আপডেট
সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপণমুক্ত সাইট। শিখুন-জানুন বিরক্তিছাড়া।
বাংলা ভাষায় অলাভজনক বৃহত্তম ইসলামিক ওয়েবসাইট বানানোর প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী জীবন টিম। আসছে মোবাইল অ্যাপলিকেশন... সাইট www.islamijibon.net

শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

প্রসঙ্গ: ফয়যানে জুমা (পর্ব-২)

প্রত্যেক     জুমার      দিন      ১      কোটি      ৪৪      লক্ষ  জাহান্নামীদের মুক্তি

সুলতানে  মদীনা  صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  ইরশাদ  করেন:  “জুমার  দিনের    রাত-দিন  ২৪ ঘন্টার মধ্যে এমন   কোন  ঘন্টা  নেই, যার মধ্যে প্রতিনিয়ত  ৬ লক্ষ দোযখীকে  মুক্তি দেয়া হচ্ছে  না,    যাদের     উপর    জাহান্নাম     ওয়াজীব      হয়ে  গেছে।”    (মুসনাদে      আবু    ইয়ালা,    ৩য়    খন্ড, ২৯১, ২৩৫ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৪২১, ৩৪৭১) 

কবরের আযাব থেকে মুক্ত

প্রিয়  আক্বা,  মক্কী  মাদানী  মুস্তফা,  হুযুর   পুরনূর  صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم   ইরশাদ    করেন:  “যে   ব্যক্তি    জুমার   দিন    কিংবা    জুমার      রাতে মৃত্যুবরণ করবে, সে কবরের আযাব থেকে মুক্তি পাবে    এবং    কিয়ামতের    দিন    সে    এমনভাবে  উঠবে      যে,      তার      উপর      শহীদদের      মোহর  থাকবে।”    (হিলআতুল    আউলিয়া,    ৩য়    খন্ড,  ১৮১ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৬২৯) 


প্রসঙ্গ: ফয়যানে জুমা (পর্ব-১)

জুমার দিন দরূদ শরীফ পাঠের ফযীলত

নবীদের         সুলতান,         রহমতে         আলামিয়ান,  সরদারে   দো-জাহান,  মাহবুবে   রহমানصَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি আমার   উপর   জুমার   দিন    দুইশত    বার    দরূদ শরীফ পাঠ   করবে, তার  দুইশত বছরের গুনাহ্ মাফ   হয়ে    যাবে।”  (জমউল   জাওয়ামেয়  লিস সুয়ূতী, ৭ম   খন্ড, ১৯৯ পৃষ্ঠা, হাদীস-২২৩৫৩) 

صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                     صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

প্রিয়      ইসলামী     ভাইয়েরা!    আমরা     কতই    না সৌভাগ্যবান   যে,    আল্লাহ্   তাআলা     তাঁর   প্রিয় হাবীব    صَلَّی    اللّٰہُ    تَعَالٰی    عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ    وَسَلَّم    এর  ওসিলায়         আমাদেরকে         বরকতময়        জুমার  নিয়ামত      দ্বারা      ধন্য      করেছেন।     আফসোস! আমরা অকৃতজ্ঞরা অন্যান্য দিনের মতো জুমার  দিনটিকেও  অলসতার  মধ্যে  অতিবাহিত  করি।  অথচ  জুমার দিন ঈদের দিন, জুমার দিন সকল দিনের সরদার, জুমার দিনে জাহান্নামের আগুন প্রজ্বলিত করা  হয় না, জুমার রাতে জাহান্নামের দরজা  খোলা হয়  না, জুমাকে কিয়ামতের   দিন নববধূর     মতো     উঠানো     হবে,     জুমার     দিনে  মৃত্যুবরণকারী   সৌভাগ্যবান মুসলমান শহীদের  মর্যাদা  লাভ  করে  এবং  কবরের  আযাব  থেকে   নিরাপদ  হয়ে যায়। প্রসিদ্ধ মুফাসসির, হাকীমুল উম্মত     হযরত   আল্লামা   মুফতী   আহমদ   ইয়ার খাঁন       رَحْمَۃُ        اللّٰہِ      تَعَالٰی       عَلَیْہِ      এর      বর্ণনা অনুসারে;“জুমার দিন হজ্ব হলে সেটার সাওয়াব সত্তরটি  হজ্জের  সাওয়াবের   সমপরিমাণ    হবে।  জুমার    দিনের    একেকটি   সৎকাজের   সাওয়াব সত্তরগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। (যেহেতু জুমার দিনের মর্যাদা অনেক বেশি, তাই) জুমার দিনে গুনাহের শাস্তিও   সত্তর গুণ   পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। (মীরআত, ২য় খন্ড, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬ পৃষ্ঠা) 

মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৭

নামাযের প্রায় ৯৬টি সুন্নাত

তাকবীরে তাহরীমার সুন্নাত সমূহ


(১) তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো,
(২) এ  সময়  হাতের  আঙ্গুলগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা। (অর্থাৎ না একেবারে মিলিয়ে রাখবেন, না ফাক   রাখবেন)   
(৩)  উভয়   হাতের   তালু  ও আঙ্গুলগুলোর   পেট   কিবলামূখী   রাখা।   
(৪)  তাকবীরের সময় মাথা না ঝুঁকানো,
(৫) তাকবীর শুরু করার পূর্বেই উভয় হাতকে কান পর্যন্ত উঠিয়ে নেয়া,
(৬)  কুনূতের তাকবীর ও 
(৭) দুই  ঈদের তাকবীর  গুলোতেও   এগুলো   সুন্নাত।  (দুররে  মুখতার, রদ্দুল মুহতার,  ২য় খন্ড,    ২০৮ পৃষ্ঠা) ইমামের উচ্চস্বরে اَللهُ اَكْبَرُ বলা,
(৯) سَمِـعَ  اللهُ لِمَنْ حَمِدَه এবং 
(১০) সালাম বলা  (প্রয়োজনের অতিরিক্ত আওয়াজকে উঁচু করা মাকরূহ)  (রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড,  ২০৮ পৃষ্ঠা)
(১১) তাকবীরের পরপরই হাত   বেঁধে  ফেলা  সুন্নাত। (অনেকেই তাকবীরে উলার  পর  হাত ঝুলিয়ে   দেয় অথবা কনুই  ঝুলিয়ে দেয় অথবা কনুই  দু’টি পিছনের   দিকে একবার ঝাঁকি  দিয়ে  তারপর হাত বাঁধে।  তাদের এ কাজ   সুন্নাতের  পরিপন্থী) ।   (দুররে মুখতার, রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ২২৯ পৃষ্ঠা) 

রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৭

প্রিয় নবীর صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ৪০ টি সহীহ হাদীস

প্রথম হাদিসঃ প্রতিটি কাজ তার নিয়তের উপর নির্ভরশীল

١- عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ: "إنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ لِدُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إلَى مَا هَاجَرَ إلَيْهِ" . (متفق عليه)

অনুবাদ: উমার বিন খাত্তাব رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি নবী করীম  صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কে বলতে শুনেছি - প্রতিটি কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল, আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দিকে হিযরত করবে তার হিযরত আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দিকে হিযরত হিসেবেই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি হিযরত করবে দুনিয়া অর্জন করা অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্যেশ্যে, তার হিযরত সে হিসেবেই গণ্য হবে, যার উদ্যশ্যে সে হিযরত করেছে।
[সহীহ   বুখারী,  অনুচ্ছেদ:  কিতাব,   ১/৩০     হা: ৫৪;       সহীহ       মুসলিম,        অনুচ্ছেদ:        ইমারাহ ৩/১৫১৫       হা:        ১৯০৭        সুনানে       তিরমিজি, অনুচ্ছেদ:   ফাযায়েল    ও   জিহাদ       ৪/১৭৯   হা: ১৬৪৭]
       ------------------------------
এই চল্লিশটি হাদিসের এন্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপ লিংক
                                             ----------------------------------

দ্বিতীয় হাদিসঃ ইসলামের ভিত্তী পাচঁটি

٢- ‏‏ ‏عَنْ ‏ ‏ابْنِ عُمَرَ ‏ ‏رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ‏ ‏قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ‏ ‏ﷺ ‏ ‏بُنِيَ الْإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ ‏مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالْحَجِّ وَصَوْمِ رَمَضَانَ . (متفق عليه)

অনুবাদ: ইবনে ওমার رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ থেকে বর্ণিত, নবী করীম  صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এরশাদ করেন- ইসলামের ভিত্তী পাচটি, ১: সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, এবং মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহর রাসুল, ২: নামাজ কায়েম করা, ৩: যাকাত প্রদান করা, ৪: হজ্ব আদায় করা, ৫: রমাজানে রোযা পালন করা।
[সহীহ      বুখারী,   অধ্যায়:     অজু,   ৪/১৬৪১   হা: ৪২৪৩;  সহীহ  মুসলিম,  অধ্যায়:    ঈমান  ১/৪৫ হা: ১৬]
চল্লিশ হাদীস

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২৭- বাচ্চাদের হজ্ব করা বিষয়ে প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: বাচ্চাও কি হজ্ব করতে পারে?

উত্তর: জ্বি, হ্যাঁ! যেমন: হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ বর্ণনা করেছেন; ছরকারে দোআলম, নূরে মুজাস্‌সম, নবীয়ে আকরাম, হুযুর صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم রূওহা নামক স্থানে একটি কাফিলার সাথে সাক্ষাত হলে তিনি صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم জিজ্ঞাসা করলেন: এরা কারা? তার আরজ করলেন; আমরা মুসলমান, অতঃপর তারা জিজ্ঞাসা করল যে; আপনি কে? তিনি صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইশরাদ করলেন: আল্লাহ তাআলার রাসুল। তাদের মধ্য থেকে একজন মহিলা বাচ্চাকে উপরে উঠিয়ে জিজ্ঞাসা করল: কি এরও (বাচ্চারও) হজ্ব হয়ে যাবে? ইরশাদ করলেন: হ্যাঁ! এবং তোমাকেও এর সাওয়াব দেয়া হবে। (মুসলীম, ৬৯৭ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১৩৩৬) প্রসিদ্ধ মুফাস্‌সির হাকিমুল উম্মত হযরত মুফতি আহমদ ইয়ার খান رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেছেন: অর্থাৎ বাচ্চাকেও হজ্ব করার সাওয়াব দেওয়া হবে এবং তোমাকেও হজ্ব করানোর সাওয়াব দেয়া হবে। আরও বলেছেন: এই হাদীসে পাক থেকে বুঝা গেল যে, বাচ্চাদের নেকী দেয়া হবে (বাচ্চাও নেকী পাবে) বাচ্চার বাবা-মাকেও নেকী দেয়া হবে। অতএব তাদেরকে নামায, রোজার নিয়মিত আদায়কারী বানান। (মিরাত, ৪র্থ খন্ড, ৮৮ পৃষ্ঠা)
বাচ্চাদের হজ্ব

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২৬- হজ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর-২

ইহরাম পরিহিত অবস্থায় টিস্যু পেপারের ব্যবহার


প্রশ্ন: টিস্যু পেপার দিয়ে মুখের ঘাম অথবা ওযুর পানি কিংবা সর্দিতে নাক পরিষ্কার করতে পারবে কিনা?

উত্তর: পরিষ্কার করতে পারবে না।

প্রশ্ন: মুখের মধ্যে কাপড় অথবা টিস্যু পেপারের মুখোশ লাগানো কেমন?

উত্তর: নাজায়িয ও গুনাহ। শর্ত পাওয়া অবস্থায় কাফ্‌ফারাও আবশ্যক হবে।

হজ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর-২

প্রশ্ন: মুহরিম সুগন্ধিযুক্ত টিস্যু পেপার ব্যবহার করে নিল, তাহলে?

উত্তর: সুগন্ধিমুক্ত টিস্যু পেপারে যদি সুগন্ধির যথাযথ প্রভাব থাকে অর্থাৎ সেই পেপার সুগন্ধি দ্বারা স্যাত স্যাতে হয়ে যায়। তাহলে সেই ভিজাটা শরীরের উপর লাগাবস্থায় যেই হুকুম সুগন্ধির হয়ে থাকে, সেই হুকুম তারও হবে অর্থাৎ যদি অল্প (অর্থাৎ কম হয় এবং সম্পূর্ণ অঙ্গ প্রতঙ্গে না লাগে তাহলে সদকা করতে হবে, তা নাহলে যদি অধিক হয় অথবা সম্পূর্ণ অঙ্গে লেগে যায়, তাহলে ‘দম’ ওয়াজিব হবে। আর যদি প্রভাব না থাকে বরং শুধু সুগন্ধ আসে তবে যদি এটার মাধ্যমে চেহারা ইত্যাদি পরিষ্কার করল এবং চেহারা অথবা হাতে সুগন্ধির প্রভাব এসে যায়। তাহলে কোন কাফ্‌ফারা দিতে হবে না। এ জন্য যে এতে সুগন্ধির আসল প্রভাব পাওয়া যায়নি এবং টিস্যু পেপার ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য সুগন্ধি থেকে উপকার নেয়া নয়। (ইহরাম আওর খুশবুদার সাবুন, ৩১ পৃষ্ঠা) যদি কেউ এমন রুমে প্রবেশ করল, যাকে সুগন্ধ ধোঁয়া দেয়া হল এবং তার কাপড়ে সুগন্ধ লেগে গেল, তবে কোন কাফ্‌ফারা দিতে হবে না, কেননা সে সুগন্ধির প্রভাব থেকে উপকার গ্রহণ করেনি। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ২৪১ পৃষ্ঠা)

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২৫- হজ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর

ইজতিবা ও রমল প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: যদি সাঈ এর পূর্বে কৃত তাওয়াফের প্রথম চক্করে রমল করা ভুলে যায় তখন কি করতে হবে?
উত্তর: রমল শুধু প্রথম তিন চক্করেই সুন্নাত। সাত চক্করেই (রমল) করা মাকরূহ। তাই যদি প্রথমটিতে করা না হয়, তাহলে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়তে করে নিবেন, আর যদি প্রথম দুই চক্করে করা না হয়, তখন শুধু তৃতীয়টিতে করে নিবেন এবং যদি প্রথম তিনটিতে না করা হয়, তখন অবশিষ্ট চার চক্করেও করতে পারবেন না। (দুরের মুখতার ও রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৫৮৩ পৃষ্ঠা)

প্রশ্ন: যে তাওয়াফে ইজতিবা ও রমল করার কথা ছিল তাতে করল না, তখন তার কাফ্‌ফারা কি হবে?
উত্তর: কোন কাফ্‌ফারা নেই। অবশ্য একটি মহা সুন্নাত (আদায়) থেকে আপনি বঞ্চিত হলেন।

প্রশ্ন: যদি কেউ সাত চক্করেই রমল করে নেয় তবে?
উত্তর: মাকরূহে তানযিহী। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৫৮৪ পৃষ্ঠা) কিন্তু কোন জরিমানা ইত্যাদি নেই।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২৪- তাওয়াফে জিয়ারতের ব্যাপারে প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: ভদ্র মহিলা তাওয়াফে জিয়ারত করছিলেন। তাওয়াফ চলাকালীন সময়ে তার মাসিক শুরু হয়ে যায়, এখন তিনি কী করবেন?
উত্তর: খুব দ্রুত তাওয়াফ করা বন্ধ করে দিয়ে মসজিদুল হারাম থেকে বাইরে চলে আসবে। যদি তাওয়াফ চালু রাখে অথবা মসজিদের ভেতরেই থেকে যায় তাহলে গুনাহগার হবে।

তাওয়াফে জিয়ারতের ব্যাপারে প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: যদি চার চক্কর দেয়ার পর হায়েজ আসে তখন আর চার চক্করের পূর্বে (অর্থাৎ চার চক্কর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই) আসলে তখন কী হুকুম?

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২২- মক্কা ও মদীনার জিয়ারতের স্থান সমূহ

সারওয়ারে আলম ﷺ এর জন্মস্থান

হযরত আল্লামা কুতুব উদ্দীন رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: হুজুর আকরাম صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর জন্মস্থানে দোআ কবুল হয়। (বলদুল আমীন, ২০১ পৃষ্ঠা) এখানে পৌঁছার সহজ পদ্ধতি এই যে, আপনি মারওয়া পাহাড়ের যে কোন কাছের একটি দরজা দিয়ে বাইরে বের হয়ে যান সামনে নামাযীদের জন্য অনেক বড় ঘেরাও তৈরী করা হয়েছে। এই ঘেরাও এর ঐ প্রান্তে এই মহান আলীশান ঘর মোবারক নূরানী জালওয়া বিকিরণ করছে। اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ অনেক দূর থেকে তা দৃষ্টিতে পড়বে। খলিফা হারুনুর রশিদ رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর আম্মাজান رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیۡہَا কর্তৃক এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে ঐ পবিত্র স্থানকে লাইব্রেরী হিসেবে রূপান্তর করে নেয়া হয়েছে, আর এর উপর একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে লিখিত আছে ‘মক্কায়ে মুকার্‌রমা লাইব্রেরী’।

জবলে আবু কুবাইছ


হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২৩- অপরাধ ও তার কাফ্‌ফারা

সামনে আগত প্রশ্নোত্তর অধ্যায়টি পড়ার পূর্বে কতিপয় প্রয়োজনীয় পরিভাষা ইত্যাদি স্মৃতি পটে আয়ত্ব করে নিন।

দম ইত্যাদির সংজ্ঞা

﴾১﴿ দম: অর্থাৎ একটি ছাগল। (এতে নর ছাগল, মাদী ছাগল (ছাগী), দুম্বা, ভেড়া এবং গাভী কিংবা উটের সপ্তাংশ সবই অন্তর্ভূক্ত) 
﴾২﴿ বাদানাহ: অর্থাৎ উট কিংবা গাভী (এতে ষাড়, বলদ, মহিষ, মহিষী ইত্যাদি সবই অন্তর্ভূক্ত) গাভী, ছাগল ইত্যাদি সকল পশু ঐসব শর্ত সম্বলিত হতে হবে, যা কোরবানীর জন্য নির্ধারিত রয়েছে। 
﴾৩﴿ সদ্‌কা: অর্থাৎ সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ। বর্তমানের হিসাবানুযায়ী সদকায়ে ফিতরে পরিমাণ হল, ২ কিলো থেকে ৮০ গ্রাম কম গম অথবা তার আটা কিংবা এর মূল্য বা উহার দ্বিগুন জব বা খেজুর কিংবা এর মূল্য।
অপরাধ ও তার কাফ্‌ফারা

দম ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ


শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২১- নবী করীম ﷺ এর মহান দরবারে হাজির হওয়ার ১২ টি মাদানী ফুল

﴾১﴿ পবিত্র মিম্বরের পাশে দোআ করুন। 

﴾২﴿ জান্নাতের কেয়ারীতে (অর্থাৎ যে স্থান মিম্বর ও হুযুরা মোবারকের মধ্যবর্তী, এটাকে হাদীস শরীফে জান্নাতের কেয়ারী অর্থাৎ ‘জান্নাতের বাগান বলেছেন) এসে মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে দুই রাকাত নফল পড়ে দোআ করুন। 

﴾৩﴿ যতদিন পর্যন্ত মদীনা তৈয়্যবায় অবস্থান করার সুযোগ নসীব হয়। একটি নিঃশ্বাসও যেন অহেতুক ব্যয় না হয়। 

১২ টি মাদানী ফুল 
﴾৪﴿ বাইরে যাওয়ার বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অধিকাংশ সময় মসজিদে নববী শরীফে পবিত্রাবস্থায় উপস্থিত থাকুন। নামায ও তিলাওয়াত, যিকির ও দরূদ পাঠে সময় অতিবাহিত করুন। দুনিয়াবী কথাবার্তা যে কোন মসজিদে না বলা চাই এখানেতো আরো অধিক সতর্কতা। 

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২০- মদীনার হাজেরী, মদীনা শরীফ জিয়ারতের পদ্ধতি ও দোআ

হাসান হজ্ব কর লিয়া কা’বে ছে আঁখো নে যিয়া পায়ী,
চলো দে খে ওহ বস্তি জিছকা রাস্তা দিল কে আন্দর হেঁ।

মদীনার হাজেরী 
আগ্রহ বাড়ানোর পদ্ধতি

মদীনা শরীফে আপনার পবিত্র সফরকে মোবারকবাদ! সারা রাস্তায় বেশী বেশী পরিমাণে দরূদ এবং সালাম পড়ুন এবং না’তে রাসুল পড়তে থাকুন। অথবা যদি সম্ভব হয় তাহলে টেপ রেকর্ডারের সাহায্যে সুললিত কণ্ঠের না’ত পরিবেশন কারীর ক্যাসেট শুনতে থাকুন। اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ আগ্রহ বৃদ্ধির মাধ্যম হয়ে যাবে। মদীনা শরীফের সম্মান এবং মহান মর্যাদার কল্পনা করতে থাকুন। উহার ফযীলত ও গুরুত্বের উপর চিন্তা করতে থাকুন১৮। এর দ্বারাও اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ আপনার আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পাবে। 

-------------------
১৮মক্কা ও মদীনায় অবস্থানকালীন সময়ে মক্কা ও মদীনার উপর লিখিত কিতাব সমূহ অধ্যয়ন আগ্রহ ও আগ্রহ বৃদ্ধির উত্তম পন্থা, আর ইশকে রসুল صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বাড়ানোর জন্য আ’লা হযরত رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর নাতের বই “হাদায়িকে বখশিশ” এবং উস্তাদে জামান মাওলানা হাসান রযা খান رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর লিখিত কালাম গ্রন্থ “যওকে না’ত”এর খুব বেশী করে অধ্যায়ণ করুন।
-------------------

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৯- বদলী হজ্ব

যার উপর হজ্ব ফরয হয়েছে তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে। কিন্তু নফল হজ্বের জন্য কোন শর্ত নেই। ইহা তো ইছালে সাওয়াবের একটি পদ্ধতি মাত্র। আর ঈসালে সাওয়াব ফরয নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, সদকা এবং দান খয়রাত ইত্যাদি সর্ব প্রকার আমলের হতে পারে। তাই যদি নিজের মৃত মা-বাবা ও অন্যান্যদের পক্ষ থেকে আপনি আপনার ইচ্ছায় হজ্ব করতে চান, অর্থাৎ তাদের উপর যা ফরযও ছিলনা আবার তারা অছিয়তও করেনি, তাহলে এর জন্য কোন রকম শর্ত নেই। হজ্বের ইহরাম পিতা অথবা মাতার পক্ষ হতে নিয়্যত করে বেঁধে নিন এবং হজ্বের যাবতীয় বিধানাবলী আদায় করে নিন। এই পদ্ধতিতে এ উপকার অর্জন হবে যে, তার (অর্থাৎ যার পক্ষ থেকে হজ্ব করা হয়েছে) নিকট একটি হজ্জের সাওয়াব মিলবে এবং হজ্ব আদায়কারীকে হাদীসের হুকুম অনুযায়ী দশটি হজ্বের সাওয়াব দান করা হবে। (দারু কুতনী, ২য় খন্ড, ৩২৯ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২৫৭৮) তাই যখনই নফল হজ্ব করবেন তখনই উত্তম হল যে, পিতা অথবা মাতার পক্ষ থেকে আদায় করবেন। মনে রাখবেন! ইছালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে করা হজ্বে তামাত্তু অথবা হজ্বে কিরান এর কোরবানী করা ওয়াজিব, আর হজ্বকারী স্বয়ং নিজের নিয়্যতে তা করবে এবং এর ইছালে সাওয়াব করে দিবে।
বদলী হজ্ব 
বদলী হজ্বের ১৭টি শর্তাবলী

যে সকল মানুষের উপর হজ্ব ফরয হয়েছে, তাদের বদলী হজ্বের জন্য যে সকল শর্তাবলী রয়েছে তা এখন উল্লেখ করা হচ্ছে:-

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৮- তাওয়াফে জিয়ারত, রমী ও বিদায়ী তাওয়াফ

তাওয়াফে জিয়ারতের ১০টি মাদানী ফুল

﴾১﴿ তাওয়াফে জিয়ারতকে তাওয়াফে ইফাজা বলে। এটা হজ্বের আরেকটি রুকন। এর সময় ১০ই জুলহিজ্জার দিন সুবহে সাদিক থেকে শুরু হয়। এর পূর্বে (তা আদায়) হতে পারেনা। এতে ৪ চক্কর ফরজ এটা (৪ চক্কর) ছাড়া তাওয়াফ হবেই না এবং হজ্ব হবে না, আর ৭ চক্কর পূর্ণ করা ওয়াজিব।
তাওয়াফে জিয়ারত, রমী ও বিদায়ী তাওয়াফ
﴾২﴿ তাওয়াফে জিয়ারত জিলহজ্জ মাসের দশ তারিখ করা উত্তম। সুতরাং প্রথমে জামরাতুল আকাবার রমী অতঃপর কোরবানী এবং এরপর হলক অথবা তাকছীর হতে অবসর হয়ে যাবেন। এখন উত্তম হল যে, কোরবানীর কিছু মাংস খেয়ে পায়ে হেঁটে মক্কা মুকাররমায় উপস্থিত হোন। আর ইহাও উত্তম যে, বাবুস সালাম দিয়ে মসজিদে হারাম শরীফে প্রবেশ করবেন। 
﴾৩﴿ (এর) উত্তম সময় তো ১০ তারিখ কিন্তু তিন দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাওয়াফে জিয়ারত করতে পারবেন। কেননা ১০ তারিখ খুব বেশী পরিমাণে ভীড় হয়ে থাকে। তাই নিজের জন্য যেভাবে যখন সহজ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাই খুব উপকারী। এভাবে اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ অনেক কষ্টদায়ক বস্তু এবং অনেক সময় অন্যদেরকে কষ্ট দেয়া, মহিলাদের সাথে (ভীড়ে) মিশে একাকার হয়ে যাওয়া, তাদের সাথে শরীর ঘর্ষণ হওয়া এবং নফস ও শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যাওয়া অনেক গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবেন।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৭- হাজীদের কুরবানী ও হলক করা

হজ্বের কোরবানীর ৭টি মাদানী ফুল

﴾১﴿ দশ তারিখে বড় শয়তানকে কংকর নিক্ষেপের পর কোরবানীর স্থানে তাশরীফ নিয়ে যাবেন এবং কোরবানী করবেন। ইহা ঐ কোরবানী নয়, যা ঈদুল আযহার সময় করা হয় বরং হজ্বের শোকরিয়া স্বরূপ ‘হজ্বে কিরানকারী’এবং ‘তামাত্তুকারীর’ উপর এটা ওয়াজিব, যদিও সে ফকির হোক, আর ‘হজ্জে ইফরাদকারীর’জন্য এই কোরবানী মুস্তাহাব যদিও সে ধনী হোক। 

হাজীদের কুরবানী ও হলক করা 
﴾২﴿ এখানেও প্রাণীর জন্য ঐ শর্তসমূহ প্রযোজ্য, যা ঈদুল আযহার কোরবানীর জন্য প্রযোজ্য। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১১৪০ পৃষ্ঠা) যেমন ছাগল (এর হুকুমের মধ্যে ছাগী, দুম্বা, দুম্বী এবং ভেড়া, ভেড়ী সব অন্তর্ভূক্ত) এক বৎসর বয়সী হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী হলে কোরবানী জায়েয হবে না। এক বছরের চাইতে বেশী বয়সী হলে জায়েয বরং উত্তম। হ্যাঁ তবে দুম্বা কিংবা ভেড়ার ছয় মাসের বাচ্চা যদি এতবড় হয় যে, দূর থেকে দেখতে এক বছর বয়সী মনে হয়, তাহলে তা দ্বারা কোরবানী জায়েয হবে। (দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ৫৩৩ পৃষ্ঠা) স্মরণ রাখবেন! সাধারণত ছয় মাসের দুম্বার কোরবানী জায়েয নয়। (জায়েয হওয়ার জন্য) তা এতটুকু মোটা তাজা ও উঁচু হওয়া জরুরী যে, দূর থেকে দেখতে যেন এক বছরের পশুর মত লাগে। যদি ৬ মাস নয় বরং এক বছর থেকে ১ দিন কম বয়সী দুম্বা অথবা ভেড়ার বাচ্চা যদি দূর থেকে ১ বছর বয়সীর মত না লাগে, তবে তা দ্বারা কোরবানী হবে না। 

পোস্ট শ্রেণি

অযু-গোসল-পবিত্রতা (12) আপডেট চলমান (25) আমাদের কথা ও অন্যান্য বিষয়াবলী (6) আমাদের প্রিয় নবী ﷺ (5) আরবি মাস ও ফযীলত (11) ইসলামী ইতিহাস ও শিক্ষনীয় ঘটনা (6) ইসলামী জীবন ও সুন্দর চরিত্র (4) ঈদ-কাযা-জানাযা-তারাবী-নফল ও অন্যান্য নামায (5) উত্তম আমল ও সাওয়াবের কাজ (4) কুরআন-তাফসীর ও হাদিস (16) কুরবানী (6) চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কথন (14) জিকির-দোআ-দুরূদ ও ফযীলত (8) নবী-সাহাবী ও আওলিয়াদের জীবনী (8) নামায (17) পর্দা ও লজ্জাশীলতা (16) ফয়যানে জুমা (3) বদ আমল ও গুনাহের কাজ (3) মওত-কবর-হাশর ও আযাব (12) মাসআলা-মাসাইল ও প্রশ্নোত্তর (15) মাসাইল (21) যাকাত-ফিতরা ও সদক্বাহ'র বিধান (1) রোযা/রমযানের বিধান ও ফযীলত (9) সুন্নাত ও আদব/ মাদানী ফুল (41) হজ্ব-ওমরাহ ও যিয়ারতে মদিনা (27)

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন