কবরের হুংকার
হযরত সায়্যিদুনা আবুল হাজ্জাজ সুমালী رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى
عَنْهُ থেকে বর্ণিত; নবী করীম, রউফুর রহীম, রাসূলে আমীন صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে শায়িত করা হয়, তখন
কবর তাকে সম্বোধন করে বলে: ‘হে মানুষ! তোমার ধ্বংস হোক! তুমি কেন আমাকে
ভুলে গিয়েছিলে? তোমার কি এতটুকুও জানা ছিলোনা যে, আমি
ফিতনার ঘর, অতি অন্ধকারের ঘর। অতঃপর তুমি কিসের ভিত্তিতে
আমার উপর দিয়ে সদম্ভে চলাফেরা করেছিলে?’ যদি সে মৃত ব্যক্তি নেককার বান্দা হয়, তখন
এক গায়েবী আওয়াজ কবরকে সম্বোধন করে বলে: হে কবর! তোমার মধ্যে শায়িত ব্যক্তি যদি সৎ
কাজের আদেশ দাতা হয় এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধকারী হয়, তাহলে তার সাথে তুমি কিরূপ
আচরণ করবে? উত্তরে কবর বলে: যদি তাই হয়, তবে
আমি তার জন্য মনোমুগ্ধকর বাগানে পরিণত হবো। অতঃপর সে ব্যক্তির শরীর নূরের শরীরে
পরিণত হয়ে যায় এবং তার রূহ আল্লাহ্ তাআলার দরবারের দিকে উড়ে চলে যায়।” (মুসনাদে
আবি ইয়ালা, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৬৭ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৬৮৩৫)
মুবাল্লিগদের জন্য শুভ সংবাদ!
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! উপরোক্ত হাদীস শরীফের উপর একটু
গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন! যখনই কোন (ব্যক্তি) কবরবাসী হয়ে যায়, সে
নেককার হোক কিংবা গুনাহগার, তাকে কবরে ভীতি প্রদর্শন করা হয়। দাওয়াতে
ইসলামীর মুবাল্লিগগণ! ফয়যানে সুন্নাতের দরস দাতাগণ! এলাকায়ী দাওরা বরায়ে নেকীর
দাওয়াতে অংশগ্রহণকারীগণ! নিজ সন্তানদেরকে সুন্নাত মোতাবেক লালন-পালন কারীগণ! এবং
সুন্নাত শিক্ষাদানের জন্য ইনফিরাদি কৌশিশকারীগণের জন্য সুসংবাদ এই হবে যে, কবরে
একটি অদৃশ্য আওয়াজ সৎকাজের আদেশ দাতা ও মন্দ কাজে নিষেধকারীদেরকে সাহায্য-সহযোগীতা
করবে এবং এভাবে কবর তাদের জন্য বাগানে পরিণত হবে।
তুমহে এ্যয় মুবাল্লিগ ইয়ে মেরী দোয়া হে,
কিয়ে যাও তেয় তুম তরক্কি কা যিইনা।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب
! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
আমার সন্তান সন্ততিরা কোথায়!
স্মরণ রাখুন! কবরের মধ্যে শুধুমাত্র আপনার আমলই যাবে।
সুউচ্চ দালান, আলীশান মহল, ধন-সম্পদ, ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থ, ব্যবসা-বাণিজ্য, বড় বড়
ফ্ল্যাট, শষ্য শ্যামল ক্ষেত-খামার এবং মনোরম বাগান এসব
কিছু আপনার সাথে কবরে যাবে না। হযরত সায়্যিদুনা আ’তা বিন ইয়াসার رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى
عَلَيْهِ বলেন: যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে শায়িত করা হয়,তখন
সর্বপ্রথম তার আমল সমূহ এসে তার বাম রানে নাড়া দেয় এবং বলে: আমি তোমার আমল। সে মৃত
ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করে: আমার সন্তান-সন্ততি কোথায়? আমার নেয়ামত সমূহ, আমার
ধন-সম্পদ কোথায়? তখন উত্তরে আমল বলে: এ সবকিছু তোমার পিছনে
(অর্থাৎ দুনিয়াতে) রয়ে গেছে।আমি ব্যতীত তোমার কবরে আর কেউ আসেনি। (শরহুস সূদুর, ১১১
পৃষ্ঠা)
কবরে ভীতি প্রদর্শণকারী বস্তু সমূহ
রাতের ঘোর অন্ধকারে যারা ভয় পায়, বিড়ালের
মিউ মিউ শব্দ শুনে যারা চমকে উঠে,
কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ শুনে রাস্তা পরিবর্তনকারী, সাপ ও
বিচ্ছুর শুধুমাত্র নাম শুনেই যারা থরথর করে কেঁপে উঠে, দূর
থেকে প্রজ্জ্বলিত আগুন দেখে ভীত-সন্ত্রস্তকারী বরং শুধুমাত্র আগুনের ধোঁয়া দেখেও
যারা অস্থির হয়ে যায়, তাদের জন্য চিন্তার বিষয় যে, হযরত
সায়্যিদুনা আল্লামা জালালউদ্দিন সূয়ুতী শাফেয়ী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ
“শরহুস সূদুর” নামক কিতাবে উল্লেখ করেন: “যখন
মানুষ কবরে প্রবেশ করে, তখন তাকে ভীতি প্রদর্শন করার জন্য ঐসব বস্তু
তার কবরে চলে আসে, যেগুলোকে সে দুনিয়াতে ভয় করতো। অথচ আল্লাহ্
তাআলাকে ভয় করতো না।”(শরহুস সূদুর, ১১২ পৃষ্ঠা)
আল্লাহ্ তাআলাকে ভয়কারী ব্যক্তি কি গুনাহ করতে পারে?
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আল্লাহ্ তাআলাকে ভয়কারী ব্যক্তি কি
কখনো নামায-রোযা কাযা করতে পারেন?
এবং যাকাত আদায়ে অলসতা প্রদর্শণ করতে পারেন? আল্লাহ্
তাআলাকে ভয়কারী ব্যক্তি কি বিক্রিতে মাল পরিমাণে কম দিতে পারেন? হারাম
জীবিকা উপার্জন করতে পারেন?সূদ-ঘুষের লেনদেন করতে পারেন? আল্লাহ্
তাআলাকে ভয়কারী ব্যক্তির জন্য দাঁড়ি মুন্ডন করা কিংবা এক মুষ্টি থেকে ছোট করা কি
শোভা পায়? দাঁড়ি মুন্ডন করা বা এক মুষ্টি থেকে ছোট করা
উভয়ই হারাম। আল্লাহ্ তাআলাকে ভয়কারী ব্যক্তি কি টিভি, ভিসিআর
ও ইন্টারনেটে সিনেমা, নাটক ইত্যাদি দেখতে পারেন? এবং
গান-বাজনা শুনতে পারেন? আল্লাহ্ তাআলাকে ভয়কারী ব্যক্তি কি কখনো
পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন এবং সাধারণ মুসলমানদের মনে কষ্ট
দিতে পারেন? আল্লাহ্ তাআলাকে ভয়কারী ব্যক্তি কি অশ্লীল
ভাষায় গালাগালি, মিথ্যা, গীবত, চোগলখোরী, ওয়াদা ভঙ্গ, কুদৃষ্টি, নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা, উলঙ্গপনা ইত্যাদি ইত্যাদি পাপে লিপ্ত হতে পারেন? আল্লাহ্
তাআলাকে ভয়কারী ব্যক্তি কি চুরি,
ডাকাতি, লুটতরাজ, হত্যা, সন্ত্রাস ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের গর্হিত কাজ
সমূহ সম্পাদন করতে পারেন? এরূপ বিভিন্ন রকমের পাপ কাজে সর্বদা লিপ্ত
ব্যক্তিগণ! পুনরায় আরেকবার কান পেতে শুনুন: “যখন মানুষ কবরে প্রবেশ করবে, তখন
তাকে ভীতি প্রদর্শণ করার জন্য ঐ সব বস্তু তার কবরে চলে আসে, যেগুলোকে
সে দুনিয়াতে ভয় করতো। অথচ আল্লাহ্ তাআলাকে ভয় করতো না।” ((শরহুস
সূদুর, ১১২ পৃষ্ঠা)
পার্শ্ববর্তী মৃতের ডাক
বেনামাযী,
শরীয়াত সম্মত কারণ ব্যতীত রমযান মাসের রোযা
কাযাকারী, সিনেমা-নাটকের দর্শকবৃন্দ, গান-বাজনা
শ্রবনকারী, পিতা-মাতার মনে কষ্টদানকারী, দাঁড়ি
মুন্ডনকারী বা এক মুষ্টি থেকে ছোটকারী এবং বিভিন্ন রকম
পাপকার্যে লিপ্ত ব্যক্তিবর্গের জন্য চিন্তার বিষয় হলো এটা যে;হুজ্জাতুল
ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাযালী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى
عَلَيْهِ বর্ণনা করেন: যখন (গুনাহগার) ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয় এবং তার উপর
বিভিন্ন ধরণের কবরের আযাব শুরু হয়ে যায়, তখন তার পার্শ্ববর্তী মৃতরা তাকে ডাক দিয়ে বলে:
হে নিজের প্রতিবেশী ও ভাইদের পর দুনিয়াতে অবস্থানকারী ব্যক্তি! আমাদের অবস্থা
তোমার জন্য কি শিক্ষণীয় ছিলো না?
আমরা যে তোমার পূর্বে (দুনিয়া থেকে) কবরে
এসেছিলাম, তা কি তুমি কখনো চিন্তা-ভাবনা করে দেখনি? (মৃত্যুর
পর) আমাদের আমল যে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, তা কি তুমি দেখ নি? তোমার
তো সুযোগ ছিলো, তবে তুমি ঐ সমস্ত নেক আমল কেন করনি যা তোমার
ভাইয়েরা করে আসতে পারেনি? কবরের চারদিক তাকে চিৎকার করে বলে:হে দুনিয়ার
চাকচিক্যে ধোকাপ্রাপ্ত ব্যক্তি! তুমি এদের থেকে কেন উপদেশ গ্রহণ করনি, যারা
তোমার পূর্বে কবরস্থ হয়েছে এবং তাদেরকেও দুনিয়া ধোকায় ফেলেছিলো। (ইহ্ইয়াউল উলূম, ৫ম
খন্ড, ২৫৩ পৃষ্ঠা)
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! বাস্তবতা হচ্ছে এটাই যে, প্রত্যেক
মৃতুবরণকারী মৃত্যুবরণ করার পরই সকলকে এ বার্তা দিয়ে চলে যায় যে, যেভাবে
আমি মৃত্যুবরণ করেছি, সেভাবে তোমাকেও একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে।
যেভাবে আমাকে মণ সমপরিমাণ মাটির নিচে দাফন করা হবে, সেভাবে তোমাকেও দাফন করা
হবে।
জানাযা আগে বড়হ্ কে কেহ্ রাহা হে এ্যয় জাঁহা ওয়ালো,
মেরি পিছে চলে আ-ও তোমারা রেহনুমা মে হোঁ।
পরীক্ষা সন্নিকটে
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আজকাল স্কুল বা কলেজের পরীক্ষার সময়
যখন সন্নিকটে চলে আসে, তখন ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য
খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রাত দিন সর্বদা তাদের মাথায় একটি চিন্তাই বিরাজ করতে থাকে যে, পরীক্ষা
অতি সন্নিকটে। পরীক্ষার জন্য তারা পরিশ্রমও করে,আল্লাহ্ তাআলার দরবারে
কাকুতি মিনতি করে দোয়া করতে থাকে। এমনকি কিছু বোকা শিক্ষার্থী পরীক্ষক মহোদয়কে ঘুষ
পর্যন্তও দিয়ে থাকে। এসব কিছু করার পিছনে তাদের একটি মাত্রই কামনা বাসনা থাকে যে, আমি
যেন কোন ভাবে ভালো নম্বর পেয়ে পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারি। হে দুনিয়ার পরীক্ষার
ব্যস্ততায় মগ্ন শিক্ষার্থীরা! কান পেতে শুনুন: একটি পরীক্ষা এমনও রয়েছে, যা
কবরে অনুষ্ঠিত হবে। হায়! কবরের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সৌভাগ্য যদি আমাদের নসীব
হতো। আজকাল দুনিয়ার পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নাবলী (Important) যদি
পেয়ে যায়, তাহলে শিক্ষার্থী তা শিখার জন্য রাতের পর রাত
পরিশ্রম করতে থাকে। এমনকি নিদ্রা নিবারণকারী ট্যাবলেট খেতে হলে তাও খেয়ে নেয়। হে
দুনিয়ার পরীক্ষার চিন্তাকারীরা! আফসোস! তোমরা দুনিয়ার পরীক্ষার সম্ভাব্য
প্রশ্নাবলী নিয়ে এতই পরিশ্রম করছো। হায়! তোমরা যদি অনুধাবন করতে পারতে, কবরে
যে পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হবে সে পরীক্ষার প্রশ্নাবলী সম্ভাব্য নয় বরং তা হবে
নিশ্চিত। যা আমাদের আল্লাহ্ তাআলার রাসূল, রাসূলে মাকবুল, বিবি আমেনা رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى
عَنْهَا এর বাগানের খুশবুদার ফুল صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم দুনিয়াতে অগ্রিম জানিয়ে দিয়েছেন এবং এর উত্তরও বলে দিয়েছেন।হায়!
আফসোস! কবরের প্রশ্ন ও উত্তরের প্রতি আমাদের কোন মনোযোগ নেই। হায়! আমরা দুনিয়াতে
এসে দুনিয়ার চাকচিক্যে আজ এতই বিভোর হয়ে গেছি, আমাদের এ কথার অনুভূতি পর্যন্তও রইলো না যে, আমাদেরকে
মৃত্যুবরণ করতে হবে।
দিলা গাফিল না হো এয়কদাম ইয়ে দুনিয়া ছোড় জানা হে,
বাগিছে ছোড় কর খালি যমী আন্দর ছামানা হে।
তেরা নাজুক বদন ভায়ি জু লেটে সেজ ফুলো পর,
ইয়ে হোগা এক দিন বে জা ইসে কিরমো নে খানা হে।
তু আপনে মওত কো মত ভুল কর সামান চলনে কা,
জমী কি খাঁক পর চোনা হে ইটুঁ কা চিরহানা হে।
না বেলি হো সকে ভায়ি না বেটা বাপ তে মায়ি,
তু কিউ পিরতা হে চাওদায়ী আমল নে কাম আ-না হে।
আযিযা ইয়াদ কর জিছ দিন ইজরাঈল আয়ে গে,
না জাভে কুয়ি তেরী সাঙ্গ একিলা তু নে জানা হে।
জাহা কে শাগল মে শাগিল খোদা কি ইয়াদ ছে গাফিল,
করে দাওয়া কে ইয়ে দুনিয়া মেরা দায়িম ঠিকানা হে।
গোলাম ইক দম না কর গফলত হায়াতি পর না হো গুররা,
খোদা কি ইয়াদ কর হারদমকে জিছ নে কাম আ-না হে।
অনুকরণকারীই সফলতা লাভ করবে
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আল্লাহ্ তাআলা আপনাদের উপর দয়া ও
অনুগ্রহ করক, আপনাদের সকলকে রাসূলুল্লাহ্ صَلَّی اللّٰہُ
تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর রওজা মোবারকের সবুজ গম্বুজের
ছায়াতলে ঈমান ও ক্ষমার সাথে শাহাদাত নসীব করুক।আর এসব দোয়া মদীনা মুনাওয়ারার মাটির
সদকায় আমি সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ (লিখক) এর পক্ষেও কবুল করুক। আল্লাহ্
তাআলা শুধুমাত্র আপন দয়া ও অনুগ্রহে এমন কিছু পবিত্র আদর্শ প্রদান করেছেন: যে
মুসলমান ঐসব আদর্শ যত (বেশি) ভাল অনুকরণ করবে, সে তত বেশি সফলতার শীর্ষে উপনীত হতে পারবে।
সুতরাং আল্লাহ্ তাআলা সে পুতঃ পবিত্র আদর্শের ঘোষণা ২১ পারার সূরা আহযাবের ২১তম
আয়াতে এভাবে প্রদান করেন:
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُوْلِ اللهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةُ
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ:
নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর অনুসরণই উত্তম’। সুতরাং যে এই রহমত ভরা
আদর্শের অনুকরণ করবে, সেই সফলতা লাভ করবে। আর আল্লাহ্ প্রদত্ত ও
অতুলনীয় আদর্শ ছেড়ে যে শয়তানের অনুসরণ ও অনুকরণ করবে, অমুসলিমদের
রীতি-নীতি গ্রহণ করবে, সে কখনও সফলতা অর্জন করতে পারবে না।
হতভাগা বর নিদ্রায়ই রয়ে গেলো!
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আল্লাহ্ তাআলা আপনাদের উপর দয়া ও
অনুগ্রহ করুক! হতে পারে, আপনাদের কারো বেলায়ও এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে
যেতে পারে। যেমন- মনে করেন, কেউ রাতে সম্পূর্ণ সুস্থ-সবল অবস্থায় বিছানায়
শুয়ে ছিলেন, কিন্তু সকালে যখন চাকুরীতে যাওয়ার জন্য তাকে
ঘুম থেকে ডাকা হলো, তখন জানা গেলো যে, আজ
রাতে সে এমন নিদ্রায় বিভোর হলো,
কিয়ামত পর্যন্ত ঘুমাতেই থাকবে। অর্থাৎ-
ইন্তিকাল হয়ে গেছে।
হ্যাঁ! এটা বাবুল মদীনা করাচীতে সংগঠিত এক হৃদয় বিদারক
ঘটনা: এক যুবকের বিবাহ হলো, নব-বধুকে ঘরে আনার তারিখও ঠিক হয়ে গেলো। কাল
ঘরে নব-বধুকে আনার রাত, রাতে বিবাহের শোকরানা স্বরূপ নামায-কালাম, দান
খয়রাত করার পরিবর্তে শয়তানের অনুসরণে নাচ-গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করলো। তার বংশের
নারীরা ঢোল, তবলার সূরে সূরে নৃত্য করতে লাগলো, আর
পুরুষও নেচে নেচে আনন্দ উপভোগ করছিলো। সারা রাত নাচ আর গানে ঝুমঝুম করে যখন ফজরের
আযান শুরু হলো, তখন নামায আদায় করার জন্য মসজিদে যাওয়ার
পরিবর্তে সবাই ঘুমানোর জন্য চলে গেলো। বর ও আপন বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। সারা
রাতের ক্লান্তিতে চোখে ঘুম চলে আসলো।
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! একটু মনযোগ সহকারে শুনুন! জুমার দিন
ছিলো, দুপুর ১২টা বাজলো, তার মা তাকে ঘুম থেকে জাগানোর উদ্দেশ্যে তার
শয়ন কক্ষে কাউকে প্রেরণ করে বললো: যাও! তুমি আমার আদরের দুলালকে ঘুম থেকে ডেকে বলো, আজ
জুমার দিন। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে যেন গোসল সেরে নেয় এবং সাজগোজ করে প্রস্তুত হয়ে
যায়। কেননা, আজ তার নব-বধু আমাদের ঘরে আসবে। জাগানোর জন্য
ঘরের একজন আত্মীয় গেলো এবং সজোরে ডাকলো। কিন্তু বর সাহেব কোন উত্তর দিলো না। কী
আশ্চর্য! সে কি সারা রাতের বিনিদ্রায় এতই ক্লান্ত হয়ে পড়লো যে, চক্ষু
পর্যন্ত খুলতে পারছে না। কিন্তু যখন নড়াচড়া দিয়ে দেখলো, তখন
তার চিৎকার বের হয়ে গেলো। বললো: সেতো চির নিদ্রায় শায়িত হয়ে গেলো। মুহুর্তের মধ্যে
বিবাহ বাড়ীর আনন্দ বিষাদে পরিণত হলো। সকলের মধ্যে বিষন্নতা নেমে এলো।যে বাড়ীতে
আগের রাতে আনন্দ উৎসবের বাজনা বেজেছিলো, সে বাড়ীতে এখন কান্নাকাটির রোল পড়ে গেলো।
যেখানে হাসি-তামাশার ঝর্ণাধারা বহমান ছিলো, সেখানে এখন অশ্রুধারা প্রবাহিত হতে লাগলো। কাফন
দাফনের প্রস্তুতি নেয়া হলো। আফসোস! শত আফসোস! কয়েক ঘন্টা পর যাকে বর সাজিয়ে, মাথায়
ফুলের মালা পরিধান করিয়ে সুসজ্জিত গাড়ীতে করে আরোহন করা হতো, সে
হতভাগা বরকে জানাযার খাটে আরোহন করে বরযাত্রী যাওয়ার পরিবর্তে তাকে কাঁধে করে নিয়ে
কবর স্থানের দিকে রাওনা হচ্ছে। হায়! আফসোস! হতভাগা বিজলি বাতিতে ঝিলমিলকারী আলো
থেকে বের হয়ে গভীর অন্ধকার কবরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ তাকে বিভিন্ন রকমের
সুগন্ধময় পুষ্প দ্বারা সুসজ্জিত,
বিজলি বাতিতে আলোকিত বাসর ঘরে নয় বরং
পোকা-মাকড়ে ভরা ভয়ানক কবরে শায়িত করা হবে। এখন তার শরীরের মধ্যে বিবাহের সাজ-সজ্জা, নিত্য
নতুন পোশাক কিছুই থাকবে না, বরং তার শরীরের মধ্যে কাফুরের বিষন্ন সুগন্ধ
মিশ্রিত কাফন জড়ানো থাকবে। আর... আর... দেখতে দেখতেই হতভাগা বরকে কবরের মধ্যে
নামিয়ে দেয়া হলো। আহ!
তু খুশি কে ফুল লে গা কব তলক?
তু ইয়াহা যিন্দা রহে গা কব তলক?
কবরের ভয়ানক দৃশ্য
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আমাদেরকেও একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে
এবং অন্ধকার কবরে যেতে হবে। হ্যাঁ! হ্যাঁ! আমরা নিজের দাফনকারীদেরকে দেখতে পাবো
এবং তাদের কথা শুনতে পাবো। তারা যখন আমাদের উপর মাটি দিতে থাকবে, তখন এ
বেদনাদায়ক দৃশ্যও আমরা অবলোকন করতে থাকবো, কিন্তু তাদেরকে কিছু বলতে পারবো না। দাফন করার
পর যখন তারা আমাদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাবে, তখন তাদের পায়ের আওয়াজ আমরা কবর থেকে শুনতে
পাবো, তখন মন খুবই অস্থির হয়ে পড়বে। এমন সময় নিজের লম্বা লম্বা
দাঁত দ্বারা কবরের দেয়াল ভেদ করে ভয়ানক আকৃতি বিশিষ্ট কালো কালো ভয়ংকর চুল ঝুলানো
মুনকার ও নকীর নামক দুইজন ফিরিস্তা কবরে এসে উপস্থিত হবে। তাঁদের চোখ থেকে
অগ্নি-স্ফুলিঙ্গ বের হতে থাকবে,
আর তারা কঠোরতার সাথে বসিয়ে কর্কশ ভাষায় প্রশ্ন
করবে। দুনিয়ার চাকচিক্যে মত্তগণ,
শুধুমাত্র দুনিয়ার পরীক্ষার জন্য
চিন্তা-ভাবনাকারী, সিনেমা-নাটকের দর্শকগণ, গানবাজনা
শ্রবণকারীগণ,দাঁড়ি মুন্ডনকারীগণ, সূদ ও
ঘুষের লেনদেনকারীগণ, নিজের ক্ষমতা এবং পদের দাপটে অবৈধভাবে ফায়দা
লুটে মজলুমের অভিশাপ অর্জনকারীগণ,
মিথ্যাবাদীগণ, গীবত ও চোগলখোরগণ, পিতামাতার
মনে কষ্টদানকারীগণ, নিজ সন্তানদেরকে শরীয়াত ও সুন্নাত অনুযায়ী
লালন-পালন না করা ব্যক্তিগণ, ধর্মীয় মনোভাব সম্পন্ন যাতে হতে না পারে এই
খারাপ নিয়্যতে নিজের সন্তানদেরকে সুন্নতে ভরা মাদানী পরিবেশ এবং দা’ওয়াতে
ইসলামীর ইজতিমায় যাওয়া থেকে বাধা প্রদানকারীগণ, নিজ সন্তানদেরকে দাঁড়ি রাখা থেকে বারণকারীগণ,বেপর্দা
নারীগণ ও মাথার চুল খোলা রেখে বাজার ও গলিতে ঘুরাফেরাকারী রমনীগণ, মেক-আপ
করে শপিং সেন্টার ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ীতে বেপর্দা গমনকারীনীগণ এবং দুঃসাহসের
সাথে বিভিন্ন রকমের পাপকার্যে লিপ্ত থাকা ব্যক্তিগণের উপর যদি আল্লাহ্ তাআলা
অসন্তুষ্ট হয়ে যায় এবং তাঁর রাসূল صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم মুখ ফিরিয়ে নেন এবং গুনাহের কারণে (আল্লাহর পানাহ!) যদি ঈমান নষ্ট
হয়ে যায়, তাহলে কি অবস্থা হবে? অত্যন্ত
কর্কশ ভাষায় প্রশ্ন করা হবে:مَنْ رَّبُّكَ؟ অর্থাৎ- তোমার রব কে? আহ!
রব-কে কখন স্মরণ করেছিলো তা মনেও তো নেই, যে বেঈমান হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিলো, তার
মুখ থেকে বের হবে: هَيْهَاتَ هَيْهَاتَ لَا اَدْرِىঅর্থাৎ- আফসোস! আফসোস!
আমার কিছুই জানা নেই। অতঃপর প্রশ্ন করা হবে: مَا دِيْنُكَ؟ অর্থাৎ- তোমার ধর্ম কি? কবরে
মৃত ব্যক্তি চিন্তা করতে থাকবে,
আমিতো সারা জীবন দুনিয়ার লোভ লালসায় মত্ত ছিলাম, কবরের
পরীক্ষার প্রস্তুতির কথাতো জীবনে কখনও খেয়ালও করিনি। শুধুমাত্র দুনিয়ার চাকচিক্যে
মগ্ন ছিলাম, আমার কবরের পরীক্ষার কথা কখনো জানা ছিলো না।
কিছু বুঝে আসছে না এবং মুখ থেকে উচ্চারিত হবে: هَيْهَاتَ هَيْهَاتَ لَا اَدْرِى অর্থাৎ- আফসোস! আফসোস!
আমার কিছুই জানা নেই। অতঃপর তাকে এক অতুলনীয় সুন্দর নূরানী দৃশ্য দেখানো হবে এবং
প্রশ্ন করা হবে: مَا كثنْتَ تَقُوْلُ فِىْ هٰذَا الرَّجُل؟ অর্থাৎ- এই ব্যক্তি
সম্পর্কে তোমার মতামত কি? কিভাবে সে তাকে চিনতে পারবে! দাঁড়ির প্রতি তো
ভালবাসা মোটেই ছিলো না! বিধর্মীদের রীতিনীতি (তার কাছে) পছন্দনীয় ছিলো, দাঁড়ি
মুন্ডন করার অভ্যাস ছিলো। তিনি তো দাঁড়ি শরীফ বিশিষ্ট ব্যক্তি। ছেলে বাবরী চুল
রেখে ছিলো, তাই তাকে মেরে মেরে (বাবরী) চুল কেটে ফেলতে
বাধ্য করেছিলো! এই বুযুর্গ তো একজন বাবরী চুল বিশিষ্ট। চাবির তোড়াতে (KEYCHAIN) সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের ছবি রাখতো। নিজের গাড়ির পিছনেও
নায়ক-নায়িকাদের ছবি টাঙ্গিয়ে অন্যদের জন্যও কুদৃষ্টির (পথকে) ব্যাপক করে ছিলো।
ঘরের মধ্যেও নায়ক-নায়িকাদের ছবি টাঙ্গিয়ে রাখতো। আমার তো নায়ক-নায়িকা এবং
গায়ক-গায়িকাদের পরিচয় জানা ছিলো! জানা নেই এই ব্যক্তি কে? হায়!
যার শেষ বিদায় ঈমানের সাথে হয়নি তার মুখ থেকে উচ্চারিত হবে: هَيْهَاتَ هَيْهَاتَ لَا
اَدْرِى অর্থাৎ- আফসোস! আফসোস! আমার কিছুই জানা নেই। এমন সময় জান্নাতের
জানালা খুলে যাবে আবার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যাবে। অতঃপর জাহান্নাম জানালা খুলে যাবে
এবং তাকে বলা হবে: তুমি যদি সঠিক উত্তর দিতে পারতে, তবে তোমার জন্য ঐ জান্নাতের
জানালা খোলা থাকতো। এটা শুনে সে বিষন্ন চিত্তে আফসোসের উপর আফসোস করতে থাকবে।
অতঃপর তার কাফনকে আগুনের কাফনে পরিণত করা হবে এবং কবরে আগুনের বিছানা বিছানো হবে।
আর তার শরীরে সাপ-বিচ্ছু জড়িয়ে ধরবে।
আজ মাচ্ছর কা ভি ডং আহ্! চাহা জা-তা নেহি,
কবর মে বিচ্ছু কে ডং কেইচে চহেগা ভাই?
কবরে রাসূলুল্লাহ্( ﷺ)এর নূরের ঝলক
নামাযীরা,
রমযানের রোযা পালনকারী, হজ্ব
পালনকারী, সম্পূর্ণ যাকাত আদায়কারী, সিনেমা-নাটক
থেকে দূরে পলায়নকারী, ওয়াদা ভঙ্গ, দুঃচরিত্র, কুদৃষ্টি, মিথ্যা, গীবত, চোগলখোরী এবং বেপর্দা থেকে বিরত থাকা ব্যক্তিগণ,আল্লাহ্
তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মিষ্ট ভাষা-ভাষীগণ, দা’ওয়াতে
ইসলামীর মুবাল্লিগগণ, সুন্নাতের উপর নিজে আমল করে অপরকেও সুন্নাত
শিক্ষা দানকারীগণ, ফয়যানে সুন্নাতের দরস দাতা ও শ্রবণকারীগণ, নেকীর
দাওয়াত প্রসারকারীগণ, দা’ওয়াতে ইসলামীর সুন্নাতের প্রশিক্ষণের জন্য
মাদানী কাফেলাতে সফরকারীগণ, আপন মূখমন্ডলকে এক মুষ্টি দাঁড়ি দ্বারা
সুসজ্জিতকারীগণ, নিজের মাথায় ইমামার (পাগড়ীর) তাজ সজ্জিতকারীগণ, সুন্নাত
মোতাবেক পোশাক পরিধানকারীগণের জন্য সুসংবাদ, যখন মুমিন ব্যক্তি কবরে যাবে এবং তাঁকে প্রশ্ন
করা হবে: مَنْ
رَّبُّكَ؟ অর্থাৎ তোমার রব কে? সে বলবে: رَبِّىَ الله অর্থাৎ- আমার প্রতিপালক
আল্লাহ্ তাআলা। مَا دِيْنُكَ؟ অর্থাৎ তোমার ধর্ম কি? তাঁর
মূখ থেকে উচ্চারিত হবে: دِيْنِىَ الاِسْلَام অর্থাৎ- আমার ধর্ম ইসলাম। اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ
عَزَّوَجَلّ এই ইসলাম ধর্মের প্রতি আমার ভালবাসা ও ভক্তি থাকার কারণে দা’ওয়াতে
ইসলামীর মাদানী কাফেলায় সফর করতাম। এ ইসলামের প্রতি ভালবাসার কারণে আমি সমাজের
লোকদের ভৎসনা, নিন্দা সহ্য করতাম, সুন্নাতের
উপর আমল করতে দেখে লোকেরা আমাকে ঠাট্টা করতো, আমি হাসি মুখে তা সহ্য করতাম। এ ইসলাম ধর্মের
জন্য আমার জীবন ওয়াকফ ছিলো। অতঃপর তার সম্মূখে কারো রহমত ভরা নূরের ঝলক দেখানো হবে, তখন
সৌভাগ্যবান নামাযী, রোযাদার, হজ্ব পালনকারী, ফরয হওয়া অবস্থায় সম্পূর্ণ
যাকাত আদায়কারী, সুন্নাতের উপর আমলকারী, নেকীর
দাওয়াতের সাড়া জাগানোকারী, মাদানী কাফেলাতে সুন্নাতে ভরা সফরকারীদের মন
আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠবে। কেননা,
মুফতি আহমদ ইয়ার খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এর মতে আশিকদের অবস্থা
দুনিয়াতে এরূপ হয়ে থাকে:
রূহ নাহ্ কিউ হো মুযতারিব মউত কে ইনতিযার মে,
চুন তাহু মুঝকো দেখনে আয়ে গে উহ্ মাযার মে।
এবং এই আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে (মুমিন ব্যক্তি) তার সারা জীবন
অতিবাহিত করেছিলেন। যেমন-
কবর মে ছরকার আয়ে তো ম্যায় কদমো পর গিরো,
গর ফিরিশতে ভি উঠায়ে তো ম্যায় উনছে ইউ কহু।
আব তো পায়ে নায ছে ম্যায় এ্যয় ফিরিশতে কিউ উঠো,
মরকে পৌঁহ্ছা হো ইয়া ইছ দিলরুবা কে ওয়াসতে।
সুতরাং যখন মুমিন ব্যক্তিকে কবরে রহমতে আলম, নূরে
মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে: مَا كثنْتَ تَقُوْلُ فِىْ هٰذَا الرَّجُل؟ অর্থাৎ- এই ব্যক্তি
সম্পর্কে তোমার মতামত কি?তখন মূখে অনর্গল ভাবে জারী হবে: هُوَ رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم অর্থাৎ তিনি তো আল্লাহ্
তাআলার রাসূল صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم । তিনিই তো আমার সে প্রিয় রাসূল, রাসূলে
মাকবুল صَلَّی
اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم, যার আলোচনা শুনে আমি আন্দোলিত হতাম এবং যার
পবিত্র নাম শুনে অটল বিশ্বাসে,
ভক্তি সহকারে আমার বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বন করে চোখে
লাগাতাম, তিনি তো আমার সে প্রিয় আক্বা, উভয়
জগতের দাতা صَلَّی
اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم যার স্মরণই আমার জীবনের
একমাত্র সম্বল ছিলো। তিনি তো আমার প্রিয় প্রিয় আকা صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم যার স্মরণ আমার অন্তরের প্রশান্তি এবং আমার চোখের আলো ছিলো।
তোমহারি ইয়াদ কো কেইচে নাহ্ যিন্দেগী ছমঝো,
ইয়েহি তো এক ছাহারা হে যিন্দেগী কেলিয়ে।
মেরে তো আপ হি ছব কুছ হে রহমতে আলম,
মে জি রাহা হু যামানে মে আপহি কে লিয়ে।
আর যখন নবীয়ে রহমত صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم (মুমিন ব্যক্তিকে) দীদার দ্বারা ধন্য করে কবর থেকে বিদায় নিবেন।
তখন পবিত্র কদম মোবারক জড়িয়ে ধরে আরয করতে থাকবে: ইয়া রাসূলাল্লাহ্ صَلَّی اللّٰہُ
تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم
দিল ভী পিয়াছা নযর ভী হে পিয়াছী, কিয়া
হে এইছি ভী জানে কি জলদি।
ঠেহরো! ঠেহরো! যরা জানে আলম, হাম নে জী ভরকে দেখা নেহী
হে।
হায়! যদি সর্বদা আমাদের কবর আমাদের প্রিয় নবী, রাসূলে
আরবী صَلَّی
اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর নূরানী ঝলকে আলোকিত
হতে থাকতো। মাওলানা হাসান রযা খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এর মতে.....
কিউ করে বযমে শবিস্থানে জিনাহ্ কি খাহিশ,
জলওয়ায়ে ইয়ার জু শময়ে শবে তানহায়ি হো।
শেষ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর জাহান্নাম জানালা খুলে যাবে, আবার
সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যাবে। অতঃপর জান্নাতের জানালা খুলে যাবে এবং (তাকে) বলা হবে:
তুমি যদি সঠিক উত্তর দিতে না পারতে, তবে তোমার জন্য দোযখের জানালা খোলা থাকতো। এটা
শুনে তার মন আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়বে। অতঃপর তার কাফন জান্নাতী কাফনে পরিণত হবে, কবরে
জান্নাতের বিছানা বিছানো হবে, কবর তার দৃষ্টির সমপরিমাণ প্রশস্থ হয়ে যাবে এবং
(সে) অনাবিল সু-শান্তি, আরাম-আয়েশ উপভোগ করতে থাকবে।
কবর মে লেহরায়ে গে তা হাশর চশমে নূর কে,
জলওয়া ফরমা হোগি জব তল‘আত রাসূলুল্লাহ্ কি।
(হাদায়িকে
বখশিশ শরীফ)
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب
! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
জাহান্নামের দরজায় নাম
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আল্লাহ্ তাআলার দরবারে তাড়াতাড়ি
নিজের কৃত গুনাহের জন্য তাওবা করে নিন। মক্কী মাদানী আক্বা, প্রিয়
মুস্তফা صَلَّی
اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে
কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে এক ওয়াক্ত নামাযও কাযা করে দেয়, তার নাম জাহান্নামের ঐ দরজায়
লিখে দেয়া হবে যে দরজা দিয়ে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” হিলইয়াতুর
আউলিয়া, ৭ম খন্ড,
২৯৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১০৫৯০) নিয়মিত নামায আদায় করুন, বাহারে
শরীয়াত ১ম খন্ড ৪৩৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে: “গাইয়্যুন” জাহান্নাম একটি উপত্যকা, যার
উত্তাপ ও গভীরতা সবচেয়ে বেশি। এতে একটি কূপ রয়েছে যার নাম “হাবহাব”। যখন
জাহান্নাম আগুন নিভে যাওয়ার উপক্রম হয়। আল্লাহ্ তাআলা এই কূপটি খুলে দেন, যার
দ্বারা সেটা নিয়মানুযায়ী জ্বলতে থাকে। এ কূপটি বেনামাযী, ব্যভিচারী, মদ্যপায়ী, সূদখোর
ও মাতা-পিতাকে কষ্ট দানকারীর জন্য (অবধারিত) রয়েছে। রমযানের রোযার প্রতি যত্মবান
হোন, হাদীস শরীফে রাসূলে মাকবুল صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন:“যে (ব্যক্তি) শরীয়াত সম্মত কারণ ও অসুস্থতা
ব্যতীত রমযানের একটি রোযা কাযা করবে, তবে (পরবর্তীতে) সারা জীবনের রোযা ঐ একটি রোযার
কাযা হতে পারে না, যদিও পরে (তা) রেখে দেয়।” (তিরমিযী, ২য়
খন্ড, ১৭৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৭৩৩) প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! পূর্বের
নামায বা রোযা যদি অবশিষ্ট থাকে,
তাহলে সেগুলো হিসাব করে ওমরী কাযা আদায় করে নিন
এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে কাযা করার কারণে যে গুনাহ হয়েছে তার জন্যও তাওবা করে
নিন।সিনেমা-নাটকের দর্শক এবং কুদৃষ্টি প্রদানকারী ব্যক্তিদের ভয় করা উচিত। কেননা, “মুকাশাফাতুল
কুলুব” নামক গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে: যে (ব্যক্তি) নিজের চোখকে হারাম
দৃষ্টি দ্বারা পূর্ণ করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাআলা তার চোখে (দোযখের)
আগুন ঢেলে দিবেন। (মুকাশাফাতুল কুলুব, ১০ পৃষ্ঠা) পিতা-মাতাকে কষ্টদানকারীদের জন্য
মর্মান্তিক শাস্তি অবধারিত রয়েছে। সুতরাং হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে: মিরাজের রাতে
মদীনার তাজেদার, নবীদের সরদার, শাহানশাহে আবরার صَلَّی اللّٰہُ
تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم একটি দৃশ্য এটাও দেখেছেন যে, কতিপয়
লোক আগুনের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিলো। আরয করা হলো: এরা পিতা-মাতাকে গালমন্দকারী
(কষ্ট দানকারী)। (আল কাবায়ের,৪৮ পৃষ্ঠা) দাঁড়ি মুন্ডনকারী অথবা এক মুষ্টি
থেকে ছোটকারীদের জন্য চিন্তার বিষয় রয়েছে। কেননা, হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে: “গোঁফ
খুবই খাটো করো এবং দাঁড়িকে বাড়তে দাও (বৃদ্ধি করো) এবং ইহুদীদের মতো আকৃতি বানিও
না।” (শরহে মাআনিয়ুল আসার, ৪র্থ খন্ড, ২৮ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৬৪২২, ৬২২৪)
ছরকার কা আশিক ভী কিয়া দাঁড়ি মু-ন্ডাতা হে?
কিউ ইশ্ক কা চেহরে ছে ইযহার নেহী হোতা?
কালো বিচ্ছু
পাকিস্তানের প্রসিদ্ধ শহর কুয়েটার নিকটবর্তী কোন একটি
গ্রামে বেওয়ারিশ এক ক্লিনসেভ যুবককে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেলো। স্থানীয় লোকেরা
মিলে-মিশে তাকে দাফন করে ফেলে। এরই মধ্যে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়রা এসে উপস্থিত হলো
এবং বলতে লাগলো: আমরা এই লাশটি কবর থেকে তুলে নিয়ে যাবো এবং আমাদের গ্রামে (পুনরায়)
দাফন করবো। অতএব কবর পুনরায় খনন করা হলো।যখন (তার) চেহারার দিক থেকে মাটি সরানো
হলো তখন লোকদের চিৎকার শুরু হলো! মৃত ব্যক্তির চেহারা থেকে কাফনের কাপড় সরানো ছিলো
এবং ক্লিনসেভ যুবকের চেহারাতে কতগুলো কালো কালো বিচ্ছু কালো কালো দাঁড়ির রূপ ধারণ
করে আছে। (এ দৃশ্য দেখে) লোকেরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তড়িগড়ি করে কবরের আবরণ পূনরায়
স্থাপন করে তার উপর মাটি চাপা দিলো এবং পলায়ন করলো।
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আমাদের সকলকে আল্লাহ্ তাআলা বিচ্ছু
থেকে রক্ষা করুক। আমীন! তাড়াতাড়ি প্রিয় প্রিয় এবং মধু হতেও মিষ্ট প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ
تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সুন্নাত চেহারায় সাজিয়ে নিন। আর
যারা এখনও পর্যন্ত দাঁড়ি মুন্ডন করে অথবা এক মুষ্টি থেকে ছোট করে তারা যেন এ গুনাহ
থেকে বাঁচার জন্য তাওবাও করে নেয়। স্মরণ রাখবেন! দাঁড়ি মুন্ডন করা হারাম এবং এক
মুষ্টি ছোট করাও হারাম।
বাবরী চুল রাখা সুন্নাত
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আমাদের মক্কী মাদানী আক্বা, প্রিয়
মুস্তফা صَلَّی
اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর মোবারক চুল কখনো
অর্ধেক কান মোবারক পর্যন্ত অথবা কখনো কান মোবারকের লতি পর্যন্ত আবার অনেক সময় চুল
মোবারক লম্বা হয়ে গেলে তখন মোবারক কাঁধকে চুম্বন করতো। (আশ শামায়িলে মুহাম্মদীয়া
লিত তিরমিযী, ১৮, ৩৪, ৩৫ পৃষ্ঠা) (তবে হজ্ব ও ওমরার ইহরাম থেকে বের
হওয়ার জন্য চুল মোবারক মুন্ডন করেছেন) ইংরেজী ফ্যাশন করে চুল রাখা সুন্নাত নয়, বাবরী
চুল রাখা সুন্নাত। দয়া করে আপন মাথায় সুন্নাত মোতাবেক বাবরী চুল সাজিয়ে নিন।অনুরূপ
ভাবে প্রিয় নবী, রাসূলে আরবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর প্রিয় সুন্নাত মাথায় ইমামা (পাগড়ী) শরীফের তাজও সাজিয়ে নিন।
ইমামার (পাগড়ীর) মনোরম কাহিনী
আমার আক্বা ইমামে আহলে সুন্নাত মাওলানা শাহ্ আহমদ রযা খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى
عَلَيْهِ বর্ণনা করেন: আমীরুল মু’মিনীন হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুকে আযম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى
عَنْهُ এর দৌহিত্র হযরত সায়্যিদুনা সালেম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ বলেন: আমি একদা আমার
পিতা (হযরত সায়্যিদুনা) আব্দুল্লাহ্ বিন ওমর رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُمْا এর নিকট উপস্থিত হলাম আর
তিনি পাগড়ী পরিধান করছিলেন। যখন ইমামা (পাগড়ী) পরিধান করে নিলেন (তখন) আমার দিকে
লক্ষ্য করে বললেন: তুমি কি পাগড়ীকে ভালবাস? আমি বললাম: কেন নয়! হ্যাঁ! ভালবাসি। (তিনি)
বললেন: সেটাকে ভালবাসিও সম্মান পাবে এবং শয়তান যখন তোমাকে (পাগড়ী পরিধান অবস্থায়)
দেখবে, তোমার নিকট থেকে পিঠ ফিরিয়ে নিবে (অর্থাৎ দ্রুত পলায়ন
করবে)। আমি রাসূলুল্লাহকে صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করতে শুনেছি: “পাগড়ী
সহকারে এক (রাকাত) নামায (আদায় করা) ফরয হোক কিংবা নফল পাগড়ী বিহীন পঁচিশ (রাকাত)
নামায (আদায় করার) সমান এবং পাগড়ী সহকারে একটি জুমা (আদায় করা) পাগড়ী বিহীন
সত্তরটি জুমা (আদায় করার) সমান।’অতঃপর ইবনে ওমর رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُمْا বললেন: হে প্রিয় বৎস!
পাগড়ী পরিধান করিও। কেননা, ফিরিশতারা জুমার দিন পাগড়ী পরিধান করে আগমন
করেন এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত পাগড়ী পরিধানকারীর উপর সালাম প্রেরণ করতে থাকে।
(ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, সংশোধিত, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২১৫ পৃষ্ঠা)যদি সবাই এ মাদানী মনমানসিকতা তৈরী
করতো যে, আজ থেকে আমরা দাঁড়ি, বাবরী
চুল, পাগড়ী শরীফের সুন্নাতগুলো নিজেদের মধ্যে সাজিয়ে নিই, তাহলে
আমি মনে করবো দাঁড়ি, বাবরী চুল ও পাগড়ী শরীফের প্রচলন পুনরায় শুরু
হয়ে যাবে। অর্থাৎ যেভাবে বর্তমানে অধিকাংশ লোকেরা দাঁড়ি মুন্ডন করছে, ঠিক
সেভাবে অধিকাংশ মুসলমান দাঁড়ি সাজাতে থাকবে এবং চতুর্দিকে দাঁড়ি, বাবরী
চুল ও পাগড়ী শরীফের বাহার চলে আসবে।
হাম কো মিঠে মুস্তফা কি সুন্নাতোঁ ছে পিয়ার হে,
দো’জাহাঁ মেঁ আপনা বেড়া পার হে।
নাজায়িয ফ্যাশনকারীদের পরিণতি
রহমতে আলম,
নূরে মুজাস্সাম, শাহে বনী আদম صَلَّی اللّٰہُ
تَعَالٰی عَلَیْهِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “মিরাজের
রাতে আমি কতিপয় পুরুষকে দেখেছি যাদের চামড়া আগুনের কাঁচি দ্বারা কাটা হচ্ছে। আমি
জিজ্ঞাসা করলাম: এরা কারা? জিব্রাইল আমীন عَلَيْهِ السَّلَام বললেন: এরা ঐ সমস্ত লোক, যারা
নাজায়িয বস্তু দ্বারা (নিজেদের দেহের) সৌন্দর্য বর্ধন করতো। (তিনি আরও ইরশাদ করেন)
এবং আমি একটি দূর্গন্ধময় গর্তও দেখেছি, যেখানে শোরগোল ও চিৎকার হচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা
করলাম: এরা কারা? তখন বললেন: এরা হলো ঐ সমস্ত মহিলা, যারা
নাজায়িয বস্তু দ্বারা নিজেদের দেহের সৌন্দর্য বর্ধন করতো।” (তারিখে
বাগদাদ, ১ম খন্ড,
৪১৫ পৃষ্ঠা) স্মরণ রাখবেন! নখ পালিশ নখের উপর
জমাট বেঁধে যায় অতএব এ অবস্থায় অযু করলে অযু হবে না ও (ফরয) গোসল করলে তাও আদায়
হবে না। যখন অযু ও গোসল হবে না তখন নামাযও শুদ্ধ হবে না।
আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আজ থেকে প্রতিজ্ঞা করে নিন যে, আমার
কোন নামায কাযা হবে না.... আজকের পর থেকে রমযানের কোন রোযা কাযা হবে না....
সিনেমা-নাটক দেখবো না.... গান-বাজনা শুনব না.... দাঁড়ি মুন্ডন করবো না.... এক
মুষ্টি থেকে ছোট করবো না.... اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّআর পুরুষদের পায়জামা (ও
লুঙ্গি) গোড়ালির উপরে পরিধান করা উচিত। কেননা, যে কাপড় অহংকার বশতঃ (পায়ের গোড়ালির) নিচে পড়ে
তা আগুনের অন্তর্ভূক্ত। হাদীস শরীফে উল্লেখ রয়েছে: “এক ব্যক্তি অহংকার করে
লুঙ্গি হেচড়াচ্ছিলো (তাই তাকে) জমিনের নিচে ধ্বসিয়ে দেয়া হলো এবং কিয়ামত পর্যন্ত
সে জমিনের নিচে ধ্বসতে থাকবে।”
(সহীহ বুখারী, ৪র্থ খন্ড, ৪৬
পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৫৭৯০) আজকের পর থেকে সকল ইসলামী ভাই নিজের
(লুঙ্গি ও) পায়জামা গোড়ালির উপরেই রাখবো .... اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! বয়ানের শেষে সুন্নাতের ফযীলত এবং কিছু
সুন্নাত ও আদব বর্ণনার সৌভাগ্য অর্জন করছি। তাজেদারে রিসালাত, শাহানশাহে
নবুয়ত, মুস্তফা জানে রহমত, হুযুর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ
وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে (ব্যক্তি) আমার সুন্নাতকে ভালবাসলো সে
(মূলত) আমাকে ভালবাসলো, আর যে আমাকে ভালবাসলো সে জান্নাতে আমার সাথে
থাকবে।” (ইবনে আসাকির, ৯ম খন্ড, ৩৪৩
পৃষ্ঠা)
সিনা তেরী সুন্নাত কা মদীনা বনে আক্বা,
জান্নাত মেঁ পড়োছী মুঝে তুম আপনা বানানা।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب
! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
--------
লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত ৩২ পৃষ্ঠা সম্বলিত “কবরের পরীক্ষা“ নামক রিসালার ৪-২৬ নং পৃষ্ঠা হতে সংগৃহীত। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই রিসালাটি অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন। অন্যকে উপহার দিন।
যারা মোবাইলে (পিডিএফ) রিসালাটি পড়তে চান তারা ফ্রি ডাউনলোড করুন ।
দাওয়াতে ইসলামীর সকল বাংলা ইসলামীক বইয়ের লিংক এক সাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন