বিভাগ সমূহ

শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১২- ছাফা ও মারওয়ার সাঈ

এখন যদি কোন অপরাগতা কিংবা ক্লান্তি না আসে তাহলে দেরী না করে এখনই নতুবা বিশ্রাম করে সাফা ও মারওয়ার সাঈর জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। মনে রাখবেন যে, দৌঁড়ানোর সময় ইজতিবা অর্থাৎ কাঁধ খোলা রাখা যাবেনা। এখন সাঈ করার (দৌঁড়ানোর) জন্য হাজরে আসওয়াদের পূর্বের নিয়মানুসারে দুই হাত কান পর্যন্ত তুলে এই দোআটি পড়ে হাজরে আসওয়াদকে ইসতিলাম করুন। দোআটি হল:
بِسْمِ اللہِ وَالْحَمْدُ لِلہِ وَاللہُ اَکْبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوْلِ اللہؕ

যদি ইসতিলাম করার সুযোগ না হয় হবে তার দিকে (অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদের দিকে) মুখ করে اَللہُ اَکْبَرُط وَلَآ اِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَ الْحَمْدُلِلہِ ط এবং দরূদ শরীফ পড়তে পড়তে দ্রুত বাবুস সাফায় চলে আসুন!

ছাফা ও মারওয়া সাঈ
সাফা পাহাড় যেহেতু মসজিদে হারামের বাহিরে অবস্থিত আর সবসময় মসজিদ হতে বের হওয়ার সময় বাম পায়ে বের হওয়া সুন্নাত। তাই এখানেও প্রথমে বাম পা বাইরে রাখুন এবং নিয়মানুযায়ী দরূদ শরীফ পড়ে মসজিদ হতে বের হওয়ার এই দোআ পড়ুন।


اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَسْئَلُکَ مِنْ فَضْلِکَ وَرَحْمَتِکَ ط

অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তোমার দয়া এবং অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি।

এখন দুরূদ ও সালাম পড়ে পড়ে ছাফা পাহাড়ের চুড়ায় এতটুকু উঠবেন যাতে কাবা শরীফ দেখা যায় এবং এটা এখানে সামান্য উঠলেই হয়ে যায়। মূর্খ মানুষের মত অধিক উপরে উঠবেন না।” এখন এই দোআ পড়ুন: 


اَبْدَءُ بِمَا بَدَأَ اللہُ تَعَالٰی بِهٖ ﴿ اِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَۃَ مِنْ شَعَآئِرِ اللہِ ج فَمَنْ حَجَّ الْبَـیْتَ اَوِاعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْہِ اَنْ یَّطَّوَّفَ بِہِمَا وَمَنْ تَطَوَّعَ خَیْرًا فَاِنَّ اللہَ شَاکِرٌ عَلِیْمٌ﴾ 

অনুবাদ: আমি সেখান থেকে শুরু করছি যেটাকে মহান আল্লাহ প্রথমে উল্লেখ শুরু করেছেন। নিশ্চয় ছাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভূক্ত। যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর হজ্ব কিংবা ওমরা করবে এই দুইটির তাওয়াফে (সাঈতে) তার জন্য কোন গুনাহ নেই, আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন ভাল কাজ করে। তবে নিশ্চয় আল্লাহ নেকী প্রতিদানকারী ও সর্বজ্ঞ। (পারা: ২, সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৫৮)

সাফার উপর লোকদের বিভিন্ন ধরণ না জানার কারণে অনেক মানুষ হাতের তালুকে কাবা শরীফের দিকে করে রাখে। অনেকে হাত দোলাতে থাকে আবার অনেকে তিনবার হাতকে কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দেয়। আপনি এসবের কোনটিই করবেন না। নিয়মানুযায়ী দোয়ার মত হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে কা’বা শরীফের দিকে মুখ করে এতটুকু দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দোআ করবেন, যে সময়ে সূরা বাকারার ২৫ (পঁচিশ) আয়াত তিলাওয়াত করা যায়। খুব বিনয়ের সাথে এবং সম্ভব হলে কেঁদে কেঁদে দোআ করবেন। কারণ ইহা দোয়া কবুল হওয়ার স্থান। নিজের জন্য এবং সমস্ত মুসলমান মানব ও জ্বীন জাতির কল্যাণের জন্য দোআ করবেন। আর বিরাট দয়া হবে, যদি আমি গুনাহগারদের সরদারের {সগে মদীনার عُفِىَ عَنْهُ(লিখক)} জন্য বিনা হিসাবে মাগফিরাতের দোআ করেন। এর সাথে দুরূদ শরীফ পড়ে এই দোআ পড়বেন৮। 


ছাফা পাহাড়ের দোআ

اَللہُ اَکْبَرُ ط اَللہُ اَکْبَرُ ط اللہُ اَکْبَرُط لَآ اِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَ اللہُ اَکْبَرُط اَللہُ اَکْبَرُط وَلِلہِ الْحَمْدُ اَلْحَمْدُ لِلہِ عَلٰی مَا ھَدٰ نَا اَلْـحَمْدُ لِلہِ عَلٰی مَآ اَوْلَانَا اَلْـحَمْدُ لِلہِ عَلٰی مَآ اَلْھَمَنَا ط اَلْـحَمْدُ لِلہِ الَّذِیْ ھَدٰنَا لِھٰذَا وَ مَاکُنَّا لِنَھْتَدِیَ لَوْلَآ اَنْ ھَدٰنَا اللہُط لَآ اِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَحْدَہٗ لَاشَـرِیْکَ لَہٗ ط لَہُ الْمُلْکُ وَ لَہُ الْحَمْدُ یُحْیِیْ وَیُمِیْتُ وَھُوَ حَیُّ لَّایَمُوْتُ بِیَدِہِ الْخَیْرُ وَھُوَ عَلٰی کُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌط لَآاِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَحْدَہٗ صَدَقَ وَعْدَہٗ وَنَصَرَ عَبْدَہٗ وَاَعَزَّ جُنْدَہٗ وَھَزَمَ الْاَحْزَابَ وَحْدَہٗ ط لَآ اِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَلَا نَعْبُدُ اِلَّا اِیَّاہُ مُخْلِـصِیْنَ لَـہُ الدِّیْنَ وَلَوْکَـرِہَ الْکَافِـرُوْنَ ط ﴿ فَسُبْحٰنَ اللہِ حِیۡنَ تُمْسُوۡنَ وَ حِیۡنَ تُصْبِحُوۡنَ ﴿۱۷﴾ وَلَہُ الْحَمْدُ فِی السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَعَشِیًّا وَّ حِیۡنَ تُظْہِرُوۡنَ ﴿۱۸﴾ یُخْرِجُ الْحَیَّ مِنَ الْمَیِّتِ وَ یُخْرِجُ الْمَیِّتَ مِنَ الْحَیِّ وَ یُحْیِ الْاَرْضَ بَعْدَ مَوْتِہَا ؕ وَکَذٰلِکَ تُخْرَجُوۡنَ ﴿٪۱۹﴾﴾ اَللّٰھُمَّ کَمَا ھَدَیْتَنِیْ لِلْاِسْلَامِ اَسْئَلُکَ اَنْ لَّاتَنْزِعَہٗ مِنِّیْ حَتّٰی تَوَفَّانِیْ وَاَنَامُسْلِمٌ ط سُبْحٰنَ اللہِ وَالْحَمْدُ لِلہِ وَلَآ اِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَاللہُ اَکْبَرُ وَلَاحَوْلَ وَلَا قُوَّۃَ اِلَّا بِاللہِ الْعَلِیِّ الْعَظِیْمِ ط اَللّٰھُمَّ اَحْيِنِيْ عَلٰی سُنَّةِ نَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم وَتَوَفَّنِيْ عَلٰی مِلَّتِهٖ وَاَعِذْنِيْ مِنْ مُّضِلَّاتِ الْفِتَنِ ط اَللّٰھُمَّ اجْعَلْنَا مِمَّنْ يُّحِبُّكَ وَيُحِبُّ رَسُوْلَكَ وَاَنْبِيَآ ئَكَ وَمَلٰٓئِكَتَكَ وَ عِبَا دَكَ الصّٰلَحِيْنَ ط اَللّٰھُمَّ يَسِّرْلِيَ الْيُسْرٰي وَجَنِّبْنِيَ الْعُسْرٰي اَللّٰھُمَّ اَحْيِنِيْ عَلٰی سَنَّةِ رَسُوْلِكَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم وَتَوَفَّنِيْ مُسْلِمًاوَّ اَلْحِقْنِيْ بِا لصّٰلَحِيْنَ وَا جَعَلْنِيْ مِنْ وَّ رَثَةِ جَنَّةِ النَّعِيْمِ وَاغْفِرْلِيْ خَطِٓيْئَتِيْ يَوْمَ الدِّيْنَ ط اَللّٰھُمَّ اِنَّا نَسْئَلُكَ اِيْمَانًا كَامِلًا وَّقَلْبًا خَاشِعًا وَّنَسْئَلُكَ عِلْمًانَّافِعًاوَّيَقِيْنًاصَادِقًاوَّدِيْنًا قَيِّـمًا وَّنَسْئَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَا فِيَةَ مِنْ كُلِّ بَلِيَّةٍ وَّنَسْئَلُكَ تَمَامَ الْعَافِيَةِ وَنَسْئَلُكَ دَوَامَ الْعَا فِيَةِ وَ نَسْئَلُكَ الشُّكْرَ عَلَي الْعَافِيَةِ وَ نَسْئَلُكَ الْغِنٰي عَنِ النَّاسِط اَللّٰھُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلٰی سَیِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَّعَلٰۤی اٰلِہٖ وَصَحْبِہٖ عَدَدَ خَلقِكَ وَرِضَا نَفْسِكَ وَزِنَةَ عَرْشِكَ وَمِدَادَكَلِمَاتِكَ كُلَّمَا ذَكَرَكَ الذَّاكِرُوْنَ وَغَفَلَ عَنْ ذِكْرِكَ الْغَافِلُوْنَ ط اٰمِين بِجا هِ النَّبِيِّ الْاَمين صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم

অনুবাদ: আল্লাহ সবচেয়ে মহান। আল্লাহ সবচেয়ে মহান। আল্লাহ সবচেয়ে মহান। আর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। যে আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়াত দান করেছেন তিনিই সমস্ত প্রশংসার উপযুক্ত, আর যে আল্লাহ আমাদেরকে নিয়ামত দিয়েছেন তিনিই সমস্ত প্রশংসার উপযুক্ত। ঐ আল্লাহ সমস্ত প্রশংসার উপযুক্ত যিনি আমাদেরকে সৎকর্মের পথ বুঝিয়েছেন, আর সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে এই হেদায়াত দান করেছেন। যদি আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়াত না করতেন, তবে আমরা কখনো হেদায়াত প্রাপ্ত হতাম না। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন প্রভু নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নাই। তাঁর জন্য সকল রাজত্ব এবং তিনিই সমস্ত প্রশংসার উপযুক্ত। জীবন এবং মৃত্যু তাঁর হাতে। তিনি এমন জীবিত যে তাঁর জন্য মৃত্যু নেই। সমস্ত কল্যাণ তারই হাতে, আর তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। আল্লাহ ব্যতীত কোন মালিক নেই। তিনি এক এবং তাঁর ওয়াদা সত্য, আর তিনি তার বান্দাদেরকে সাহায্য করেছেন এবং তাঁর সৈনিকদেরকে সম্মান দিয়েছেন। তিনি একাই বাতিলদের সমস্ত সৈনিকদেরকে পরাজিত করেছেন। আল্লাহ ব্যতীত কোন প্রভু নেই, আর আমরা তিনি ব্যতীত কারো ইবাদত করি না। একনিষ্টভাবে তারই ইবাদত করি। যদিও কাফিরেরা তা অপছন্দ করে। হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি বলেছ, আর তোমার কথা সত্য, আমার নিকট দোআ কর আমি তোমাদের দোআ কবুল করব, আর নিশ্চয় তুমি ওয়াদা ভঙ্গ করোনা। হে আল্লাহ! যেমনিভাবে তুমি আমাকে ইসলামের দৌলত দান করেছ এখন আমার প্রার্থনা যাতে আমার থেকে ঐ দৌলত ফিরিয়ে না নাও এবং মৃত্যু পর্যন্ত আমাকে মুসলমানই রাখ। আল্লাহর সত্ত্বা পবিত্র, আর আল্লাহর সত্ত্বাই হল সমস্ত প্রশংসার উপযোগী। আল্লাহ ব্যতীত কোন মালিক নেই এবং আল্লাহই হলেন মহান, মর্যাদাবান, মহান আল্লাহ ব্যতীত কোন ক্ষমতাও নেই কোন শক্তিও নেই। হে আল্লাহ! আমাদের আক্বা ও মাওলা সায়্যিদুনা মুহাম্মদ صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উপর, তাঁর আওলাদে পাকের উপর, তাঁর সাহাবীদের উপর, তাঁর পুতঃ পবিত্র স্ত্রীদের উপর, তাঁর বংশধর এবং অনুসারীদের উপর কিয়ামত পর্যন্ত দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক। হে আল্লাহ! আমাকে আমার মা বাবাকে এবং সমস্ত মুসলমান নারী পুরুষদের ক্ষমা কর এবং সমস্ত রাসুলদের উপর সালাম পৌঁছে দাও, আর সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সমস্ত বিশ্বের মালিক। 

দোআ শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাত ছেড়ে দিন এবং দরূদ শরীফ পড়ে অন্তরে সাঈর নিয়্যত করে নিন। তবে মুখে নিয়্যত পড়া অধিক উত্তম। নিয়্যতের অর্থ অন্তরে রেখে এভাবেই নিয়্যত করুন:
-------------------
৮কংকর নিক্ষেপ এবং আরাফাতে অবস্থান ইত্যাদির জন্য যেমন নিয়্যত শর্ত নয় তেমনভাবে সাঈতেও নিয়্যত শর্ত নয়। নিয়্যত ছাড়াও যদি কেউ সাঈ করে নেয় তাও হয়ে যাবে। কিন্তু Í সাঈর জন্য নিয়্যত করা মুস্তাহাব। নিয়্যত না করলে সাওয়াব মিলবে না।
-------------------

সাঈর নিয়্যত

اَللّٰھُمَّ اِنِّۤیْ اُرِیْدُ السَّعْیَ بَیْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَۃِ سَبْعَۃَ اَشْوَاطٍ لِّوَجْھِکَ الْکَرِیْمِ فَیَسِّرْہُ لِیْ وَتَقَبَّلْہُ مِنِّیْ ط

অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি তোমার সন্তুষ্টির জন্য ছাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাত চক্কর সাঈ (দৌঁড়ানোর) করার ইচ্ছা করেছি। অতএব তুমি উহা আমার জন্য সহজ করে দাও এবং আমার পক্ষ থেকে কবুল কর। 

ছাফা মারওয়া হতে নিচে নামার দোআ

اَللّٰھُمَّ اسْتَعْمِلْنِیْ بِسُنَّۃِ نِبِیِّکَ صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَسَلَّم وَتَوَفَّنِیْ عَلٰـی مِلَّتِہٖ وَاَعِذْنِیْ مِنْ مُّضِلَّاتِ الْفِتَنِ بِرَحْمَتِکَ یَآ اَرْحَمَ الرَّاحِمِیْنَ

অনুবাদ: হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার প্রিয় নবী صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সুন্নাতের অনুসারী বানিয়ে দাও। আর আমাকে তাঁর দ্বীনের উপর মৃত্যু দান কর এবং আমাকে তোমার রহমত দ্বারা ফিতনা সমূহের গোমরাহী হতে রক্ষা কর। হে সর্বাধিক দয়ালু। 

এখন ছাফা হতে যিকির ও দরূদ পাঠরত অবস্থায় মধ্যমপন্থায় চলে মারওয়ার দিকে আসুন। (আজকাল তো সেখানে মর্মর পাথর বিছানো রয়েছে এবং এয়ার কুলারও লাগানো আছে। এক সাঈ উহাও ছিল যা হযরত সায়্যিদাতুনা হাজেরা رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا করেছিলেন। আপনার অন্তরে একটু ঐ হৃদয় কাঁপানো দৃশ্যটি সতেজ করে নিন। যখন সেখানে ঘাশ ও পানি বিহীন ময়দান ছিল। আর ছোট বাচ্চা ইসমাঈল عَلٰی نَبِیِّنَا وَعَلَیۡہِ الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام পিপাসায় কাতর হয়ে ছটফট করতে লাগলেন এবং হযরত সায়্যিদাতুনা হাজেরা رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا পানির তালাশে দিশেহারা হয়ে প্রচন্ড রৌদ্রে পাথর ও কংকরময় রাস্তায় ঘুরপাক খাচ্ছিলেন।) যখনই প্রথমে সবুজ (রাস্তায়) সংকেত আসবে, পুরুষরা দৌঁড়াতে শুরু করবেন। (কিন্তু নিয়মতান্ত্রিকভাবে দৌঁড়াবেন উচ্ছৃংখলভাবে নয়) আর আরোহীরা ছাওয়ারীকে দ্রুত চালাবেন। তবে যদি ভিড় বেশী হয়, আর ভিড় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে একটু দাঁড়িয়ে যাবেন। দৌঁড়ার সময় ইহা স্মরণ রাখবেন যে, নিজের কিংবা অন্যের যেন কষ্ট না হয়। কারণ এখানে দৌঁড়ানোটা হল সুন্নাত, আর ইচ্ছাকৃত ভাবে মুসলমানকে কষ্ট দেয়া হারাম। ইসলামী বোনেরা এখানে দৌঁড়াবেন না। এখন ইসলামী ভাইয়েরা দৌড়ে দৌঁড়ে, আর ইসলামী বোনেরা হেঁটে হেঁটে এই দোআ পড়বেন; 

সবুজ সংকেত সমূহের মধ্যভাগে পড়ার দোআ

رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَتَجَاوَزْ عَمَّا تَعْلَمُ اِنَّکَ تَعْلَمُ مَالَا نَعْلَمُ ط اِنَّکَ اَنْتَ الْاَعَـزُّ الْاَکْرَمُ وَ اھْـدِنِیْ لِلَّتِیْ ھِیَ اَقْوَمُ ط اَللّٰھُمَّ اجْـعَلْہُ حَـجًّا مَّـبْرُوْرًا وَّسَـعْیًا مَّشْکُوْرًا وَّذَنْبًا مَّغْفُوْرًاط

অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর। আমার উপর দয়া কর। আর আমার গুনাহ সমূহ যা তুমি জান, (ক্ষমা করে দাও)। নিশ্চয় তুমি জান যা আমরা জানিনা। নিশ্চয় তুমি অধিক সম্মানিত ও মর্যাদাবান এবং আমাকে সরল সঠিক পথের উপর অটল রাখ। হে আল্লাহ! আমার হজ্বকে মাবরুর হজ্বে পরিণত কর। আমার সাঈকে কৃতজ্ঞতাপূর্ণ সাঈতে পরিণত কর, আর আমার গুনাহ সমূহকে ক্ষমা কর। 

যখন দ্বিতীয় সবুজ সংকেত আসবে, তখন গতি কমিয়ে ধীরগতিতে চলবেন এবং মারওয়া পাহাড়ের দিকে এগিয়ে যাবেন। হে আশিক! আপনি এখন মারওয়া শরীফে এসে গেছেন। সাধারণ মানুষেরা অনেক উপরে উঠে গেছে। আপনি তাদের অনুকরণ করবেন না। আপনি অল্প উচুঁতে উঠুন বরং এর নিকটে জমিনের উপর দাঁড়ানোর মধ্যেই মারওয়ার উপর আরোহন হয়ে যায়। এখানে যদিওবা বিল্ডিং তৈরীর কারণে কাবা শরীফ নজরে আসে না, কিন্তু কা’বা শরীফের দিকে দৃষ্টি দিয়ে ছাফা পাহাড়ের মত ঐ পরিমাণ সময় পর্যন্ত দোআ করবেন। এখন আর নিয়্যত করার প্রয়োজন নেই। কারণ ইহা প্রথমে হয়ে গেছে। এখন এক চক্কর হয়ে গেল।

এখন পূর্বের নিয়মে দোআ পড়তে পড়তে মারওয়া থেকে সাফার দিকে চলুন এবং নিয়মানুযায়ী সবুজ দুই সংকেতের মধ্যবর্তীস্থানে আসলে পুরুষরা দৌড়ে দৌড়ে এবং ইসলামী বোন হেঁটে হেঁটে পূর্বের দোয়া পড়ুন। এখন সাফা পাহাড়ে পৌঁছলে আপনার দুই চক্কর পূর্ণ হয়ে গেল। এভাবে সাফা এবং মারওয়ার মধ্যে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ও চলতে চলতে সপ্তম চক্কর মারওয়াতে গিয়ে শেষ হবে। اَلْحَمْدُ لِلّٰہِ عَزَّوَجَلَّ এখন আপনার সাঈ পরিপূর্ণ হয়ে গেল। 

সাঈ করা কালীন একটি জরুরী সতর্কতা

অনেক সময় লোকেরা সাঈর স্থানে নামায পড়তে দেখা যায়। তাওয়াফ করা কালীন সময়ে তো নামাযীর সামনে দিয়ে যাওয়াটা জায়েজ, কিন্তু সাঈ করা কালীন সময়ে না জায়েয। এই রকম অবস্থা দেখা দিলে তখন নামাযী ব্যক্তির সালাম ফেরানোর জন্য অপেক্ষা করতে থাকুন। হ্যাঁ! তবে কোন অতিক্রমকারীকে ছুত্‌রা (আড়াল) বানিয়ে গমণ করতে পারবেন।

সাঈর নামায মুস্তাহাব

এখন যদি সম্ভব হয় তাহলে মসজিদে হারামে দুই রাকাত নফল নামায পড়ে নিন। (যদি মাকরূহ ওয়াক্ত না হয়) ইহা মুস্তাহাব। আমাদের প্রিয় আক্বা صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم সাঈ করার পরে মাতাফের পার্শ্বে হাজরে আসওয়াদের সোজা সোজা ডান পাশে দুই রাকাত নফল নামায আদায় করেছেন। (মুসনাদে ইমাম আহমদ, ১০ম খন্ড, ৩৫৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২৭৩১৩। রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৫৮৯ পৃষ্ঠা) এভাবে তাওয়াফ এবং সাঈ করার নাম হল, ওমরা। কিরান হজ্বকারী এবং তামাত্তুকারীর জন্য ইহা “ওমরা”হয়ে গেল। 


শরফ মুঝকো ওমরা কা মওলা দিয়া হে
করম মুঝ গুনাহগার পর ইয়ে বড়া হে।


صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب! صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for supporting.