❤❤ফযিলত-৪১❤❤
একদা হযরত সায়্যিদুনা শায়খ আবূ বকর শিবলী رحمة الله عليه বাগদাদ শরীফের বিজ্ঞ আলিম হযরত সায়্যিদুনা আবূ বকর মুজাহিদ رحمة الله عليه এর নিকট তাশরিফ নিলেন। হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর মুজাহিদ رحمة الله عليه তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন আর কপালে চুমু দিয়ে খুবই সম্মানের সাথে নিজের পাশে বসালেন। সেখানে উপস্থিত লোকেরা আরয করলেন: হে সায়্যিদী! আপনি ও বাগদাদের অধিবাসীরা এতদিন যাবৎ তাঁকে পাগল বলে আসছেন কিন্তু আজকে কেন তাঁকে এমন সম্মান দেখালেন?
জবাবে বললেন: আমি এমনিতেই এরূপ করিনি। الحمد لله عزوجل ! আজ রাতে আমি স্বপ্নে এরূপ ঈমান তাজাকারী দৃশ্য দেখেছি যে, হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর শিবলী رحمة الله عليه বারগাহে রিসালাত ﷺ এ উপস্থিত হয়েছেন, তখন ছরকারে দোআলম, নূরে মুজাস্সম, নবী করীম ﷺ দাঁড়িয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন আর কপালে চুমু দিয়ে তাঁর পাশে বসালেন। আমি আরয করলাম ইয়া রাসুলাল্লাহ ﷺ শিবলীর প্রতি এরূপ দয়া প্রদর্শনের কারণ কি? আল্লাহর মাহবুবﷺ (অদৃশ্যের সংবাদ দিয়ে) বললেন: সে প্রত্যেক নামাযের পর এ আয়াত পাঠ করে:
لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
আয়াত পাঠ করার পর আমার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করে। (আল কাওলুল বদী, ৪৬ পৃষ্ঠা, মু’সিসাতুর রাইয়ান, বৈরুত)
হযরত সায়্যিদুনা শায়খ আহমদ ইবনে মনসুর رحمة الله عليه যখন ওফাত প্রাপ্ত হন, তখন একজন শীরাযবাসী তাঁকে স্বপ্নে দেখলেন-তিনি শীরাযের জামে মসজিদের মেহরাবে দাঁড়ানো। আর তাঁর পরনে ছিলো উন্নতমানের পোশাক। মাথার উপর মুক্তা খচিত তাজ শোভা পাচ্ছিলো। স্বপ্নে যে দেখেছে সে স্বপ্নদ্রষ্টা আরয করল, “হযরত কেমন আছেন?” তিনি বললেন, “আল্লাহ তা’আলা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং আমার উপর দয়া করেছেন। আমাকে তাজ পরিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন।” লোকটি বললো, “কি কারণে?” বললেন, আমি তাজেদারে মদীনা হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর উপর বেশি পরিমাণে দুরূদে পাক পড়তাম, বস্তুত: এই আমলটা কাজে এসেছে।” (আল কাউলূল বদী, পৃ-২৫৪)
❤❤ফযিলত-৪৩❤❤
আমীরুল মু’মিনীন হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুকে আযম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ বলেন, “দুআ আসমান ও যমীনের মধ্যখানে ঝুলন্ত থাকে! তা থেকে কিছুই ওপরে যায়না (অর্থাৎ দু‘আ কবুল হয় না) যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি আপন নবীর উপর দুরূদ পাঠ কর।” ( জামে তিরমিযী, খন্ড-২য়, পৃ-২৮, হাদীস নং-৪৮৬)
❤❤ফযিলত-৪৪❤❤
আল্লাহর মাহবুব, অদৃশ্যের সংবাদ দাতা নবী, হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর জান্নাতরূপী ফরমান, “যে ব্যক্তি আমার উপর প্রতিদিন হাজার বার দুরুদে পাক পাঠ করলো, সে যতক্ষণ পর্যন্ত আপন ঠিকানা জান্নাতকে না দেখবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবেনা।” (আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩২৮ পৃঃ ২২নং হাদীস)
❤❤ফযিলত-৪৫❤❤
সুলতানে দো-আলম, নূরে মুজাস্সাম, শাহে বনী আদম, রাসূলে মুহ্তাশাম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি দিনে ও রাতে আমার প্রতি ভালবাসা ও ভক্তি সহকারে তিনবার করে দরূদ শরীফ পাঠ করবে, আল্লাহ্ তাআলার উপর (নিজ বদান্যতায়) দায়িত্ব যে, তিনি তার ঐ দিন ও ঐ রাতের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।(আল মুজামুল কবীর লিখিত তিবরানী, ১৮তম খন্ড, ৩৬২ পৃষ্ঠা, হাদীস-৯২৮)
❤❤ফযিলত-৪৬❤❤
রহমতে আলম, নূরে মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি জুমার রাত ও জুমার দিন আমার উপর একশত বার দরূদ শরীফ পড়বে, আল্লাহ্ তাআলা তার ১০০টি অভাব পূরণ করবেন। (তার মধ্যে) ৭০টি আখিরাতে আর ৩০টি দুনিয়াতে।” (তারিখে দামেশক লি ইবনে আসাকির, ৫৪তম খন্ড, ৩০১ পৃষ্ঠা, দারুল ফিকর বৈরুত)
❤❤ফযিলত-৪৭❤❤
খাতামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, শফীউল মুযনীবিন, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “তোমরা অধিক হারে আমার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করো, নিশ্চয় এটা তোমাদের জন্য পবিত্রতা।” (মুসনাদে আবি ইয়ালা, ৫ম খন্ড, ৪৫৮ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৬৩৮৩)
❤❤ফযিলত-৪৮❤❤
তাবেয়ী বুযুর্গ হযরত সায়্যিদুনা কাবুল আহবার رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: আল্লাহ্ তাআলা হযরত সায়্যিদুনা মুসা কলিমুল্লাহ্ عَلَيْهِ السَّلَام এর নিকট এ মর্মে ওহী পাঠালেন: হে মুসা عَلَيْهِ السَّلَام! তুমি কি কিয়ামতের দিনের পিপাসা থেকে রক্ষা পেতে চাও? আরয করলেন: হে আমার প্রতিপালক! হ্যাঁ! আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করলেন: فَاَكْثِرِ الصَّلَاةَ عَلٰى مُحَمَّدٍ অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উপর বেশি পরিমানে দরূদ শরীফ পড়ো। (ইবনে আসাকির, ৬১তম খন্ড, ১৫০ পৃষ্ঠা, সংক্ষেপিত)❤❤ফযিলত-৪৯❤❤
মদীনার তাজেদার, রাসুলদের সরদার, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন:“যে (ব্যক্তি) কুরআন পড়লো, আপন প্রতিপালকের প্রশংসা করলো, অতঃপর নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উপর দরূদ পড়লো, তারপর নিজ প্রতিপালক থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করলো, তবে সে মঙ্গলকে সেটার জায়গা থেকে তালাশ করে নিলো।” (শুয়াবুল ঈমান, ২য় খন্ড, ৩৭৩ পৃষ্ঠা, হাদীস- ২০৮৪)❤❤ফযিলত-৫০❤❤
এক ব্যক্তি স্বপ্নে ভয়ানক বিপদ দেখতে পেল। ভীত হয়ে সে জিজ্ঞাসা করল: তুমি কে? বিপদটি বলল: আমি হলাম তোমার খারাপ আমল। লোকটি জিজ্ঞাসা করল: তোমার থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন উপায় আছে কি? সে জবাব দিল: অধিকহারে দরূদ শরীফ পাঠ করা। (আল কওলুল বদী, ২২৫ পৃষ্ঠা, মুয়াস্সাসাতুর রাইয়ান, বৈরুত)
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত শাবান মাসের ফযিলত সম্পর্কিত “যিয়াঈ দুরূদ ও সালাম” নামক রিসালার ৬-৯ নং পৃষ্ঠা হতে সংগৃহীত। রিসালাটি নিজে কিনুন, অন্যকে উপহার দিন।
যারা মোবাইলে রিসালাটি পড়তে চান তারা ফ্রি ডাউনলোড দিন
আমাদের এই নতুন প্রয়াসকে এগিয়ে নিতে অবশ্যই পাশে থাকবেন, ভাল লেগে থাকলে আপনি নিচের শেয়ার বাটনগুলো থেকে অন্তত একটি সোস্যাল সাইটে শেয়ার করুন। কমেন্ট করে জানান ভাল লাগা। আশা করি আবার আসবেন আমাদের এই সাইটে। ভাল থাকুন সুস্থ্য থাকুন।
দাওয়াতে ইসলামীর সকল বাংলা ইসলামীক বইয়ের লিংক এক সাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন
মাদানী চ্যানেল দেখতে থাকুন