মাদানী আকা ﷺ এর ক্ষমা প্রদর্শনের অনুপম দৃষ্টান্ত
হযরত সায়্যিদুনা আনাসرَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: একদা
আমি নবী করীম, রউফুর
রহীম
صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর
সাথে কোথাও যাচ্ছিলাম,আর
তিনি
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم একটি
নজরানি চাদর পরিধান করেছিলেন
যার আঁচল মোটা ও
অমসৃন ছিল। হঠাৎ
এক বেদুঈন (অর্থাৎ আরবের গ্রাম্য
লোক)
তাঁর صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّ চাদর
মোবারক ধরে এমন জোরে
টান দিল যার ফলে
রাসুলে করীম صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর গর্দান
মোবারকে চাদরের আঁচলের আঁচড়
পড়ে গিয়েছিল। সে
বেদুঈন বলল: আল্লাহ্ তাআলার
যে সম্পদ আপনার নিকট
আছে, আপনি আদেশ দিন
যাতে তা থেকে কিছু আমিও পাই।
রহমতে আলম صَلَّی
اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তার দিকে ফিরলেন এবং
মুচকি হাসলেন। অতঃপর
তাকে কিছু মাল দেয়ার
জন্য আদেশ দিলেন।
(সহীহ বুখারী, ২য় খন্ড, ৩৫৯
পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩১৪৯)
হার
খতা পর মেরি চশম
পুশী,
হার তলব পর কি বারিশ,
মুঝ
গুনাহ্গার পর কিছ কদর
হে,
মেহেরবা তাজেদারে মদীনা ﷺ
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আপনার দেখলেন তো! মাদানী
আকা, হুযুর পুরনূর
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বেদুঈনের সাথে কি উত্তম
আচরণ করলেন! প্রিয় নবী
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর প্রেমিকগণ!
চাই কেউ আপনার উপর যতই অত্যাচার করুক, যতই মনে কষ্ট দিক!
ক্ষমা ও মাজর্নাপূর্ণ আচরণ করুন এবং তার সাথে ভালবাসাপূর্ণ
আচরণ করার চেষ্টা করুন।
হিসাব নিকাশ সহজ হওয়ার তিনটি উপায়
হযরত
সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা رَضِىَ
اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ
করেছেন: “তিনটি বিষয় যার
মধ্যে থাকবে, কিয়ামতের দিন
আল্লাহ্ তাআলা তার হিসাব
অতি সহজভাবে নিবেন এবং আপন রহমত দ্বারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ
করাবেন।” সাহাবায়ে
কিরামগণ عَلَيْهِمُ الرِّضْوَان আরয করলেন:
ইয়া রাসূলাল্লাহ্ صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ
وَسَلَّم ঐ
বিষয়গুলো কি কি? ইরশাদ
করলেন: “(১) যে তোমাকে
বঞ্চিত করে,
তুমি তাকে
দান কর, আর (২)
যে তোমার
সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তুমি তার সাথে সম্পর্ক অটুট রাখ, এবং
(৩) যে তোমার উপর
অত্যাচার করে, তুমি তাকে
ক্ষমা করে দাও।”
(আল মুজামুল আওসাত লিত তাবারানী,
৪র্থ খন্ড, ১৮ পৃষ্ঠা,
হাদীস নং -৫০৬৪)
জান্নাতের মহল
হযরত সায়্যিদুনা উবাই
বিন কাব رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ থেকে বর্ণিত,
রাসুলে করীম, রউফুর রহীম
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন:“যার এটা পছন্দ
যে, জান্নাতে তার জন্য প্রাসাদ
নির্মাণ করা হোক
এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি
করা হোক, তার উচিত,
যে তার উপর জুলুম
করে সে যেন তাকে
ক্ষমা করে দেয়, আর
যে তাকে বঞ্চিত করে
সে যেন তাকে দান
করে এবং যে তার
সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, সে
যেন তার সাথে সম্পর্ক
অটুট রাখে।” য(আল
মুস্তাদরাক লিল হাকিম, ৩য়
খন্ড, ১২ পৃষ্ঠা, হাদীস
নং- ৩২১৫)
ক্ষমা করলে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়
আল্লাহর নবী, রাসুলে আরবী, হুযুর
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ
করেছেন: “সদকা করার কারণে
সম্পদ কমে যায় না,
আর বান্দা কারো অপরাধ
ক্ষমা করলে, আল্লাহ্ তাআলা
তার (ক্ষমাকারীর) সম্মান বৃদ্ধি করবেন এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তাআলার জন্য বিনয়
অবলম্বন করে, আল্লাহ তাআলা
তাকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করবেন।” (সহীহ
মুসলিম, ১৩৯৭ পৃষ্ঠা, হাদীস
নং- ২৫৮৮)
সম্মানিত কে?
হযরত
সায়্যিদুনা মুসা কলিমুল্লাহ عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام আরজ করলেন:
হে মহান আল্লাহ্! তোমার
কাছে কোন ধরনের
বান্দা অধিক সম্মানিত? ইরশাদ
করলেন: যে প্রতিশোধ নিতে
সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও ক্ষমা
করে দেয় । (শুয়াবুল
ঈমান, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৩১৯
পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৮৩২৭)
যে ক্ষমা করে না তাকে ক্ষমা করা হবে না
হযরত সায়্যিদুনা জরীর
رَضِىَ
اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ থেকে
বণির্ত; ছরকারে দো আলম, নূরে মুজাসসাম, নবী করীম صَلَّی
اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন:
“যে দয়া করে না
তার উপর দয়া করা
হবে না, আর যে
ক্ষমা করে না তাকে
ক্ষমা করা হবে না।” (মুসনাদে
ইমাম আহমদ, ৭ম খন্ড,
৭১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৯২৬৪)
ইহকাল ও পরকালের সর্বোত্তম চরিত্র
হযরত সায়্যিদুনা ওকবা
বিন আমের رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি
রাসূলে করীম صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সাক্ষাতের
সৌভাগ্য অর্জন করলাম, তখন কালবিলম্ব না করে তৎক্ষণাৎ হুযুর
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর
নূরানী হাত মোবারক ধরে
ফেললাম এবং তিনি صَلَّی
اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم দ্রুত আমার হাত ধরলেন।
অতঃপর ইরশাদ
করলেন: “হে ওকবা! ইহকাল
ও পরকালের সর্বোত্তম চরিত্র হচ্ছে; তুমি
তার সাথে সৎভাব রাখবে যে তোমাকে পরিত্যাগ করে, আর যে
তোমার উপর জুলুম করে
তুমি তাকে ক্ষমা করে
দিবে, আর যে ব্যক্তি
জীবিকায় প্রশস্ততা এবং দীঘার্য়ু কামনা
করে সে যেন আপন
আত্মীয়স্বজনের সাথে উত্তম ব্যবহার
করে।” (আল
মুস্তাদারিক লিল হাকিম, ৫ম
খন্ড, ২২৪ পৃষ্ঠা, হাদীস
নং- ৭৩৬৭)
ক্ষমা করো, ক্ষমা প্রাপ্ত হও
প্রিয়
নবী, রাসুলে আরবী صَلَّی
اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন:
“তোমরা দয়া করো, তোমাদের
উপর দয়া করা হবে
এবং ক্ষমা করার অভ্যাস
গড়ে তোল, আল্লাহ্ তাআলা
তোমাদের ক্ষমা করবেন।” (মুসনাদে
ইমাম আহমদ, ২য় খন্ড,
৬৮২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৭০৬২)
হাম
নে খতা মে নাকি
তুম নে আতা মে
নাকি,
কোয়ি
কমি সারওয়ারা তুম পে করোড়ো
দরূদ।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
মার্জনাকারীদের বিনা হিসাবে ক্ষমা
হযরত
সায়্যিদুনা আনাস رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ থেকে বর্ণিত,
হুজুর পুর নূর صَلَّی
اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন:
“কিয়ামতের দিন ঘোষণা করা
হবে; যে ব্যক্তির প্রতিদান
আল্লাহ্ তাআলার বধান্যতার দায়িত্বে
রয়েছে সে
যেন উঠে
আর জান্নাতে চলে
যায়। জিজ্ঞাসা
করা হবে: কার জন্য
প্রতিদান রয়েছে? ঘোষণাকারী বলবে:
“ঐ সমস্ত লোকের জন্য
যারা ক্ষমা প্রদশর্ন করে
থাকে”। তখন
হাজারো লোক দাঁড়িয়ে যাবে
আর বিনা হিসাবে জান্নাতে
প্রবেশ করবে।”(আল
মুজামুল আওসাত লিত তাবরানী,
১ম খন্ড, ৫৪২ পৃষ্ঠা,
হাদীস নং- ১৯৯৭)
হত্যার চেষ্টাকারীকেও ক্ষমা করে দিলেন
দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা
প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা কতর্কৃ প্রকাশিত ৮৬২ পৃষ্ঠা সম্বলিত কিতাব “সীরাতে মুস্তফা ” নামক
কিতাবের ৬০৪-৬০৫ পৃষ্ঠাতে
উল্লেখ রয়েছে: কোন এক
সফরে নবী করীম, রউফুর
রহীম سلم صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَবিশ্রাম নিচ্ছিলেন, এমন সময় গাওরাস বিন হারেস নামক এক কাফির হুযুর
পুরনূর
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কে
শহীদ করার উদ্দেশ্যে তাঁর
তলোয়ারটি নিয়ে কোষ থেকে বের
করল। যখন
মদীনার তাজদার صَلَّی
اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ঘুম থেকে জাগত্র
হলেন, তখন গাওরাস বলতে লাগল: হে মুহাম্মদ
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এখন
আপনাকে আমার আক্রমণ থেকে
কে রক্ষা করবে? তিনি
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করলেন: "আল্লাহ্"। নবুয়তের প্রভাবে তলোয়ারটি তার হাত থেকে
পড়ে গেল।
হুযুর صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তলোয়ারটি হাত মোবারকে নিয়ে ইরশাদ করলেন: এখন তোমাকে
আমার হাত থেকে কে রক্ষা করবে? গাওরাস কাকুতি মিনতি করে
বলল: আপনিই صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ
وَسَلَّم আমার
জীবন রক্ষা করুন।
রহমতে আলম صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তাকে ছেড়ে
দিলেন এবং ক্ষমা করে
দিলেন। অতএব
গাওরাস নিজ গোত্রের নিকট
ফিরে গিয়ে বলতে লাগল:
হে লোকেরা! আমি আজ এমন
ব্যক্তির নিকট থেকে এসেছি
যিনি দুনিয়ার সকল মানুষের চেয়ে
শ্রেষ্ঠ। (আশ
শিফা, ১ম খন্ড, ১০৬
পৃষ্ঠা)
সালাম
উছ পর কেহ্
জিছনে
খুন কে পিয়াছো কো
কাবায়ি দি,
সালাম উছ
পর কেহ্
জিছনে গালিয়া
সুন কর দোয়ায়ি দি।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
অত্যাচারীর জন্য হিদায়াতের দোয়া
উহুদের যুদ্ধে যখন মদীনার সুলতান, সারওয়ারে যিশান,
হাবিবে রহমান, হুযুর পুরনূর
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দান্দান (দাঁত) মোবারক আঘাত
প্রাপ্ত হয়েছিল এবং তাঁর
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم নূরানী
চেহারাকে জখম করে দেয়া
হয়েছিল, তখনও তিনি صَلَّی
اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তাদের জন্য
এ বলে দোয়া করেছিলেন:
অর্থাৎ “হে আল্লাহ্! আমার
সম্প্রদায়কে হিদায়াত
দান কর। কেননা তারা
আমাকে চিনতে
পারেনি।” (আশ
শিফা, ১ম খন্ড, ১০৫
পৃষ্ঠা)
ছোইয়া
কিয়ে নাবকার বন্দে,
রোইয়া
কিয়ে যার যার আক্বা ।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
যাদু কারীর প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন
রাসুলে আকরাম, নূরে মুজাসসাম, শাহানশাহে বনী আদম,
হুযুর صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ
وَسَلَّم কে
‘লবিদ বিন আসম’ যাদু
করেছিল। কিন্তু
রহমতে আলম صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তার থেকে
কোন প্রতিশোধ নেননি। তাছাড়া
তিনি সে ইহুদী মহিলাকেও
ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, যে
তাঁকে صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ
وَسَلَّم বিষ প্রয়োগ করেছিল।
(আল মাওয়াহিবুল লাদুনিয়া লিল কাস্তালানি, ২য়
খন্ড, ৯১ পৃষ্ঠা, দারুল
কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত)
কিউ মেরি খাতায়ো কি তরফ দেখ রহে হো,
জিছকো হে মেরি লাজ ওহ লাজপাল বড়া হে।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
রাসূল ﷺ এর শান
উম্মুল
মুমিনীন, হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা
সিদ্দিকা رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমার মাথার তাজ, সাহিবে মিরাজ,
মাহবুবে রব্বে বে নিয়াজ, হুযুর নবী করীম
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم স্বাভাবিক
ভাবে মন্দ কথা বলতেন
না, রূপক ভাবে না। তিনি
বাজারে শোর-চিৎকারকারী ছিলেন
না, মন্দের মোকাবেলা মন্দ
দ্বারা করতেন না।
বরং তিনি صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم (ক্ষমা ও মার্জনা
প্রদর্শনই করতেন।” (সুনানে
তিরমিযী, ৩য় খন্ড, ৪০৯
পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ২০২৩)
প্রতিদিন ৭০ বার ক্ষমা করো
এক
ব্যক্তি বারগাহে রিসালাতে উপস্থিত হয়ে আরজ করল,
ইয়া রাসূলুল্লাহ্ صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ
وَسَلَّم খাদিমকে
আমি কতোবার ক্ষমা করব?
তিনি صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ
وَسَلَّم
কোন উত্তর না দিয়ে
চুপ রইলেন। লোকটি পুনরায় তার প্রশ্নটি পুনরাবৃত্তি
করল।
এবারও রাসূল
صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কোন
উত্তর দিলেন না।
যখন লোকটি তৃতীয়বার আরয
করল: তখন ইরশাদ করলেন:
প্রতিদিন ৭০ বার।
(সুনানে তিরমিযী, ৩য় খন্ড, ৩৮১
পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৯৫৬)
প্রখ্যাত মুফাসসির হাকিমুল উম্মত হযরত মুফতি আহমদ
ইয়ার খান নঈমী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِআলোচ্য হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন:
আরবীতে ৭০ সংখ্যাটি আধিক্য
বুঝানোর জন্য আসে।
অর্থাৎ প্রতিদিন তুমি তাকে অসংখ্যবার
ক্ষমা করো। এটা
তখন প্রযোজ্য হবে যদি তার
কাছ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে নয়,
বরং অনিচ্ছাকৃতভাবে কোন ভুল ত্রুটি
কিংবা অপরাধ পাওয়া যায়
এবং কুপ্রবৃত্তির ভিত্তিতে যেন না হয়,
আর অপরাধও মালিকের ব্যক্তিগত, শরীয়াত বা জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় নয়। কেননা যদি সে শরীয়াত কিংবা জাতীয় বা রাষ্ট্র বিরোধী কোন
কর্মকান্ডে জড়িত হয় তাহলে
সে ক্ষেত্রে সে ক্ষমা পাওয়ার
যোগ্য নয়। (মিরআত,
৫ম খন্ড, ১৭০ পৃষ্ঠা)
গালি-গালাজ পূর্ণ চিঠির জবাবে
আ’লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এর
ক্ষমা প্রদর্শন হায়! যদি আমাদের
মধ্যেও এ আগ্রহ সৃষ্টি
হতো! আমরাও আমাদের মান
সম্মান ও আত্মমর্যাদার খাতিরে আমাদের রাগ
দমন করতে পারতাম। যেমনি জযবা ছিল আমাদের পূর্ববর্তী বুযুর্গদের মধ্যে।
তাদের উপর যত জুলুমই করা হত না কেন, তারা
জালিমদেরকে দয়া করতেন।
যেমন- ‘হায়াতে আ’লা
হযরত’ নামক কিতাবে বণির্ত
রয়েছে: আমার আকা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মাওলানা শাহ ইমাম
আহমদ রযা খান رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এর
খিদমতে একবার যখন ডাকযোগে আগত
চিঠি পেশ করা হল,
সেখানে কিছু চিঠি অশ্লীল
গালি গালাজে পরিপূর্ণ ছিল। তাঁর ভক্তরা ক্ষুদ্ধ
হয়ে চিঠি লিখকের বিরুদ্ধে
মামলা দায়ের করার
ইচ্ছা করলেন। ইমামে আহলে সুন্নাত, মাওলানা
শাহ ইমাম আহমদ রযা খান رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ তাদেরকে বললেন: যারা
প্রশংসাপূর্ণ চিঠি লিখেছেন, প্রথমে
তাদের মাঝে পুরস্কার বন্টন
করে দাও, তারপর গালি দাতাদের
বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করো। (হায়াতে
আ’লা হযরত, ১ম খন্ড, ১৪৩ পৃষ্ঠা, সংক্ষেপিত) অর্থাৎ
প্রশংসাকারীদের যখন তোমরা
পুরস্কৃত করছ না, তাহলে নিন্দুকদের নিকট থেকে কেন প্রতিশোধ
নিতে যাবে!
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
تُوْبُوْا اِلَى الله! اَسْتَغْفِرُ الله
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
একটি গুরুত্বপূর্ণ মাদানী অসিয়ত
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এটা লিখা পর্যন্ত বর্তমানে আমার বয়স প্রায় ৬০ বছর হয়ে গেছে। মৃত্যু ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসছে। জানিনা কখন অস্থায়ী জীবন ত্যাগ করতে হয়। আল্লাহ্ তাআলার মহান দরবারে ঈমানের হিফাযত, মৃত্যু, কবর, হাশর ইত্যাদিতে নিরাপত্তা, বিনা হিসাবে ক্ষমা এবং জান্নাতুল ফেরদৌসে মাদানী আক্বা, প্রিয় মুস্তফা صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর প্রতিবেশী হওয়ার সৌভাগ্য লাভের দোয়া করছি।
আল্লাহ তা’আলা তোমার উপর রহমত প্রেরণ করবেন।” (ইবনে আ’দী) আমি আমার স্বল্প জীবনে দুনিয়ার অনেক উত্থান-পতন আবর্তন বিবর্তন দেখেছি। মানুষের মধ্যে ইখলাস কম, লোক দেখানো বেশী, বিশ্বস্ততা ও আন্তরিকতার ঘাটতি, খোশামুদি-তোষামুদি বেশী এ প্রবনতাই বেশী লক্ষ্য করা গেছে। এর চেয়ে বড় অকৃতজ্ঞতা আর কী হতে পারে যে, পিতামাতা কত আদর-যত্ন করে সন্তানদের লালন পালন করেছেন, কত স্নেহ মমতা দিয়ে তাদের বড় করে তুলেছেন, কিন্তু পিতা-মাতার সামান্য একটি মাত্র কথাও যদি সন্তানদের পছন্দ না হয়, তখন তাদের সমস্ত উপকার অবদান, স্নেহ মমতার কথা ভুলে গিয়ে সে অকৃতজ্ঞ সন্তানেরা তাদের আঘাত করতে দেরী করে না। হায়! বিতাড়িত প্রতারক শয়তান মানুষের মন মস্তিষ্কে অসংখ্য খারাপ চিন্তা চেতনা ঢুকিয়ে দিয়েছে।
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ দা’ওয়াতে ইসলামীর সাথে লক্ষ লক্ষ মুসলমান সম্পৃক্ত হয়েছে। সচরাচর সংগঠন সমূহে যেরূপ লোকেরা যোগদান ও ত্যাগ করে থাকে। ঠিক অনুরূপ দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে কিছু কিছু লোককে দা’ওয়াতে ইসলামী ত্যাগ করতে দেখা যায়। মাদানী পরিবেশ থেকে দূরে সরে পড়ার কারণে কিছু কিছু লোককে আমল থেকেও দূরে সরে পড়তে দেখা গেছে। কিছু কিছু ক্ষুদ্ধ ইসলামী ভাই নিজেদের স্বতন্ত্র দলও গঠন করেছে আবার কেউ কেউ আমার অনেক সমালোচনাও করেছে। আমার বিরুদ্ধে যথেষ্ট লেখালেখিও করেছেন এবং দা’ওয়াতে ইসলামীর মারকাযী মজলিসে শূরারও মনভরে সমালোচনা করেছে। কিন্তু اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ ! দা’ওয়াতে ইসলামী চলমান সময় পর্যন্ত দিন দিন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পক্ষান্তরে অন্য সব দল এখনো পর্যন্ত দা’ওয়াতে ইসলামীকে ডিঙ্গিয়ে যাওয়া তো দূরের কথা, দা’ওয়াতে ইসলামীর সমকক্ষও হতে পারেনি। আমি সাংগঠনিক কাজে আমার জীবনের বেশীর ভাগ সময়ই অতিবাহিত করেছি।
তাই নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে সকল ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোনদের খিদমতে শুধুমাত্র পরকালীন মঙ্গল কামনার্থে হাত জোড় করে মাদানী অসিয়ত করছি: আমার এ কথাটি চিরদিনের জন্য অন্তরের অন্তঃস্থলে গেঁথে রাখবেন যে, আমার জীবদ্দশায় এবং আমার ইন্তিকালের পরও দা’ওয়াতে ইসলামীতে একবার যোগদান করার পর দা’ওয়াতে ইসলামীর (নির্দিষ্ট পোষাক যেমন- সবুজ পাগড়ী শরীফ ইত্যাদি) ধারণ করার পর সাংগঠনিক নিয়মাবলীর পরিপন্থী কখনো কোন রকমের প্রতিপক্ষ দল গঠন করবেন না। ধর্মীয় কার্যাবলী সম্পাদনের উদ্দেশ্যও যদি আপনি আপনার কোন স্বতন্ত্র দল গঠন করেন, তবে গীবত, অপবাদ, কু-ধারণা, মনে কষ্টদান, পারস্পরিক শত্রুতা, পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা ইত্যাদি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা আপনার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। বরং এতে অসংখ্য মুসলমান উপরোক্ত বিপদ সমূহে নিপতিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। যদি কেউ মনে করে থাকে দা’ওয়াতে ইসলামী থেকে পৃথক হয়ে আলাদা দল গঠন করে আমি দ্বীনের অমুক অমুক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আঞ্জাম দিতে সক্ষম হয়েছি, আমি তাকে সজাগ করতে চাই যে, তার এটাও ভেবে দেখা উচিত, আলাদা হওয়ার কারণে সে গীবত ইত্যাদি গুনাহ্তে লিপ্ত হওয়া থেকেও কি বাঁচতে পেরেছে নাকি ওসব গুনাহে তাকে লিপ্ত হতে হয়েছে? যদি সত্যিই সে বাঁচতে পেরেছে তাহলে তার প্রতি শতকোটি ধন্যবাদ। আর যদি গীবত ইত্যাদি গুনাহ্ থেকে সে বেঁচে থাকতে পারে নি, তাহলে সে যেন তার বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে আমার দ্বীনের অমুক অমুক মুস্তাহাব কাজ ভারী, নাকি সে দ্বীনি কাজ সম্পাদন করতে গিয়ে গীবত ইত্যাদি যে হারাম কাজ সংগঠিত হয়েছে তা ভারী? যদি অন্তরে খোদাভীতি থাকে, ইলমে দ্বীনের আলো প্রজ্জলিত থাকে, অন্তর সজীব থাকে তাহলে এটা জবাব পাওয়া যাবে, সম্পূর্ণ জীবনের মুস্তাহাব কার্যাবলীর তুলনায় কিছুক্ষণের পাপজনক গীবত প্রচুর ভারী হবে। কেননা মুস্তাহাব কাজ না করার কারণে কোন শাস্তি ভোগ করতে হবে না।
পক্ষান্তরে গীবতের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে। বুঝা গেল, একবার দা’ওয়াতে ইসলামীতে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পর বের হয়ে গেলে কিংবা বের করে দেয়া হলে নতুন দল গঠন করার মধ্যে সমষ্টিগত দিক দিয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশী থাকে।
ফতোওয়ায়ে রযবীয়া থেকে নির্বাচিত কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা
সত্যিকার অর্থে এমন দ্বীনি কাজ যা মুসলমানের মধ্যে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষের জন্ম দেয়, তাদের মধ্যে ঘৃণা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং তা করা ফরয, ওয়াজিব কিংবা সুন্নাতে মুআক্কাদাও নয়, এরূপ দ্বীনি কাজ না করাই উত্তম। যদিও তা করা উত্তম ও মুস্তাহাব হয়ে থাকে। অপর এক স্থানে আমার আক্বা, আ’লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ মুসলমানদের ঐক্য ও সংহতির প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন: মানুষের মনোরঞ্জন এবং তাদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতিকে অটুট রাখার জন্য কখনো কখনো উত্তম কাজও বর্জন করা মানুষের জন্য জায়েয যেন লোকদের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি না হয়। যেমন- নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বায়তুল্লাহ শরীফকে কুরাইশদের ভিত্তির উপর এজন্যই বহাল রেখেছিলেন কারণ তখন যারা নতুন নতুন ইসলাম গ্রহণ করেছিল, তাদের মধ্যে যেন কোনরূপ ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৭ম খন্ড, ৬৮০ পৃষ্ঠা, সংক্ষেপিত) মুসলমানদের মনে ঘৃণার উদ্রেক না করার জন্য প্রয়োজনে মুস্তাহাব কাজও বর্জন করার অনুমতি রয়েছে। যেমন আমার আক্বা, আ’লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার এবং তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় রাখার একটি মাদানী নীতিমালা বর্ণনা করে বলেন: মুস্তাহাব কাজ পালন এবং অনুত্তম কাজ পরিহার করার ক্ষেত্রে মানুষের মনোরঞ্জন ও অন্তরের খুশিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
ফিতনা, ঘৃণা, মনোকষ্ট, অনৈক্য ইত্যাদি যাতে জন্ম না নেয়, তার প্রতি খেয়াল রাখবেন। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৪র্থ খন্ড, ৫২৮ পৃষ্ঠা)
আমার আক্বা, আ’লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ শরীয়াতের নীতিমালা বর্ণনা করে বলেন: دَرْءُ المَفَاسِدِ اَهَمُّ مِنْ جَلْبِ الْمَصَالِحِ অর্থাৎ শান্তি প্রতিষ্ঠার চেয়ে অশান্তি নির্মূল করাই হচ্ছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৯ম খন্ড, ৫৫১ পৃষ্ঠা)
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
যারা বেশভূষা পরিবর্তন করে নিয়েছে
যারা দা’ওয়াতে ইসলামীর নির্দিষ্ট বেশভূষা বজর্ন করে ফেলেছে, শরীয়াতের অনুমতি ব্যতীত দা’ওয়াতে ইসলামীর কোন রকমের বিরোধীতাতেও লিপ্ত নন এবং গীবত, অপবাদ, কু-ধারণা ইত্যাদিতেও লিপ্ত না হয়ে নিজেদের নিরলস প্রচেষ্টায় দ্বীনি খিদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন, আল্লাহ্ তাআলা তাদের সে খিদমতকে কবুল করুন। কিন্তু যারা বেশভূষা বজর্ন করে আলাদা দল গঠন করার পর শরয়ী অনুমতি ব্যতীত দা’ওয়াতে ইসলামীর বিরোধীতা করে নেকীর দাওয়াত প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী এ মাদানী সংগঠনকে দূবর্ল ও স্তব্ধ করে দেয়ার অপচেষ্টাতে লিপ্ত রয়েছে এবং তাদের সে উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গীবত, অপবাদ, কু-ধারণা, দোষকীর্তন , সমালোচনা, চোগলখুরী ইত্যাদিকে নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে এবং নিজেদের ভ্রান্ত ধারণা মোতাবেক সেটাকে দ্বীনের এক মহান খিদমত মনে করছে, তাদেরকে সতর্ক হওয়া চাই। কেননা তা আসলে দ্বীনের খিদমত নয়, বরং একটি ঘৃণ্য অপকৌশল মাত্র এবং শরীয়াতের দৃষ্টিতে এরূপ নাজায়িয কাজে লিপ্ত হয়ে নিজেদের আমল নামাকে গুনাহে পরিপূর্ণ করারই নামান্তর । অনুরূপ যারা বেশভূশা বহাল রেখেও শরয়ী অনুমতি ব্যতীত দা’ওয়াতে ইসলামীর বিরোধীতাতে লিপ্ত রয়েছে এবং মানুষকে উস্কে দিয়ে দা’ওয়াতে ইসলামীর এবং এর কার্যাবলীর ক্ষতি সাধনের চেষ্টারত আছে তারাও নাজায়িয কর্মকান্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হবে।
দুর্নাম-সমালোচনা করা হারাম
দেখা গেছে, যখন কোন ব্যক্তি কারো বিরোধীতায় নেমে পড়ে, তখন শুধু শুধু তার সমালোচনা করতে থাকে, তার দোষ বের করতে থাকে, তার ভুল-ত্রুটিকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখতে থাকে। যখন তাদের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক ছিল তখন তার শরীরের ঘামও সুগন্ধময় ছিল। আর যখন পারস্পরিক ফাটল সৃষ্টি হয় তখন তার আতরও দুর্গন্ধ লাগে। মনে রাখবেন! কোন মুবাল্লিগ বিশেষ করে কোন সুন্নি আলিমের কোন ভুল-ভ্রান্তিকে শরয়ী প্রয়োজন ছাড়া কারো নিকট প্রকাশ করা, মানুষের মাঝে তা ছড়িয়ে দেয়া নেকীর দাওয়াত এবং ইসলামের প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে খুবই ক্ষতিকারক এবং পরকালে সে কারণে শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমার আক্বা, আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, মাওলানা শাহ ইমাম আহমদ রযা খান رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ ফতোওয়ায়ে রযবীয়ার ২৯তম খন্ডের ৫৯৪ পৃষ্ঠাতে লিখেছেন: আহলে সুন্নাতের আলিমদের নিকট থেকে দূর্ভাগ্যক্রমে কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেলে তা গোপন করা ওয়াজিব। কেননা লোকেরা তাদের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে তাদের বয়ান ও লিখনী দ্বারা ইসলাম ও সুন্নাতের যে উপকার সাধিত হচ্ছে তাতে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাই তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি প্রকাশ করা তাদের দুর্নাম করারই নামান্তর। আর দুর্নাম করা পবিত্র কুরআনের আয়াত দ্বারা হারাম। আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন:
اِنَّ الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: ওইসব লোক, যারা চায় যে, মুসলমানদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার হোক,তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে বেদনাদায়ক শাস্তি রয়েছে । (পারা- ১৮, সূরা- আন্ নূর, আয়াত- ১৯), (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২৯তম খন্ড, ৫৯৪ পৃষ্ঠা)
দা’ওয়াতে ইসলামী ত্যাগীদের প্রতি বিনীত অনুরোধ
যারা আজ পর্যন্ত আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে কিংবা কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে দা’ওয়াতে ইসলামী ত্যাগ করেছেন, তাদের মধ্য থেকে যারা আমার কারণে মনে কষ্ট পেয়েছেন কিংবা তাদের হক নষ্ট হয়েছে আমি তাদের নিকট হাত জোড় করে ক্ষমা প্রাথর্না করছি। আমার দু’ছেলে এবং দা’ওয়াতে ইসলামীর সকল নিগরান ও রুকনও ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। আপনারা আমাকে এবং তাদেরকে আল্লাহ তাআলা ও রাসূল صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সন্তুষ্টি কামনার্থে ক্ষমা করে দিন। আর যারা আমাদের হক ধ্বংস করেছেন আমরাও তাদেরকে আল্লাহ্ তাআলা ও রাসূল صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সন্তুষ্টি কামনার্থে ক্ষমা করে দিলাম। অসন্তুষ্টি ও মতর্পাথক্যের কারণে যারা স্ব স্ব দল গঠন করেছেন, নিজ নিজ সংগঠন সৃষ্টি করেছেন, সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, তারা সকলেই যেন আল্লাহ্ তাআলা ও রাসূল صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সন্তুষ্টি অজর্নের জন্য এসে মীমাংসা করে নিন। একমাত্র আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি অজর্নের জন্যই আমি প্রত্যেক ক্ষুদ্ধ মুসলমানের সাথে নিঃশতর্ভাবে মীমাংসা করে নিতে প্রস্তুত আছি। আর যারা সাংগঠনিক বিরোধকে আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে চান তাদের জন্যও দরজা খোলা আছে।তাই তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সাথে আলোচনায় বসুন। যদি আপনারা বলেন, তাহলে সম্ভবপর হলে اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ শুরা সহ আমিও আপনাদের সাথে আলোচনায় বসব। তাই আপনারা অনতিবিলম্বে চলে আসুন। আল্লাহ্ তাআলার রহমত এবং তাজেদারে রিসালাত, প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দয়ার নজর হলে আমরা এক হয়ে শয়তানের সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিতে পারব।اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ আমরা মিলে মিশে দ্বীনের অসংখ্য মাদানী কাজ সম্পাদন করতে পারবো।
দা’ওয়াতে ইসলামীর সাথে কাজ করতে যদি আপনার অনিহা হয় তখন ...
যদি কোন ক্ষুদ্ধ ইসলামী ভাই দা’ওয়াতে ইসলামীর সাথে মাদানী কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করেন তাহলে অন্ততপক্ষে তার ক্রোধটা পরিত্যাগ করে আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে আমরা কৃতজ্ঞ হব, তাই তিনি যেন তা আমাদের অবহিত করে মুসলমানদের মন খুশি করার সাওয়াবের হকদার হন। এভাবে اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ মুসলমানদের মাঝে পারস্পরিক অনৈক্যের অবসান হবে। তাদের মধ্যে দূরত্ব কমে আসবে, অভিশপ্ত শয়তানের মুখে চুনকালি পড়বে এবং ক্ষমাকারীর মুখ উজ্জল হবে। পুনরায় আমরা আপনাদের নিকট এ হাদীসের দোহাই দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করছি, যাতে আমাদের প্রিয় আক্বা صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি তার কোন মুসলিম ভাইয়ের নিকট কোন আবেদন করে আর যদি সে শরয়ী অনুমতি ব্যতীত তার ঐ আবেদন কবুল না করে, তবে কিয়ামতের দিন হাওজে কাউসারের নিকট উপস্থিত হওয়া তার নসীব হবে না।” (আল মুজামুল আওসাত, ৪র্থ খন্ড, ৩৭৬ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৬২৯৫)
মনে রাখবেন! এ ধরনের কথাবার্তা বলা কখনো শোভনীয় নয় যে, ইলিয়াসকে আমাদের নিকট আসতেই হবে তিনি যদি নিজে আসতে না পারেন, তাহলে শুরার নিগরানকে বা অন্য কোন রুকনকে আমাদের নিকট কিংবা আমাদের অমুক নেতার নিকট অবশ্যই পাঠাতে হবে। এ ধরনের কথাবার্তা যারা বলে তাদের সম্পর্কে এ কুমন্ত্রণা সৃষ্টি হতে পারে যে, তারা আসলে আপোষ-মীমাংসা করতে চায় না। তাই তারা বিভিন্ন ধরনের অজুহাতের আশ্রয় নিচ্ছে। যখন আমরা লিখিতভাবে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছি, যদি আপনারা মীমাংসার ক্ষেত্রে আন্তরিক হন, তাহলে মীমাংসা করে নিতে বাধা কোথায়? প্রত্যেক ক্ষুদ্ধ ইসলামী ভাইয়ের উচিত, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি কামনার্থে এগিয়ে এসে আপোষ-মীমাংসা করে নিয়ে এক কাতারে দাঁড়ানো। আর যদি এসে আপোষ-মীমাংসা করে নিতে আপনারা ইচ্ছুক না হন, তাহলে অন্ততপক্ষে শুরার যে কোন রুকনকেই ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করুন। আল্লাহ্ করে দিল মে উতর যায়ে মেরি বাত।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
হে আল্লাহ্! তুমি সাক্ষী থাকো
ইয়া রব্বে মুস্তফা صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم! তুমি সাক্ষী থাকো আমি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট ইসলামী ভাইদেরকে মীমাংসার কথা শুনিয়ে দিয়েছি। হে আমার প্রিয় আল্লাহ্! আমার প্রতি অসন্তুষ্ট ইসলামী ভাইদের অন্তরে আমি মিসকিনের প্রতি দয়ার উদ্রেক করো। যাতে তারা আমাকে ক্ষমার ভিক্ষা দিয়ে আমার সাথে মীমাংসা করে নেয়। হে আল্লাহ্! তুমি আমার মনের অবস্থা সম্পর্কে অবগত। মীমাংসার এ প্রস্তাবের মধ্যে পরকালীন মুক্তিই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য। আমি আমার ইন্তিকালের পূর্বেই একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি অজর্নের জন্যই প্রত্যেক নারাজ মুসলমানের সাথে মীমাংসা করে নিতে এবং ক্ষুদ্ধ ইসলামী ভাইদের সন্তুষ্ট করিয়ে নিতে চাচ্ছি। হে আল্লাহ্! আমি তোমার গোপন রহস্যকে খুবই ভয় করি। হে আমার প্রিয় আল্লাহ্! তুমি কখনো আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ো না। হে আমার পূতঃ পবিত্র পরওয়ারদিগার! ক্ষনিকের জন্যও আমার ঈমান যেন আমার থেকে বিচ্যুত না হয়, হে আল্লাহ্! আমাকে, আমার প্রতি অসন্তুষ্ট সকল ইসলামী ভাই সহ দা’ওয়াতে ইসলামীর সকল ইসলামী ভাই বোনকে বিনা হিসাবে ক্ষমা করে দাও।
হে আল্লাহ্! তোমার হাবীব صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উসিলায় সকল উম্মতকে ক্ষমা করে দাও। হে আল্লাহ্! আমাদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করো। হে আল্লাহ্! আমাদের মত-পার্থক্য দূর করো। হে আল্লাহ্! পদের জন্য নয়, একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি অজর্নের জন্যই একসাথে মিলেমিশে ইখলাসের সাথে তোমার দ্বীনের খিদমত করার সৌভাগ্য আমাদের দান করো। اٰمِين بِجا هِ النَّبِىِّ الْاَمين صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم
সুন্নাতে আম করে দ্বীন কা হাম কাম করে
নেক হো যায়ে মুসলমান মদীনে ওয়ালে ﷺ।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
تُوْبُوْا اِلَى الله! اَسْتَغْفِرُ الله
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
গীবতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করুন
হায়! গীবত আজ অধিকাংশ মুসলমানকে তার করাল গ্রাসে নিয়ে ফেলেছে। শয়তান গীবতের মাধ্যমে তীব্রগতিতে মানুষকে জাহান্নামের দিকে হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সতর্ক হোন! গীবতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এর মোকাবেলা করার জন্য সদা সবর্দা প্রস্তুত থাকুন। যারা এখনো পর্যন্ত যত গীবত করেছে, তারা যেন তা থেকে তাওবা এবং ক্ষমা প্রার্থনা নেয় এবং দৃঢ় সংকল্প করে নেয়,'গীবত করবোও না, শুনবোও না।' اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ
আফসোস! শতকোটি আফসোস! গীবত আমাদের মাদানী পরিবেশকেও উই পোকার মত গ্রাস করছে। তাই দা’ওয়াতে ইসলামীর সকল যিম্মাদার ইসলামী ভাই-বোনদের প্রতি আমি হাতজোড় করে মাদানী অনুরোধ করছি, গীবতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গীবতের সকল দরজায় তালা লাগিয়ে দিন। আপনার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে যে সমস্ত ইসলামী ভাই মাদানী পরিবেশ থেকে দূরে সরে পড়েছেন তাদের সম্পর্কে ১১২ বার চিন্তা করে দেখুন তারা কি আপনার গীবত করেছে আর আপনি ক্ষুদ্ধ হওয়ায় মাদানী মাহল ত্যাগ করেছেন, নাকি আপনি তাদের গীবত করায় তারা মনে কষ্ট পেয়ে মাদানী মাহল ত্যাগ করেছেন তা একটু চিন্তা করে দেখুন। যদি এমনই হয়ে থাকে, তাহলে ভাল ভাল নিয়্যত সহকারে আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি অজর্নের জন্য তাড়াতাড়ি তাদের নিকট গিয়ে হাত জোড় করে তাদের হাত পা ধরে কেঁদে কেঁদে তাদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে তাদের রাজি করে তাদের সাথে কোলাকুলি করে নিবেন, বরং যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদেরও খুঁজে বের করে তাদের নিকট গিয়ে করজোড়ে অনুনয় বিনয় করে পুনরায় তাদের মাদানী মাহলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন এবং ইনফিরাদী কৌশিশের মাধ্যমে সকলকে পুনরায় সুন্নাতের খিদমতে নিয়োজিত করবেন। (যাদের উপর সাংগঠনিক দায়িত্ব নেই তারাও অনুরূপ করবেন। হ্যাঁ! তবে যাদের উপর সাংগঠনিক নিষেধাজ্ঞা জারী হয়েছে, তাদেরকে বিরক্ত করবেন না। তাদের ক্ষেত্রে উপরস্থ যিম্মাদারেরা যে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিবেন, তার উপরই আমল করবেন।
আয় খাচ্ছায়ে খাচ্ছানে রুসুল ওয়াক্তে দোয়া হে,
উম্মত পে তেরী আকে আজব ওয়াক্ত পড়া হে।
ছোটো মে ইতা‘আত হে না শফকত হে বড়ো মে, পেয়ারো মে মুহাব্বত হে না ইয়ারো মে ওয়াফা হে।
জু কুছ হ্যায় ওহ ছব আপনে হি হাতো কে হ্যায় করতুত,
শিক্ওয়া হে যমানে কা না কিছমত কা গিলা হে।
দেখে হ্যায় ইয়ে দিন আপনি হে গফলত কি বদৌলত,
সচ্চ হে কেহ বুরে কাম কা আনজাম বুরা হে।
হাম নেক হ্যায় ইয়া বদ হ্যায় পির আখির হ্যায় তোমহারে,
নিছবত বহুত আচ্ছি হে আগর হাল বুরা হে।
তদবীর সাম্ভালনে কি হামারে নেহী কুয়ী,
হ্যা এক দোয়া তেরী কে মকবুল খোদ হে।
আমি ইলইয়াস কাদেরীকে ক্ষমা করে দিলাম
সকল ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোনের প্রতি হাতজোড় করে বিনীত অনুরোধ করছি, যদি আমি, আমার সন্তান-সন্ততি, মারকাযী মজলিসে শূরার কোন নিগরান বা রুকন আপনাদের কারো গীবত, সমালোচনা করে থাকে, মিথ্যা অপবাদ, ধমক ইত্যাদি দিয়ে থাকে বা অন্য কোন উপায়ে আপনাদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকে আপনারা যেন আমাকে এবং তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। জান-মাল, পরিবার-পরিজন, মান-সম্মান ইত্যাদি সম্পকির্ত দুনিয়ার ছোট থেকে ছোট কিংবা বড় থেকে বড় বান্দার হকও যদি আমি, আমার সন্তান-সন্ততি বা মজলিসে শূরার নিগরান ও সদস্যরা ধ্বংস করে থাকে, সে সমস্ত হক স্মরণে রেখে আমাদের দ্বারা ধ্বংসকৃত হকসমূহ ক্ষমা করে দিয়ে আপনারা যেন অফুরন্ত সাওয়াবের ভাগী হোন।করজোড়ে মাদানী অনুরোধ জানাচ্ছি, অন্ততপক্ষে একবার হলেও অন্তরের অন্তঃস্হল থেকে বলে দিন: “আমি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি কামনার্থে মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদিরী রযবী, তাঁর সন্তান সন্ততি এবং মজলিসে শূরার নিগরান ও সদস্যদের ক্ষমা করে দিলাম।” আমরাও আমাদের যাবতীয় ছোট-বড় হক ধ্বংস কারীদের আল্লাহ ও প্রিয় রাসূল صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সন্তুষ্টি কামনার্থে ক্ষমা করে দিলাম।
কর্জ দাতাদের প্রতি মাদানী অনুরোধ
যারা আমার নিকট কর্জ পাবেন, কিংবা আমি কারো নিকট থেকে কোন জিনিস ধার নিয়ে ফেরত না দিয়ে থাকলে তারা যেন তা দা’ওয়াতে ইসলামীর মারকাযী মজলিসে শূরার বা আমার সন্তান-সন্ততিদের নিকট থেকে নিয়ে নেয়।তারা যদি পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে পরকালীন সাওয়াবের ভাগী হবেন আর যাদের নিকট আমি কর্জ পাব, আমি তাদেরকে আমার ব্যক্তিগত যাবতীয় কর্জ ক্ষমা করে দিলাম। হে আল্লাহ্-
তু বে হিসাব বখ্স কে হে বে হিসাব জুরম,
দেতা হো ওয়াসেতা তুঝে শাহে হিজায ﷺ কা।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
تُوْبُوْا اِلَى الله! اَسْتَغْفِرُ الله
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
বোবা মহিলা কথা বলে উঠল!
গীবত করা ও শুনার অভ্যাস পরিহার করার জন্য নামায ও সুন্নাতের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশের সাথে সবর্দা সম্পৃক্ত থাকুন। সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমাতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতে থাকুন। সুন্নাতের প্রশিক্ষণের জন্য মাদানী কাফেলায় আশিকানে রাসূলদের সাথে সুন্নাতে ভরা সফর করুন। সফল জীবন যাপনের জন্য এবং পরকালীন জীবনকে গৌরবময় করে তোলার জন্য মাদানী ইনআমাত মোতাবেক আমল করে প্রতিদিন ফিকরে মদীনার মাধ্যমে মাদানী ইনআমাতের রিসালা পূরণ করে তা প্রত্যেক মাদানী মাসের প্রথম তারিখের মধ্যেই নিজ যিম্মাদারের নিকট জমা করিয়ে দিন।
আপনার মধ্যে অনুপ্রেরণা ও আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য একটি মাদানী বাহার পেশ করছি। খোশাব (পাকিস্তানের এক) জেলার কোন এক গ্রামের এক ইসলামী বোনের গলার আওয়াজ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। কোন চিকিৎসাই কাজে আসলনা, আরোগ্য লাভের আশায় তাকে বাবুল মদীনা করাচীতে নিয়ে আসা হল। এখানেও ডাক্তারী চিকিৎসা কোন ফলাফল দিল না। আওয়াজ বন্ধ হয়েছে প্রায় ছয় মাস হয়ে গেল। তবলীগে কুরআন ও সুন্নাতের বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক সংগঠন দা’ওয়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক মাদানী মারকায ফয়যানে মদীনার নিচের তলায় প্রতি রবিবার বিকাল আড়াইটার সময় অনুষ্ঠিতব্য ইসলামী বোনদের সুন্নাতে ভরা ইজতিমাতে উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন হল। সেখানে একজন ইসলামী বোন ইনফিরাদী কৌশিশ করে লাগাতার বারটি ইজতিমাতে উপস্থিত হওয়ার জন্য তাকে রাজি করালেন। নিয়মিত অংশগ্রহণের তার ৬ষ্ট ইজতিমা ছিল, ৮ ই রমজান ১৪৩০ হিজরী, ঐ ইজতিমার সমাপ্তিতে দরূদ ও সালাম পাঠের সময় اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ ইসলামী বোন কথা বলে উঠল!
হযরতে শাব্বির ও শাব্বার কে তুফাইল,
টাল হার আফাত আয় নানা য়ে হুসাইন।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
--------
লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা “মুহাম্মদ ইলয়াস আত্তার” কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত ২৪ পৃষ্ঠা সম্বলিত "ক্ষমা ও মার্জনার ফযীলত" নামক রিসালার ৩-২৪ নং পৃষ্ঠা হতে সংগৃহীত। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই রিসালাটি অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন। অন্যকে উপহার দিন।
ইসলামীক বাংলা বইয়ের লিংক এক সাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for supporting.