বিভাগ সমূহ

মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৭

পর্দার মাসআলা (দশম পর্ব)

আকর্ষনীয় বোরকা 
প্রশ্ন:- ইসলামী বোন আধুনিক ডিজাইনের মুক্তো গাঁথা দৃষ্টিনন্দন বোরকা পরিধান করে বাইরে যাবে কিনা? 
উত্তর:- এতে পুরোপুরি ফিতনা রয়েছে যে, মনের রোগী এই আকর্ষনীয় বোরকা চোখ তুলে তুলে দেখবে। মনে রাখবেন! মহিলার বোরকা যতই দৃষ্টিনন্দন ও ডিজাইনেবল হবে ততই ফিতনার আশংকা বৃদ্ধি পাবে। প্রসিদ্ধ মুফাস্সীর হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “মহিলার জন্য আবশ্যক হলো; উচ্চমানের পোশাক এবং উন্নত মানের বোরকা পরিধান করে যেন বাইরে না যায়। কেননা, সুশোভিত বোরকা পর্দা নয় বরং তা সৌন্দর্য্য প্রকাশ করা।” (মিরআত, ৫ম খন্ড, ১৫ পৃষ্ঠা) 

প্রশ্ন:- মহিলা (যদি) সাদা অথবা সুন্দর চাদরের মাধ্যমে সম্পূর্ন দেহ ঢেকে বের হয় তাহলে? 
উত্তর:- চাদরের মধ্যে কোন ধরনের আকর্ষনীয় কিছু না থাকা উচিত। যেমনিভাবে- হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মাদ গাযালী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এর মর্যাদা পূর্ণ বর্ণনার সারাংশ হচ্ছে: “সাধারনত মহিলা যে দৃষ্টিনন্দন চাদর ও ঘোমটা পরিধান করে, তা যথেষ্ট নয়। বরং যখন তারা সাদা চাদর পরিধান করে অথবা সুন্দর ঘোমটা পরিধান করে তখন তার মাধ্যমে উত্তেজনা আরও নাড়া দিয়ে উঠে যে, হয়ত মুখ খোলার পর তাকে আরও সুন্দর দেখা যাবে! সুতরাং সাদা চাদর ও সুন্দর ঘোমটা এবং বোরকা পরিধান করে বাইরে বের হওয়া মহিলাদের জন্য হারাম। যে মহিলা এমন করবে, সে গুনাহগার হবে এবং তার পিতা, ভাই বা স্বামী যে তাকে এর অনুমতি প্রদান করবে সেও তার সাথে গুনাহে লিপ্ত হবে।” (কিমিয়ায়ে সাআদাত, ২য় খন্ড, ৫৬০ পৃষ্ঠা) 

মাদানী বোরকা 
প্রশ্ন:- তাহলে বোরকার ধরণ কেমন হবে? 
উত্তর:- মোটা কাপড়ের ঢিলেঢালা ও অনার্কষনীয় রংয়ের তাবু সাদৃশ্য সাদাসিদে বোরকা হওয়া চাই, যাতে পরিধানকারীনীর ব্যাপারে অনুমান করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায় যে, “সে যুবতী নাকি বৃদ্ধা।” 


ইসলামী বোনদের জন্য সতর্কতা 
আমার (সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ ) মর্ডান পরিবারের অবস্থাদি, ইংরেজী সভ্যতার প্রেমিক, আত্মীয় স্বজনদের চিন্তাধারা ও আজকালের অনৈতিক অবস্থাদির ব্যাপারে পরিপূর্ণ উপলব্দি রয়েছে। কিন্তু তা সত্বেও আমি ইসলামী বিধিবিধান উপস্থাপন করেছি। যেন শরয়ী পর্দার সঠিক ইসলামী চিত্র সবার সামনে প্রকাশ পায়। নিশ্চয় সকল মুসলমান এ ব্যাপারে অবগত যে, “আমাদেরকে শরীয়াতের অনুসরন করতে হবে, শরীয়াত আমাদের অনুসরন করবে না।” ইসলামী বোনদের নিকট মাদানী অনুরোধ যে, কাউকেই যেন ঢিলেঢালা অনাকর্ষনীয় রংয়ের একেবারে অনাকৃষ্ট তাবু সাদৃশ্য সত্যিকারের মাদানী বোরকা পরিধান করার জন্য বাধ্য না করেন। কেননা, অনেক পরিবারের কঠোরতা খুবই বেশি, শরীয়াত ও সুন্নাতের বিধানের আমলকারী ও কারীনিদের সাথে আজকাল সমাজের অধিকাংশই সীমাহীন অসদাচরন করা হয়, যার কারণে অধিকাংশ ইসলামী বোন নিরাশ হয়ে যায়। আপনার সমালোচনার কারণে হতে পারে কোন ইসলামী বোন বর্তমান সামাজিক অবস্থার প্রতি অসহায় হয়ে মাদানী পরিবেশ থেকেই বঞ্চিত হয়ে যাবে। নিশ্চয় যতই পুরাতন ইসলামী বোন হোক না কেন এবং সে যতই আকর্ষনীয় বোরকাই পরিধান করুক না কেন অথবা মেকআপ করুক না কেন তাকে অপমানিত করে তার অন্তরে কষ্ট দিবেন না। কেননা, শরীয়াতের বিনা অনুমতিতে মুসলমানের অন্তরে কষ্ট দেয়া হারাম ও জাহান্নামের নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ। 

নিজের মহল্লায় এসে বোরকা খুলে ফেলা কেমন? 
প্রশ্ন:- কিছু ইসলামী বোন নিজের বিল্ডিং অথবা গলি ইত্যাদিতে পৌঁছেই ঘরে প্রবেশ করার পূর্বেই বোরকা খুলে ফেলে, এরূপ করা কেমন? 
উত্তর:- যতক্ষণ পর্যন্ত ঘরের ভেতর প্রবেশ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত বোরকা তো নয়ই, চেহারা থেকে ঘোমটাও সরাবে না। কেননা, সিঁড়ি অথবা বিল্ডিং ইত্যাদিতেও পর-পুরুষ থাকতে পারে এবং তাদের থেকে পর্দা করা আবশ্যক। 

যদি মাদানী বোরকা পরিধান করতে গরম অনুভব হয়...? 
প্রশ্ন:- গরমকালে মাদানী বোরকা পরিধান করতে অথবা মোটা চাদর দ্বারা শরীর ঢেকে বাইরে বের হওয়াতে গরম অনুভব হয় এবং (এমতাবস্থায়) যদি শয়তান কুমন্ত্রনা দেয় তবে কি করবে? 
উত্তর:- শয়তানের কুমন্ত্রনার দিকে মনোযোগ না দেয়াও কুমন্ত্রনার প্রতিরোধ করা। এমতাবস্থায় মৃত্যু, কবর, হাশর ও জাহান্নামের কঠোর গরমকে স্মরণ করুন। اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ শরয়ী পর্দা করার কারণে অনুভব হওয়া গরমও ফুল মনে হবে। যদি সম্ভব হয় তবে এই ঘটনাকে স্মরণ করুণ। তাবুকের যুদ্ধের সময় প্রচন্ড গরম ছিলো। এ অবস্থায় মুনাফিকগন বললো: لَا تَنْفِرُوْا فِى الْحَرِّط কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: এই গরমকালে বের হয়ো না।' এর প্রতিউত্তরে আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন: قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ اَشَدُّ حَرًّا (হে মাহবুব) আপনি বলুন! জাহান্নামের আগুন সব চেয়ে কঠিন  গরম।' (পারা: ১০, সূরা: তাওবা, আয়াত: ৮১) 

খোদার শপথ! মাদানী বোরকার গরম বরং দুনিয়ার বৃহৎ আগুনও জাহান্নামের আগুনের তুলনায় কিছুই নয়। 

প্রিয় নবী ﷺ উত্তপ্ত মরুভুমিতে 
প্রখ্যাত মুফাস্সীর হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “হযরত সায়্যিদুনা আবু খাইছামাহ্ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর (ঈমানী) চেতনা তো দেখুন! তাবুক যুদ্ধের সময়ে (তিনি অন্য কোন জায়গা থেকে যখন) সফর করে দুপুরের সময় নিজের বাগানে তাশরীফ আনলেন (তখন) সেখানে দেখলেন যে, ঠান্ডা পানি, গরম গরম রুটি এবং অতি সুন্দরী রমণী উপস্থিত। বললেন: এটা ন্যায়বিচারের বিপরীত। কেননা, প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم তাবুকের উত্তপ্ত মরুভুমিতে অবস্থান করছেন। আর আমি বাগানের ভেতর গরম রুটি ও ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবো। (দুর প্রান্ত থেকে সফর, ক্লান্তি আর প্রচন্ড গরম সত্ত্বেও) নিজের ঘরে প্রবেশ করা ব্যতিতই তলোওয়ার নিয়ে বের হয়ে গেলেন, এবং তাজেদারে মদীনা صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর কদমে উপস্থিত হয়ে গেলেন। এরাই সেই মহান ব্যক্তিত্ব, যাদের ওসীলায় আমাদের মতো লাখো গুনাহগারের ক্ষমা হবে اِنْ شَاءَ الله عَزَّوَجَلّ” (নূরুল ইরফান, ৩১৮ পৃষ্ঠা। রহুল বয়ান, ৩য় খন্ড, ৪৭৫ পৃষ্ঠা) 

আল্লাহ্ তাআলার রহমত তাঁদের উপর বর্ষিত হোক এবং তাঁদের সদকায় আমাদের বিনা হিসাবে ক্ষমা হোক।   اٰمِين بِجا  هِ  النَّبِىِّ الْاَمين صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم 

চুলের ব্যাপারে প্রশ্নোত্তর 
প্রশ্ন:- ইসলামী বোনদের যে চুল আঁচড়ানোর কারণে ছিড়ে যায়, তা কি করবে? 
উত্তর:- এই চুলগুলোকে লুকিয়ে ফেলুন অথবা দাফন করে দিন। যাদের বাড়িতে নরম মাটি অথবা বাগান রয়েছে তাদের জন্য এ কাজটি করা অতি সহজ। সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “(মহিলাদের) যে অঙ্গের দিকে দৃষ্টি দেয়া নাজায়েয, যদি সেই অঙ্গটি দেহ থেকে পৃথক হয়ে যায়, এমতাবস্থায়ও তার দিকে দৃষ্টি দেয়া নাজায়েযই থাকবে। (দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ৬১২ পৃষ্ঠা) গোসলখানা অথবা পায়খানায় অনেক লোক নাভীর তলদেশের চুল কর্তন করে রেখে দেয়। এরকম করা উচিত নয়, বরং সেগুলোকে এমন জায়গায় ফেলে দিন যেখানে কারো দৃষ্টি না পড়ে অথবা মাটির মধ্যে পুঁতে রাখুন। মহিলাদের জন্যও এটা আবশ্যক, চিরুনি করার দ্বারা অথবা মাথা ধৌত করার দ্বারা যে সমস্ত চুল বের হয়ে যায়। সেগুলোকে যেন কোথাও লুকিয়ে ফেলে। যেন তাতে পর-পুরুষের দৃষ্টি না পড়ে।” (বাহারে শরীয়াত, ১৬তম খন্ড, ৯১, ৯২ পৃষ্ঠা) 

চুল সম্পর্কিত সাবধানতা 
সম্ভবত আজকাল ত্রুটিপূর্ণ খাদ্য ও বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক যুক্ত সাবান এবং শ্যাম্পু ইত্যাদি ব্যবহারের কারণে চুল পড়ে যাওয়ার অভিযোগ ব্যাপক হয়ে গেছে। যাদের পরিবারে পর পুরুষও সঙ্গে থাকে অথবা মেহমান আসা যাওয়া করে, সেই ইসলামী বোনদের উচিত তারা যেন গোসলখানা ইত্যাদি থেকে নিজের চুল খুঁজে খুঁজে নেওয়ার প্রতি অতিমাত্রায় সাবধানতা অবলম্বন করে। এছাড়া যখনই গোসল করবে তখন যেন সাবানে লেগে থাকা চুলগুলোও উঠিয়ে নেয়। গোসলের পর ইসলামী ভাইদেরও নিজের চুল সাবান থেকে বের করে নেয়া উচিত। কেননা, পর্দার অংশের অর্থাৎ রান ইত্যাদির চুলও সাবানে লেগে থাকতে পারে। 

মহিলাদের মাথা মুন্ডন করা 
প্রশ্ন:- মহিলাদের মাথা মুন্ডন করা কেমন? 
উত্তর:- হারাম। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২২তম খন্ড, ৬৬৪ পৃষ্ঠা) 

মহিলাদের পুরুষের মতো চুল কাটানো 
প্রশ্ন:- মহিলাদের জন্য পুরুষের মতো চুল কাঁটানো কেমন? 
উত্তর:- নাজায়েয ও গুনাহ। 

সে কাফন ছিঁড়ে উঠে বসে গেলো 
সম্ভবত শাবানুল মুআয্যম ১৪১৪ হিজরীর সর্বশেষ জুমা ছিলো। রাতে কৌরাঙ্গীতে (বাবুল মদনিা করাচী) অনুষ্ঠিত এক  আজিমুশ্মান সুন্নাতে ভরা ইজতিমায় একজন নওজোয়ানের সাথে সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ (লিখক) এর সাক্ষাৎ হলো। সে কিছুটা এরকম (কসম খেয়ে) বর্ণনা করলো: আমার খুবই নিকট আত্মীয়ের যুবতী কন্যা হঠাৎ ইন্তেকাল করলো।  যখন আমরা কাফন দাফন সেরে ফিরে আসলাম তখন মরহুমার পিতার স্বরণে আসল যে, তার একটি হাতব্যাগ যাতে গুরুত্বপূর্ণ কাগজাদি ছিলো তা ভুলক্রমে মৃতের সাথে কবরে দাফন হয়ে গেছে। সুতরাং অপারগ হয়ে দ্বিতীয়বার কবর খনন করতে হলো। যখন কবর থেকে পাথর সরানো হলো, ভয়ে আমাদের চিৎকার বের হয়ে গেলো। কেননা, সেই যুবতী কন্যার কাফন পরিহিত লাশকে কিছুক্ষন পূর্বে আমরা মাটিতে শুইয়ে গিয়েছিলাম, সে কাফন ছিঁড়ে উঠে বসে গেলো এবং তাও ধনুকের ন্যায় বাঁকা হয়ে! আহ! তার মাথার চুল দ্বারা তার পা বাঁধা ছিলো এবং অসংখ্য ছোট ছোট ভয়াবহ প্রাণী তাকে আঁকড়ে ধরেছিলো, এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে ভয়ে আমাদের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলো এবং হাতব্যাগ বের না করেই তাড়াতাড়ি মাটি চাপা দিয়ে আমরা পালিয়ে এলাম। বাড়িতে এসে আমি আপনজনদের নিকট সেই মেয়েটির অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তদুত্তরে বলা হলো: 'তার মধ্যে বর্তমান যুগে অপরাধ হিসেবে গণ্য তেমন কোন অপরাধ তো ছিলোনা। কিন্তু আজকালের মেয়েদের মতো সেও ফ্যাশনেবল ছিলো এবং পর্দা করতো না। মৃত্যুর কয়েক দিন পূর্বে আত্মীয়ের বাসায় বিয়ের অনুষ্ঠান ছিলো। তখন সে ফেন্সি স্টাইল চুল কেটে, সেজে গুজে সাধারণ মেয়েদের মতো বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলো।” 

এ মেরি বেহনু! সদা পর্দা করো! 
তুম গলি কুছোঁ মে মত ফিরতি রহো। 
ওয়ার না সুন লো কবর মে জব জাও গি, 
সাপঁ বিচ্ছু দেখ করা ছিল্লোওগী। 

দূর্বল বাহানা 
এই দূর্ভাগা ফ্যাশন পূঁজারী মেয়ের ভয়ংকর কাহিনী পড়েও কি আমাদের সেই সমস্ত ইসলামী বোন শিক্ষা অর্জন করবে না, যারা শয়তানের অনুপ্রেরনায় বিভিন্ন তাল বাহানা করে যে, আমি তো অপারগ, আমাদের পরিবারে তো কেউ পর্দা করে না, বংশের নিয়ম কানুনকেও লক্ষ্য রেখে চলতে হয়, আমাদের পুরো বংশ তো শিক্ষিত, সাদাসিধে অথবা পর্দানশীন মেয়ের জন্য আমাদের বংশে কেউ সম্পর্ক করার প্রস্তাবও পায় না ইত্যাদি ইত্যাদি, বংশের প্রচলিত নিয়ম কানুন এবং নফসের অপারগতা কি আপনাকে কবরের আযাব ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিতে পারবে? আপনি কি আল্লাহ্ তাআলার দরবারে এরকম “বানানো অপরাগতা” বর্ণনা করে মুক্তি পেতে সফল হবেন? যদি না হয় এবং নিঃসন্দেহেই হবেন না, তবে আপনাকে প্রতিটি অবস্থায় বেপর্দা থেকে তাওবা করতে হবে। স্মরণ রাখবেন! লৌহে মাহফুযে যার জোড়া যেখানে লিখা রয়েছে সেখানেই বিয়ে হবে। আর যদি লিখা না থাকে তবে বিয়েও হবে না। যেমনিভাবে প্রতিদিন অনেক শিক্ষিতা মর্ডান যুবতী মেয়ে পলক ফেলতেই মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে বরং অনেক সময় তো এমনও হয় যে, কনে তার বাড়ি থেকে বিদায় হওয়ার পূর্বেই মৃত্যুর ঘাট অতিক্রম করে যায় এবং তাকে সৌন্দর্য্যমন্ডিত, আলোকিত, সুগন্ধিময়, সুবাসিত বাসর ঘরে পৌছানোর পরিবর্তে পোকা মাকঁড়ে পরিপূর্ণ সংক্ষীর্ণ অন্ধকার কবরে নামিয়ে দেয়া হয়।” 

তু খুশিকে ফুল লেগী কব তলক? তুইহাঁ যিন্দা রেহেগী যব তলক! 
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد

মহিলাদের দর্জিকে মাপ দেয়া কেমন? 
প্রশ্ন:- ইসলামী বোনেরা নিজের কাপড় সেলাই করার জন্য পর-পুরুষ দর্জিকে নিজের শরীরের মাপ দেয়া কেমন? 
উত্তর:- হারাম ও জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ। এতে দর্জিও কঠিন গুনাহগার ও জাহান্নামের আগুনের ভাগিদার হবে। কেননা, দৃষ্টি না দিয়ে এবং শরীরে হাত স্পর্শ না করে মাপ নেয়া সম্ভব নয়। যদি সম্ভব হয় তবে ইসলামী বোনের দ্বারাই কাপড় সেলাই করাবে। যদি এটাও সম্ভব না হয় তবে ঘরের মহিলারাই মাপ নিবে আর কোন মাহরাম গিয়ে দর্জিকে সেলাই করার জন্য দিয়ে আসবে। ইসলামী বোনেরা যেন যখন তখন ঘরের বাইরে চলে না যায়। শুধুমাত্র শরীয়াতের অনুমতিক্রমে পর্দার সমস্ত বিধানাবলী মেনে বাইরে বের হবে। 

ভাই আর ভাবীর ইনফিরাদি কৌশিশ 
ইসলামী বোনেরা! শরয়ী পর্দার উপর দৃঢ়তা পেতে, এবং ঘরে সুন্নাতে ভরা মাদানী পরিবেশ তৈরী করার জন্য দা'ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যান। একজন বুদ্ধিমান ভাই তার বোনের প্রতি ইনফিরাদী কৌশিশ করলো যার ফলশ্রুতিতে তার সংশোধনের উপায় বেরিয়ে এলো। এই ঈমান তাজাকারী ঘটনাটি শুনুন আর আন্দোলিত হোন: বাবুল ইসলাম (সিন্ধু প্রদেশ) এর একজন ইসলামী বোনের বর্ণনা কিছুটা এরকম যে, আমি বিভিন্ন ধরনের মন্দ কর্ম ও বেপর্দায় লিপ্ত ছিলাম। এছাড়া আমার মুখ কাঁচির মতো চলার কারণে পরিবারের লোকেরা আমরা প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলো। ভাগ্যক্রমে আমার ভাই ও ভাবী উভয়েই দা'ওয়াতে ইসলামীর সুবাসিত মাদানী পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। তারা আমাকে ইনফিরাদী কৌশিশ করতো কিন্তু আমি শুনেও না শুনার ভান করতাম, অবশেষে একদিন তাদের ইনফিরাদী কৌশিশ সফল হলো এবং রবিউন নূর শরীফের বসন্তময় সময়ে অনুষ্ঠিত ইসলামী বোনদের ইজতিমায়ে মিলাদে আমার অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য অর্জন হলো। সেখানে অনুষ্ঠিত সুন্নাতে ভরা বয়ান আমাকে কাঁদিয়ে দিলো। খোদাভীরুতায় আমার চোখ থেকে অনিচ্ছাকৃতভাবে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগলো। আমি অঝোর নয়নে কেঁদে কেঁদে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে নিজের গুনাহ থেকে তাওবা করলাম। সেই ইজতিমায়ি মিলাদে আমি যে রূহানী শান্তি পেয়েছি তা ইতিপূর্বে কখনোও পাইনি। অতঃপর আমি ইসলামী বোনদের সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমায় নিয়মিত ভাবে অংশগ্রহণ করা শুরু করে দিলাম। প্রথম প্রথম আমার সন্তানের বাবা বিরোধীতা করেছিলো। কিন্তু ভাগ্যক্রমে যখন সে নিজে ইসলামী ভাইদের সাপ্তাহিক ইজতিমায় অংশগ্রহণ করলো তখন তারও মাদানী চেতনা নসীব হলো। এখন সে আমাকে খুশিমনে দা'ওয়াতে ইসলামীর মাদানী কাজের অনুমতি দেয়। এমনিভাবে اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ আমার ভাই ও ভাবীর ইনফিরাদী কৌশিশের বরকতে আমাদের পরিবারে মাদানী পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেলো। 

তুমহেঁ লুতফ আ'জায়েগা যিন্দেগী কা, 
ক্বরিব আকে দেখো যরা মাদানী মাহল। 
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد 

পরিবারের সদস্যদের সংশোধন করুন 
ইসলামী বোনেরা! আমাদের সকলের উচিত, আমরা যেন আমাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিও ইনফিরাদী কৌশিশ করতে থাকি বরং অন্যদের তুলনায় নিজের পরিবারের সদস্যদের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিই। বিশেষ করে পিতার উচিত, নিজে যেন নেক কাজ করে এবং নিজের সন্তানদের ও তাদের মাকেও যেন সংশোধনের মাদানী ফুল দিতে থাকে। আল্লাহ্ তাআলা ২৮ পারার সূরা তাহরিম এর আয়াত নম্বর ৬ এ ইরশাদ করেন: 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ اٰمَنُوا قُوْا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُوْدُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ 

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! নিজেকে ও নিজের পরিবারবর্গকে ওই আগুন থেকে রক্ষা করো যার ইন্ধন হচ্ছে মানুষ ও পাথর; (পারা: ২৮, সূরা: তাহরীম, আয়াত: ৬) 

পরিবারের সদস্যদের দোযখ থেকে কিভাবে বাঁচাবেন? 
বর্ণিত আয়াতের সম্পর্কে খাযায়িনুল ইরফানে উল্লেখ রয়েছে; “আল্লাহ্ তাআলা ও তাঁর রাসূল صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ َسَلَّم এর আনুগত্য অবলম্বন করে, ইবাদত সমূহ পালন করে, গুনাহ থেকে বিরত থেকে, পরিবারের সদস্যদের নেকীর দাওয়াত ও গুনাহ থেকে বারণ করে ও তাদেরকে ইলম ও আদব শিখিয়ে। (নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও)।” 

হিজড়া থেকেও পর্দা 
প্রশ্ন:- ইসলামী বোনদের কি হিজড়া থেকেও পর্দা রয়েছে? 
উত্তর:- জ্বী, হ্যাঁ। হিজড়াও পুরুষের হুকুমে গন্য, সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “হিজড়ারা পুরুষ। জামাআতে তারা পুরুষের কাতারেই দাঁড়াবে।” (ফতোওয়ায়ে আমজাদিয়া, ১ম খন্ড, ১৭০ পৃষ্ঠা) 

হিজড়া কাকে বলে? 
প্রশ্ন:- মুখান্নাস (হিজড়া) কাকে বলে? 
উত্তর:- “মুখান্নাস” এটা আরবী ভাষার শব্দ। যার অর্থ সেই পুরুষ যার চাল চলন ও ভাবভঙ্গি মহিলাদের মতো নরম ও নমনীয় হয়। (মুস্তাফাঁদ আয আলবাহরুর রাইক্ব, ৯ম খন্ড, ৩৩৪ পৃষ্ঠা) মুসলিম শরীফের ব্যাখাকারী আল্লামা নববী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “মুখান্নাস তাকে বলে, যার রীতিনীতি, আচার আচরণ, কথা বার্তা, চাল চলন ও সক্ষমতায় মহিলাদের সাদৃশ্য হয়। অর্থাৎ তাদের ন্যায় হয়। অনেক সময় তো কারো এই ভাবভঙ্গি জন্মগত হয়ে থাকে এবং কিছু লোক নিজেই এই ভাবভঙ্গি অবলম্বন করে।” (শরহে মুসলিম লিন নববী, ২য় খন্ড, ২১৮ পৃষ্ঠা) 

হিজড়ামী করা থেকে বিরত থাকার প্রতি জোর 
প্রশ্ন:- হিজড়ারা কি হিজড়ামী থেকে বিরত থাকবে? 
উত্তর:- জ্বী, হ্যাঁ! যদি জন্মগতভাবে কারো চাল-চলন অথবা কন্ঠ ইত্যাদি মহিলাদের সাদৃশ্য হয়, তবে তার উচিত, সে যেন পুরুষ সূলভ আচরণ অবলম্বন করার জন্য চেষ্টা করে। যার আওয়াজ ও কার্যকলাপ ইত্যাদি প্রাকৃতিকভাবেই মহিলাদের ন্যায় হয়ে থাকে, এতে তার নিজের কোন দোষ নেই। আর পরিবর্তনের প্রচেষ্টা করা সত্ত্বেও যদি আচার আচরণ অপরিবর্তিত থেকে যায়, তবে এতে শরয়ী কোন পাকড়াও নেই। (ফয়যুল কাদির, ৫ম খন্ড, ৩৪৬ পৃষ্ঠা। নুযহাতুল ক্বারী, ৫ম খন্ড, ৫৩৭ পৃষ্ঠা) 

নকল হিজড়া 
প্রশ্ন:- নকল হিজড়া হওয়া কি গুনাহ? 
উত্তর:- নিশ্চয় গুনাহ! যদি কেউ নিজে নিজে মহিলাদের আচার আচরণ অবলম্বন করে অর্থাৎ হিজড়া হয়ে যায় তবে সে গুনাহগার ও জাহান্নামের আগুনের হকদার হবে। হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُمْا থেকে বর্ণিত; তাজদারে রিসালাত, শাহানশাহে নবুয়ত, মাহবুবে রাব্বুল ইয্যত, নবীয়ে রহমত, শফীয়ে উম্মত صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم পুরুষের মধ্যে মুখান্নাসদের (অর্থাৎ মহিলাদের আচার আচরণ অবলম্বনকারীদের) প্রতি  অভিশাপ দিয়েছেন এবং সেই মহিলাদের প্রতি, যারা পুরুষের আচরণ অবলম্বন করে আর হুযুর صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “তাদেরকে তোমাদের ঘর থেকে বের করে দাও।” (বুখারী, ৪র্থ খন্ড, ৩৪৭ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৬৮৩৪) আপনারা দেখলেন তো! হুযুর আকরাম, শাহানশাহে বণী আদম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم মুখান্নাসদের (নকল হিজড়াদের) প্রতি অভিশাপ দিয়েছেন এবং তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। 

যে হিজড়া নয় তাকে হিজড়া বলে ডাকা কেমন? 
প্রশ্ন:- যে হিজড়া নয় তাকে হিজড়া বলে ডাকা কেমন? 
উত্তর:- এতে মুসলমানের অন্তরে কষ্ট প্রদানকারী হিসাবে গুনাহগার এবং জাহান্নামের আযাবের হকদার হবে। বরং ইসলামী আদালতে অভিযোগ করাবস্থায় ২০টি চাবুক মারার শাস্তি প্রদান করা যেতে পারে। সুতরাং একটি হাদীসে পাকে প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এটাও ইরশাদ করেছেন: “যদি কেউ কাউকে বলে 'হে হিজড়া' তবে তাকে বিশটি চাবুক মারো।” (সুনানে তিরমিযী, ৩য় খন্ড, ১৪১ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১৪৬৭) প্রখ্যাত মুফাস্সীর হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِএই হাদীসে পাকের ব্যাখ্যায় বলেন: “মুখান্নাস সেই, যার অঙ্গে কোমলতা, আওয়াজ মহিলাদের ন্যায় এবং মহিলাদের মতোই থাকে। কাউকে হিজড়া বলাতে তার অপমানবোধ হয়, যাতে সম্মানহানীর দাবী সাব্যস্ত হতে পারে এবং সেই শাস্তি (যা হাদীসে পাকে বর্ণিত রয়েছে) হতে পারে, তেমনিভাবে যদি কেউ কাউকে বলে: হে মদ্যপায়ী! হে অবিশ্বাসী! হে বলৎকারী! হে সুদখোর! হে দাইয়্যুস! হে খেয়ানতকারী! হে চোরের মা! এই সমস্ত (অপবাদ লাগানোতেও) একই শাস্তি হতে পারে।” (মিরআত, ৫ম খন্ড, ৩২৬ পৃষ্ঠা) 

হিজড়াকে হিজড়া বলে সম্বোধন করা 
প্রশ্ন:- যে জন্মগতভাবেই হিজড়া, তাকে হিজড়া বলে সম্বোধন করা যাবে কি না? 
উত্তর:- শরীয়াতের বিনা অনুমতিতে এরকম করা উচিত নয়। কেননা, এতে সে লজ্জিত হয়। অন্তরেও কষ্ট পেতে পারে। যেমনিভাবে বিনা প্রয়োজনে অন্ধকে অন্ধ বলা, খাটোকে খাটো ও লম্বাকে লম্বা বলে সম্বোধন করার শরীয়াতে অনুমতি নেই। তেমনিভাবে এখানে এভাবে (বলার অনুমতি নেই) বরং এমতাবস্থায় তো অন্তরে কষ্ট পাওয়ার অনেক বেশি সম্ভাবনা থাকে। 

হিজড়াদের আচরণ 
প্রশ্ন:- হিজড়ার আচরণ সম্পর্কে আপনি কি বলেন? 
উত্তর:- আমাদের এখানে যে সমস্ত হিজড়া পাওয়া যায় তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মুখান্নাস হয়ে থাকে আর কিছু সংখ্যক তৃতীয় লিঙ্গের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যাদেরকে খুনছা অথবা কঠোর খুনছা বলা হয়। তাদের মধ্যে অনেকে ভদ্র ও আল্লাহ্ ওয়ালা হয়ে থাকে। আর কিছু সংখ্যক ভিক্ষুকের পেশা গ্রহণ করে, নাচ দেখায়, ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় এবং এই অশ্লীল পদ্ধতিতে হারাম রুজি উপার্জন করে খায় এবং নিজেকে জাহান্নামের হকদার বানায়। এজন্য সাবধান! এমন লোকদেরকে কখনোও ঘরে প্রবেশ করতে দিবেন না এবং তাদের ভিক্ষা দিয়ে গুনাহে ভরা কাজে তাদের সাহায্য করবেন না। কেননা, পেশাদার ভিক্ষুককে দান করা গুনাহ। 

প্রশ্ন:- অনেক সময় তো হিজড়া একেবারে উঠে পড়ে লেগে যায় এবং কিছু ছাড়া ফেরার নামই নেয় না। বিশেষ করে বিয়ে অথবা সন্তান জন্মের অনুষ্ঠান সমূহে অনেক বেশি এক গুয়েঁমী করে। আর যদি তাদেরকে কিছু দেয়া না হয়, তবে অসম্মানজনক আচরণ করে। এমন অবস্থায় কি করা যায়? 
উত্তর:- যতটুকু সম্ভব তাদের থেকে পিছু ছাড়িয়ে নেয়া উচিত, আর যদি সত্যিকারেই তাদের আচরণে অসম্মানের সম্মুখীন হতে হয় তবে তাদের চুপ করানোর নিয়্যতে কিছু দেওয়া, দাতার জন্য জায়েয। কেননা, হাদীসে মোবারাকা থেকে প্রমানিত যে, যদি কোন কবি কারো দুর্নাম করে কবিতা লিখার মাধ্যমে তার সম্মানহানি করে, তবে তাকে চুপ করানোর জন্য কিছু দেয়া জায়েয। যদিও বা এটা ঘুষ, কিন্তু এমতাবস্থায় ঘুষ দেওয়া জায়েয। আর গ্রহণকারীর জন্য সর্বাবস্থায় হারাম এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ। 

তৃতীয় লিঙ্গ তথা খুনছা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান 
প্রশ্ন:- মুখান্নাসের ব্যাপার তো বুঝে আসলো, তারা শারীরিক আকৃতিতে পুরুষই। কিন্তু এখন আপনি তৃতীয় লিঙ্গ অর্থাৎ খুনছা এবং কঠোর খুনছার আলোচনা করলেন, তাহলে এটাও বলে দিন যে তাদের সংজ্ঞা ও নির্দশন কি? 
উত্তর:- পুরুষ ও মহিলার পাশাপাশি একটি তৃতীয় লিঙ্গও রয়েছে। ফিকহের কিতাব সমূহে তাদের সংজ্ঞা কিছুটা এরূপ করা হয়েছে: “যার মধ্যে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের লজ্জাস্থান রয়েছে তাদেরকে খুনছা বলা হয়।” (মুহিত বরহানী, ২৩তম খন্ড, ৪৫৪ পৃষ্ঠা) ফুকাহায়ে কিরামগণ رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِمْ খুনছার সংজ্ঞায় এটাও সংযোজন করেন যে, “অর্থাৎ তাদেরকেও খুনছা বলা হয়, যারা উভয় লজ্জাস্থান থেকে একটিরও অধিকারী নয়, বরং শুধুমাত্র সামনের দিকে একটি ছিদ্র থাকে যা দ্বারা প্রাকৃতিক কাজ সেরে নেয়।”(তাবয়িনুল হাকায়িক, ৭ম খন্ড, ৪৪০ পৃষ্ঠা। আল বাহরুর রাহকয়িক, ৯ম খন্ড, ৩৩৪ পৃষ্ঠা) “বাদায়িয়ুস সানায়ি” এর মধ্যে খুনছা সম্পর্কিত বাক্যের সারাংশ হচ্ছে: “যদি সন্তানের মধ্যে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের লজ্জাস্থান থাকে এবং যদি সে পুরুষালী লজ্জাস্থান দ্বারা প্রস্রাব করে তবে সে পুরুষ এবং যদি মহিলার লজ্জাস্থান দ্বারা প্রস্রাব করে তবে সে মহিলা হিসেবে গন্য হবে এবং অবশিষ্ট অঙ্গকে অতিরিক্ত বলে গন্য করা হবে। যদি উভয় লজ্জাস্থান থেকে প্রস্রাব আসে তবে যেটা দিয়ে সর্ব প্রথম বের হবে সেটাই তার আসল লজ্জাস্থান হবে। উদাহরন স্বরূপ: যদি প্রথমে মহিলার লজ্জাস্থান দিয়ে প্রস্রাব করে তবে সে মহিলা হিসেবে গন্য হবে। যদি উভয় স্থান দিয়ে একই সময় প্রস্রাব করে, তবে তার জাত নিদিষ্ট করা (অর্থাৎ সে পুরুষ নাকি মহিলা নিদিষ্ট করা) অত্যন্ত কঠিনতর আর এমন ব্যক্তিকে কঠোর খুনছা বলে। সুতরাং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর যদি পুরুষের নিদর্শন থেকে কোন নিদর্শন পাওয়া যায় যেমন; দাঁড়ি বেরিয়ে যায়, তবে শরীয়াতের বিধিবিধানের উপর আমল করার ব্যাপারে সে পুরুষ হিসেবে গন্য হবে। আর যদি মহিলা জাতীয় কোন নিদর্শন প্রকাশ পায়। যেমন; স্তন বের হয়ে যায়, তবে সে মহিলা হিসেবে গণ্য হবে এবং তার উপর মহিলার যাবতীয় মাসয়ালা বর্তাবে।” (বাদায়িয়ুস সানাই, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৪১৮ পৃষ্ঠা) আর যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর শুধুমাত্র পুরুষ অথবা মহিলার নিদর্শন প্রকাশ হওয়ার পরিবর্তে উভয়ের নিদর্শন প্রকাশ পায়, যেমন: দাঁড়িও গজায় এবং স্তনও বের হয়, তবে এমতাবস্তায়ও তাকে কঠোর খুনছা হিসেবে গণ্য করা হবে। (ফতোওয়ায়ে শামী, ১০ম খন্ড, ৪৭৮ পৃষ্ঠা) 

এক হিজড়ার ক্ষমা পাওয়ার ঘটনা 
হিজড়াকে সাধারণত লোকেরা ঘৃণা করে এবং তাকে নিকৃষ্ট মনে করে। এমন করা উচিত নয়। কেননা, সেও আল্লাহ্ তাআলার বান্দা এবং তিনিই তাকে সৃষ্টি করেছেন আর হিজড়ারও উচিত যে, গুনাহ এবং নাচ গানের মতো হারাম এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ থেকে যেন বিরত থাকে, আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টিতে সন্তুষ্ট থেকে সুন্নাতে ভরা জীবন অতিবাহিত করে। আসুন! একজন সৌভাগ্যবান হিজড়ার ঘটনা লক্ষ্য করুন, হতে পারে হিজড়ারা তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হবে যে, আহ! যদি আমার সাথে এরূপ হতো। হযরত শায়খ আব্দুল ওয়াহাব বিন আব্দুল মাজিদ ছাকফি رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বর্ণনা করেন: “আমি একটি জানাযা দেখলাম, যা তিনজন পুরুষ ও একজন মহিলা বহন করছিলো, আমি সেই মহিলার অংশটা বহন করলাম, জানাযার নামায আদায় করে কাফন দাফনের কার্যাদি সম্পন্ন করার পর আমি সেই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করলাম: মরহুমের সাথে আপনার কিসের সম্পর্ক ছিলো? বললো: সে আমার সন্তান ছিলো। আমি বললাম: প্রতিবেশীরা কেন জানাযায় অংশগ্রহণ করেনি? বললো: আসলে আমার সন্তান মুখান্নাস (হিজড়া) ছিলো। এজন্য লোকেরা তার জানাযায় অংশগ্রহণ করাকে গুরুত্ব দেয়নি। সায়্যিদুনা শায়খ আব্দুল ওয়াহাব বিন আব্দুল মাজিদ رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: এই দুঃখীনী মায়ের প্রতি আমার দয়া হলো। আমি তাকে কিছু টাকা আর শষ্য পেশ করলাম। সেই রাতে সাদা পোশাক পরিহিত একজন ব্যক্তি পূর্ণিমার চাঁদের মতো নূর বর্ষণ করে আমার স্বপ্নে আসলো। আর আমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে লাগলো। আমি বললাম : مَنْ اَنْتَ؟ অর্থাৎ আপনি কে? বললো: আমি সেই মুখান্নাস (হিজড়া), যাকে আজ আপনি দাফন করেছেন। লোকেরা আমাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো বিধায় আল্লাহ্ তাআলা আমার প্রতি দয়া করেছেন।” (আর রিসালাতুল কুশাইরিয়া, ১৭৩ পৃষ্ঠা) 

কনের পা ধৌত করা পানি ছিটানো কেমন? 
প্রশ্ন:- কনের পা ধৌত করে সেই পানি ঘরের চার কোনায় ছিটানো কেমন? 
উত্তর:- মুস্তাহাব। আমার আক্বা আ'লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “কনেকে বিয়ের পর শশুড় বাড়ি নিয়ে আসলে মুস্তাহাব হচ্ছে তার পা ধৌত করে সেই পানি ঘরের চারদিকে ছিটানো। এতে বরকত অর্জিত হয়। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২য় খন্ড, ৫৯৫ পৃষ্ঠা। মাফাতিহুল হান্নান, শরহে শরআতুল ইসলাম, ৪৪৭ পৃষ্ঠা)


দৃষ্টির ব্যাপারে প্রশ্নোত্তর 
প্রশ্ন:- শুনেছি মহিলার উপর প্রথম যে দৃষ্টি পড়ে, তা ক্ষমাযোগ্য এটা কতটুকু সঠিক? 
উত্তর:- যদি অনিচ্ছায় কোন মহিলার প্রতি প্রথমবার দৃষ্টি পড়ে এবং সাথে সাথে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়, তবে তা ক্ষমাযোগ্য। যদি ইচ্ছাকৃত দৃষ্টি দেয় তবে প্রথমবারই দৃষ্টি দেয়া হারাম আর জাহান্নামের নিয়ে যাওয়া মতো কাজ। আল্লাহ্ তাআলা পুরুষদেরকে দৃষ্টি হিফাযতের ব্যাপারে ১৮ পারার সূরা নূরের ৩০নং আয়াতে ইরশাদ করেন: قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ 

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: মুসলমানপুরুষদেরকে নির্দেশ দিন যেন তারা নিজেদের দৃষ্টিসমূহকে কিছুটা নিচু রাখে; (পারা: ১৮, সূরা: নূর, আয়াত: ৩০) 

মহিলাদেরকে দৃষ্টি হিফাযতের ব্যাপারে ইরশাদ করেন:  وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ 

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: এবং মুসলমান নারীদেরকে নির্দেশ দিন যেন তারা নিজেদের দৃষ্টিগুলোকে কিছুটা নিচু রাখে; (পারা: ১৮, সূরা: নূর, আয়াত: ৩১) 

দৃষ্টি দেয়া সম্পর্কিত ৪টি হাদীস শরীফ 

দৃষ্টি ফিরিয়ে নাও 
(১) হযরত সায়্যিদুনা জারির বিন আবদুল্লাহ্ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ বর্ণনা করেন: “একবার আমি তাজেদারে মদীনা صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দরবারে হঠাৎ দৃষ্টি পড়ার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম, তখন প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করলেন: “নিজের দৃষ্টিকে ফিরিয়ে নাও।” (সহীহ মুসলিম, ১১৯০ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২১৫৯) 

ইচ্ছাকৃত দৃষ্টি দিওনা 
(২) তাজেদারে মদীনা, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم হযরত সায়্যিদুনা আমীরুল মু'মিনীন শেরে খোদা মাওলায়ে কায়েনাত আলী মুরতাদ্বা رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ কে ইরশাদ করলেন: “এক দৃষ্টি দেয়ার পর দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দিওনা।” (অর্থাৎ যদি হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত কোন মহিলার উপর দৃষ্টি পড়ে যায় তাহলে তৎক্ষনাৎ দৃষ্টি ফিরিয়ে নাও এবং দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দিওনা। কেননা, প্রথম দৃষ্টি জায়েয আর দ্বিতীয় দৃষ্টি নাজায়েয।) (সুনান আবু দাউদ, ২য় খন্ড, ৩৫৮ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২১৪৯) 

দৃষ্টি হিফাযতের ফযীলত 
(৩) খাতামুল মুরসালীন, শফীউল মুযনিবীন, রাহমাতুল্লিল আলামীন صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে মুসলমান কোন মহিলার সৌন্দর্য্যরে প্রতি প্রথমবার (অনিচ্ছাকৃত) দৃষ্টি দেয়, অতঃপর নিজের দৃষ্টিকে নত করে নেয়, আল্লাহ্ তাআলা তাকে এমন ইবাদতের সামর্থ্য দান করবেন যার স্বাদ সে অনুভব করবে।” (মুসনদে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল, ৮ম খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২২৩৪১) 

শয়তানের বিষাক্ত তীর 
(৪) রহমতে আলম, নূরে মুজাস্সাম, রাসুলে আকরাম, শাহানশাহে বনী আদম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন; হাদীসে কুদসী হচ্ছে: “দৃষ্টি শয়তানের তীর সমূহের মধ্যে একটি বিষাক্ত তীর, সুতরাং যে ব্যক্তি আমার ভয়ে সেটাকে ত্যাগ করবে, তবে আমি তাকে এমন ঈমান দান করবো, যার স্বাদ সে তার অন্তরে অনুভব করবে।” (আল মু'জামুল কাবীর লিত তাবারানী, ১০ম খন্ড, ১৭৩ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১০৩৬২) 

চোখে আগুন ভর্তি করা হবে 
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাযালী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ উদ্বৃত করেন:“যে ব্যক্তি নিজের চোখকে হারাম দৃষ্টি দ্বারা পূর্ণ করবে। কিয়ামতের দিন তার চোখে আগুন ভর্তি করে দেয়া হবে।” (মুকাশাফাতুল কুলুব, ১০ পৃষ্ঠা) 

আগুনের শলাকা 
হযরত আল্লামা আবুল ফরজ আব্দুর রহমান বিন জাওযী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ উদ্বৃত করেন: “মহিলার সৌন্দয্যের্র প্রতি তাকানো ইবলিসের বিষাক্ত তীর সমূহের মধ্যে থেকে একটি তীর, যে ব্যক্তি না-মাহরাম থেকে নিজের দৃষ্টিকে হিফাযত করবে না, কিয়ামতের দিন তার চোখে আগুনের শলাকা প্রবেশ করানো হবে।” (বাহরুল দুমু, ১৭১ পৃষ্ঠা) 

দৃষ্টি অন্তরে কামভাবের বীজ বপন করে 
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাযালী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: যে ব্যক্তি নিজের দৃষ্টিকে সংযত রাখার ক্ষমতা রাখে না, সে নিজের লজ্জাস্থানকেও হিফাযত করতে পারে না। ۞হযরত সায়্যিদুনা ঈসা রুহুল্লাহ্ عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام বলেন: নিজের দৃষ্টিকে হিফাযত করো, এটা অন্তরে কামভাবের বীজ বপন করে, ফিতনার জন্য শুধুমাত্র এটাই যথেষ্ট।” ۞হযরত সায়্যিদুনা ইয়াহ্ইয়া عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام এর নিকট জিজ্ঞাসা করা হলো যে, যিনার (ব্যভিচারের) সূচনা কিভাবে হয়? তখন তিনি عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام বললেন: “দেখা এবং কামনা করার মাধ্যমে। ۞হযরত সায়্যিদুনা ফুযাইল رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “শয়তান বলে যে, দৃষ্টি আমার পুরাতন তীর এবং কামান, যা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না।” (ইহ্ইয়াউল উলুম, ৩য় খন্ড, ১২৫ পৃষ্ঠা) 
۞আমার আক্বা, আ'লা হযরত رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: “প্রথমে দৃষ্টি প্রভাবিত হয়, অতঃপর অন্তর প্রভাবিত হয়, অতঃপর লজ্জাস্থান প্রভাবিত হয়।” (আনওয়ারে রযা, ৩৯১ পৃষ্ঠা) ۞নিঃসন্দেহে চোখের কুফলে মদীনা লাগানোর মধ্যেই উভয় জাহানের সফলতা নিহিত রয়েছে। 

আঁক উঠতি তো মে জুনজোলা কে পলক সি লেতা, 
দিল বিগড়তা তো মে গাভরা কে সাম্ভালা করতা। 

মহিলাদের চাদরের দিকেও দৃষ্টি দিওনা 
হযরত সায়্যিদুনা আ'লা বিন যিয়াদ رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِবলেন: “নিজের দৃষ্টিকে মহিলার চাদরের উপরও নিক্ষেপ করোনা। কেননা, দৃষ্টি অন্তরে কামভাব সৃষ্টি করে।” (হিলইয়াতুল আওলিয়া, ২য় খন্ড, ২৭৭ পৃষ্ঠা) 

কুদৃষ্টি দিয়ে ফেললে কি করবে? 
প্রশ্ন:- যদি কারো দৃষ্টি প্রভাবিত হয়েই যায় এবং পুরুষ মহিলার অথবা মহিলা পুরুষের উপর কুদৃষ্টি দিয়ে দেয়, তাহলে সে কি করবে? 
উত্তর:- তৎক্ষনাৎ চোখ বন্ধ করে নিবে অথবা দৃষ্টি সেখান থেকে সরিয়ে নিবে আর সম্ভব হলে সেখান থেকে সরে যাবে, আল্লাহ্ তাআলার দরবারে লজ্জিত হয়ে কান্না করে তাওবা করবে এবং যদি পুরুষের সাথে এমন হয় তখন সে আগে ও পরে একবার দরূদ শরীফ পাঠ করে এই দোয়াটি পড়বে: اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَعُوذُبِكَ مِنْ فِتْنَةِ النِّسَاءِ وَعَذَابَ الْقَبْر অর্থাৎ হে আল্লাহ্! আমি মহিলার ফিতনা এবং কবরের শাস্তি থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। 

গুনাহ ক্ষমা করানোর ব্যবস্থাপত্র 
যখনই কোন গুনাহ সংগঠিত হয়ে যায় তখন যেকোন নেকী করে নেওয়া উচিত যেমন: দরূদ শরীফ, কলেমায়ে তৈয়্যবা ইত্যাদি পড়ে নিন। যেমন- হযরত সায়্যিদুনা আবু যর গিফারী رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُবলেন: প্রিয় আক্বা صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم আমাকে উপদেশ দিতে গিয়ে ইরশাদ করেন: “যখনই তোমার দ্বারা কোন মন্দ কাজ সংগঠিত হয়ে যায়। তৎক্ষনাৎ কোন নেকীর কাজ করে নাও, তাহলে এই নেক আমলটি মন্দ কাজকে মিটিয়ে দিবে।” আমি আরয কললাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ্ لَآ اِلٰهَ اِلَّا الله ! صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বলা কি নেক আমলের মধ্যে অন্তভূক্ত? তখন প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করলেন: “এটা তো সর্বোত্তম নেকী।” (মুসনদে ইমাম আহমদ, ৮ম খন্ড, ১১৩ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২১৫৪৩) 

তাওবার নিয়্যতে গুনাহ করা কুফরী 
এই হাদীসে পাকটি পাঠ করে مَعَاذَ الله عَزَّوَجَل (আল্লাহর পানাহ! ) কেউ এটা মনে করবেন না যে, অনেক সুন্দর একটা ব্যবস্থাপত্র হাতে এসে গেলো। এখন তো বেশি বেশি গুনাহ করতে থাকবো আর لَآ اِلٰهَ اِلَّا الله পড়তে থাকবো তাহলে গুনাহ মুছে যাবে। আল্লাহ্ তাআলার শপথ! এটা শয়তানের অনেক বড় ও মন্দ আক্রমন। এই নিয়্যতে গুনাহ করা যে, পরে তাওবা করে নিবো। এটা খুবই জঘন্যতম কবিরা গুনাহ। বরং প্রসিদ্ধ মুফাস্সীর হাকীমুল উম্মত হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ “নূরুল ইরফান” এর ৩৭৬ পৃষ্ঠায় সূরা ইউসুফ এর নবম আয়াতের এর পাদটীকায় বলেন: “তাওবার নিয়্যতে গুনাহ করা কুফরী।” এ থেকে সেই সব লোক শিক্ষা গ্রহণ করুন, যারা পরবর্তীতে ক্ষমা চাওয়ার নিয়্যতে অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস ব্যবহার করে নেন। তাওবা করার জন্য লজ্জিত হওয়া আবশ্যক, লজ্জিত হওয়ারও কি অপরূপ ধরণ হয়ে থাকে। যেমনিভাবে- এক চক্ষুবিশিষ্ট লোক হযরত সায়্যিদুনা কাবুল আহবার رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ বলেন: হযরত সায়্যিদুনা মুসা কলিমুল্লাহ্ عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام এর যুগে একবার অনাবৃষ্টি দেখা দিয়েছিলো, তখন লোকেরা তাঁর কাছে আবেদন করলো: ইয়া কলিমাল্লাহ্ عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام দোয়া করুন যেন বৃষ্টি বর্ষণ হয়। (তখন) তিনি عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام বললেন: “আমার সাথে পাহাড়ে চলো।” সবাই তাঁর সাথে চলতে লাগলো, (হঠাৎ) তিনি عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام ঘোষনা করলেন: “আমার সাথে এমন কেউ আসবে না, যে কোন গুনাহ করেছে।” এটা শুনে সবাই ফিরে যেতে লাগলো, শুধুমাত্র এক চক্ষু বিশিষ্ট একজন লোক সাথে চলতে লাগলো, হযরত সায়্যিদুনা মুসা কলিমুল্লাহ্ عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام বললেন: “তুমি কি আমার কথা শুনোনি?” সে উত্তর দিলো: জ্বী শুনেছি। তিনি عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام বললেন: “তুমি কি একেবারে নিষ্পাপ?” সে বললো: “ইয়া কলিমাল্লাহ্ عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام আমার এমন কোন গুনাহের কথা তো মনে নেই। কিন্তু একটি বিষয় বর্ণনা করছি।” তিনি عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام বললেন: “সেটা কি?” সে বললো: “একদিন আমি পথ চলার সময় কারো ঘরে এক চোখ দিয়ে উঁকি মারলাম তখন সেই ঘরে কেউ দাঁড়িয়ে ছিলো। কারো ঘরে এভাবে উঁকি মারায় আমি অনেক লজ্জিত হলাম। তখন আমি আল্লাহ্ তাআলার ভয়ে কেঁপে উঠলাম! লজ্জিত হওয়াটা আমাকে অনেক প্রভাবিত করলো এবং যে চোখ দিয়ে উঁকি মেরেছিলাম, সেটাকে উপড়ে ফেললাম! এখন আপনিই বলুন, যদি আমার সেই কাজটা গুনাহ হয়ে থাকে তবে আমিও চলে যাব।” হযরত সায়্যিদুনা মুসা عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام তাকে সঙ্গে নিলেন। অতঃপর পাহাড়ে পৌঁছে তিনি عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام সেই লোকটিকে বললেন: “আল্লাহ্ তাআলার দরবারে বৃষ্টির জন্য দোয়া করো! ” তখন সে এভাবে দোয়া করলো: “হে কুদ্দুছ عَزَّوَجَلّ হে কুদ্দুছ عَزَّوَجَلّ তোমার ধন ভান্ডার কখনোও শেষ হয় না এবং কৃপণতাও তোমার গুন নয় আপন অনুগ্রহ ও দয়া দ্বারা আমাদের উপর পানি বর্ষণ করো।” সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি বর্ষণ হতে লাগলো এবং তারা উভয়ে পাহাড় থেকে ভিজতে ভিজতে ফিরে আসলেন।” (রাওযুর রিয়াহিন, ২৯৫ পৃষ্ঠা) আল্লাহ্ তাআলার রহমত তাঁদের উপর বর্ষিত হোক এবং তাঁদের সদকায় আমাদের বিনা হিসাবে ক্ষমা হোক। اٰمِين بِجا  هِ  النَّبِىِّ الْاَمين صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم 

জানা গেলো, গুনাহের উপর লজ্জিত হওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। হাদীসে পাকে রয়েছে: “اَلنَّدَمُ تَوْبَةٌ অর্থাৎ লজ্জিত হওয়াই তাওবা।” (ইবনে মাজাহ্, ৪র্থ খন্ড, ৪৯২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২৫২) আহ! আমরা দিনে কত শত শত বরং হাজারো গুনাহ করে থাকি, কিন্তু লজ্জিত হওয়া তো দূরের কথা আমাদের সেটার অনুশোচনাই হয় না। 

কোয়ি হাফতাহ্ কোয়ি দিন ইয়া কোয়ি ঘন্টা মেরা বলকে, 
কোয়ি লমহা গুনাহোঁ ছে নেহি খালি গেয়া হোগা। 
নাদামত সে গুনাহোঁ কা ইযালাহ্ কুছ তো হো জাতা, 
হামেঁ রোনা ভি তো আতা নেহি হায়! নাদামত সে। 

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! নিজের চেয়ে কম মর্যাদাবান ব্যক্তি দ্বারা দোয়া করানো আম্বিয়া ও মুরসালীন عَلَيْهِمُ السَّلَام এবং বুযুর্গানে দ্বীনের رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِمْ পদ্ধতি। নিশ্চয় নবীর মর্যাদা উম্মত থেকে বেশি, তারপরও হযরত সায়্যিদুনা মুসা কলিমুল্লাহ্ عَلٰی نَبِیِّنَاوَعَلَیْہِ الصَّلوٰۃُ وَالسَّلام আপন উম্মতকে দিয়ে দোয়া করালেন। সব নবীদের থেকে শ্রেষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও আমাদের প্রিয় নবী, রাসূলে আরবী صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ওমরা করার অনুমতি দিতে গিয়ে হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুকে আযম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ কে ইরশাদ করলেন: “হে আমার ভাই! আমাকেও দোয়ার মধ্যে শামিল করিও।” (ইবনে মাজাহ, ৩য় খন্ড, ৪১১ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২৮৯৪) হযরত সায়্যিদুনা ফারুকে আযম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ মদীনা শরীফের অলিতে গলিতে মাদানী মুন্নাদেরকে (ছোট বাচ্চাদেরকে) বলতেন: “হে বাচ্চারা! দোয়া করো যেন ওমর ক্ষমা পেয়ে যায়।” খলীফায়ে আ'লা হযরত সায়্যিদি ও মুর্শিদি কুতবে মদীনা رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ এর মদীনা মুনাওয়ারার বাড়িতে প্রতিদিন মিলাদ শরীফের মাহফিল অনুষ্ঠিত হতো। আমিও অনেকবার দেখেছি যে, মিলাদ শেষ হওয়ার পর কাউকে না কাউকে দোয়া করানোর নির্দেশ দিতেন, নিজে দোয়া করাতেন না। এখানে ধর্মীয় লোকদের এবং যিম্মাদার মুবাল্লিগাদের জন্য কতই না সুন্দর শিক্ষা রয়েছে যে, যদি কখনোও কোন মাহফিলে দোয়া করানোর সৌভাগ্য অর্জন না হয়, তবে অসন্তুষ্ট হবেন না এবং মাহফিল শেষে দোয়া করানোকে নিজের অধিকারও মনে করবেন না। যেই দোয়া করুক না কেন, আমিন বলে খুশি মনে দোয়ায় শরীক হয়ে যান এবং দোয়ার বরকত সমূহ অর্জন করুন। আল্লাহ্ তাআলার দরবারে উত্তম শব্দ ও জাকজমক দোয়া করলেই যে শুধু দোয়া কবুল হয় এমন নয়, তার দরবারে তো ব্যথিত দুঃখ ভারাক্রান্ত অন্তর দেখা হয়। 

ইউ তো সব উনহি কা হে পর দিল কি আগার পুছু, 
ইয়ে টুটে হোয়ে দিল হি খাছ উন কি কামায়ি হে। (হাদায়িকে বখশিশ) 

আমি গুনাহের জলাভূমি থেকে বের হয়ে এলাম 
ইসলামী বোনেরা! সত্য অন্তরে দোয়া করলে আল্লাহ্ তাআলা ও তাঁর রাসূল صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দয়াতে তা কবুল হয়ে থাকে, ফরিয়াদ শুনা হয় এবং উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়। যেমনিভাবে- পাঞ্জাব এর একজন ইসলামী বোনের লিখিত বর্ণনার সারাংশ হলো; দা'ওয়াতে ইসলামীর সুবাসিত মাদানী পরিবেশে আসার পূর্বে আমি গুনাহের জলাভূমিতে মারাত্মকভাবে নিমজ্জিত ছিলাম, অন্তর যদিওবা গুনাহের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলো কিন্তু মুক্তির কোন উপায় দেখছিলাম না, আমি ইলমে দ্বীন সম্পর্কে অজানা ছিলাম, অধিকাংশ সময় কিছুটা এরকম দোয়া করতাম: “হে আমার প্রতিপালক! আমি সংশোধন হতে চাই, আমার সংশোধনের পথ বের করে দাও।” অবশেষে দোয়ার ফল প্রকাশ পেলো এবং একদিন এই সুসংবাদ পেলাম যে, দা'ওয়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ইসলামী বোনদের সুন্নাতে ভরা ইজতিমা ১২ই আগষ্ট ২০০১ইং রবিবার অমুক জায়গায় অনুষ্ঠিত হবে। আমি তো প্রথম থেকেই তৃষ্ণার্থ ছিলাম, সুতরাং আমি ইজতিমার অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকি, অবশেষে সেই দিন এসে গেলো এবং আমি প্রবল উদ্দীপনা সহকারে ইসলামী বোনদের সেই ইজতিমায় অংশগ্রহণ করলাম। তিলাওয়াত এবং নাত শরীফ শুনে আমি নিজের অন্তরে শান্তি অনুভব করলাম, যখন মুবাল্লিগাতে দা'ওয়াতে ইসলামী সুন্নাতে ভরা বয়ান শুরু করলেন তখন আমি একেবারে নিশ্চুপ হয়ে শুনতে লাগলাম, যখন বয়ান শেষ হলো তখন আমার চেহারা অশ্রুসিক্ত হয়ে ছিলো। অতঃপর ইসলামী বোনদের সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমার ঘোষনা করা হলো, তখন আমি সেখানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করার পাক্কা নিয়্যত করে নিলাম। اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ عَزَّوَجَلّ ইজতিমায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করার ফলশ্রুতিতে আমি গুনাহের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেলাম, আজ আমি এলাকায়ী যিম্মাদার হিসেবে ইসলামী বোনদের মাঝে নেকীর দাওয়াতের সাড়া জাগানোর চেষ্টায় রত আছি। 

মেরে আমল কা বদলা তো জাহান্নাম হি থা, 
মে তো জাতা মুঝে ছরকার নে জানে নাদিয়া। 
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد

--------
লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত ৩৪৪ পৃষ্ঠা সম্বলিত “পর্দা সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর“ নামক কিতাবের ১-১০ নং পৃষ্ঠা হতে সংগৃহীত। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই কিতাবটি অবশ্যই সংগ্রহে রাখুন। অন্যকে উপহার দিন।

যারা মোবাইলে (পিডিএফ) কিতাবটি পড়তে চান তারা ফ্রি ডাউনলোড করুন ।
দাওয়াতে ইসলামীর সকল বাংলা ইসলামীক বইয়ের লিংক এক সাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন

মাদানী চ্যানেল দেখতে থাকুন