দাইয়্যুসের সংজ্ঞা
প্রশ্ন:- দাইয্যুস কাকে বলে?
উত্তর:- যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও নিজের স্ত্রী ও মাহরিমদেরকে বেপর্দা হওয়া থেকে বারণ করে না, সেই “দাইয়্যুস”। প্রিয় নবী, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ! ইরশাদ করেন: “তিন ব্যক্তি কখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে না; দাইয়্যুস এবং পুরুষ সূলভ আকৃতি ধারণকারী মহিলা আর মদ্য পানে অভ্যস্থ ব্যক্তি।” (মাজমাউয যাওয়ায়িদ, ৪র্থ খন্ড, ৫৯৯ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৭৭২২) পুরুষের ন্যায় চুল কর্তনকারী এবং পুরুষ সূলভ পোশাক পরিধানকারীরা বর্ণিত হাদীসে পাক থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। ছোট মেয়েদেরকে ছেলেদের মতো চুল কাটানো এবং তাদেরকে ছেলে সূলভ কাপড় এবং ক্যাপ ইত্যাদি পরিধান করানো ব্যক্তিরাও সতর্কতা অবলম্বন করুন, যেন ছোট মেয়েরা এই সময় থেকেই নিজেকে পুরুষ থেকে আলাদা মনে করে আর বুদ্ধি হওয়ার পর এবং বালিগা (প্রাপ্ত বয়স্কা) হওয়ার পর যেন নিজের অভ্যাস ও চালচলনকে শরীয়াতানুযায়ী পরিচালিত করতে কষ্টের সম্মুখীন হতে না হয়। হাদীসে পাকে এটা বলা হয়েছে যে: “কখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে না” তা দ্বারা দীর্ঘদিন যাবত জান্নাতে প্রবেশ হওয়া থেকে বঞ্চিত থাকাই উদ্দেশ্য। কেননা, যে মুসলমান নিজের গুনাহের কারণে مَعَاذَ الله عَزَّوَجَل ( (আল্লাহর পানাহ!) জাহান্নামে যাবে, সে অবশেষে জান্নাতে অবশ্যই প্রবেশ করবে। কিন্তু এটা স্মরণ রাখবেন! এক মুহুর্তের কোটি ভাগের এক ভাগও জাহান্নামের আগুন সহ্য করা যাবে না। তাই আমাদেরকে প্রত্যেক গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য সদা সর্বদা চেষ্টা ও জান্নাতুল ফিরদাউসে বিনা হিসাবে প্রবেশের দোয়া করা উচিত। দাইয্যুসের ব্যাপারে হযরত আল্লামা আলাউদ্দিন হাসকাফী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “দাইয়্যুস সেই ব্যক্তি, যে নিজের স্ত্রী অথবা অন্য কোন মাহারিমের প্রতি যথাযথ শরয়ী বিধান প্রয়োগ না।” (দুররে মুখতার, ৬ষ্ট খন্ড, ১১৩ পৃষ্ঠা) জানা গেলো, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও নিজের স্ত্রী, মা, বোন এবং যুবতি মেয়ে ইত্যাদিকে অলি-গলিতে, বাজার সমূহে, শপিং সেন্টারগুলোতে এবং পার্ক সমূহে বেপর্দা ভাবে ঘুরে বেড়াতে, অপরিচিত প্রতিবেশীদের, নামাহরাম আত্মীয়দের, না-মাহরাম চাকর, পাহারাদার এবং ড্রাইভারের সাথে সংকোচহীন এবং বেপর্দা হওয়া থেকে বাধা প্রদান করে না, তারাই দাইয়্যুস। আর তারা জান্নাত থেকে বঞ্চিত এবং জাহান্নামের ভাগীদার।
আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দীদে দ্বীন ও মিল্লাত, মাওলানা শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “দাইয়্যুস ব্যক্তি খুবই মারাত্মক পর্যায়ের ফাসিক এবং প্রকাশ্য ফাসিকের (ফাসিকে মুলিন) পিছনে নামায আদায় করা মাকরূহে তাহরিমী। তাকে ইমাম বানানো বৈধ নয় এবং তার পিছনে নামায আদায় করা গুনাহ এবং আদায় করলে পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া সংকলিত, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৫৮৩ পৃষ্ঠা)
বেপর্দা কাল জু আয়েঁ নযর চান্দ বিবিয়াঁ
আকবর জমিঁ মে গেয়রতে কওমী সে গাড় গেয়া।
পুছা উন ছে আপকা পর্দা ওহ কেয়া হুয়া?
কেহনে লাগে “ওহ আকল পে মরদোঁ কি পড় গেয়া।”
যদি মহিলারা অবাধ্য হয় তবে...?
প্রশ্ন:- যদি পুরুষের আপ্রাণ চেষ্টার পরও মহিলারা বেপর্দা হওয়া থেকে বিরত না হয়, তবেও কি সে দাইয়্যুস হবে?
উত্তর:- যদি পুরুষ বা অভিভাবক নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী নিষেধ করে এবং বেপর্দা থেকে বিরত রাখার শরয়ী বিধানাবলী পূর্ণ করে, এবং এতদসত্ত্বেও সে না মানে, তবে এমতাবস্থায় তার উপর না কোন অপবাদ দেয়া হবে আর না সে দাইয়্যুস বলে গন্য হবে। সুতরাং যতটুকু সম্ভব বেপর্দা ইত্যাদি বিষয় থেকে মহিলাদেরকে বারণ করা উচিত। কিন্তু তা অতিসাবধানতার সাথে, এমন যেন না হয় যে, আপনি আপনার স্ত্রী, মা, বোনের উপর এমন ভাবে কঠোরতা করে বসলেন, যে কারণে ঘরের সব শান্তি নিঃশেষ হয়ে যায়।
পাতানো (মুখে ডাকা) ভাই-বোনের সাথেও কি পর্দা রয়েছে?
প্রশ্ন:- পাতানো (মুখে ডাকা) বাবা অথবা ভাই এবং সন্তান ইত্যাদির সাথেও কি ইসলামী বোনদের পর্দা রয়েছে?
উত্তর:- জ্বী, হ্যাঁ! তাদের সাথেও পর্দা রয়েছে। কেননা, কাউকে বাবা, ভাই অথবা সন্তান বানিয়ে নেয়াতে সে সত্যিকার বাবা, ভাই বা সন্তান হয়ে যায় না। তাদের সাথে তো বিবাহও জায়েয। আমাদের সমাজে পাতানো সম্পর্কের প্রচলন অহরহ রয়েছে। কোন পুরুষ কাউকে “মা” বানিয়ে বসে আছে, কোন মেয়ে কাউকে “ভাই” বানিয়ে বসে আছে, তো কোন “মহিলা” কাউকে “সন্তান” বানিয়ে বসে আছে, কেউ কোন যুবতি মেয়ের পাতানো “চাচা”। অপরদিকে কেউ পাতানো “বাবা” আর তারপর নিঃসংকোচে বেপর্দা হওয়া এবং মিশ্র দাওয়াতে গুনাহ ও পাপের সেই বন্যা বয়ে যায়। (আল্লাহ্ তাআলা আমাদেরকে হিফাযত করুক!) বিপরীত লিঙ্গের সাথে পাতানো সম্পর্ক স্থাপনকারী এবং কারীনিদের আল্লাহ্ তাআলাকে ভয় করা উচিত। নিশ্চয় শয়তান কাউকে জানিয়ে আক্রমণ করে না। হাদীসে পাকে এসেছে; “দুনিয়া এবং মহিলাদের (সংস্পর্শ) থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, বনি ইসরাঈলে সর্ব প্রথম ফিতনা মহিলাদের কারণে হয়েছিলো।” (সহীহ মুসলিম, ১৪৬৫ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২৭৪২)
পালক সন্তানের হুকুম
প্রশ্ন:- কারো বাচ্চাকে কোলে নেয়া যাবে কি না?
উত্তর:- নিতে পারবে, কিন্তু যদি সে না মাহরাম হয়, তবে যখন থেকে মহিলাদের সম্পর্কে বুঝতে শুরু করবে, তখন তার সাথে পর্দা করতে হবে। ফুকাহায়ে কিরাম رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِمْ বলেন: “মুরহিক (এমন যুবক যারা বালিগ হওয়ার নিকটবর্তী) এর বয়স হলো ১২ বছর।” (রদ্দুল মুহতার, ৪র্থ খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা)
শিশু কন্যাকে কোলে নেয়া কেমন?
প্রশ্ন:- কারো শিশু কন্যাকে কোলে নেয়া কেমন? যদি তাকে মেয়ে বানিয়ে নেয়া হয় তবে কি যুবতি হওয়ার পর মুখে ডাকা পিতার সাথে পর্দা করার মাসয়ালা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?
উত্তর:- যদি শিশু কন্যাকে নিতেই হয় তবে সহজতা এর মধ্যেই যে, মাহারামা অর্থাৎ আপন ভাতিজী অথবা ভাগ্নিকে নিন, যেন দুধের সম্পর্ক স্থাপন না হলেও বালিগা হওয়ার পর একত্রে থাকতে পারেন, কিন্তু বালিগা হওয়ার পর পরিবারের না-মাহরাম যেমন; আপন চাচা, মামা যারা তাকে লালিত পালিত করেছে, তাদের বালিগ সন্তানের সাথে (যখন সেখানে দুধভাই না হয়) পর্দা করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। যদি পালিত মেয়ে না-মাহরাম হয় তবে বালিগা হওয়া বরং বালিগার নিকটবর্তী হলেও তাকে পালনকারী না-মাহরাম পিতা নিজের সাথে রাখবেন না। যেমনিভাবে; আমার আক্বা আ’লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ “ফতোওয়ায়ে রযবীয়া” এর ১৩তম খন্ডের ৪১২ পৃষ্ঠায় বলেন: “মেয়ে বালিগা বা বালিগার নিকটবর্তী হলে, যতক্ষণ পর্যন্ত বিয়ে না হয় তাকে অবশ্যই তার পিতার নিকট থাকা উচিত, এমনকি ৯ বছরের পর আপন মা থেকে মেয়েকে নিয়ে নিবে এবং সে তার পিতার নিকট থাকবে। কিন্তু অপরিচিত কারো নিকট থাকবে না (অর্থাৎ যাদের সাথে সবসময়ের জন্য বিয়ে হারাম নয়) তার নিকট থাকা কোন ভাবেই বৈধ হতে পারে না। শুধু মেয়ে বানিয়ে নেয়াতে মেয়ে হয়ে যায় না।” ফুকাহায়ে কিরাম رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِمْ বলেন: “মুশথাত (এমন যুবতী যারা বালিগা হওয়ার নিকটবর্তী) এর বয়স হলো কমপক্ষে ৯ বছর।” (রদ্দুল মুহতার, ৪র্থ খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা)
পালিত পুত্রের সাথে পর্দা জায়েয হওয়ার পদ্ধতি
প্রশ্ন:- শৈশবকাল থেকে পালিত পুত্র যখন বুঝতে শুরু করে তখন তার সাথে পর্দা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়। এমন কোন পদ্ধতি বলে দিন যেন পালিত পুত্রের সাথে যুবক হওয়ার পরও পর্দা ওয়াজিব না হয়?
উত্তর:- তার পদ্ধতি হলো, যে ছেলে বা মেয়েকে পালক নিবেন তার সাথে দুধের সম্পর্ক গড়ে নিন। কিন্তু দুধের সম্পর্ক গড়তে এ বিষয়ে খুবই মনোযোগ রাখা আবশ্যক যে, যদি কন্যা সন্তানকে পালক নিতে হয় তবে স্বামীর পক্ষ থেকে যেন সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। যেমন; স্বামীর বোন অথবা ভাতিজী বা ভাগ্নি যেন সেই মেয়েকে দুধ পান করিয়ে দেয় এবং যদি ছেলে সন্তানকে পালক নিতে হয় তবে স্ত্রী তার সাথে নিজের পক্ষ থেকে দুধের সম্পর্ক সৃষ্টি করবে যেমন; স্ত্রী নিজে অথবা তার বোন বা মেয়ে কিংবা বোনের মেয়ে বা ভাইয়ের মেয়ে যেন সেই সন্তানকে নিজের দুধ পান করিয়ে দেয়। এভাবে উভয় পদ্ধতিতে স্ত্রী এবং স্বামী দু’জনেরই পর্দার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। স্মরণ রাখবেন! যখনই দুধের সম্পর্ক সৃষ্টি করবেন, তখন বাচ্চাকে হিজরী সনের হিসাবে দুই বছরের মধ্যে পান করাবেন। এর পর দুধ পান করানো নাজায়েয। বরং মায়ের জন্য তার আপন সন্তানকেও দুই বছরের পর দুধ পান করানো নাজায়েয। কিন্তু যদি আড়াই বছরের ভিতরেও কোন বাচ্চা দুধ পান করে নেয়, তবুও দুধের সম্পর্ক স্থাপন হয়ে যাবে।
ছেলে কখন বালিগ হয়?
প্রশ্ন:- ছেলে কখন বালিগ হয়?
উত্তর:- হিজরী সনের হিসাব অনুযায়ী ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে যখনই (সহবাস ও হস্ত মৈথুন ইত্যাদির মাধ্যমে) বীর্যপাত হলে অথবা স্বপ্নদোষ হলে কিংবা তার সাথে সহবাসের কারণে মহিলা গর্ভবতী হয়ে গেলে। তৎক্ষনাৎ সে বালিগ হয়ে গেলো এবং তার উপর গোসল ফরয হয়ে গেলো। যদি এসব কিছু না হয় তবে হিজরী সন অনুযায়ী ১৫ বছর পূর্ণ হতেই বালিগ হয়ে যাবে। (দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ২৫৯ পৃষ্ঠা, সংকলিত)
মেয়ে কখন বালিগা হয়?
প্রশ্ন:- মেয়ে কখন বালিগা হয়?
উত্তর:- হিজরী সনের হিসাব অনুযায়ী ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে যদি স্বপ্নদোষ হয় বা ঋতুস্রাব চলে আসে অথবা গর্ভবতী হয়ে যায়, তবে সে বালিগা হয়ে যাবে। তা না হলে হিজরী সন অনুযায়ী ১৫ বছর পূর্ণ হতেই বালিগা হয়ে যাবে। (দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ২৫৯ পৃষ্ঠা, সংকলিত)
কত বছরের ছেলের সাথে পর্দা করতে হবে?
প্রশ্ন:- কত বছরের ছেলের সাথে পর্দা করতে হবে?
উত্তর:- ১৮ পারায় সূরা নূর এর ৩১নং আয়াতে রয়েছে:
أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: অথবা ওই সব বালক (এর নিকট) যারা নারীদের গোপনাঙ্গ সম্বন্ধে অবগত নয়। (পারা: ১৮, সূরা: নূর, আয়াত: ৩১)
এই আয়াতে করীমার টীকায় প্রখ্যাত মুফাস্সীর হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “অর্থাৎ সেই ছোট বাচ্চা যে এখনও বালিগ হওয়ার নিকবর্তী হয়নি (তার সাথে পর্দা নেই) জানা গেলো, মুরাহিক (এমন বালক যারা বালিগের নিকটবর্তী) ছেলের সাথে পর্দা রয়েছে।” (নূরুল ইরফান, ৫৬৪ পৃষ্ঠা) ফুকাহায়ে কিরামগণ رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِمْ বলেন: “মুশথাত (এমন যুবতী যারা বালিগা হওয়ার নিকটবর্তী) এর সর্ব নিম্ন বয়স হলো ৯ বছর এবং মুরাহিক (এমন বালক যারা বালিগ হওয়ার নিকটবর্তী) এর ১২ বছর।” (রদ্দুল মুহতার ৪র্থ খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা) আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দীদে দ্বীন ও মিল্লাত, মাওলানা শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “৯ বছরের কম মেয়েদের পর্দা আবশ্যক নয়। আর যখন ১৫ বছর হয়ে যাবে তখন সকল না-মাহারিমের সাথে পর্দা ওয়াজিব এবং ৯ থেকে ১৫ বছরের মধ্যবর্তী সময়ে যদি বালিগার আলামত প্রকাশ পায় তখন পর্দা ওয়াজিব। আর যদি প্রকাশ না পায় তবে মুস্তাহাব, বিশেষ করে ১২ বছরের পর অনেক কঠোরভাবে জোর দেয়া হয়েছে। কেননা, এ সময়টা বালিগা হওয়ার নিকটবর্তী ও উত্তেজনা পূর্ণ হওয়ার (অর্থাৎ ১২ বছর বয়সের মেয়ের বালিগা হওয়ার এবং যৌন উত্তেজনা পূর্ণ হওয়ার) সময়।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২৩তম খন্ড, ৬৩৯ পৃষ্ঠা)
বিধর্মী মহিলার সাথে পর্দা
প্রশ্ন:- ইসলামী বোনদেরকে কি বিধর্মী মহিলা থেকে পর্দা করতে হবে?
উত্তর:- জ্বী, হ্যাঁ! বিধর্মী মহিলার সাথেও সেভাবে পর্দা করতে হবে যেভাবে পর-পুরুষের সাথে পর্দা করবে। বিধর্মী মহিলার সাথে পর্দার বিস্তারিত বিবরণ হলো, ইসলামী বোনদের বিধর্মী মহিলাদের সাথে সেই ভাবে পর্দা করতে হবে, যেভাবে একজন পর-পুরুষের সাথে পর্দা রয়েছে অর্থাৎ সঠিক মতানুযায়ী মহিলার জন্য চেহারা এবং হাতের তালুদ্বয় আর গোড়ালির নিচের পা’কে প্রকাশ্য সৌন্দর্য্য ধরা হয় বাকী সম্পূর্ণ দেহকে পর-পুরুষ থেকে গোপন রাখা আবশ্যক এবং বর্তমান যুগের উলামাদের মতে: “পর পুরুষ থেকে এই তিনটি অঙ্গও লুকানো উচিত।” মহিলাদের জন্য পর-পুরুষের সাথে পর্দার আহকাম ১৮ পারা সূরা নূর এর ৩১ নং আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। এই আয়াতে মোবারাকায় মুসলমান মহিলাদের কাফের মহিলাদের সাথে পর্দা করার বিধানও বর্ণিত হয়েছে যে, مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ ব্যতিত অর্থাৎ যতটুকু নিজে নিজে প্রকাশ পায়। কেননা, একজন মুসলমান মহিলার পুরো শরীর যেভাবে পর-পুরুষের জন্য গোপন রাখার জিনিস, তেমনি ভাবে বিধর্মী মহিলার জন্য গোপন রাখার জিনিস। যেমন; ব্যতিক্রম স্থান সমূহে أَوْ نِسَائِهِنَّ (অর্থাৎ বা নিজের দ্বীনের মহিলাগন) থেকে প্রকাশ হয়, যেমনিভাবে, আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন:
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ (৩১)
আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, ওলীয়ে নেমত, আযীমুল বারাকাত, আযীমুল মারতাবাত, পরওয়ানায়ে শময়ে রিসালাত, মুজাদ্দীদে দ্বীন ও মিল্লাত, হামিয়ে সুন্নাত, মাহিয়ে বিদআত, আলীমে শরীয়াত, পীরে তরিকত, বাইছে খাইর ও বারাকাত, হযরত আল্লামা মাওলানা আলহাজ্ব আল হাফিয আল কারী শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খান رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এর বিশ্ব বিখ্যাত কোরআনের অনুবাদগ্রন্থ “কানযুল ঈমান”এ এর অনুবাদ এভাবে করেন:
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: “এবং মসুলমান নারীদেরকে নির্দেশ দিন যেন তারা নিজেদের দৃষ্টিগুলোকে কিছুটা নিচু রাখে এবং নিজেদের সতীত্বকে হিফাযত করে আর নিজেদের সাজ-সজ্জাকে প্রদর্শন না করে, কিন্তু যতটুকু স্বাভাবিক ভাবেই প্রকাশ পায় এবং উড়না যেন আপন গ্রীবা ও বক্ষদেশের উপর ঝুলানো থাকে আর আপন সাজ-সজ্জাকে যেন প্রকাশ না করে, কিন্তু নিজেদের স্বামীর নিকট অথবা আপন পিতা অথবা স্বামীর পিতা, অথবা আপন পুত্রগণ অথবা স্বামীর পুত্রগণ, অথবা আপন ভাই, অথবা আপন ভ্রাতুষ্পুত্রগণ অথবা আপন ভাগিনাগণ অথবা স্বধর্মীয় নারীগণ অথবা নিজেদের হাতের মালিকানাধীন দাসীগণ অথবা যৌন কামনাহীন চাকর অথবা ওই সব বালক (এর নিকট) যারা নারীদের গোপাঙ্গ সম্বন্ধে অবগত নয়; এবং যেন মাটির উপর সজোরে পদক্ষেপণ না করে, যাতে জানা যায় তাদের গোপন সাজ-সজ্জা এবং আল্লাহর দিকে তাওবা করো, হে মুসলমানগণ, তোমরা সকলেই! এ আশায় যে, তোমরা সফলতা অর্জন করবে।”(পারা: ১৮, সূরা: নূর, আয়াত: ৩১)
হযরত সদরুল আফাযীল সায়্যিদুনা মাওলানা মুহাম্মদ নঈম উদ্দিন মুরাদাবাদী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ খাযাঈনুল ইরফানে আয়াতের এই অংশ أَوْ نِسَائِهِنَّ (অর্থাৎ বা নিজের দ্বীনের মহিলাগন) এর টীকায় বলেন: “আমীরুল মু’মিনীন হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুকে আযম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ হযরত সায়্যিদুনা আবু উবায়দা বিন র্জারাহ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ কে চিঠি লিখেন: কাফের আহলে কিতাবের মহিলাদেরকে মুসলমান মহিলাদের সাথে গোসলখানায় প্রবেশ করা থেকে বারণ করুন।” এ থেকে জানা গেলো, মুসলমান মহিলাদের জন্য বিধর্মী মহিলার সামনে নিজের দেহ প্রকাশ করা জায়েয নেই।
আ’লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এর ফতোওয়া
আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দীদে দ্বীন ও মিল্লাত, মাওলানা শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “শরীয়াতের হুকুম হলো, বিধর্মী মহিলার সাথে মুসলমান মহিলার এমনিভাবে পর্দা ওয়াজিব যেভাবে পর-পুরুষের সাথে। অর্থাৎ মাথার চুলের কোন অংশ অথবা বাহুদ্বয় অথবা হাতের কব্জি কিংবা গলা থেকে পায়ের গোড়ালির নিচ পর্যন্ত শরীরের কোন অংশ মুসলমান মহিলার জন্য বিধর্মী মহিলার সামনে প্রকাশ করা জায়েয নেই।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২৩তম খন্ড, ৬৯২ পৃষ্ঠা)
পাপিষ্ঠা মহিলা থেকে পর্দা
প্রশ্ন:- পাপিষ্ঠা মহিলার থেকেও কি পর্দা করা আবশ্যক?
উত্তর:- না, কবিরা গুনাহকারী ও বারংবার সগিরা গুনাহকারী যেমন; বেনামাযী, পিতা-মাতাকে কষ্ট দানকারী, গীবতকারী, চুগলখোরকে পাপিষ্ঠা বলা হয়। পক্ষান্তরে যেনাকারীনী, দুশ্চরিত্রা এবং অশ্লীল মহিলাদের পাপিষ্ঠার পাশাপাশি ফাজিরা (দুশ্চরিত্রা)ও বলা হয়। পাপিষ্ঠার সাথে পর্দা নেই, কিন্তু ফাজিরার (দুশ্চরিত্রবান মহিলা)থেকে সাবধানতা বশতঃ পর্দা করার বিধান রয়েছে। তার সংস্পর্শ থেকে বেঁচে থাকা অত্যন্ত জরুরী। কেননা, মন্দ সংস্পর্শ মন্দ প্রতিদান দেয়। ফাজিরা মহিলার সাথে মেলামেশার ব্যাপারে শরীয়াতের বিধান বর্ণনা করতে গিয়ে আমার আ’লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “জ্বী, হ্যাঁ! তাদের সাথে পর্দা করার বিধান সাবধানতা বশতঃ, কিন্তু এই সাবধানতা আবশ্যক। যখন দেখবে যে, এবার কোন মন্দ প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে, তৎক্ষণাৎ তার সঙ্গ ছেড়ে দিন এবং তার সঙ্গকে আগুন মনে করুন। আসল কথা হলো, মন্দ প্রভাব পড়ার সময় তেমন বুঝা যায় না, কিন্তু যখন পড়ে যায় তখন সাবধানতার মনমানসিকতা তৈরী করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। সুতরাং নিরাপত্তাই হলো; ফাজিরা (দুশ্চরিত্রা মহিলা) থেকে দূরে থাকা।” (আল্লাহ্ তাআলার সাহায্যক্রমে সামর্থ্য অর্জিত হয়।) (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২২তম খন্ড, ২০৪ পৃষ্ঠা)
মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ মছনবী শরীফে বলেন:
তা তুওয়ানী দূর শাওয়ায ইয়ারে বদ, ইয়ারে বদ বদতর বুওয়াদ আয মারে বদ।
মারে বদ তানহা হামেঁ বারজাঁ যান্দ, ইয়ারে বদ বরজানে ও বর ঈমান যান্দ।
অর্থাৎ যতটুকু সম্ভব মন্দ বন্ধু থেকে দূরে থাকো। কেননা, খারাপ সাথী বিষাক্ত সাপের চেয়েও অধিক ভয়ঙ্কর ও ক্ষতিকর। এজন্য যে, ভয়ঙ্কর সাপ তো শুধু প্রাণ অর্থাৎ শরীরকে কষ্ট অথবা ক্ষতিগ্রস্থ করে। কিন্তু খারাপ সাথী প্রাণ এবং ঈমান উভয়টি নষ্ট করে দেয়। (গুলদাস্তায়ে মছনবী, ৯৪ পৃষ্ঠা)
আমার জীবনের লক্ষ্য
ইসলামী বোনেরা! খারাপ সংস্পর্শের মধ্যে শুধু ধ্বংস আর ধ্বংস, আর সৎ সংস্পর্শ নেক লোকদের সাথে ভালবাসা ও সম্পর্ক গড়াতে সবদিকেই নিরাপত্তা রয়েছে। দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশের কথা কি বলব! আখিরাতের ধ্বংসের পথের পথিক কত ইসলামী বোনকে জান্নাতের পথের পথিক বানিয়ে দিয়েছে। এমনই একটি মাদানী বাহার শুনুন: বাবুল মদীনা করাচীর একজন ইসলামী বোনের বর্ণনা কিছুটা এরকম;
আমি দুনিয়ার রং-তামাশায় মগ্ন হয়ে আখিরাতের পরীক্ষা সম্পর্কে উদাসীন হয়ে জীবন অতিবাহিত করছিলাম। একদিন দা’ওয়াতে ইসলামীর সুবাসিত মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত একজন ইসলামী বোন আমাকে ইনফিরাদী কৌশিশ করে আন্তর্জাতিক মারকায ফয়যানে মদীনার নিচ তলায় অনুষ্ঠিতব্য ইসলামী বোনদের সুন্নাতে ভরা ইজতিমায় অংশগ্রহণ করার দাওয়াত দিলো, তার স্নেহময়তার ফলে আমার সুন্নাতে ভরা ইজতিমায় অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য অর্জন হলো। সেখানে মাদানী ইনআমাত সম্পর্কিত বয়ান চলছিল। আমি গভীর মনযোগ সহকারে বয়ান শুনতে লাগলাম। বয়ানটি অনেক হৃদয়কাড়া ছিলো। আমার উপর তার প্রভাব বিস্তার করলো, আর আমার শরীরের প্রতিটি লোম খোদাভীরুতায় কেঁপে উঠল। বয়ানের শেষে আমি নিয়্যত করে নিলাম যে, اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ ভবিষ্যতে সারা জীবন মাদানী ইনআমাতের উপর আমল করেই কাটাব। অতঃপর মাদানী ইনআমাতের উপর আমল করার বরকতে মাদানী বোরকা পরিধান করাও নসীব হলো। এখন আমি আমার জীবনকে এই মাদানী উদ্দেশ্যের প্রেক্ষিতে কাটানোর ওয়াদা করে নিয়েছি যে; “আমাকে নিজের এবং সারা দুনিয়ার মানুষের সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ নিজের সংশোধনের জন্য মাদানী ইনআমাতের উপর আমল এবং সারা দুনিয়ার মানুষের সংশোধনের জন্য ঘরের মাহরাম পুরুষদেরকে মাদানী কাফেলায় সফর করাতে হবে।
দে জযবা “মাদানী ইনআমাত” কা তু, করম বেহরে শাহে করব ও বালা হো।
করম হো দা’ওয়াতে ইসলামী পর ইয়ে, শরীক ইসমে হার এক ছোটা বড়া হো।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
৮৮৩টি ইজতিমা
ইসলামী বোনেরা! এখনতো আপনারা সেই দিনের মাদানী বাহার শ্রবণ করলেন, যখন দা’ওয়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক মাদানী মারকাযে ইসলামী বোনদের সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমা অনুষ্ঠিত হতো। আর এখন মাদানী মারকায প্রতি রবিবার দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠিতব্য এই এক ইজতিমাকে বর্ণনা লিখাকালীন সময়ে প্রায় ৩৭ স্থানে বন্টন করে দিয়েছে। যেভাবে খাতামুল মুরসালীন, শফীউল মুযনিবীন, রাহমাতুল্লিল আলামীন صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর যত আশিকা বৃদ্ধি পেতে থাকবে اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ বন্টনের ধারাবাহিকতাও তত বাড়তে থাকবে। অন্যান্য স্থান ব্যতিত اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ প্রত্যেক বুধবার দুপুর বেলায় বাবুল মদীনা করাচীতে যেলী পর্যায়েও এ বর্ণনা লিখাকালীন সময়ে প্রায় ৮৮৩টি স্থানে সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
মাদানী ইনআমাত কার জন্য কতটি?
এই ফিতনা ফ্যাসাদের যুগে সহজভাবে নেকী করার ও গুনাহ থেকে বাঁচার নিয়মাবলী সম্বলিত শরীয়াত ও তরিকতের সমন্বিত সমষ্টি “মাদানী ইনআমাত” প্রশ্নাবলী আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইসলামী ভাইদের জন্য ৭২টি, ইসলামী বোনদের জন্য ৬৩টি, ছাত্রদের জন্য ৯২টি, ছাত্রীদের জন্য ৮৩টি, মাদানী মুন্না ও মুন্নিদের জন্য ৪০টি এমনকি বিশেষ ইসলামী ভাইদের (অর্থাৎ বোবা, বধির) জন্য ২৭টি মাদানী ইনআমাত। অসংখ্য ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোন এবং ছাত্র মাদানী ইনআমাত অনুযায়ী আমল করে প্রতিদিন শোয়ার পূর্বে ফিক্রে মদীনা করার দ্বারা (অর্থাৎ নিজের আমলের হিসাব করে) মাদানী ইনআমাতের পকেট সাইজের রিসালায় দেয়া খালি ঘর পূরণ করে। এই মাদানী ইনআমাতগুলোকে আন্তরিকতার সাথে আপন করার পর নেককার হওয়ার এবং গুনাহ থেকে বাঁচার পথে বাধা বিপত্তি আল্লাহ্ তাআলার দয়ায় অধিকাংশ দূর হয়ে যায়। আর এর বরকতে اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ সুন্নাতের অনুসরণ, গুনাহের প্রতি ঘৃণা এবং ঈমান হিফাযতের মনমানসিকতা সৃষ্টি হয়। সবার উচিৎ যে, সৎ চরিত্রের অধিকারী মুসলমান হওয়ার জন্য মাকতাবাতুল মদীনার যেকোন শাখা থেকে মাদানী ইনআমাতের রিসালা সংগ্রহ করা এবং প্রতিদিন ফিক্রে মদীনা (অর্থাৎ নিজের আমলের হিসাব) করার মাধ্যমে এতে দেয়া খালি ঘরগুলো পূরণ করা। আর প্রত্যেক মাদানী মাসের প্রথম তারিখে নিজ এলাকার যিম্মাদারের নিকট জমা করার অভ্যাস গড়ে তোলা।
ওলী আপনা বানা তু উস কো রব্বে লাম ইয়াযাল,
মাদানী ইনআমাত পর করতা রহে জু ভি আমল।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
মাদানী ইনআমাতের উপর আমলকারীদের জন্য মহান সুসংবাদ
মাদানী ইনআমাতের রিসালা পূরণকারীরা যে কিরূপ সৌভাগ্যবান তার অনুমান এই মাদানী বাহার থেকে করুন। হায়দারাবাদ (বাবুল ইসলাম সিন্ধু প্রদেশ) এর এক ইসলামী ভাইয়ের কিছুটা এরকম শপথকৃত বর্ণনা: ১৪২৬ হিজরীর রজবুল মুরাজ্জব মাসের একরাতে আমার প্রিয় নবী, হুযুর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর যিয়ারতের সৌভাগ্য অর্জন হয়। ঠোঁট মোবারক নড়তে লাগল এবং রহমতের ফুল ঝড়তে লাগল, আর প্রিয় বাক্যগুলো কিছুটা এরূপ উচ্চারিত হলো: “যে এই মাসে প্রতিদিন মাদানী ইনআমাত অনুযায়ী ফিক্রে মদীনা করবে আল্লাহ্ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন।”
“মাদানী ইনআমাত” কি ভি মারহাবা কিয়া বাত হে,
কুরবে হক কে তালিবুঁ কে ওয়াসেতে সওগাত হে।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
--------
লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত ৩৪৪ পৃষ্ঠা সম্বলিত “পর্দা সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর“ নামক কিতাবের ১-১০ নং পৃষ্ঠা হতে সংগৃহীত। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই কিতাবটি অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন। অন্যকে উপহার দিন।
যারা মোবাইলে (পিডিএফ) কিতাবটি পড়তে চান তারা ফ্রি ডাউনলোড করুন ।
পর্দা বিষয়ক আরো পোষ্ট- প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব, তৃতীয় পর্ব, চতুর্থ পর্ব, ষষ্ঠ পর্ব, সপ্তম পর্ব, অষ্টম পর্ব, নবম পর্ব, দশম পর্ব, একাদশ পর্ব, দ্বাদশ পর্ব, ত্রয়োদশ পর্ব,
মাদানী চ্যানেল দেখতে থাকুন