কথিত আছে, একবার কোয়েটার নিকটবর্তী এক গ্রামে ‘ক্লিন শেভ’করা এক বেওয়ারিশ যুবকের লাশ পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় কাজকর্ম শেষে লোকজন মিলে লাশটি দাফন করে দিল। ইত্যবসরে মৃতের ওয়ারিশগণ খোঁজ খবর নিয়ে সেখানে এসে পৌঁছল। তারা লোকজনের সামনে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করল যে, তাদের এই প্রিয়জনের লাশটি তাদের গ্রামে নিয়ে গিয়ে সেখানে দাফন করতে চায়। অতএব, কবরের মাটি সরিয়ে ফেলা হল। লাশটির মুখের দিক হতে যখন পাথরের খন্ডটি সরিয়ে ফেলা হল তখন মৃতের অবস্থা দেখে লোকদের মুখ থেকে ভয়ঙ্কর চিৎকার বেরিয়ে আসল। কারণ, এইমাত্র যে যুবকটির লাশ দাফন করা হয়েছে, তার মুখ কাল দাঁড়িতে ছেয়ে গেছে, আর সে দাঁড়ি কালো চুলের নয় বরং তা ছিল কালো কালো বিচ্ছুরই। ভয়ঙ্কর, লোমহর্ষক এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত লোকজন ইস্তেগফার পড়তে থাকে এবং তাড়াতাড়ি কবরটি ঢেকে দিয়ে ভয়ে সকলে পালিয়ে গেল।
মওত-কবর-হাশর ও আযাব লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মওত-কবর-হাশর ও আযাব লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বুধবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৮
কিয়ামতের পরীক্ষা
মাদানী মুন্নার ভয়
অর্ধরাতে একটি ছোট্ট মাদানী মুন্না হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে বসে গেল এবং চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। তার পিতা গভীর রাতে কান্নার আওয়াজ শুনে ভয়ে জাগ্রত হয়ে গেলেন এবং বলতে লাগলেন: “হে আমার প্রিয় বৎস! কাঁদছ কেন?” মাদানী মুন্না কাঁদতে কাঁদতে উত্তর দিল: “আব্বাজান! আগামীকাল বৃহস্পতিবার। শিক্ষক আগামীকাল পূর্ণ সপ্তাহের পরীক্ষা নিবেন।আমি পড়ার প্রতি মনোযোগ দিই নাই। তাই আগামীকাল শিক্ষক আমাকে প্রহার করবে। একথা বলে বাচ্চা হাউমাউ করে আরো উচ্চ আওয়াজে কাঁদতে লাগল। এ ঘটনায় পিতার চোখে অশ্রু এসে গেল এবং সে নিজের নফস কে সম্বোধন করে বলতে লাগলেন: “এই বাচ্চাকে মাত্র এক সপ্তাহের হিসাব দিতে হবে এবং শিক্ষককে চাইলে কোন বাহানাও দেয়া যায়। তারপরও সে কাঁদছে এবং প্রহারের ভয়ে তার চোখে ঘুম আসছে না। আর আফসোস! হায় আফসোস! আমার উপরতো পূর্ণ জীবনের হিসাব ঐ একক পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা’আলার নিকটেই দিতে হবে। যাকে কোন বাহানা দেয়া যাবে না। তদুপরি আমার কিয়ামতের পরীক্ষা সামনে রয়েছে। কিন্তু আমি অলসতার ঘুমে ঘুমিয়ে রয়েছি। অবশেষে আমার কোন ভয় আসছে না কেন? (দুররাতুন নাছেহীন, ২৯৫ পৃষ্ঠা)
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এই ঘটনায় আমাদের জন্য শিক্ষণীয় অসংখ্য মাদানী ফুল রয়েছে। আমাদের চিন্তা করা উচিৎ যে, একটি মাদানী মুন্না তার ধ্যান এবং মাদানী চিন্তাধারা দেখুন! মাদানী মুন্না মাদ্রাসার হিসাবের ভয়ে কান্না করছে, আর তার পিতা কিয়ামতের হিসাব নিকাশের কঠোরতা স্মরণ করে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছেন।
করীম আপনে করম কা সদকা লাঈম বে কদর কো না শরমা
তো আওর গাদা ছে হিসাব লেনা গাদা ভী কোয়ী হিসাব মে হে।
মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮
কবর ও দাফনের মাদানী ফুল (নিয়মাবলী)
۞আল্লাহ্ তাআলার বাণী:
أَلَمْ نَجْعَلِ الْأَرْضَ كِفَاتًا (25) أَحْيَاءً وَأَمْوَاتًا (26)
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: আমি কি জমিনকে একত্রকারী করিনি। তোমাদের জীবিত ও মৃতদের। (পারা- ২৯, সূরা- মুরসালাত, আয়াত- ২৫, ২৬)
এ আয়াতে মোবারাকার ব্যাখ্যায় “নূরুল ইরফান” ৯২৭ পৃষ্ঠার বর্ণিত আছে; এভাবে যে, জীবিতরা যমীনের পৃষ্ঠের উপর আর মৃতরা যমীনের পেটে একত্রিত আছে।
۞মৃতকে দাফন করা ফরযে কিফায়া (অথার্ৎ একজনও দাফন করে দেয় তবে সবাই দায়মুক্ত হয়ে যাবে, নতুবা যার কাছে সংবাদ পৌঁছেছিল আর দাফন করাইনি গুনাহগার হবে) মৃতকে যমীনে রেখে চারিদিক থেকে দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দেয়া জায়েয নেই। (বাহারে শরীয়তে, ১ম খন্ড, ৮৪২ পৃষ্ঠা)
۞কবর সমুহ আল্লাহ্ তাআলার নেয়ামত। কেননা, এতে মৃতকে দাফন করে দেয়া হয়। যাতে পশু এবং অন্যান্য বস্তগুলো তার খেয়ানত না করে।
মৃত ব্যক্তির অসহায়ত্ব
লাশ এবং গোসলদাতা
প্রখ্যাত আলিম ও মুহাদ্দিস এবং প্রসিদ্ধ তাবেয়ী বুযুর্গ হযরত সায়্যিদুনা সুফিয়ান ছওরী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ থেকে বর্ণিত; “মৃত ব্যক্তি সবকিছু জানতে পারে। এমনকি (সে) গোসলদাতাকে বলে: তোমাকে আল্লাহ্ তাআলার শপথ দিচ্ছি, তুমি গোসলদানে আমার সাথে নম্রতা প্রদর্শন করো। আর যখন তাকে খাটে রাখা হয়, তখন তাকে বলা হয়: “নিজের ব্যাপারে মানুষের মন্তব্যগুলো শুনো। (শরহুস্ সুদূর, ৯৫ পৃষ্ঠা)
মৃত ব্যক্তি কি বলে?
আমীরুল মু’মিনীন হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুকে আযম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ বর্ণনা করেন; মদীনার তাজেদার, উভয় জগতের সরদার, নবী করীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “মৃত ব্যক্তিকে যখন খাটে রাখা হয় এবং তাকে নিয়ে এখনোও তিন কদম পথ অতিক্রম করা হয়েছে মাত্র, তখন সে বলে, আর তার কথা মানুষ এবং জ্বীন ব্যতীত আল্লাহ্ তাআলা যাদের চান তাদেরকে শুনান। মৃত ব্যক্তি বলে: “হে আমার ভাইয়েরা! এবং হে আমার লাশ বহনকারীরা! তোমাদেরকে যেন দুনিয়া ধোকায় না ফেলে, যেভাবে আমাকে ধোঁকায় ফেলেছিল। আর সৃষ্টি যেন তোমাদেরকে খেলায় (মগ্ন) না রাখে। যেভাবে সে আমাকে মগ্ন রেখেছিল। আমি যা কিছু উপার্জন করেছি তা নিজের ওয়ারিশদের জন্য রেখে যাচ্ছি। আল্লাহ্ তাআলা কিয়ামতের দিন আমার কাছ থেকে হিসাব নিবেন। আর আমাকে পাকড়াও করবেন। অথচ (আজ) তোমরা আমাকে বিদায় জানাচ্ছ এবং আমাকে আহবান করছো (অর্থাৎ আমার জন্য কান্নাকাটি করছ)। (শরহুস সুদুর, ৯৩ পৃষ্ঠা, কিতাবুল কুবুর মাআ মাওসুআতে ইবনে আবিদ দুনিয়া, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৬১ পৃষ্ঠা, হাদীস- ২৫)
মঙ্গলবার, ২৭ মার্চ, ২০১৮
জানাযার ১৫টি মাদানী ফুল
৪টি ফরমানে মুস্তফা صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم
১। যে (ব্যক্তি)কোন মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মৃতের পরিবারের নিকট গিয়ে সমবেদনা প্রকাশ করলো, তবে আল্লাহ্ তাআলা তার জন্য এক ক্বিরাত সাওয়াব লিখে দিবেন, অতঃপর যদি মৃতের সাথে যায় তবে আল্লাহ্ তাআলা দুই ক্বিরাত প্রতিদান লিখেন, অতঃপর যদি মৃতের জানাযার নামায আদায় করে, তবে তিন ক্বিরাত, অতঃপর যদি কাফন-দাফনে উপস্থিত থাকে তবে চার ক্বিরাত আর প্রতি ক্বিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। (সংশোধিত ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৯ম খন্ড, ৪০১ পৃষ্ঠা। উম্দাতুল ক্বারী, ১ম খন্ড, ৪০০ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪৭)
২। মুসলমানের প্রতি অপর মুসলমানের ছয়টি হক রয়েছে, (তার মধ্যে একটি হলো) যখন মৃত্যু হবে তখন তার জানাযায় অংশ নেয়া। (মুসলিম, ১১৯২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং: ৫ (২১৬২), সংক্ষেপিত)
৩। “যখন কোন জান্নাতী ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে তখন আল্লাহ্ তাআলা ঐ সমস্ত লোকদের শাস্তি দিতে লজ্জাবোধ করেন যারা তার জানাযা নিয়ে চলে, যারা এর পেছনে চলে এবং যারা তার জানাযার নামায আদায় করে। (আল ফিরদাউস বিমাসুরিল খাত্তাব, ১০ম খন্ড, ২৮২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং: ১১০৮)
শনিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৮
মৃত ব্যক্তির অনুশোচনা
কবরে মাটি দেয়ার কারণে ক্ষমা হয়ে গেলো
এক ব্যক্তির ইন্তিকালের পর কেউ তাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞাসা করলো: مَا فَعَلَ اللهُ بِكَ؟ অর্থাৎ আল্লাহ্ তাআলা আপনার সাথে কিরূপ আচরণ করেছেন? উত্তরে বললেন: আমার আমল পরিমাপ করা হলো, গুণাহের ওজন বেড়ে গেলো, অতঃপর একটি থলে আমার নেকীর পাল্লায় রাখা হলো, যার কারণে اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ আমার নেকীর পাল্লা ভারী হয়ে গেলো এবং আমার ক্ষমা হয়ে গেলো। যখন সেই থলেটি খোলা হলো তখন তার মধ্যে সেই মাটি দেখলাম যা আমি এক মুসলমানের দাফনের সময় তার কবরে দিয়েছিলাম। (মিরকাতুল মাফাতিহ, ৪র্থ খন্ড, ১৮৯ পৃষ্ঠা)
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
কেউ সত্যিই বলেছেন:
রহমতে হক ‘বাহা’ না মে জুইদ,
রহমতে হক ‘বাহানা’ মে জুইদ।
(অর্থাৎ আল্লাহ্ তাআলার রহমত মূল্য নয়, বাহানা খোঁজে থাকে)
কবরে মাটি দেওয়ার পদ্ধতি
মুসলমানের কবরে মাটি দেওয়া মুস্তাহাব। এর পদ্ধতি হলো: কবরের মাথার পার্শ্ব হতে দুই হাতে মাটি উঠিয়ে তিনবার কবরে দেবে, প্রথমবার দেওয়ার সময় বলবে: مِنْهَا خَلَقْنٰكُمْ (আমি জমিন থেকেই তোমাদের সৃষ্টি করেছি) দ্বিতীয়বার দেওয়ার সময় বলবে: وَفِيْهَا نُعِيْدُكُمْ (সেটার মধ্যেই তোমাদেরকে আবার নিয়ে যাবো) এবং তৃতীয়বার দেওয়ার সময় বলবে: وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً اُخرٰى (এবং সেটা থেকে পুনরায় তোমাদেরকে বের করবো।) এবার বাকী মাটি কোদাল ইত্যাদি দিয়ে ঢেলে দিন।
বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
কবরের পরীক্ষা
কবরের হুংকার
হযরত সায়্যিদুনা আবুল হাজ্জাজ সুমালী رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى
عَنْهُ থেকে বর্ণিত; নবী করীম, রউফুর রহীম, রাসূলে আমীন صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে শায়িত করা হয়, তখন
কবর তাকে সম্বোধন করে বলে: ‘হে মানুষ! তোমার ধ্বংস হোক! তুমি কেন আমাকে
ভুলে গিয়েছিলে? তোমার কি এতটুকুও জানা ছিলোনা যে, আমি
ফিতনার ঘর, অতি অন্ধকারের ঘর। অতঃপর তুমি কিসের ভিত্তিতে
আমার উপর দিয়ে সদম্ভে চলাফেরা করেছিলে?’ যদি সে মৃত ব্যক্তি নেককার বান্দা হয়, তখন
এক গায়েবী আওয়াজ কবরকে সম্বোধন করে বলে: হে কবর! তোমার মধ্যে শায়িত ব্যক্তি যদি সৎ
কাজের আদেশ দাতা হয় এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধকারী হয়, তাহলে তার সাথে তুমি কিরূপ
আচরণ করবে? উত্তরে কবর বলে: যদি তাই হয়, তবে
আমি তার জন্য মনোমুগ্ধকর বাগানে পরিণত হবো। অতঃপর সে ব্যক্তির শরীর নূরের শরীরে
পরিণত হয়ে যায় এবং তার রূহ আল্লাহ্ তাআলার দরবারের দিকে উড়ে চলে যায়।” (মুসনাদে
আবি ইয়ালা, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৬৭ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৬৮৩৫)
মুবাল্লিগদের জন্য শুভ সংবাদ!
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! উপরোক্ত হাদীস শরীফের উপর একটু
গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন! যখনই কোন (ব্যক্তি) কবরবাসী হয়ে যায়, সে
নেককার হোক কিংবা গুনাহগার, তাকে কবরে ভীতি প্রদর্শন করা হয়। দাওয়াতে
ইসলামীর মুবাল্লিগগণ! ফয়যানে সুন্নাতের দরস দাতাগণ! এলাকায়ী দাওরা বরায়ে নেকীর
দাওয়াতে অংশগ্রহণকারীগণ! নিজ সন্তানদেরকে সুন্নাত মোতাবেক লালন-পালন কারীগণ! এবং
সুন্নাত শিক্ষাদানের জন্য ইনফিরাদি কৌশিশকারীগণের জন্য সুসংবাদ এই হবে যে, কবরে
একটি অদৃশ্য আওয়াজ সৎকাজের আদেশ দাতা ও মন্দ কাজে নিষেধকারীদেরকে সাহায্য-সহযোগীতা
করবে এবং এভাবে কবর তাদের জন্য বাগানে পরিণত হবে।
মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
কাফন-দাফনের নিয়মাবলী
পুরুষের সুন্নাত মোতাবেক কাফন
পুরুষের জন্য সুন্নাত মোতাবেক কাফন তিনটি। যথা-
(১) লিফাফাহ (চাদর) ,
(২) ইযার (তাহবন্দ) ও
(৩) কামীস (জামা) ।
(১) লিফাফাহ (চাদর) ,
(২) ইযার (তাহবন্দ) ও
(৩) কামীস (জামা) ।
মহিলাদের সুন্নাত মোতাবেক কাফন
মহিলাদের জন্য সুন্নাত মোতাবেক কাফন পাঁচটি। যথা-
(১) লিফাফাহ,
(২) ইযার,
(৩) কামীস,
(৪) সীনাবন্ধ ও
(৫) ওড়না।
(১) লিফাফাহ,
(২) ইযার,
(৩) কামীস,
(৪) সীনাবন্ধ ও
(৫) ওড়না।
হিজড়া অর্থাৎ মেয়েলি স্বভাবের পুরুষদেরকেও মহিলাদের অনুরূপ পাঁচটি কাফন পরাতে হবে।
রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
মাদানী অসিয়তনামা (কাফন-দাফনের আহকাম সম্বলিত)
اَلْحَمْدُ لِلّٰہِ عَزَّوَجَلَّ এখন ফযরের নামাযের পর মসজিদে নববী শরীফে عَلٰی صَاحِبِہَا الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام বসে “মদীনা মুনাওয়ারা থেকে চল্লিশখানা অসিয়ত” লিখার সৌভাগ্য অর্জন করছি। আফসোস! শত আফসোস! আজ আমার মদীনা মুনাওয়ারাতে উপস্থিতির শেষ সকাল। সূর্য প্রিয় মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর রওজা মোবারকে সালাম পেশ করার জন্য হাজির হতে চলেছে। আহ! আজ রাতেই যদি জান্নাতুল বাক্বীতে সমাহিত হওয়ার কোন ব্যবস্থা না হয়, তবে (আগামীকালই) মদীনা শরীফ ত্যাগ করতে হবে। চোখ অশ্রুসিক্ত, মন অস্থির হয়ে আছে। হায়!
আফসোস চন্দ ঘড়িয়া তয়্যবা কি রাহ গেয়ী হে,
দিল মে জুদায়ী কা গম তুফান মাচা রাহা হে।
আহ! মন ব্যথা বেদনায় নিমজ্জিত। মদীনার বিচ্ছেদের হৃদয় বিদারক চিন্তা আপাদমস্তক বেদনার প্রতিচ্ছবি বানিয়ে দিয়েছে। এমন মনে হচ্ছে যেন মুখের হাসি কেউ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আহ! শীঘ্রই মদীনা ছেড়ে যেতে হবে। তখন মন ভেঙ্গে যাবে। আহ! মদীনা থেকে স্বদেশের উদ্দেশ্যে রাওয়ানা হওয়ার মূহুর্তটি এমনি বেদনা দায়ক হয়ে থাকে যে, যেন কোন দুগ্ধপোষ্য শিশুকে তার মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আর সে খুবই আফসোস করে! কেঁদে কেঁদে বারবার মায়ের দিকে ফিরে দেখছে, হয়ত মা পুনরায় তাকে ডেকে নিবেন.....স্নেহ ভরে তাকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরবে। আর শ্লোক শুনিয়ে আপন মায়াভরা কোলে মধুর ঘুম পাড়াবেন। হায়!
ইছালে সাওয়াবের পদ্ধতি
ইছালে সাওয়াব বা কারো জন্য সাওয়াব পৌঁছিয়ে দেবার জন্য অন্তরে নিয়্যত করে নেওয়াই যথেষ্ট। মনে করুন;আপনি কাউকে একটি টাকা দান করলেন কিংবা একবার দরূদ শরীফ পাঠ করলেন অথবা কাউকে একটি সুন্নাত শিখালেন নতুবা কাউকে ইন্ফিরাদি কৌশিশের মাধ্যমে নেকীর দাওয়াত দিলেন অথবা সুন্নাতে ভরা বয়ান করলেন। মোট কথা; যে কোন নেক কাজ করলেন, আপনি মনে মনে এভাবে নিয়্যত করে নিন: আমি এই মাত্র যে সুন্নাতটি শিক্ষা দিলাম, সেটির সাওয়াব তাজেদারে মদীনা, নবী করীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দরবারে পৌঁছে যাক। তবে اِنْ شَآءَ اللّٰہ عَزَّوَجَلَّ সাওয়াব পৌঁছে যাবে। তাছাড়া আরো যাদের জন্য নিয়্যত করবেন, তাদের কাছেও পৌঁছে যাবে। মনে মনে নিয়্যত করার সাথে সাথে মুখে উচ্চারণ করে নেওয়াও উত্তম। কেননা, এটি সাহাবীرَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی عَنْہُ থেকে প্রমাণিত রয়েছে। যেমন;হযরত সা’আদ رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی عَنْہُ এর হাদীস। তিনি কূপ খনন করে বলেছিলেন : هٰذِهٖ لِأُمِّ سَعد ‘অর্থাৎ এই কূপটি সা’আদের মায়ের জন্য’।
ফাতিহা ও ইছালে সাওয়াব কি?
মৃত আত্মীয়-স্বজনদেরকে স্বপ্নে দেখার উপায়
হযরত আল্লামা আবু আবদুল্লাহ্ মুহাম্মদ বিন আহমদ মালেকী কুরতুবী رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বর্ণনা করেন: হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِএর খিদমতে হাজির হয়ে এক মহিলা আবেদন করলো, আমার যুবতী মেয়ে মারা গেছে। এমন কোন আমল আছে কি? যা করলে আমি তাকে স্বপ্নে দেখতে পাব। তিনি رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ মহিলাটিকে ঐ আমল বলে দিলেন। মহিলাটি তার মরহুমা কন্যাটিকে স্বপ্নে তো দেখলেন, কিন্তু এমন অবস্থায় দেখলেন যে, তার সারা শরীরে আলকাতরার পোষাক ছিলো। তার ঘাড়ে শিকল, আর পায়ে লোহার বেড়ি ছিলো। ভয়ানক এই দৃশ্য দেখে মহিলাটি কেঁপে উঠল! পরের দিন সে এসে হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ কে স্বপ্নের কথা বলল। স্বপ্নটি শুনে তিনি رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে গেলেন। কিছু দিন পর হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এক মেয়েকে স্বপ্নে দেখলেন। মেয়েটি জান্নাতে একটি আসনে মাথায় তাজ পরে বসে আছে। তিনি رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ কে দেখে মেয়েটি বললো:আমি হলাম সেই মহিলাটিরই কন্যা, যিনি আপনাকে আমার অবস্থার কথা বলেছিলেন। তিনি رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বললেন: মহিলাটির কথা মত কন্যা তো আজাবে লিপ্ত ছিলো। তার এত বড় পরিবর্তন কীভাবে হলো? মরহুমা মেয়েটি বললো: কবরস্থানের পাশ দিয়ে একটি লোক যাচ্ছিলেন। লোকটি নবী করীম, রউফুর রহীম, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم র উপর দরূদ শরীফ পাঠ করেছিলেন। তাঁর সেই দরূদ শরীফ পাঠের বরকতে আল্লাহ তাআলা ৫৬০ জন কবরবাসীর উপর থেকে আযাব উঠিয়ে নিয়েছেন। (আত-তাযকিরাতু ফি আহওয়ালিল মাওতা ওয়া উমুরিল আখিরাতে, ১ম খন্ড, ৭৪ পৃষ্ঠা)
রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭
কবর যিয়ারত করার নিয়মাবলী, সুন্নাত ও দোআ সমূহ
তাজেদারে রিসালত, শাহেনশাহে নবুয়ত, মুস্তফা জানে রহমত, শময়ে বজ্মে হিদায়ত, নওশায়ে বজ্মে জান্নাত, নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেছেন: “যে আমার সুন্নাতকে ভালবাসল, সে আমাকেই ভালবাসল। আর যে আমাকে ভালবাসল, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে। (মিশকাতুল মাছাবীহ্, ১ম খন্ড, ৫৫ পৃষ্ঠা, হাদিস- ১৭৫)
সীনা তেরি সুন্নাতো মদীনা বনে আক্বা,
জান্নাত মে পড়ূসী মুঝে তুম আপনা বনানা।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
কবরস্থানে হাজির হওয়ার ১১টি মাদানী ফুল
(১) নবী করীম, রউফুর রহীম ﷺ ইরশাদ করেছেন: “আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করার জন্য নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর যিয়ারত কর কেননা সেটা দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তির কারণ, আর আখেরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়।” (সুনানে ইবনে মাযাহ্, ২য় খন্ড, ২৫২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৫৭১, দারুল মারিফাহ, বৈরুত)
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)
পোস্ট শ্রেণি
অযু-গোসল-পবিত্রতা
(12)
আপডেট চলমান
(25)
আমাদের কথা ও অন্যান্য বিষয়াবলী
(6)
আমাদের প্রিয় নবী ﷺ
(5)
আরবি মাস ও ফযীলত
(11)
ইসলামী ইতিহাস ও শিক্ষনীয় ঘটনা
(6)
ইসলামী জীবন ও সুন্দর চরিত্র
(4)
ঈদ-কাযা-জানাযা-তারাবী-নফল ও অন্যান্য নামায
(5)
উত্তম আমল ও সাওয়াবের কাজ
(4)
কুরআন-তাফসীর ও হাদিস
(16)
কুরবানী
(6)
চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কথন
(14)
জিকির-দোআ-দুরূদ ও ফযীলত
(8)
নবী-সাহাবী ও আওলিয়াদের জীবনী
(8)
নামায
(17)
পর্দা ও লজ্জাশীলতা
(16)
ফয়যানে জুমা
(3)
বদ আমল ও গুনাহের কাজ
(3)
মওত-কবর-হাশর ও আযাব
(12)
মাসআলা-মাসাইল ও প্রশ্নোত্তর
(15)
মাসাইল
(21)
যাকাত-ফিতরা ও সদক্বাহ'র বিধান
(1)
রোযা/রমযানের বিধান ও ফযীলত
(9)
সুন্নাত ও আদব/ মাদানী ফুল
(41)
হজ্ব-ওমরাহ ও যিয়ারতে মদিনা
(27)