﴾১﴿ ইসলামী বোনেরা হায়জ ও নেফাস কালে দরসও দিতে পারবেন, বয়ানও করতে পারবেন। ইসলামী কিতাব স্পর্শ করাতেও কোন বাধাঁ নেই। তবে কুরআন শরীফে হাত, আঙ্গুলের মাথা কিংবা শরীরের কোন অংশ লাগানো নিষেধ ও হারাম। তাছাড়া কোন কাগজে বা চিরকুটে যদি কুরআন শরীফের আয়াত লিখিত থাকে এবং অন্য কিছু লেখাও পাশাপাশি না থাকে, তা হলে সেই ধরণের কাগজের সামনে-পিছনে কোণায় বা কোন অংশেই স্পর্শ করার অনুমতি নেই।
﴾২﴿ হায়েজ ও নেফাস অবস্থায় পবিত্র কুরআন কিংবা পবিত্র কুরআনের কোন আয়াত পাঠ করা ও স্পর্শ করা উভয়টি হারাম। পবিত্র কুরআনের বাংলা, ইংরেজী, ফার্সী, উর্দু কিংবা যে কোন ভাষায় অনুদিত অংশ পাঠ করা ও স্পর্শ করাও স্বয়ং কুরআন পাঠ করা ও স্পর্শ করারই সমতুল্য। (বাহারে শরীয়াত, ২য় খন্ড, ৪৯, ১০১ পৃষ্ঠা)
﴾৩﴿ কুরআন শরীফ যদি জুযদানে মোড়ানো থাকে, তাহলে সেই জুযদান স্পর্শ করাতে কোন বাধাঁ নেই। অনুরূপ রুমাল ইত্যাদি এমন যে কোন কাপড় দিয়ে স্পর্শ করাতেও কোন বাধাঁ নেই, যা নিজের পরিধানেরও নয়, কুরআন শরীফটিরও নয়। জামার আস্তিন দিয়ে, ওড়নার আঁচল দিয়ে এমনকি কোন চাদরের এক প্রান্ত যদি (কাঁধের) উপর থাকে, সেক্ষেত্রে অপর প্রান্ত দিয়ে স্পর্শ করা হারাম। কেননা, এগুলো ব্যক্তিটির পরিধানের বস্ত্র হিসাবেই গণ্য। (বাহারে শরীয়াত, ২য় খন্ড, ৪৮ পৃষ্ঠা)
﴾৪﴿ কেউ যদি দোআর নিয়্যতে কিংবা বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে কুরআন শরীফ পাঠ করে যেমন, ‘ بِسۡمِ اللہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ , শোকরিয়া আদায়ের নিয়্যতে অথবা হাঁছির পরে ‘اَلۡحَمۡدُ لِلہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ’ বলে, বা কোন মুসিবতের সংবাদ শুনে ‘اِنَّ لِله واِنَّ اِلَيْهِ رَاجِعُوْن’ বলে, আল্লাহর প্রশংসার নিয়্যতে সম্পূর্ণ সূরা ফাতিহা কিংবা আয়াতুল কুরছী পাঠ করে অথবা সূরা হাশরের শেষের তিনটি আয়াত ‘هُوَ اللهُ الَّذِيْ لَآ اِلٰهَ اِلَّا هُو’ থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠ করে, সেক্ষেত্রে কুরআন শরীফ পাঠ করার নিয়্যত না থাকা সাপেক্ষে কোন বাধাঁ নেই। এমনি রূপে ‘ক্বুল’ শব্দটি বাদ দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করার উদ্দেশ্যে তিনটি ‘ক্বুল’ই পাঠ করা যাবে। তবে ‘ক্বুল’ শব্দ ব্যবহার করে পাঠ করা যাবে না। যদিও তা আল্লাহর প্রশংসার উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকে। তখন সেটি কুরআন পাঠ হিসাবেই গণ্য হয়ে যাবে। সেখানে নিয়্যতের দোহাই দেওয়ার কোন সুযোগ থাকবে না। (বাহারে শরীয়াত, ২য় খন্ড, ৪৮ পৃষ্ঠা, মাকতাবাতুল মদীনা, বাবুল মদীনা, করাচী)
﴾৫﴿ কুরআন শরীফ ব্যতীত যে কোন জিকির-আজকার, দরূদ-সালাম, নাত শরীফ পাঠ করা, আজানের জবাব দেওয়া ইত্যাদিতে কোনই বাধাঁ নেই। জিকিরের হালকাতেও যোগদান করতে পারবেন। বরং জিকির করাতেও পারবেন। কিন্তু এসব কিছু অযু সহকারে কিংবা অন্ততঃ কুলি করে হলেও পাঠ করা উত্তম। অযু বা কুলি না করে পড়াতেও কোন অসুবিধা নেই।
﴾৬﴿ এই কথাটি বিশেষ করে মনে রাখবেন যে, (হায়জ ও নেফাসের সময়কালে) নামাজ ও রোজা উভয়ই হারাম। (বাহারে শরীয়াত, ২য় খন্ড, ১০২ পৃষ্ঠা, আলমগিরী, ১ম খন্ড, ৩৮ পৃষ্ঠা)
﴾৭﴿ ভদ্রতা রক্ষার খাতিরে হলেও এমন অবস্থায় কখনো নামাজ পড়বেন না। কেননা, ফুকাহায়ে কেরাম رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِمْ এমন পর্যন্ত বলেছেন যে: জেনে বুঝে শরীয়াত সম্মত কোন ওজর ব্যতিরেকে অযু না থাকা অবস্থায় নামাজ পড়া কুফরী, যদি সেটিকে জায়েয বলে মনে করে কিংবা ঠাট্টা মূলক ভাবে করে। (মিনাহুর রওজ লিল কারী, ৪৬৮ পৃষ্ঠা, দারুল বাশায়িরিল ইসলামিয়্যাহ্, বৈরুত)
﴾৮﴿ হায়জ ও নেফাসের সময়কালের নামাজগুলোর কাজা দিতে হবে না। অবশ্য পবিত্র রমজানের রোজাগুলোর কাজা দেওয়া ফরজ। (বাহারে শরীয়ত, ২য় খন্ড, ১০২ পৃষ্ঠা, দুররে মুখতার, ১ম খন্ড, ৫৩২ পৃষ্ঠা) যত দিন পর্যন্ত কাজা রোজা নিজের যিম্মায় বাকি থাকবে, তত দিন পর্যন্ত নফল রোজা কবুল হওয়ার আশা করা যাবে না। এই বিধানটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত বাহারে শরীয়াত, দ্বিতীয় খন্ডের ৯১ থেকে ১০৯ পৃষ্ঠা পর্যন্ত অধ্যয়ন করার জন্য সকল ইসলামী বোনদের প্রতি কেবল আবেদনই করা হচ্ছে না বরং কঠোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
تُوْبُوْا اِلَى الله! اَسْتَغْفِرُ الله
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
--------
লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা “মুহাম্মদ ইলয়াস আত্তার” কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত ৩২ পৃষ্ঠা সম্বলিত "কারবালার রক্তিম দৃশ্য" নামক রিসালা হতে সংগৃহীত। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই রিসালাটি অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন। অন্যকে উপহার দিন।
যারা মোবাইলে (পিডিএফ) রিসালাটি পড়তে চান তারা ফ্রি ডাউনলোড করুন ।
ইসলামিক বাংলা বইয়ের লিংক এক সাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন
মাদানী চ্যানেল দেখতে থাকুন
ভাল পোস্ট
উত্তরমুছুন