আপডেট
সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপণমুক্ত সাইট। শিখুন-জানুন বিরক্তিছাড়া।
বাংলা ভাষায় অলাভজনক বৃহত্তম ইসলামিক ওয়েবসাইট বানানোর প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী জীবন টিম। আসছে মোবাইল অ্যাপলিকেশন... সাইট www.islamijibon.net

সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭

পর্দা সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর: পর্দার মাসআলা (প্রথম পর্ব)

عورت (তথা মহিলা) এর শাব্দিক অর্থ

প্রশ্ন:- عورت (তথা মহিলা) এর শাব্দিক অর্থ কি?
উত্তর:- عورت (তথা মহিলা) শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো; “গোপন করার বস্তু”। আল্লাহ্ তাআলার মাহবুব, হুযুর পুরনূ রাসূলুল্লাহ্ صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: عورت ( তথা মহিলা), “মহিলা’ই” (অর্থাৎ গোপন করার বস্তু)। যখন সে বের হয় তখন তাকে শয়তান উঁকিমেরে দেখে।” (অর্থাৎ তাকে দেখা শয়তানের কাজ) (সুনানে তিরমিযী, ২য় খন্ড, ৩৯২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১১৭৬)

আজকালও কি পর্দা করা আবশ্যক?

প্রশ্ন:- এই যুগেও কি পর্দা করা আবশ্যক?
উত্তর:- জ্বী, হ্যাঁ! কিছু বিষয় যদি দৃষ্টির সামনে রাখা হয় তবে اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ পর্দার মাসয়ালা বুঝার ক্ষেত্রে সহজ হবে। ২২ পারা সূরা আহযাব এর ৩৩ নং আয়াতে পর্দার হুকুম দিতে গিয়ে আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন:

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَىٰ

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: এবং নিজেদের ঘরগুলোতে অবস্থান করো এবং বেপর্দা থেকো না যেমন পূর্ববর্তী জাহেলী যুগের পর্দাহীনতা; (পারা: ২২, সূরা: আহযাব, আয়াত: ৩৩)

খলিফায়ে আ’লা হযরত, সদরুল আফাযিল হযরত আল্লামা মাওলানা সায়্যিদ মুহাম্মদ নঈম উদ্দীন মুরাদাবাদী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এই আয়াতের টীকায় বলেন: পূর্বের অন্ধকার যুগ (জাহেলীয়্যতের যুগ)দ্বারা উদ্দেশ্য ইসলামের পূর্বের যুগ। সেই যুগে মহিলারা বেপর্দা বের হতো। নিজের সৌন্দর্য্যতা ও রূপ মাধুর্যকে (অর্থাৎ শরীরের সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যতা যেমন; বুকের উত্তান ইত্যাদি) প্রকাশ করতো। যেন পর-পুরুষেরা তা দেখে। এমন পোশাক পরিধান করতো যার দ্বারা শরীর পুরোপুরি আবৃত হতো না। (খাযায়িনুল ইরফান, ৬৭৩ পৃষ্ঠা)

আফসোস! অন্ধকার যুগের সেই পর্দাহীনতা ও নির্লজ্জতা বর্তমান যুগেও দেখা যাচ্ছে, নিঃসন্দেহে যেমনি ভাবে সেই যুগে পর্দা আবশ্যক ছিলো, তেমনি ভাবে বর্তমানেও আবশ্যক।

সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

তিন সাহসী ভাই (একটি অসাধারণ ইসলামীক সত্য ঘটনা)

হযরত আল্লামা আবুল ফারাজ আবদুর রহমান বিন জওযী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ উয়ূনুল হিকায়াতে বর্ণনা করেন: সিরিয়ার তিনজন ঘোড়সওয়ার সাহসী যুবক ভাই ইসলামী সৈন্যদের সাথে জিহাদে রওয়ানা হন। কিন্তু তাঁরা সৈন্যদের থেকে আলাদা হয়ে চলতেন। যতক্ষণ পর্যন্ত কাফেররা প্রথমে আক্রমণ না চালাত তাঁরা যুদ্ধে লিপ্ত হতেন না। একবার রোমদের একটি বড় সৈন্যদল মুসলমানদের উপর আক্রমণ চালাল এবং বেশ কিছু মুসলমানদের শহীদ করল ও অনেককে বন্দী করে ফেলল। তিন ভাই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, মুসলমানদের উপর একটি বড় মুসিবত নাযিল হয়েছে, আমাদের উচিত নিজেদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া। এ উদ্দেশ্যে তাঁরা সামনে অগ্রসর হলেন আর প্রাণে বেঁচে যাওয়া অবশিষ্ট মুসলমানদের বললেন: আপনারা আমাদের পিছনে চলে যান। এবং আমাদেরকে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে দিন। আল্লাহ্ চাইলে আমরাই আপনাদের জন্য যথেষ্ট। অতঃপর তাঁরা রোম সৈন্যদের উপর এমন আক্রমণ চালাল যে, রোম সৈন্যরা পিছু হটতে বাধ্য হল। রোম সম্রাট (তিন যুবক ভাইয়ের বাহাদুরী অবলোকন করছিল) নিজের একজন সেনাপতিকে বলল: যে ব্যক্তি এই তিনজন ভাইদের মধ্য হতে যে কোন একজনকে গ্রেফতার করে আনতে পারবে, আমি তাকে আমার নিকটতম পদ দান করব আর সেনাপতি নিয়োজিত করব। রোম সৈন্যরা এই ঘোষণা শোনার সাথে সাথে প্রচন্ড লড়াইয়ে নিয়োজিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তিন ভাইকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হল। রোম সম্রাট বলল: এই তিনজনকে গ্রেফতার করতে পারাই আমাদের জন্য সব চেয়ে বড় বিজয়। অতঃপর সে সেনাবাহিনীকে ফিরে আসার আদেশ দিল আর এ তিন ভাইকে নিজের সাথে রাজধানী কস্তান্তানিয়ায় নিয়ে আসল। এসে বলল: তোমরা যদি ইসলাম পরিত্যাগ কর, তা হলে আমি আমার কন্যাদের সাথে তোমাদের বিয়ে দিব আর ভবিষ্যৎ সাম্রাজ্যও তোমাদের হাতে ন্যস্ত করব। তিন ভাই ঈমানের উপর অবিচলতা প্রদর্শনপূর্বক তার এই প্রস্তাবনাকে নস্যাৎ করে দিল। তাঁরা সরকারে মদীনা, নবী করীম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কে আহ্বান করলেন। তাঁর صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। সম্রাট তার সভাসদের কাছে জিজ্ঞাসা করল: এরা কী বলছেন? সভাসদগণ জবাবে বলল: এঁরা তাঁদের নবীকে ডাকছেন। সম্রাট তিন সহোদরকে বলল: তোমরা যদি আমার কথা অমান্য কর, তা হলে আমি তিনটি কড়াইতে তেল গরম করে তোমাদের তিনজনকেই এক এক করে ঢেলে দেব।

হোসাইনী দুলহা

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! বিগত দিনগুলোতে আমরা তো কারবালার মহান শহীদদের স্মৃতিচারণ করেছি। আসুন! আমি আপনাদেরকে কারবালার হোসাইনী দুল্‌হার হৃদয়-বিদারক করুন ঘটনা শোনাই। যেমন; সদরুল আফাযিল হযরত আল্লামা মাওলানা সায়্যিদ মুহাম্মদ নঈম উদ্দীন মুবাদাবাদী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘সাওয়ানিহে কারবালায়’ উল্লেখ করেছেন : হোসাইনী দুল্‌হা সায়্যিদুনা হযরত ওহাব ইবনে আবদুল্লাহ কালবী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বনী কল্‌ব গোত্রের একজন সদাচারী ও চরিত্রবান যুবক ছিলেন। তারুণ্য, উচ্ছ্বলতা ও যৌবনকাল ছিল তার। বিয়ে করেছেন মাত্র সতের দিন হল। তখনও যৌবনের তারুণ্যঘন যুগল-জীবনের পূর্ণ স্বাদে বিভোর ছিলেন। এমতাবস্থায় শ্রদ্ধেয় আম্মাজান এসে উপস্থিত হলেন। তিনি ছিলেন বিধবা। যার একমাত্র অবলম্বন ও ঘরের উজ্জল প্রদিপ ছিলেন এই একটি মাত্র পুত্র সন্তানই। স্নেহময়ী মা কান্না জুড়ে দিলেন। পুত্র আশ্চর্য হয়ে মাকে জিজ্ঞাসা করল: প্রাণপ্রিয় মা! আপনি কান্না করছেন কেন? আমার মনে পড়ছে না যে, জীবনে কখনো আপনার অবাধ্য হয়েছি, আগামীতেও আমি এমন হতে পারি না। আপনার আনুগত্য ও মান্যতা আমার জন্য ফরয। আমি সারা জীবন আপনার অনুগত হয়েই থাকব। মা! আপনার মনে কিসের দুঃখ? কোন দুঃখে আপনি কাঁদছেন? হে আমার প্রিয় মা! আমি আপনার আদেশে নিজের জীবনও উৎসর্গ করতে রাজি আছি। আপনি চিন্তিত হবেন না।

রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ইমাম হোসাইন এর কারামত (৩)

ইয়াজিদের মর্মান্তিক মৃত্যু

হযরত সায়্যিদুনা হাসান বসরী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ থেকে মুরসাল ভাবে বর্ণিত আছে: حُبُّ الدُّنْيَا رَأْسُ كُلِّ خَطِيْئَةٍ অর্থাৎ দুনিয়ার ভালবাসাই সকল পাপের মূল। (আল জামেউস সাগীর লিস সুয়ূতী, ২২৩ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৬৬২, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ্, বৈরুত)

পাপাত্মা ইয়াজিদের মন সর্বদাই এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার ভালবাসায় মত্ত ছিল। তাই সে দুনিয়ার লোভ লালসায় উন্মাদ হয়ে রাজত্ব, আধিপত্য, যশ-খ্যাতীর ফাঁদে আটকা পড়েছিল। সে নিজের করুন পরিণতির কথা ভুলে গিয়ে ইমামে আলী মকাম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ ও তাঁর সঙ্গীদের নির্দয়ভাবে হত্যা করে তাঁদের রক্ত দ্বারা নিজের হাত রঞ্জিত করেছিল। যে নেতৃত্ব ও আধিপত্যের জন্য সে কারবালাতে জুলুম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের তান্ডবলীলা চালিয়েছিল, সে নেতৃত্ব আধিপত্যও বেশিদিন তার কাছে স্থায়ী হয়নি। বদ নসীব ইয়াজিদ মাত্র তিন বৎসর ছয়মাস ক্ষমতার আসনে বসে শাসনের নামে লাম্পট্য ও বদমায়েশি করে অবশেষে রবিউন নূর শরীফ, ৬৪ হিজরীতে শাম রাজ্যের হামস শহরে হুওয়ারিন অঞ্চলে ৩৯ বছর বয়সে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। (আল কামেল ফিত্ তারিখ, ৩য় খন্ড, ৪৬৪ পৃষ্ঠা, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ্, বৈরুত)
পাপাত্মা ইয়াজিদের মৃত্যুর একটি কারণ এটাও বলা হয়ে থাকে, সে একজন রোমান বংশোদ্ভূত যুবতী মহিলার প্রেমের ফাঁদে আটকা পড়েছিল। কিন্তু সে মহিলা তাকে মনে-প্রাণে ঘৃণা করত। একদিন আমোদ-প্রমোদের বাহানা করে সে মহিলা ইয়াজিদকে একাকী সুদূর এক মরুভূমিতে নিয়ে গেল। সে মরুভূমির ঠান্ডা ও শীতল আবহাওয়া ইয়াজিদকে ক্লান্ত ও অবসন্ন করে ফেলল। তাই সে মাতালের মত মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। আর মহিলাও এ সুযোগ হাতছাড়া করল না। “যে পাপীষ্ট নিমক হারাম তার নবীর প্রিয় দৌহিত্রের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করতে কুণ্ঠিত হয়নি, সে আমার প্রতি কতটুকু ওফাদার হতে পারে।” এ বলে সে যুবতী মহিলা তার ধারালো ছুরি দ্বারা ইয়াজিদের অপবিত্র শরীর টুকরো টুকরো করে তা মরুভূমিতে ফেলে চলে আসল। কয়েকদিন যাবৎ তার মৃতদেহ চিল কাকের খোরাকে পরিণত ছিলো। অবশেষে খবর পেয়ে তার অনুচরেরা সেখানে পৌঁছে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ একটি গর্তে মাটি চাপা দিয়ে চলে আসল। (আওরাকে গম, ৫৫০ পৃষ্ঠা)

ওহ তখত হে কিছ কবর মে ওহ তাজ কাঁহা হে
আয় খাক বাতা জুরে ইয়াজিদ আজ কাঁহা হে?

ইমাম হোসাইন এর কারামত (২)

মস্তক মোবারকের সমাধি যিয়ারত

হযরত সায়্যিদুনা আবদুল ফাত্তাহ্ বিন আবু বকর বিন আহমদ শাফেয়ী খালুতী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ তাঁর রচিত ‘নূরুল আইন’ রিসালাতে বর্ণনা করেন: শায়খুল ইসলাম শামসুদ্দিন লক্কানী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ যিনি তৎকালীন যুগে মালেকী মাযহাবের শিক্ষাগুরু ছিলেন,সর্বদা মাসহাদে হোসাইনীতে মস্তক মোবারকের যিয়ারতের জন্য গমন করতেন। তিনি বলতেন: হযরত ইমামে আলী মকাম, ইমাম হোসাইন رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর মস্তক মোবারক এখানে অবস্থিত। হযরত সায়্যিদুনা শায়খ শিহাব উদ্দীন হানাফী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ আমি ‘মাসহাদে হোসাইনী’ যিয়ারত করেছিলাম, কিন্তু আমার সন্দেহ জাগল সেখানে মস্তক মোবারক আছে কিনা? হঠাৎ আমার চোখে ঘুম চলে এল, আমি স্বপ্নে দেখলাম এক ব্যক্তি নকিবের আকৃতিতে মস্তক মোবারকের কাছ থেকে বের হয়ে হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর হুজরা মোবারকে গিয়ে উপস্থিত হলেন এবং হুযুর صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কে আরয করলেন: “ইয়া রাসূলাল্লাহ্ صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم!আহমদ বিন খালবী ও আবদুল ওয়াহ্হাব আপনার শাহজাদা ইমাম হোসাইন رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর মস্তক মোবারকের সমাধি যিয়ারত করেছেন। তখন নবী করীম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করলেন: “ اَللّٰهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْهُمَا وَاغْفِرْ لَهُمَا" অর্থাৎ- হে আল্লাহ্! তুমি তাঁরা উভয়ের যিয়ারত কবুল করো এবং তাদেরকে ক্ষমা করে দাও।”
হযরত সায়্যিদুনা শায়খ শিহাব উদ্দীন হানাফী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন; সেদিন থেকে আমি নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে, হযরত ইমামে আলী মকাম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর মস্তক মোবারক এখানেই বিদ্যমান আছেন। অতঃপর আমি মৃত্যু পর্যন্ত সে মস্তক মোবারকের যিয়ারত করা ত্যাগ করিনি। (শামে কারবালা, ২৪৭ পৃষ্ঠা)

উন কি পাকী কা খোদায়ী পাক করতা হে বয়ান
আয়ায়ে তাথহীর ছে জাহের হে শানে আহলে বাইত।

শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ইমাম হোসাইন এর কারামত (১)

এ রিসালা পাঠ করার ২১টি নিয়্যত

নবী করীম نِيَّةُ المُؤْمِنِ خَيْرٌ مِنْ عَمَلِه অর্থাৎ “মুসলমানের নিয়্যত তার আমলের চেয়ে উত্তম।” (তাবারানী, মুজামে কবীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৮৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৫৯৪২)

দুইটি মাদানী ফুল

  • ভাল নিয়্যত ব্যতীত কোন ভাল কাজের সাওয়াব অর্জিত হয় না।
  • ভাল নিয়্যত যত বেশি হবে, সাওয়াবও তত বেশি হবে।
(১) প্রত্যেকবার হামদ, 
(২) দরূদ শরীফ, 
(৩) তা’আউয়ূজ ও
(৪) তাসমিয়্যাহ দ্বারা রিসালাটি পাঠ করা শুরু করব। (এ পৃষ্ঠার উপরে প্রদত্ত আরবী ইবারতটুকু পাঠ করলে এ চারটি নিয়্যতের উপরই আমল হয়ে যাবে।) 
(৫) আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে রিসালাটি শুরু থেকে শেষ পযন্ত সম্পূর্ণ পাঠ করব, 
(৬) সামর্থ্য অনুযায়ী সম্ভব হলে ওযু সহকারে এবং, 
(৭) কিবলামুখী হয়েই পাঠ করব, 
(৮) কুরআনের আয়াত এবং
(৯) হাদীসে মোবারাকা মূল কিতাবের সাথে মিলিয়ে দেখব।

শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মুহাররম ও আশুরার দিনের ফযীলত ও রোযা

আশুরার দিনের ২৫টি বৈশিষ্ট্য

(১) ১০ই মুহাররামুল হারাম আশুরার দিন হযরত সায়্যিদুনা আদম ছফিউল্লাহ عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام এর তাওবা কবুল হয়েছিল, 
(২) সে দিনই আদম عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, 
(৩) সে দিনই আদম عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام কে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল, 
(৪) সেদিনই আরশ, 
(৫) কুরসী, 
(৬) আসমান, 
(৭) জমিন, 
(৮) সূর্য, 
(৯) চন্দ্র, 
(১০) নক্ষত্র ও 
(১১) জান্নাত সৃষ্টি করা হয়েছিল, 

বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বসন্তের প্রভাত: মিলাদুন্নবী (০২)

দা’ওয়াতে ইসলামী ও জশ্নে বিলাদতে মুস্তফা

কুরআন ও সুন্নাত প্রচারের বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক সংগঠন “দা’ওয়াতে ইসলামী”র জশনে বিলাদতে মুস্তফা صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উদযাপনে নিজেদের একটি নিজস্ব পন্থা রয়েছে। পৃথিবীর অগণিত দেশে দা’ওয়াতে ইসলামীর ব্যবস্থাপনায় ঈদে মিলাদুন্নবী صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم রাতে আজিমুশ্শান ইজতিমায়ে মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং পৃথিবীর সবচেয়ে বিশাল ইজতিমায়ে মিলাদ এর মাহফিল বাবুল মদীনা করাচীতে অনুষ্ঠিত হয়। তার বরকতের কথা কি বলব! এখানে অংশগ্রহণকারীরা জানি না কত সৌভাগ্যবানদের জীবনে মাদানী ইনকিলাব (পরিবর্তন) হয়েছে। এতদ্প্রসঙ্গে চারটি মাদানী বাহার আপনাদের সামনে পেশ করছি।

(১) পাপের চিকিৎসা মিলে গেল

একজন নবী প্রেমিকের কিছুটা এরূপ বর্ণনা যে: “ঈদে মিলাদুন্নবী” صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর রাতে বাবুল মদীনা করাচী ‘কাকরী গ্রাউন্ডে’ অনুষ্ঠিত ইজতিমায়ে মিলাদ (১৪২৬ হিঃ) এ আমার পরিচিত একজন প্রসিদ্ধ বেনামাযী মডার্ণ যুবক অংশগ্রহণ করে। বসন্তের সকালের (১২ই রবিউল আউয়াল) আগমণের সময় দুরূদ সালামের আওয়াজ এবং মারহাবা ইয়া মুস্তফা صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সুললিত চিৎকারে তার অন্তরের জগতে পরিবর্তন এসে গেল। সৎকাজের প্রতি মুহাব্বত এবং অসৎ কাজে ঘৃণা চলে আসল। তিনি সাথে সাথেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পাবন্দী ও দাঁড়ি রাখার নিয়্যত করলেন, আর বাস্তবিকই শেষ পর্যন্ত তিনি নামাযী ও দাঁড়িওয়ালা হয়ে গেলেন। এছাড়াও তার ভিতর এমন এক মন্দ স্বভাব ছিল, যা এখানে আলোচনা করা আমি ভাল মনে করছি না। ইজতিমায়ে মিলাদের বরকতে اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ তার ঐ মন্দ অভ্যাসও দূর হয়ে গেল। অন্যভাবে যদি বলতে চান তাহলে এভাবে বলতে হয়, ইজতিমায়ে মিলাদে অংশগ্রহণের বদৌলতে পাপীদের গুণাহের চিকিৎসা মিলে যায়।
মাংলো মাংলো উনকা গম মাংলো, চশমে রহমত নিগাহে করম মাংলো।
মাসিয়ত কি দাওয়া লা জারাম মাংলো, মাংনে কা মজা আজ কি রাত হে।

মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বসন্তের প্রভাত: ঈদে মিলাদুন্নবী

মাহে রবিউন্ নূর তথা রবিউল আউয়াল শরীফ আসতেই চতুর্দিকে বসন্তকাল আগমন করে। প্রিয় আক্বা, মক্কী মাদানী মুস্তফা এর আশিকদের অন্তরে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। বৃদ্ধ হোক কিংবা যুবক, প্রত্যেক প্রকৃত মুসলমান যেন অন্তরের মুখ দিয়ে অন্তরের ভাষায় বলে উঠে:-

নিছার তেরী চেহেল পেহেল পর হাজার ঈদে রবিউল আউয়াল,
সিওয়ায়ে ইবলিস কে জাহা মে সবহি তো খুশিয়া মানা রহে হে।

যখন সমগ্র বিশ্ব কুফরী, শিরক, পশুত্ব, বর্বরতার ঘোর অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল ঠিক তখনি ১২ই রবিউন নুর এর রাতে মক্কায়ে মোকাররমায় হযরত সায়্যিদাতুনা মা আমিনা رضى الله عنها এর পবিত্র ঘর থেকে এমন এক নূরের জ্যোতি বিচ্ছুরিত হল, যা সমগ্র বিশ্ব জগতকে আলোকিত করে দিল। ভুলুণ্ঠিত মানবতা যার আগমনের প্রতীক্ষায় ব্যাকুল ছিল, তাজেদারে মদীনা, রহমতের খযিনা, আল্লাহর প্রিয় মাহবুব صلى الله عليه وسلم সমগ্র বিশ্ব জগতের জন্য রহমত হয়ে এই পৃথিবীতে শুভাগমণ করলেন।

মোবারক হো কেহ খাতামুল মুরসালিন তাশরিফ লে আয়ে,
জনাবে রাহমাতুল্লিল আলামিন তাশরিফ লে আয়ে।

শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ইমাম আহমদ রযার সংক্ষিপ্ত জীবনী

শুভ জন্ম

আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, ওলীয়ে নেয়ামত, আযিমুল বারকাত, আযিমুল মারতাবাত, পারওয়ানায়ে শময়ে রিসালাত, মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত, হামিয়ে সুন্নাত, মাহিয়ে বিদ্আত, আলিমে শরীয়াত, পীরে তরীকত, বায়িছে খাইর ও বরকত, হযরত আল্লামা মাওলানা আল হাজ্ব, আল হাফিজ, আল ক্বারী, শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খান رحمة الله عليه ১০ ই শাওয়াল ১২৭২ হিজরী, ১৪ই জুন ১৮৫৬ ইং রোজ শনিবার যোহরের সময় বেরেলী শহরের যাচুলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জন্ম বৎসরের হিসাবে তাঁর ঐতিহাসিক নাম ‘আল মুখতার’ (১২৭২ হিঃ) (হায়াতে আ’লা হযরত, ১ম খন্ড, ৫৮ পৃষ্ঠা, মাকতাবাতুল মদীনা, বাবুল মদীনা, করাচী)

আ‘লা হযরতের জন্ম সাল

আমার আক্বা আ’লা হযরত رحمة الله عليه নিজের জন্ম সাল ২৮ পারার সূরাতুল মুজাদালার ২২ নং আয়াত থেকে বের করেন। এই আয়াতে করীমার ‘ইলমে আবজাদ’ মোতাবেক সংখ্যা ১২৭২ আর হিজরী সাল মোতাবেক এটাই তাঁর জন্ম সাল। যেমন: মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত “মলফুজাতে আ’লা হযরত” এর ৪১০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে: জন্মের তারিখ সমূহের আলোচনা ছিল এবং এর উপর (সায়্যিদী আ’লা হযরত বলেন: আল্লাহ তাআলার জন্য সকল প্রশংসা আমার জন্ম তারিখ এই আয়াতে করীমায় বিদ্যমান: 
أُولَٰئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُم بِرُوحٍ مِّنْهُ :আয়াত
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ- “এরা ঐসব লোক যাদের অন্তরগুলোতে আল্লাহ ঈমান অংকিত করে দিয়েছেন এবং তাঁর নিকট থেকে রূহ দ্বারা তাঁদের সাহায্য করেছেন।”

তাঁর নাম মোবারক ছিল মুহাম্মদ। কিন্তু তাঁর পিতামহ তাঁকে আহমদ রযা বলে ডাকতেন বিধায় তিনি ঐ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেন।

মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

২৮ টি কুফরী বাক্য

অভাব-অনটন, রোগ-শোক, মানসিক কষ্ট এবং আপন জনের মৃত্যুতে অনেক লোক আঘাতের আতিশয্যে কিংবা উত্তেজনায় এসে আল্লাহর পানাহ্! কুফরী বাক্য বলে থাকে। আল্লাহ তাআলার বিরুদ্ধে আপত্তি করা, তাঁকে অত্যাচারী, অভাবী, পর-মুখাপেক্ষী অথবা অপারগ মনে করা কিংবা বলা, এসবই প্রকাশ্য কুফরী বাক্য। স্মরণ রাখবেন! শরীয়াতের অনুমতি ছাড়া জেনে বুঝে যে প্রকাশ্য কুফরী বাক্য বলে এবং অর্থ জানা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি তাতে হ্যাঁ বলে বরং এর পক্ষে যে ব্যক্তি মাথা নেড়ে সায় দেয়, সেও কাফির হয়ে যায়। এর বিবাহ-বন্ধন ও বাইয়াত ভঙ্গ হয়ে যায় এবং জীবনের সমস্ত নেক আমল ধ্বংস হয়ে যায়। যদি হজ্ব আদায় করে থাকে, তবে তাও নষ্ট হয়ে যায়। এমতাবস্থায় ঈমান নবায়নের পর (অর্থাৎ পুনরায় নতুন ভাবে মুসলমান হওয়ার পর) সামর্থ্যবান হওয়া সাপেক্ষে নতুন সূত্রে হজ্ব ফরয হবে।

বিপদের সময় বলা হয়, এমন কতিপয় কুফরী বাক্যের উদাহরণ

(১) আপত্তি করে বলা: ঐ ব্যক্তি লোকদের সাথে যা কিছুই করুক, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য পূর্ণ (FULL) স্বাধীনতা রয়েছে।

(২) এইভাবে আপত্তি করে বলা: কখনো আমরা অমুকের সাথে সামান্য কিছু করলে আল্লাহ তৎক্ষনাৎ আমাদের পাকড়াও করে ফেলেন।

(৩) আল্লাহ সর্বদা আমার শত্রুদের সহায়তা করেছেন। 

(৪) সর্বদা সবকিছু আল্লাহর সমীপে সমর্পণ করেও দেখেছি, কিছুই হয়না। 

(৫) আল্লাহ তাআলা আমার ভাগ্যকে এখনো পর্যন্ত সামান্য ভাল করলেন না। 

কাফন-দাফনের নিয়মাবলী

পুরুষের সুন্নাত মোতাবেক কাফন

পুরুষের জন্য সুন্নাত মোতাবেক  কাফন তিনটি। যথা-    
(১)      লিফাফাহ    (চাদর)    ,     
(২)     ইযার (তাহবন্দ) ও
(৩) কামীস (জামা) ।

মহিলাদের সুন্নাত মোতাবেক কাফন

মহিলাদের      জন্য     সুন্নাত     মোতাবেক     কাফন  পাঁচটি।   যথা-  
(১)   লিফাফাহ,
 (২)  ইযার,  
(৩) কামীস,
(৪) সীনাবন্ধ ও
(৫) ওড়না।

হিজড়া অর্থাৎ মেয়েলি স্বভাবের পুরুষদেরকেও মহিলাদের     অনুরূপ       পাঁচটি      কাফন     পরাতে  হবে।

রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মাদানী অসিয়তনামা (কাফন-দাফনের আহকাম সম্বলিত)

اَلْحَمْدُ  لِلّٰہِ  عَزَّوَجَلَّ  এখন  ফযরের  নামাযের  পর  মসজিদে   নববী  শরীফে    عَلٰی  صَاحِبِہَا    الصَّلٰوۃُ  وَالسَّلَام       বসে  “মদীনা      মুনাওয়ারা        থেকে  চল্লিশখানা    অসিয়ত”   লিখার   সৌভাগ্য    অর্জন করছি। আফসোস! শত আফসোস! আজ আমার মদীনা   মুনাওয়ারাতে  উপস্থিতির  শেষ   সকাল। সূর্য  প্রিয়  মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم এর রওজা মোবারকে সালাম পেশ  করার  জন্য হাজির  হতে   চলেছে।  আহ!   আজ  রাতেই যদি জান্নাতুল বাক্বীতে সমাহিত হওয়ার কোন ব্যবস্থা না   হয়,   তবে    (আগামীকালই)   মদীনা    শরীফ ত্যাগ করতে  হবে। চোখ  অশ্রুসিক্ত, মন  অস্থির হয়ে আছে। হায়!

আফসোস   চন্দ  ঘড়িয়া  তয়্যবা  কি   রাহ  গেয়ী হে, 
দিল মে জুদায়ী কা গম তুফান মাচা রাহা হে।

আহ!   মন   ব্যথা   বেদনায়   নিমজ্জিত।   মদীনার  বিচ্ছেদের     হৃদয়     বিদারক    চিন্তা    আপাদমস্তক বেদনার প্রতিচ্ছবি বানিয়ে  দিয়েছে। এমন মনে হচ্ছে     যেন    মুখের    হাসি   কেউ   ছিনিয়ে    নিয়ে গেছে। আহ!  শীঘ্রই মদীনা ছেড়ে যেতে  হবে। তখন   মন   ভেঙ্গে    যাবে।   আহ!     মদীনা   থেকে স্বদেশের    উদ্দেশ্যে    রাওয়ানা   হওয়ার   মূহুর্তটি এমনি বেদনা দায়ক  হয়ে থাকে যে, যেন কোন দুগ্ধপোষ্য   শিশুকে   তার    মায়ের   কোল    থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আর সে খুবই আফসোস করে! কেঁদে কেঁদে বারবার মায়ের   দিকে ফিরে দেখছে,      হয়ত      মা       পুনরায়      তাকে       ডেকে নিবেন.....স্নেহ  ভরে  তাকে   কোলে  তুলে নিয়ে নিজের     বুকে    জড়িয়ে    ধরবে।     আর       শ্লোক শুনিয়ে     আপন     মায়াভরা     কোলে     মধুর     ঘুম  পাড়াবেন। হায়!

ইছালে সাওয়াবের পদ্ধতি

ইছালে     সাওয়াব     বা     কারো     জন্য     সাওয়াব  পৌঁছিয়ে    দেবার    জন্য       অন্তরে    নিয়্যত     করে নেওয়াই    যথেষ্ট।   মনে   করুন;আপনি    কাউকে  একটি টাকা দান করলেন কিংবা একবার দরূদ শরীফ    পাঠ    করলেন    অথবা    কাউকে    একটি  সুন্নাত     শিখালেন     নতুবা     কাউকে     ইন্ফিরাদি  কৌশিশের   মাধ্যমে   নেকীর     দাওয়াত    দিলেন অথবা সুন্নাতে ভরা বয়ান করলেন।  মোট কথা; যে কোন নেক কাজ করলেন, আপনি মনে মনে এভাবে  নিয়্যত  করে  নিন:  আমি  এই  মাত্র   যে  সুন্নাতটি       শিক্ষা       দিলাম,        সেটির        সাওয়াব তাজেদারে  মদীনা,  নবী  করীম    صَلَّی  اللّٰہُ    تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দরবারে পৌঁছে যাক। তবে اِنْ   شَآءَ     اللّٰہ   عَزَّوَجَلَّ     সাওয়াব   পৌঁছে   যাবে। তাছাড়া  আরো  যাদের  জন্য  নিয়্যত  করবেন,  তাদের কাছেও পৌঁছে যাবে। মনে মনে  নিয়্যত করার সাথে সাথে  মুখে উচ্চারণ করে নেওয়াও উত্তম। কেননা,  এটি সাহাবীرَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی عَنْہُ থেকে প্রমাণিত   রয়েছে।   যেমন;হযরত সা’আদ رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی عَنْہُ এর হাদীস। তিনি কূপ খনন করে  বলেছিলেন  :  هٰذِهٖ    لِأُمِّ  سَعد    ‘অর্থাৎ  এই কূপটি সা’আদের মায়ের জন্য’।

ফাতিহা ও ইছালে সাওয়াব কি?

মৃত আত্মীয়-স্বজনদেরকে স্বপ্নে দেখার উপায়


হযরত   আল্লামা   আবু   আবদুল্লাহ্   মুহাম্মদ   বিন  আহমদ মালেকী  কুরতুবী  رَحْمَۃُ اللّٰہِ  تَعَالٰی عَلَیْہِ বর্ণনা  করেন:  হযরত  সায়্যিদুনা     হাসান  বসরী رَحْمَۃُ   اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِএর খিদমতে হাজির   হয়ে এক     মহিলা   আবেদন   করলো,   আমার   যুবতী মেয়ে  মারা  গেছে।   এমন  কোন    আমল   আছে  কি? যা করলে আমি তাকে স্বপ্নে  দেখতে পাব। তিনি     رَحْمَۃُ    اللّٰہِ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ    মহিলাটিকে    ঐ আমল     বলে    দিলেন।    মহিলাটি    তার   মরহুমা কন্যাটিকে    স্বপ্নে    তো    দেখলেন,    কিন্তু    এমন  অবস্থায়     দেখলেন     যে,       তার      সারা     শরীরে  আলকাতরার    পোষাক      ছিলো।      তার    ঘাড়ে শিকল,    আর    পায়ে     লোহার    বেড়ি      ছিলো। ভয়ানক এই দৃশ্য দেখে মহিলাটি কেঁপে   উঠল! পরের  দিন   সে  এসে   হযরত  সায়্যিদুনা  হাসান বসরী  رَحْمَۃُ   اللّٰہِ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   কে   স্বপ্নের    কথা  বলল। স্বপ্নটি শুনে  তিনি رَحْمَۃُ اللّٰہِ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ অত্যন্ত   চিন্তিত    হয়ে   গেলেন।   কিছু    দিন     পর হযরত সায়্যিদুনা  হাসান  বসরী رَحْمَۃُ اللّٰہِ  تَعَالٰی عَلَیْہِ   এক   মেয়েকে   স্বপ্নে   দেখলেন।     মেয়েটি জান্নাতে একটি আসনে মাথায় তাজ   পরে বসে  আছে।   তিনি   رَحْمَۃُ   اللّٰہِ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  কে  দেখে মেয়েটি  বললো:আমি   হলাম    সেই  মহিলাটিরই কন্যা,    যিনি   আপনাকে    আমার   অবস্থার   কথা  বলেছিলেন।      তিনি     رَحْمَۃُ     اللّٰہِ      تَعَالٰی       عَلَیْہِ বললেন:     মহিলাটির     কথা      মত       কন্যা     তো আজাবে লিপ্ত  ছিলো।   তার এত বড় পরিবর্তন কীভাবে      হলো?        মরহুমা      মেয়েটি      বললো: কবরস্থানের পাশ দিয়ে একটি লোক যাচ্ছিলেন। লোকটি নবী করীম, রউফুর রহীম, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم     র উপর  দরূদ  শরীফ পাঠ করেছিলেন। তাঁর সেই দরূদ শরীফ পাঠের   বরকতে     আল্লাহ    তাআলা    ৫৬০    জন কবরবাসীর        উপর         থেকে       আযাব       উঠিয়ে নিয়েছেন।  (আত-তাযকিরাতু  ফি আহওয়ালিল  মাওতা ওয়া   উমুরিল আখিরাতে, ১ম খন্ড, ৭৪ পৃষ্ঠা)

পোস্ট শ্রেণি

অযু-গোসল-পবিত্রতা (12) আপডেট চলমান (25) আমাদের কথা ও অন্যান্য বিষয়াবলী (6) আমাদের প্রিয় নবী ﷺ (5) আরবি মাস ও ফযীলত (11) ইসলামী ইতিহাস ও শিক্ষনীয় ঘটনা (6) ইসলামী জীবন ও সুন্দর চরিত্র (4) ঈদ-কাযা-জানাযা-তারাবী-নফল ও অন্যান্য নামায (5) উত্তম আমল ও সাওয়াবের কাজ (4) কুরআন-তাফসীর ও হাদিস (16) কুরবানী (6) চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কথন (14) জিকির-দোআ-দুরূদ ও ফযীলত (8) নবী-সাহাবী ও আওলিয়াদের জীবনী (8) নামায (17) পর্দা ও লজ্জাশীলতা (16) ফয়যানে জুমা (3) বদ আমল ও গুনাহের কাজ (3) মওত-কবর-হাশর ও আযাব (12) মাসআলা-মাসাইল ও প্রশ্নোত্তর (15) মাসাইল (21) যাকাত-ফিতরা ও সদক্বাহ'র বিধান (1) রোযা/রমযানের বিধান ও ফযীলত (9) সুন্নাত ও আদব/ মাদানী ফুল (41) হজ্ব-ওমরাহ ও যিয়ারতে মদিনা (27)

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন