  الْحَبِیْب!          صَلَّی اللهُ  تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

পশ্চিম জার্মানীর সেমিনার

শুক্রবার, ৭ জুলাই, ২০১৭

অযু গোসলে পানির অপচয় (পর্ব-৬)

অযুতে পানির অপচয়



আজকাল    অযু    করার   সময়   অধিকাংশ   লোক বিনা প্রয়োজনে পানির নল ছেড়ে দিয়ে নির্বিঘ্নে পানি প্রবাহিত  করতে থাকে।  এমন   কি   কেউ কেউ  অযুখানাতে  আসার  সাথে  সাথেই  প্রথমে  পানির নল খুলে  দিয়ে    তারপর জামার   আস্তিন গুটাতে    থাকে।  ফলে   দীর্ঘক্ষণ  আল্লাহ্র  পানাহ! পানির    অপচয় হতে     থাকে।     অনুরূপ      মাথা মাসেহ   করার      সময়ও অনেকেই   পানির    নল খোলা       রেখে     মাথা মাসেহ     করতে     থাকে। আমাদের  সকলকে আল্লাহ্কে ভয়  করে পানির অপচয়  থেকে    বিরত থাকা উচিত। কিয়ামতের দিন প্রতিটি অণূ ও বিন্দুরই হিসাব নিকাশ হবে। অপচয়ের    নিন্দায় বর্ণিত     চারটি হাদীস   শ্রবণ করুন এবং আল্লাহর ভয়ে কেঁপে উঠুন।
অযু-গোসলে পানির অপচয়

(১) প্রবাহিত নদীতেও পানির অপচয়

একদা  আল্লাহর প্রিয়  রাসূল, রাসূলে মকবুল, মা আমেনার বাগানের সুরভিত ফুল, হুযুর صَلَّی   اللهُ  تَعَالٰی عَلَیۡہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم হযরত সায়্যিদুনা সা’দ رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی  عَنۡہُ  এর  নিকট  গমন  করলেন, তখন   তিনি অযু করছিলেন।   অযুতে   পানির অপচয়   হতে  দেখে  রাসূলুল্লাহ্ صَلَّی اللهُ تَعَالٰی  عَلَیۡہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তাকে ইরশাদ করলেন: “পানির অপচয় করছ কেন?” উত্তরে     তিনি    বললেন:    অযুতেও     কি    পানির  অপচয়  আছে? রাসূলুল্লাহ্  صَلَّی   اللهُ   تَعَالٰی  عَلَیۡہِ   وَاٰلِہٖ وَسَلَّم   ইরশাদ করলেন:  “হ্যাঁ  আছে।  এমন   কি তুমি প্রবাহিত  নদীতে   অযু করলেও।” (সুনানে  ইবনে  মাযাহ,    ১ম  খন্ড,   ২৫৪   পৃষ্ঠা,  হাদীস-  ৪২৫)

মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০১৭

অযু সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ মাসাইল (পর্ব-৫)

অযুর মধ্যে সন্দেহ আসার ৫টি বিধান

❁ অযুকালীন সময়ে যদি কোন অঙ্গ ধৌত করা না   করার ক্ষেত্রে সন্দেহ  জাগে এবং   এ সন্দেহ জীবনে প্রথম বারের মত ঘটে থাকে, তাহলে সে অঙ্গ ধুয়ে নিন।  আর   যদি  এরূপ  সন্দেহ প্রায়ই ঘটে থাকে, তাহলে তার প্রতি  ভ্রুক্ষেপ করবেন  না।  অনুরূপ অযুর পরেও  যদি কোন অঙ্গ ধৌত করা  না   করার ক্ষেত্রে   সন্দেহ   সৃষ্টি   হয়,  তার প্রতি কোন দৃষ্টি দিবেন   না।   (বাহারে শরীয়াত, ১ম    খন্ড,  ৩১০    পৃষ্ঠা) 
❁আপনি  অযু  অবস্থায় ছিলেন,    কিন্তু এখন   আপনার অযু আছে কিনা, তাতে          আপনার          সন্দেহ সৃষ্টি            হলো। এমতাবস্থায়ও আপনার অযু বহাল থাকবে নতুন ভাবে  আপনাকে  অযু করতে   হবে না। কেননা, সন্দেহের    কারণে  অযু  ভঙ্গ  হয়  না।    (বাহারে শরীয়াত, ১ম    খন্ড,  ৩১১    পৃষ্ঠা) 
❁   প্ররোচনার   কারণে  অযু  ভেঙ্গে গেছে মনে করে  পুনরায়  অযু   করা   সাবধানতা অবলম্বন      করা      নয়  বরং      তা      শয়তানেরই  অনুকরণ মাত্র। (বাহারে শরীয়াত, ১ম    খন্ড,  ৩১১    পৃষ্ঠা) 
❁নিশ্চিতভাবে আপনি ততক্ষণ   পর্যন্ত   অযু   অবস্থায়   থাকবেন   যতক্ষণ  পর্যন্ত অযু ভঙ্গ হওয়ার উপর শপথ   করে  বলার মত আপনার প্রবল ধারণা না জন্মে।
❁আপনার স্মরণ   আছে  যে,  আপনার  একটি  অঙ্গ   অধৌত রয়ে  গেছে।    তবে  কোন      অঙ্গটি  অধৌত রয়ে গেছে  তা আপনি  নিশ্চিতভাবে   বলতে পারছেন না,   এমতাবস্থায়   আপনি   বাম   পা     ধুয়ে   নিন। (দুররে মুখতার, ১ম খন্ড, ৩১০ পৃষ্ঠা) 
অযুর মাসাইল

তন্দ্রা দ্বারা অযু ভঙ্গ হওয়া ও না হওয়ার বর্ণনা

তন্দ্রা   দ্বারা   অযু   ভঙ্গ   হওয়ার   দু’টি   শর্ত:   
(১)  তন্দ্রার সময় উভয় নিতম্ব    ভালভাবে সংযুক্ত না থাকা।   
(২)     অচেতন   অবস্থায়     তন্দ্রার    ক্ষেত্রে কোন   প্রতিবন্ধকতা  না  হওয়া।   দুটি    শর্ত  এক সাথে পাওয়া গেলে অর্থাৎ    তন্দ্রার সময়    উভয় নিতম্ব     ভালভাবে     সংযুক্ত     না     থাকলে     এবং  অচেতন   অবস্থায় তন্দ্রার   দ্বারা   অযু   ভঙ্গ   হয়ে  যাবে।   আর   একটি    শর্ত   পাওয়া     গেলে   এবং অপরটি  পাওয়া  না  গেলে তন্দ্রা  দ্বারা  অযু  ভঙ্গ  হবে না।

সোমবার, ১২ জুন, ২০১৭

অযু: অযু ভঙ্গ হওয়া ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন মাসাইল- (পর্ব ৪)

ক্ষত    ইত্যাদি   থেকে     রক্ত     বের   হওয়ার    ৫টি হুকুম



❁    রক্ত,  পুঁজ   বা  হলুদ    রঙের  পানি   শরীরের কোন স্থান থেকে বের হয়ে এমন স্থানে গড়িয়ে পড়ল বা গড়িয়ে পড়ার শক্তি ছিলো যা ধৌত করা অযু বা গোসলের মধ্যে ফরয। তাহলে অযু ভঙ্গ  হয়ে  যাবে। (বাহারে   শরীয়াত,   ১ম  খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা) 
❁  রক্ত যদি দেখা  যায় বা বের হয় কিন্তু গড়িয়ে পড়েনি,  যেমন- সূঁচের   মাথা   বা ছুরির     ধারালো     প্রান্ত  ইত্যাদি      বিদ্ধ    হওয়ার কারণে  রক্ত  বের  হয়  বা    দেখা গেলো    অথবা দাঁত খিলাল  করলো  বা   মিসওয়াক  করলো  বা আঙ্গুল   দ্বারা   দাঁত   মাজলো     অথবা   দাঁত দ্বারা কোন   জিনিস   যেমন-আপেল   ইত্যাদি কামড়  দিলো    এবং   এতে    রক্তের   চিহ্ন   দেখা   গেলো অথবা নাকের ছিদ্রে  আঙ্গুল প্রবেশ  করাল  এবং এতে রক্তের  লালচে   রং  দেখা গেলো  কিন্তু তা  প্রবাহিত হওয়ার মত ছিলো না তাহলে অযু ভঙ্গ হবে না।   (বাহারে   শরীয়াত,   ১ম  খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা)  
❁    যদি   রক্ত    বের   হয়ে প্রবাহিত হয় কিন্তু  প্রবাহিত  হয়ে এমন স্থানে না পৌঁছে  যা  ধৌত  করা  অযু  বা গোসলের  মধ্যে  ফরয, যেমন-চোখে   দানা  ছিলো তা ফেঁটে বের না হয়ে ভিতরেই রয়ে  গেলো।   অথবা  রক্ত  বা   পুঁজ বের না হয়ে কানের ভিতরেই   রয়ে গেলো অযু      ভঙ্গ    হবে     না।   (প্রাগুক্ত,   ২৭   পৃষ্ঠা)   
❁ ক্ষতস্থান খুবই বড়  এবং এতে  আর্দ্রতাও  দেখা যাচ্ছে, কিন্তু আর্দ্রতা যতক্ষণ পর্যন্ত প্রবাহিত হবে না   অযু   ভঙ্গ   হবে   না।  (বাহারে   শরীয়াত,   ১ম  খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা)

রবিবার, ১১ জুন, ২০১৭

অযুর ফরয, সুন্নাত, মুস্তাহাব, মাকরূহ ও অন্যান্য- (পর্ব-৩)

অযুর ফরয ৪টি 

❁ মুখমন্ডল  ধৌত  করা।                                                        
❁  কনুই সহ দু’হাত ধৌত   করা।  
❁    মাথার   এক  চতুর্থাংশ  মাসেহ্ করা।    
 ❁    টাখনু সহ    দুই    পা    ধৌত    করা। (ফতোওয়ায়ে     আলমগিরী,  ১ম খন্ড, ৩, ৪, ৫ পৃষ্ঠা।   বাহারে  শরীয়াত,  ১ম খন্ড, ২৮৮ পৃষ্ঠা)
অযুর ফরয, সুন্নাত, মুস্তাহাব, মাকরূহ

ধৌত করার সংজ্ঞা


কোন অঙ্গকে ধৌত করার অর্থ হচ্ছে, ঐ অঙ্গের প্রতিটি অংশে কমপক্ষে  দু ফোঁটা পানি প্রবাহিত করা। শুধুমাত্র  ভিজে  যাওয়া, পানিকে    তেলের মত     মালিশ    করা     অথবা    এক    ফোঁটা     পানি প্রবাহিত করাকে “ধৌত করা”  বলা   যাবে    না, আর   না   এইভাবে   অযু   গোসল   আদায়   হবে।  (ফতোওয়ায়ে  রযবীয়া  (সংকলিত) ,  ১ম  খন্ড, ২১৮ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত,    ১ম   খন্ড, ২৮৮ পৃষ্ঠা)

অযুর পদ্ধতি ও দোআ (পর্ব-২)

অযুর সময় কা’বা শরীফের  দিকে মুখ করে উঁচু জায়গায় বসা মুস্তাহাব। অযুর জন্য নিয়্যত করা সুন্নাত।  নিয়্যত  না   করলেও    অযু  হয়ে   যাবে,   কিন্তু       সাওয়াব    পাবে    না।    অন্তরের     ইচ্ছাকে “নিয়্যত” বলে।    অন্তরে    নিয়্যত   করার   সাথে সাথে মুখে উচ্চারণ করাও  উত্তম। মুখে এভাবে নিয়্যত করুন যে, আমি আল্লাহ্ তাআলার নির্দেশ পালনার্থে     পবিত্রতা    অর্জন     করার    জন্য    অযু করছি।  بِسْمِ  الله  পড়ে নিন”।      এটাও  সুন্নাত। বরং  بِسْمِ   اللهِ   وَالْحَمْدُ   لِلّٰه  বলে  নিন।  এর  কারণে আপনি  যতক্ষণ   অযু অবস্থায় থাকবেন   ততক্ষণ ফিরিস্তাগণ       আপনার       জন্য       নেকী       লিখতে  থাকবেন।   (আল    মু’জামুস   সগীর  লিত তাবারানী, ১ম খন্ড, ৭৩ পৃষ্ঠা, হাদীস-১৮৬)
এখন   উভয়   হাত   কব্জি    পর্যন্ত   তিনবার    করে  ধৌত    করুন।     (পানির    নল    বন্ধ   করে)   উভয় হাতের আঙ্গুলগুলোও      খিলাল      করে      নিন।  কমপক্ষে     তিনবার    করে   ডানে   বামে,   উপরে নিচে     দাঁতগুলো  “মিসওয়াক   করুন।   প্রত্যেক বারে  মিসওয়াক   ধুয়ে  নিন।  হুজ্জাতুল   ইসলাম ইমাম      মুহাম্মদ     বিন মুহাম্মদ      বিন     মুহাম্মদ গাযালী  رَحۡمَۃُ   اللّٰہ    ِتَعَالٰی   عَلَیہِ     বলেন:   মিসওয়াক করার   সময়   নামাযে   ক্বিরাত পাঠ   ও  আল্লাহর যিকিরের  জন্য  মুখ   পবিত্র  করার   নিয়্যত  করা  উচিত।”   (ইহ্ইয়াউল   উলুম,   ১ম   খন্ড,   ১৮২  পৃষ্ঠা) 

শনিবার, ১০ জুন, ২০১৭

অযু: ফযিলত, পদ্ধতি, দোআ ও মাদানী ফুল- (পর্ব-১)

হযরত    ওসমান      গণি    رَضِیَ    اللّٰہُ    تَعَالٰی    عَنْہُ     এর  নবী-প্রেম

একদা  হযরত  সায়্যিদুনা  ওসমান  গণি  رَضِیَ  اللّٰہُ  تَعَالٰی   عَنْہُ  এক জায়গায়  পৌঁছে অযুর জন্য    পানি চাইলেন       এবং     অযু করলেন     আর     আপনা আপনিই  মুচকি হাসলেন। তারপর  সঙ্গীদেরকে  বললেন:   “আপনারা   কি   জানেন!   আমি   কেন মুচকি হাসলাম?” অতঃপর তিনি নিজেই নিজের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বললেন: “একদা হুযুর পুরনূর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এই জায়গায় অযু  করেছিলেন এবং অযু  শেষ করে তিনি        মুচকি      হেসেছিলেন      এবং      সাহাবায়ে কিরামদের      عَلَیۡہِمُ     الرِّضۡوَان     উদ্দেশ্যে ইরশাদ  করেন:      “তোমরা      কি       জান,      আমি        কেন  হেসেছি?”     তদুত্তরে সাহাবায়ে    কেরাম    عَلَیۡہِمُ  الرِّضۡوَان   আরয     করলেন:   “আল্লাহ্   তাআলা   ও তাঁর রাসূল صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ই এ বিষয়ে ভাল জানেন।”   প্রিয়  মুস্তফা  صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم    ইরশাদ  করেন:  “যখন  মানুষ  অযু     করে তখন      হাত ধোয়ার     সময়        হাতের     গুনাহ্, মুখমন্ডল    ধোয়ার    সময়    মুখমন্ডলের    গুনাহ্,  মাথা মাসেহ্ করার সময় মাথার গুনাহ্, আর পা ধোয়ার   সময়   পায়ের  গুনাহ  সমূহ্   ঝরে  যায়।  (মুসনাদে ইমাম   আহমদ  বিন  হাম্বল, খন্ড ১ম, পৃষ্ঠা ১৩০, হাদীস নং-৪১৫)

صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب! صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০১৭

নামাযের ওয়াজিব সমূহ

ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোনদের নামাযের নিয়মাবলীতে কিছু কাজ হচ্ছে ফরয, যেগুলো ব্যতীত নামাযই হবে না, কতিপয় বিষয় ওয়াজীব, যেগুলো ইচ্ছাকৃত ভাবে বর্জন করা গুনাহ্ এবং এর জন্য তাওবা করে নামাযকে পুনরায় আদায় করে দেয়া ওয়াজীব। আর ভূলবশতঃ ছুটে গেলে “সিজদায়ে সাহু” দেওয়া ওয়াজীব। আর কিছু রয়েছে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, সেগুলো ছেড়ে দেয়ার অভ্যাস করলে গুনাহ্ হয়, আর কতিপয় মুস্তাহাব রয়েছে যেগুলো করলে সাওয়াব, না করলে গুনাহ্ নেই। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় অংশ, ৬৬ পৃষ্ঠা)

(১) তাকবীরে তাহরীমার মধ্যে “أَللهُ اَكْبَرْ” বলা,
(২) ফরয নামাযের ৩য় ও ৪র্থ রাকাত ব্যতীত অবশিষ্ট সকল নামাযের প্রত্যেক রাকাতে ‘আলহামদু’ শরীফ পাঠ করা ও সূরা মিলানো (অর্থাৎ কুরআনে পাকের একটি বড় আয়াত যা ছোট তিন আয়াতের সমান হয় কিংবা তিনটি ছোট আয়াত পাঠ করা।)
(৩) আলহামদু শরীফ সূরার পূর্বে পাঠ করা,
(৪) আলহামদু শরীফ ও সূরার মাঝখানে ‘আমীন’ ও بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ব্যতীত আর কিছু না পড়া,

রবিবার, ২৮ মে, ২০১৭

নামাযের শর্ত ও ফরয সমূহ

ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোনদের নামাযের নিয়মাবলীতে কিছু কাজ হচ্ছে ফরয, যেগুলো ব্যতীত নামাযই হবে না, কতিপয় বিষয় ওয়াজীব, যেগুলো ইচ্ছাকৃত ভাবে বর্জন করা গুনাহ্ এবং এর জন্য তাওবা করে নামাযকে পুনরায় আদায় করে দেয়া ওয়াজীব। আর ভূলবশতঃ ছুটে গেলে “সিজদায়ে সাহু” দেওয়া ওয়াজীব। আর কিছু রয়েছে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, সেগুলো ছেড়ে দেয়ার অভ্যাস করলে গুনাহ্ হয়, আর কতিপয় মুস্তাহাব রয়েছে যেগুলো করলে সাওয়াব, না করলে গুনাহ্ নেই। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় অংশ, ৬৬ পৃষ্ঠা)
(এখানে রয়েছে নামাযের শর্ত  ও নামাযের ফরজ সহ  এগুলোর বিস্তারিত আলোচনা-এডমিন)
নামাযের শর্ত ও ফরজ সমূহ

নামাযের ৬টি শর্ত

১. পবিত্রতা, ২. সতর ঢাকা, ৩. ক্বিবলামূখী হওয়া, ৪. সময়সীমা, ৫. নিয়্যত করা, ৬. তাকবীরে তাহরীমা।
এই ৬টির বিস্তারিত নিচে দেয়া হলো-
(১) পবিত্রতা: নামায আদায়কারীর শরীর, পোষাক ও যে স্থানে নামায আদায় করবে ঐ স্থান যে কোন ধরণের অপবিত্রতা থেকে পবিত্র হওয়া আবশ্যক। ( তাহতাবীর পাদটিকা সম্বলিত মারাকিউল ফালাহ, ২০৭ পৃষ্ঠা)

পোস্ট শ্রেণি

অযু-গোসল-পবিত্রতা (12) আপডেট চলমান (25) আমাদের কথা ও অন্যান্য বিষয়াবলী (6) আমাদের প্রিয় নবী ﷺ (5) আরবি মাস ও ফযীলত (11) ইসলামী ইতিহাস ও শিক্ষনীয় ঘটনা (6) ইসলামী জীবন ও সুন্দর চরিত্র (4) ঈদ-কাযা-জানাযা-তারাবী-নফল ও অন্যান্য নামায (5) উত্তম আমল ও সাওয়াবের কাজ (4) কুরআন-তাফসীর ও হাদিস (16) কুরবানী (6) চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কথন (14) জিকির-দোআ-দুরূদ ও ফযীলত (8) নবী-সাহাবী ও আওলিয়াদের জীবনী (8) নামায (17) পর্দা ও লজ্জাশীলতা (16) ফয়যানে জুমা (3) বদ আমল ও গুনাহের কাজ (3) মওত-কবর-হাশর ও আযাব (12) মাসআলা-মাসাইল ও প্রশ্নোত্তর (15) মাসাইল (21) যাকাত-ফিতরা ও সদক্বাহ'র বিধান (1) রোযা/রমযানের বিধান ও ফযীলত (9) সুন্নাত ও আদব/ মাদানী ফুল (41) হজ্ব-ওমরাহ ও যিয়ারতে মদিনা (27)

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন