কিভাবে ঘরে আসব, কিভাবে বের হবো?
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। প্রত্যেকটি বিষয়ে আছে পূঙ্খানু পূঙ্খানু বর্ণনা। ঘরে আসা যাওয়ার বিষয়টিও বাদ নেই এর থেকে। চলুন দেখে নেয়া যাক-
(১) যখন ঘর থেকে বের হবেন তখন এই দুআ পড়ুন
بِسمِ اللهِ تَوَكَّلتُ عَلَى اللهِ لَا حَولَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ
অনুবাদ : আল্লাহর নামে আরম্ভ, আমি আল্লাহর উপর ভরসা করছি। আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা ব্যতীত কোন সামর্থ্য ও শক্তি নেই। (আবু দাউদ, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-৪২০, হাদীস নং- ৫০৯৫) إنشاء الله عزوجل এ দুআ পড়ার বরকতে সঠিক পথে থাকবে বিপদ আপদ থেকে মুক্ত থাকবে। আল্লাহর সাহায্যের আওতায় থাকবে।
(২) ঘরে প্রবেশের দুআ
اَللهُمَّ اِنِّى اَسأَلُكَ خَيرَ المَولَجِ وَخَيرَ المَخرَجِ بِسمِ اللهِ وَلَجنَا وبِسمِ اللهِ خَرَجنَا وَعَلَى اللهِ رَبِّنَا تَوَكَّلنَا
অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট প্রবেশকালে এবং বের হওয়ার সময় মঙ্গল প্রার্থনা করছি আল্লাহর নামে আমি (ঘরে) প্রবেশ করছি এবং তারই নামে বের হই এবং আপন প্রভুর উপর আমরা ভরসা করছি) (আবু দাউদ, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-৪২০, হাদীস-৫০৯৬) এ দুআটি পড়ে ঘরের অধিবাসীদের সালাম করুন। অতঃপর নবী ﷺ এর দরবারে সালাম পেশ করুন এরপর সুরা ইখলাস পাঠ করুন إنشاء الله عزوجل ঘরে বরকত ও পারিবারিক কলহ থেকে মুক্ত থাকবে।
(৩) নিজের ঘরে আসা যাওয়াতে মুহরিম মুহরিমাদেরকে (যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তান-সন্ততি ইত্যাদি) সালাম করুন।
(৪) আল্লাহর নাম নেওয়া যেমন بسم الله বলা ব্যতীত যে ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করবে শয়তানও তার সাথে প্রবেশ করে,
(৫) যদি এমন ঘরে (চাই নিজের খালি ঘরে হোক) যাওয়া হয় যাতে কেউ নেই তবে এভাবে বলুন:
اَلسَّلَامُ عَلَينَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَالِحِين
(অর্থাৎ আমাদের ও আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর সালাম) ফিরিশতা এ সালামের উত্তর প্রদান করে। (দুররুল মুখতার, খন্ড-৯ম, পৃষ্ঠা-৬৮২) অথবা এভাবে বলুন
اَلسَّلَامُ عَلَيكَ اَيُّهَا النَّبِيُّ
(হে নবী আপনার উপর সালাম) কেননা হুযুর নবী করিম ﷺ রূহ মুবারক প্রতিটি মুসলমানের ঘরে উপস্থিত থাকে। (বাহারে শরীয়াত, খন্ড-১৬তম, পৃষ্ঠা-৯৬, শরহুস শিফা লিল কারী খন্ড-২য়, পৃষ্ঠা-১১৮)
(৬)যখনই কারো ঘরে প্রবেশ করতে চান তখন এভাবে বলুন আমি কি ভিতরে আসতে পারি ?
(৭) যদি ভিতরে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া না যায় সন্তুষ্টচিত্তে ফিরে যান হতে পারে কোন অপরাগতার কারণে ভিতরে আসার অনুমতি দেয় নি।
(৮) যখন আপনার ঘরে কেউ করাঘাত করে তবে সুন্নাত হচ্ছে এভাবে জিজ্ঞাসা করা “কে?” করাঘাতকারীর উচিত যে নিজের নাম বলা। যেমন, মুহাম্মদ ইলইয়াস নাম বলার পরিবর্তে মাদীনা, আমি! দরজা খুলুন ইত্যাদি বলা সুন্নাত নয়।
(৯) উত্তরে নাম বলার পর দরজা থেকে সরে দাঁড়ান যাতে দরজা খুলতেই ঘরের ভিতরে দৃষ্টি না পড়ে,
(১০) কারো ঘরে উঁকি মারা নিষেধ। অনেকের ঘরের সামনে বা নিচে অন্যান্য ঘর থাকে সুতরাং বেলকনি ইত্যাদি থেকে দেখার সময় এদিকে খেয়াল করা উচিত যেন তাদের ঘরে দৃষ্টি না পড়ে।
(১১) কারো ঘরে গেলে সেখানের ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে অহেতুক মন্তব্য করবেন না এতে তার মনে কষ্ট আসতে পারে,
(১২) বিদায়ের সময় মালিককে দুআ ও শুকরিয়া জ্ঞাপন করুন এবং সালাম করে সম্ভব হলে কোন সুন্নাতে ভরা রিসালা ইত্যাদি উপহার দিন।
(বি.দ্র. উপরের সবগুলোকে সুন্নাত বলবেন না। যা সুন্নাত নয় তা সুন্নাত বলা নিষেধ। তবে সবগুলোকে এক সাথে সুন্নাত ও আদব বলতে পারবেন।)
---------
লিখাটি আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত মাওলানা ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত ১০১ টি মাদানী ফুল নামক রিসালার ১৪-১৬ নং পৃষ্ঠা হতে সংগৃহীত। রিসালাটি নিজে কিনুন, অন্যকে উপহার দিন।
যারা মোবাইলে রিসালাটি পড়তে চান তারা ফ্রি ডাউনলোড দিন
বাংলা ইসলামিক বইয়ের লিংক এক সাথে পেতে এখানে ক্লিক করুনমাদানী চ্যানেল দেখতে থাকুন