বিভাগ সমূহ

রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭

কবর যিয়ারত করার নিয়মাবলী, সুন্নাত ও দোআ সমূহ

তাজেদারে রিসালত, শাহেনশাহে নবুয়ত, মুস্তফা জানে রহমত, শময়ে বজ্‌মে হিদায়ত, নওশায়ে বজ্‌মে জান্নাত, নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেছেন: “যে আমার সুন্নাতকে ভালবাসল, সে আমাকেই ভালবাসল। আর যে আমাকে ভালবাসল, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে। (মিশকাতুল মাছাবীহ্, ১ম খন্ড, ৫৫ পৃষ্ঠা, হাদিস- ১৭৫)

সীনা তেরি সুন্নাতো মদীনা বনে আক্বা, 
জান্নাত মে পড়ূসী মুঝে তুম আপনা বনানা।
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد

কবরস্থানে হাজির হওয়ার ১১টি মাদানী ফুল
(১) নবী করীম, রউফুর রহীম ﷺ ইরশাদ করেছেন: “আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করার জন্য নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর যিয়ারত কর কেননা সেটা দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তির কারণ, আর আখেরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়।” (সুনানে ইবনে মাযাহ্, ২য় খন্ড, ২৫২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ১৫৭১, দারুল মারিফাহ, বৈরুত)

শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭

শাবান মাস : প্রিয় নবীর মাস (ফযিলত ও আমল) (পর্ব ৩)

সগে মদীনা عُفِيَ عُنْهُ এর মাদানী অনুরোধ

اَلْحَمْدُ لِلهِ عَزَّوَجَلَّ! সগে মদীনা عُفِيَ عُنْهُ (লিখক) এর বছরের পর বছর ধরে উল্লেখিত নিয়মানুসারে শবে বরাতের ৬ রাকাত নফল নামায আদায় ও তিলাওয়াত প্রভৃতির অভ্যাস রয়েছে। মাগরিবের পর আদায়কৃত এ ইবাদত নফল হিসেবে গণ্য। ফরয কিংবা ওয়াজিব নয় আর মাগরিবের পর নফল নামায আদায় ও কুরআন তিলাওয়াতে ব্যাপারে শরীয়তের মধ্যে কোন নিষেধাজ্ঞাও নেই। হযরত আল্লামা ইবনে রাজাব হাম্বলী رحمة الله عليه লিখেন: শাম বাসীদের মধ্যে সুপ্রসিদ্ধ তাবেয়ীগণ যেমন: হযরত সায়্যিদুনা খালিদ বিন মা’দান, হযরত সায়্যিদুনা মাকহুল, হযরত সায়্যিদুনা লোকমান বিন আমীর رحمة الله عليهم  অন্যান্যরা শবে বরাতের অনেক সম্মান করতেন আর এ রাতে খুব বেশি ইবাদত করতেন। তাঁদের কাছ থেকে অন্যান্য মুসলমানেরা এই মোবারক রাতের সম্মান করা শিখেছেন। (লাতায়িফুল মা’আরিফ, ১ম খন্ড, ১৪৫ পৃষ্ঠা) হানাফী মাযহাবের গ্রহনযোগ্য কিতাব “দুররে মুখতার” এর মধ্যে রয়েছে শবে বরাতে রাত জেগে ইবাদত করা মুস্তাহাব, (শুধু সম্পূর্ণ রাত জেগে থাকাকে রাত জাগ্রত থাকা বলেনা) বরং রাতের অধিকাংশ সময় জেগে থাকাও হচ্ছে রাত জাগ্রত থাকা। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৫৬৮ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়ত, ১ম খন্ড, ৬৭৯ পৃষ্ঠা, মাকাতাবাতুল মদীনা, বাবুল মদীনা করাচী)

মাদানী অনুরোধ: সম্ভব হলে সকল ইসলামী ভাইয়েরা নিজ নিজ এলাকার মসজিদে মাগরিবের নামাজের পর ৬ রাকাআত নফল প্রভৃতির ব্যবস্থা করুন আর অগনিত সাওয়াব অর্জন করুন। ইসলামী বোনেরা নিজ নিজ ঘরে এই আমল করুন। 

শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭

শাবান মাস : প্রিয় নবীর মাস (ফযিলত ও আমল) (পর্ব ২)

অসংখ্য গুনাহ্গারদের ক্ষমা হয়ে যায় কিন্তু...

হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা সিদ্দিকা رضى الله عنها হতে বর্ণিত, প্রিয় নবী, রাসুলে আরবী, হুযুর পুরনূর ইরশাদ করেছেন: “আমার নিকট জিবরাঈল عليه السلام এসে বললেন; এটা শাবানের ১৫তম রাত, এ রাতে আল্লাহ তাআলা বনী কালব এর ছাগলের পশম পরিমাণ লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রদান করেন। তবে কাফির ও শত্রুতা পোষনকারী, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী, টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী, মাতা-পিতার অবাধ্য এবং মদ পানে অভ্যস্তদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন না।” (শুয়াইবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩৮৪ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৮৩৭) 
(হাদীসে শরীফে: টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী দ্বারা যে বর্ণনা রয়েছে তা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে অহংকারবশত টাখনুর নিচে লুঙ্গি বা পায়জামা ইত্যাদি ঝুলানো) 
কোটি কোটি হাম্বলী মতাবলম্বীদের মহান ইমাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম আহমদ বিন হাম্বল رحمة الله عليه হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আমর رضى الله عنه হতে যে বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন, তাতে হত্যাকারীর কথাও উল্লেখ রয়েছে। (মুসনাদে ইমাম আহমদ, ২য় খন্ড, ৫৮৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৬৬৫৩, দারুল ফিকর, বৈরুত)

শাবান মাস : প্রিয় নবীর মাস (ফযিলত ও আমল) (পর্ব ১)

প্রিয় নবীর মাস: শাবান

রাসুলে আকরাম, নূরে মুজাস্সম এর শাবানুল মুয়াযযাম সম্পর্কে সম্মানিত ফরমান হচ্ছে: “শাবান আমার মাস আর রমযান আল্লাহর মাস”।
(আল জামিউস্ সগীর, ৩০১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৪৮৮৯, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত

শাবান মাসের ৫টি অক্ষরের বাহার

سُبحَان الله عَزَّوَجَل! শাবানুল মুয়াযযম মাসের মহত্বের উপর কুরবান হোন! এর ফযিলতের জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, আমাদের প্রিয় আক্বা, মক্কী মাদানী মুস্তফা  সেটাকে “আমার মাস” বলেছেন। সায়্যিদুনা গাওসে আযম, মাহবুবে সুবহানী, কিনদীলে নূরানী, শায়খ আবদুল কাদির জীলানী হাম্বলী رحمة الله عليه আরবী (শাবান) এর ৫টি অক্ষর ,ش ,ع ,ب ,ا ,ن সম্পর্কে নকল করেন। “ش” দ্বারা উদ্দেশ্য شَرف অর্থাৎ বুযুর্গী বা আভিজাত্য, “ ع” দ্বারা উদ্দেশ্য عُلو অর্থাৎ মর্যাদা বৃদ্ধি, “ ب” দ্বারা উদ্দেশ্য بِر অর্থাৎ অনুগ্রহ ও পূন্য, “ ا” দ্বারা উদ্দেশ্য أُلفَت অর্থাৎ ভালবাসা ও “ ن” দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে نُور অর্থাৎ আলো। সুতরাং এ সকল বস্তু গুলো আল্লাহ তা’আলা নিজের বান্দাগণকে এ মাসে প্রদান করে থাকেন। এটা ঐ মাস, যাতে নেকী সমূহের দরজা খুলে দেয়া হয়, বরকত সমূহ অবতীর্ণ হয়, গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয় এবং গুনাহ সমূহের কাফ্ফারা আদায় করা হয়।
আর নবী করীম  এর প্রতি দরূদে পাকের মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়। এটা প্রিয় নবী  এর উপর দরূদ প্রেরণের মাস। (গুনইয়াতুত্ব ত্বালিবীন, ১ম খন্ড, ৩৪১-৩৪২ পৃষ্ঠা, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)

বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭

দুরূদ শরীফের ফযিলত- পর্ব -১

❤❤ফযিলত-১❤❤   

(১) রহমতে        আলম,      নূরে      মুজাস্সাম,      রাসূলে আকরাম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন:
“যে (ব্যক্তি) আমার উপর এক বার দরূদ শরীফ পাঠ করে, আল্লাহ্ তাআলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করেন।” (মুসলিম, ২১৬ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৪০৮)
❤❤ফযিলত-২❤❤
(২) সুলতানে   দো-আলম,   নূরে   মুজাস্সাম,     শাহে বনী আদম,  রাসূলে  মুহ্তাশাম   صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم  ইরশাদ করেন: “কিয়ামতের দিন আমার নিকটতম ব্যক্তি সেই হবে, যে দুনিয়ায় আমার উপর বেশি পরিমাণে দরূদ শরীফ পড়েছে।” (তিরমিযী, ২য় খন্ড, ২৭ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৪৮৪)

❤❤ফযিলত-৩❤❤
(৩) রহমতে        আলম,      নূরে      মুজাস্সাম,      রাসূলে আকরাম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি আমার উপর এক বার দরূদ শরীফ পড়ে, আল্লাহ্ তাআলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করেন এবং তার আমল নামায় দশটি নেকী লিখে দেন।” (তিরমিযী, ২য় খন্ড, ২৮ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৪৮৪)

মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭

শয়ন ও জাগরনের ১৫টি মাদানী ফুল (নিয়মাবলী)

ইসলাম শাশ্বত ধর্ম। ইসলামে যত নিয়ম কানুন রয়েছে সবই বান্দার উপকারের জন্য। কিভাবে চললে বান্দার ভাল হবে তা স্রষ্টা-ই ভাল জানেন। তাই ইসলামী পদ্ধতি কখনোই বান্দার কষ্টের জন্য নয় বরং কষ্ট ও রোগ বালাই থেকে বাঁচানোর জন্যই ইসলামী পদ্ধতি গুলো। চলুন দেখে নিই ঘুমানো ও ঘুম থেকে উঠার বিষয়ে ইসলাম কি বলছে-
শয়ন ও জাগরনের ১৫টি মাদানী ফুল (নিয়মাবলী)
(১) শয়ন করার আগে বিছানাকে ভালভাবে ঝেড়ে নিন যাতে কোন ক্ষতিকর পোকা-মাকড় ইত্যাদি থাকলে বের হয়ে যায়, 

(২) শয়ন করার আগে এ দুআটি পড়ে নিন,

اَللهُمَّ بِاسمِكَ اَمُوتُ وَاَحى
অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নামে মৃত্যুবরণ করছি এবং জীবিত হব। (অর্থাৎ শয়ন করি ও জাগ্রত হই)।
(বুখারী শরীফ, খন্ড-৪র্থ, পৃষ্ঠা-১৯৬, হাদীস নং-৬৩২৫), 

সুরমা লাগানোর ৪টি মাদানী ফুল (নিয়মাবলী)

কিভাবে সুরমা লাগাবেন?

(১) সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফের রিওয়াতে রয়েছে যে, সব সুরমার চাইতে উত্তম সুরমা হচ্ছে ইসমাদ। কেননা এটা দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পালক গজায়। (সুনানে ইবনে মাজাহ, খন্ড-৪র্থ, পৃষ্ঠা-১১৫, হাদীস নং-৩৪৯৭)

(২) পাথুরী সুরমা ব্যবহার করাতে অসুবিধা নেই এবং কালো সুরমা কিংবা কাজল রূপচর্চার নিয়্যতে পুরুষের লাগানো মাকরূহ। আর যদি রূপচর্চা উদ্দেশ্যে না হয় তবে মাকরূহ নয়। (ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, খন্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩৫৯) 

(৩) শয়ন করার সময় সুরমা লাগানো সুন্নাত।(মিরআতুল মানাজিহ, খন্ড-৬, পৃষ্ঠা-১৮০)

(৪) সুরমা ব্যবহারের বর্ণিত তিনটি পদ্ধতির সারাংশ উপস্থাপন করছি: 

(ক) কখনো উভয় চোখে তিন তিন শলাই 

(খ) কখনো ডান চোখে তিন শলাই এবং বাম চোখে দুই শলাই,

ঘরে আসা যাওয়ার ১২টি মাদানী ফুল (নিয়মাবলী)

কিভাবে ঘরে আসব, কিভাবে বের হবো?

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। প্রত্যেকটি বিষয়ে আছে পূঙ্খানু পূঙ্খানু বর্ণনা। ঘরে আসা যাওয়ার বিষয়টিও বাদ নেই এর থেকে। চলুন দেখে নেয়া যাক-
(১) যখন ঘর থেকে বের হবেন তখন এই দুআ পড়ুন
بِسمِ اللهِ تَوَكَّلتُ عَلَى اللهِ لَا حَولَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ
অনুবাদ : আল্লাহর নামে আরম্ভ, আমি আল্লাহর উপর ভরসা করছি। আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা ব্যতীত কোন সামর্থ্য ও শক্তি নেই। (আবু দাউদ, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-৪২০, হাদীস নং- ৫০৯৫) إنشاء الله عزوجل এ দুআ পড়ার বরকতে সঠিক পথে থাকবে বিপদ আপদ থেকে মুক্ত থাকবে। আল্লাহর সাহায্যের আওতায় থাকবে।

(২) ঘরে প্রবেশের দুআ
اَللهُمَّ اِنِّى اَسأَلُكَ خَيرَ المَولَجِ وَخَيرَ المَخرَجِ بِسمِ اللهِ وَلَجنَا وبِسمِ اللهِ خَرَجنَا وَعَلَى اللهِ رَبِّنَا تَوَكَّلنَا
অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট প্রবেশকালে এবং বের হওয়ার সময় মঙ্গল প্রার্থনা করছি আল্লাহর নামে আমি (ঘরে) প্রবেশ করছি এবং তারই নামে বের হই এবং আপন প্রভুর উপর আমরা ভরসা করছি) (আবু দাউদ, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-৪২০, হাদীস-৫০৯৬) এ দুআটি পড়ে ঘরের অধিবাসীদের সালাম করুন। অতঃপর নবী ﷺ এর দরবারে সালাম পেশ করুন এরপর সুরা ইখলাস পাঠ করুন إنشاء الله عزوجل ঘরে বরকত ও পারিবারিক কলহ থেকে মুক্ত থাকবে।

সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭

ঈসা عليه السلام এর সময়ের একটি শিক্ষনীয় ঘটনা

তৃতীয় রুটিটি কোথায় গেল?

হযরতে সায়্যিদুনা ঈসা রূহুল্লাহ (على نبينا وعليه الصلوة والسلام) এর সমীপে এক ব্যক্তি আরয করল, “ইয়া রূহুল্লাহ! আমি আপনার বরকতপূর্ণ সংস্পর্শে থেকে আপনার খিদমত করতে ও শরীআতের জ্ঞান অর্জন করতে চাই।”

তিনি (على نبينا وعليه الصلوة والسلام) তাকে অনুমতি দিলেন। চলতে চলতে যখন উভয়ে একটি নহরের কিনারায় পৌঁছলেন তখন তিনি (على نبينا وعليه الصلوة والسلام) বললেন, “এসো খানা খেয়ে নিই।” তাঁর (على نبينا وعليه الصلوة والسلام) নিকট তিনটি রুটি ছিল। একটি করে রুটি উভয়ে খেয়ে নিলো, যখন হযরতে সায়্যিদুনা ঈসা রূহুল্লাহ (على نبينا وعليه الصلوة والسلام) নহর থেকে পানি পান করছিলেন তখন ঐ ব্যক্তি তৃতীয় রুটিটি লুকিয়ে ফেলল।

শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৭

রজব মাসের ফযিলত, রোজা রাখা ও আমল (পর্ব ৩)

৬০ মাসের রোযার সাওয়াব

হাদীসে পাকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ২৭ রজবের রোযা রাখবে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য ষাট (৬০) মাসের রোজার সাওয়াব লিখে দিবেন। আর তা সেই দিন, যেই দিনে হযরত জিবরাঈল عليه السلام হযরত মুহাম্মদ এর জন্য প্রথম অহী নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন। (তানযিহুশ শরীয়াহ, খন্ড-২য়, পৃ-১৬১, হাদীস নং-৪১)

শত বছরের রোজার সাওয়াব

হযরত সায়্যিদুনা সালমান ফারসী رضى الله عنه থেকে বর্ণিত, আল্লাহর মাহবুব হযরত মুহাম্মদ এর বাণী হচ্ছে, রজবে এমন একটি দিন ও রাত রয়েছে যে, সেই দিনে যে রোযা রাখবে ও রাতে কিয়াম তথা ইবাদত বন্দেগী করবে সে যেন একশত বছর রোযা রাখল। আর সেই দিন হল ২৭ রজব। এই দিন হযরত মুহাম্মদ কে আল্লাহ তাআলার প্রতি প্রেরণ করেছেন। (শুআবুল ঈমান, খণ্ড-৩য়, পৃ-৩৭৪, হাদীস নং-৩৮১১)

রজব মাসের ফযিলত, রোজা রাখা ও আমল (পর্ব ২)

একটি জান্নাতী নহরের নাম রজব

হযরত সায়্যিদুনা আনাস رضى الله عنه থেকে বর্ণিত, আল্লাহ তাআলার রসূল হযরত মুহাম্মদ ইরশাদ করেন, “জান্নাতে একটা নদী রয়েছে, যাকে ‘রজব’ বলে, যা দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়েও মিষ্টি। তাই যে ব্যক্তি রজব মাসের একটি রোযা রাখবে, আল্লাহ তাকে ওই নদী থেকে পান করিয়ে তৃপ্ত করবেন।” (শুয়াবুল ঈমান, খন্ড-৩য়, পৃষ্ঠা-৩৬৭, হাদীস নং-৩৮০০)

নুরানী পাহাড়

একদা হযরত ঈসা عليه السلام আলোক ঝলমল এক পাহাড় দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আল্লাহ তাআলার দরবারে আরয করলেন, “হে আল্লাহ! এই পাহাড়কে কথা বলার শক্তি দান করুন।” তখন ঐ পাহাড় কথা বলতে লাগল। “ইয়া রুহুল্লাহ! আপনি কি চান?” ঈসা عليه السلام বললেন, তোমার অবস্থা বর্ণনা কর।” পাহাড় বলল “আমার ভিতর একজন মানুষ আছে।” তখন হযরত সায়্যিদুনা ঈসা রুহুল্লাহ عليه السلام আল্লাহর দরবারে আরয করলেন, হে আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে আমার নিকট প্রকাশ করে দিন। (এই কথা বলার সাথে সাথে) সেই পাহাড় এমনিতে ফেটে গেল এবং এর ভিতর থেকে চাঁদের মত উজ্জল চেহারা বিশিষ্ট একজন মানুষ দেখা গেল। তিনি আরয করলেন, “আমি হযরত সায়্যিদুনা মুসা কলিমূল্লাহ عليه السلام এর উম্মত। আমি আল্লাহর কাছে এই দু’আ করেছিলাম যেন তিনি আমাকে তাঁর প্রিয় মাহবুব হযরত মুহাম্মদ এর আগমনের সময় পর্যন্ত জীবিত রাখেন যাতে আমি তার যিয়ারত করতে পারি এবং তাঁর উম্মত হওয়ার সম্মানও অর্জন করতে পারি।

রজব মাসের ফযিলত, রোজা রাখা ও আমল (পর্ব ১)

রজবুল মুরাজ্জবের রোযা

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আল্লাহ তাআলার নিকট চারটি মাস বিশেষভাবে সম্মানিত। সুতরাং আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- (কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ)


নিশ্চয় মাসগুলোর সংখ্যা আল্লাহর নিকট বার মাস, আল্লাহর কিতাবের মধ্যে, যখন থেকে তিনি আসমান ও জমীন সৃষ্টি করেছেন। তন্মধ্যে চারটা সম্মানিত। এটাই সহজ সরল দ্বীন। তাই এ মাসগুলোর মধ্যে নিজেদের আত্মাগুলোর উপর যুলুম করো না এবং মুশরিকদের বিরুদ্ধে সর্বদা যুদ্ধ করো, যেমনিভাবে তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বদা যুদ্ধ করে এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ খোদাভীরুদের সাথে রয়েছেন। (পারা-১০, সূরা-তওবা, আয়াত-৩৬)


শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭

নখ কাটার ৯টি মাদানী ফুল (নিয়মাবলী)

(১) জুমার দিন নখ কাটা মুস্তাহাব। অবশ্য যদি বড় হয়ে যায় তবে জুমার দিনের জন্য অপেক্ষা করবেন না। (দুররে মুখতার, খন্ড-৯, পৃষ্ঠা-৬৬৮) সদরুশ শরীয়া মাওলানা আমজাদ আলী আজমী رحمة الله عليه বলেন, বর্ণিত আছে যে ব্যক্তি জুমার দিন নখ কাটবে, আল্লাহ তাআলা তাকে পরবর্তী জুমার পর্যন্ত বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবেন এবং তিন দিন অতিরিক্ত অর্থাৎ দশদিন পর্যন্ত। অন্য বর্ণনায় এটাও রয়েছে, যে ব্যক্তি জুমার দিন নখ কাটবে, তবে রহমতের শুভাগমন হবে এবং গুনাহ দূরীভূত হবে।(দুররে মুখতার, রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৯, পৃষ্ঠা-৬৬৮, বাহারে শরীয়াত, খন্ড-১৬, পৃষ্ঠা-২২৫, ২২৬)

(২) হাতের নখ কাটার পদ্ধতি পেশ করা হচ্ছে : সর্বপ্রথম ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে কনিষ্ঠা আঙ্গুলের নখ কাটবেন তবে বৃদ্ধাঙ্গুল ছেড়ে দিবেন। এবার বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলের নখ কাটবেন। এখন সবশেষে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের নখ কাটবেন। (দুররে মুখতার, খন্ড-৯, পৃষ্ঠা-৬৮০, ইহইয়াউল উলূম,খন্ড-১ম, পৃষ্ঠা-১৯৩)

(৩) পায়ের নখ কাটার কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই তবে উত্তম হচ্ছে ডান পায়ের কনিষ্ঠা আঙ্গুল থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলের নখ পর্যন্ত কেটে নিন অতঃপর বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল থেকে শুরু করে কনিষ্টা আঙ্গুলের নখ কাটুন। (দুররে মুখতার, খন্ড-৯, পৃষ্ঠা-৬৮০, ইহইয়াউল উলূম,খন্ড-১ম, পৃষ্ঠা-১৯৩)

জুতা পরার ৭টি মাদানী ফুল (নিয়মাবলী)

হাদীস শরীফ :

(১) অধিকহারে জুতা ব্যবহার করো কেননা মানুষ যতক্ষণ জুতা ব্যবহার করতে থাকে, সে আরোহী হয়ে থাকে। (অর্থাৎ কম ক্লান্ত হয়)। (মুসলিম শরীফ, পৃষ্ঠা-১১২১, হাদীস নং-২০৯৬)
(২) জুতা পরার আগে ঝেড়ে নিন যাতে পোকা বা কংকর ইত্যাদি বের হয়ে যায়।

(৩) সর্বপ্রম ডান পায়ে জুতা পরুন এরপর বাম পায়ের। খুলতে প্রথমে বাম পায়ের জুতা অতঃপর ডান পায়ের। হযরত মুহাম্মদ ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন জুতা পরে, তবে ডান দিক থেকে শুরু করা উচিত এবং যখনই খুলে তবে বাম দিক থেকে শুরু করা উচিত। যাতে ডান পায়ের জুতা পরার সময় প্রথমে এবং খুলতে সবশেষে হয়। (বুখারী শরীফ, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-৬৫, হাদীস নং-৫৮৫৫) নুজহাতুল কারী কিতাবে রয়েছে, মসজিদে প্রবেশ করার সময় হুকুম হচ্ছে প্রথমে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং বের হওয়ার সময় এ হাদীসে পাকের উপর আমল করা কঠিন। আলা হযরত رحمة الله عليه এর সমাধান এভাবে করেন, যখনই মসজিদে যাওয়া হয় প্রথমে বাম পায়ের জুতা খুলে জুতার উপর রাখুন অতঃপর ডান পায়ের জুতা খুলে মসজিদে প্রবেশ করুন আর মসজিদ থেকে বের হতে বাম পা বের করে জুতার উপর রাখুন অতঃপর ডান পা বের করে জুতা পরে নিন এরপর বাম পায়ের জুতা পরে নিন। (নুজহাতুল কারী, খন্ড-৫, পৃষ্ঠা-৫৩০, ফরিদ বুক স্টল) 

(৪) পুরুষ পুরুষালী ও মহিলারা মেয়েলী জুতা পরবে।

বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৭

হাঁচির আদব সম্পর্কিত ১৭টি মাদানী ফুল

দুটি হাদীস শরীফ :

(১) আল্লাহ তাআলা হাঁচি পছন্দ করেন এবং হাই তোলাকে অপছন্দ করেন। (বুখারী, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৬৩, হাদীস নং-৬২২৬)
(২) যখন কারো হাঁচি আসে আর সে বলে اَلحَمدُ لِلّٰهِ তখন ফিরিশতাগণ বলে رَبُّ العلَمِين ,যদি সে বলে  اَلحَمدُ لِلّٰهِ رَبِّ العلَمِين , তবে ফিরিশতাগণ বলেন আল্লাহ তাআলা তোমার উপর দয়া করুন। (আল মুজামুল কবীর, খন্ড-১১,পৃষ্ঠা-৩৫৮, হাদীস নং-১২২৮৪)

(৩) হাঁচি আসলে মাথা নিচু করুন, মুখ ঢেকে রাখুন এবং নিম্ন স্বরে বের করুন, উচ্চ স্বরে হাঁচি দেওয়া বোকামী। (রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৯, হাদীস নং-৬৮৪)

(৪) হাঁচি আসলে اَلحَمدُ لِلّٰهِ বলা চাই। (খাযাইনুল ইরফান ৩য় পৃষ্ঠায় তাহতাবীর বরাতে লিখেন, হাঁচি আসলে আল্লাহর প্রশংসা করা সুন্নাতে মুআক্কাদা। উত্তম হচ্ছে اَلحَمدُ لِلّٰهِ رَبِّ العلَمِين কিংবা اَلحَمدُ لِلّٰهِ عَلى كُلِّ حَال বলা।

(৫) শ্রবণকারীর উপর তৎক্ষণাৎ يَرحَمُكَ الله  (আল্লাহ তোমার উপর দয়া করুন) বলা ওয়াজিব এবং এতটুকু আওয়াজে বলুন যেন হাঁচিদাতা শুনতে পায়। (বাহারে শরীয়াত, খন্ড-১৬, পৃষ্ঠা-১১৯)