বিভাগ সমূহ

শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০

কসমের কাফফারা বিষয়ক মাদানী ফুল

কসমের কাফ্ফারা 
দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত অনুদিত পবিত্র কুরআন ‘খাযায়িনুল ইরফান সম্বলিত কানযুল ঈমান’ এর ২৩৫ পৃষ্ঠায় ৭ম পারার সূরা মায়িদার ৮৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন: কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: “আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের ভুল শপথের কারণে পাকড়াও করবেন না, অবশ্য সেসব শপথের জন্য তোমাদের পাকড়াও করবেন, যেগুলো তোমরা সুদৃঢ় করেছ; এমন শপথের কাফ্ফারা হল 
দশজন মিসকিনকে আহার করানো,নিজের পরিবারের লোকদের যা আহার করাও তার মধ্যম মানের অথবা তাদের কাপড় দান করা কিংবা একজন গোলাম আযাদ করা। যে ব্যক্তি এসবে সক্ষমতা রাখে না সে তিন দিনের রোযা রেখে দেবে। এ হল তোমরা যখন কসম করবে তোমাদের শপথসমূহের কাফ্ফারা এবং নিজের শপথসমূহ রক্ষা করো। 
এভাবে আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদেরকে নিজের নিদর্শনগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করেন,যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।” (পারা: ৭, সূরা: আল মায়িদা, আয়াত: ৮৯) 


কসমের কাফ্ফারার ১৩টি মাদানী ফুল 
কাফ্ফারার জন্য কসমের শর্তসমূহ 
(১)কসমের জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। সেগুলো পাওয়া না গেলে কাফ্ফারা দিতে হবে না। যে কসম করবে তাকে  মুসলমান হতে হবে,  বিবেকবান হতে হবে এবং  প্রাপ্ত-বয়ষ্ক হতে হবে। কাফেরের কসম কসম নয়। অর্থা ৎ কেউ (ঈমান আনার পূর্বে) কাফির থাকা অবস্থায় কসম করল, পরে ইসলাম গ্রহণ করল, তাহলে সে কসম ভঙ্গ করলে তার উপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না, আর আল্লাহর পানাহ! কেউ যদি কসম করার পর মুরতাদ হয়ে যায় (প্রকাশ্যে ইসলাম ত্যাগ করে) তাহলে তার কসম বাতিল হয়ে যাবে। অর্থা ৎ সে যদি পুনরায় ইসলামে ফিরে আসে এবং কসম ভঙ্গ করে এমতাবস্থা য় কাফ্ফারা দিতে হবে না।  কসমের আরও শর্ত এই, যে বিষয়ে কসম করা হয়েছে তা সম্ভবপর বিষয় হওয়া। অর্থাৎ ধারণা যাকে সম্ভাবনাময় বলে সাব্যস্ত করে, যদিও তা অস্বাভাবিক হয়ে থাকে এবং কসম ও যে বিষয়ে কসম করেছে উভয়টি একসাথে বলে থাকে। মাঝখানে সময়ের ব্যবধান থাকলে কসম হবে না। যেমন: ধরুন, কেউ তাকে বলতে বাধ্য করল যে, ‘বল, আল্লাহর কসম’! সে বলল: ‘আল্লাহর কসম’! তাকে বলতে বলা হল: ‘বল আমি অমুক কাজটি করব’। সে তাই বলল। এভাবে কসম সাব্যস্ত হবে না। (ফতোয়ায়ে আলমগিরী, ২য় খন্ড, ৫১ পৃষ্ঠা) 
কসমের কাফ্ফারা 
(২)গোলাম আযাদ করা। কিংবা ১০ জন মিসকিনকে আহার করানো। অথবা তাদের পোষাক পরানো। অর্থাৎ এ তিনটির যে কোন একটির অনুমতি রয়েছে। (তাব্ঈনুল হাকায়িক, ৩য় খন্ড, ৪৩০ পৃষ্ঠা) (মনে রাখবেন! কাফ্ফারা সেসব কসমের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে, যে কসম ভবিষ্যতের জন্য করা হবে, অতীত কালের জন্য কিংবা বর্তমানের জন্য করা কসমের কোন কাফ্ফারাই নেই। যেমন; কেউ বলল: ‘আল্লাহর কসম, গত কাল আমি এক গ্লাসও ঠান্ডা পানি পান করিনি’। বাস্তবে সে যদি পান করে থাকে, স্মরণ থাকা সত্ত্বেও যদি মিথ্যা কসম করে থাকে, তাহলে সে গুনাহ্গার হয়েছে। তাওবা করবে। কাফ্ফারা দিবে না)। 


কাফ্ফারা আদায় করার পদ্ধতি 
(৩)১০ জন মিসকিনকে দুই বেলা পেট ভরে আহার করাতে হবে। যে মিসকিনগুলোকে সকাল বেলায় আহার করানো হয়েছে, সন্ধ্যা বেলায় তাদেরকেই আহার করাবে। অপর দশজনকে আহার করালে কাফফারা আদায় হবে না। এ হতে পারে যে, ১০ (দশ) জনকে একই দিনে (দুই বেলা) আহার করিয়ে দিবে। কিংবা প্রত্যহ ১ (এক) জন করে (দুই বেলা) খাওয়াবে। নতুবা ১ (এক) জনকেই ১০ (দশ) দিন ধরে উভয় বেলা খাওয়াবে। যেসব মিসকিনকে আহার করাবে, তাদের মধ্যে কেউ যেন শিশু না থাকে। আহার করানোতে অবাধ (খাওয়ার পূর্ণ অধিকার) ও মালিকানা দান করা। (অর্থাৎ ইচ্ছা হলে খাবে, ইচ্ছা হলে নিয়ে যাবে উভয় হতে পারবে)। এও হতে পারে যে, খাওয়ানোর পরিবর্তে প্রত্যেক মিসকিনকে অর্ধ সা‘ করে গম কিংবা এক সা‘ করে যব অথবা এর মূল্য ধরে টাকা দিয়ে দিবে। (এক সা‘ হল ৪ কেজি থেকে ১৬০ গ্রা ম কম আর অর্ধ সা’ হল ২ কেজি থেকে ৮০ গ্রাম কম)। না হয়, ১০ দিন যাবৎ একজন মিসকিনকে প্রত্যহ সদকায়ে ফিতরের (ফিতরার) সমপরিমাণ দিয়ে দিবে। এমনও পারবে যে, কয়েকজনকে খাওয়াবে এবং বাকীদেরকে দিয়ে দিবে। মোটকথা হল, এর (কাফ্ফারা আদায় করার) সব কটি নিয়ম ও ধরন সেখান থেকেই (অর্থাৎ মাকতাবাতুল মদীনা কতর্ক প্রকাশিত বাহারে শরীয়াতের দ্বিতীয় খন্ডের ২০৫ থেকে ২১৭ পৃষ্ঠায় প্রদত্ত (যিহারের) কাফ্ফারা সম্পকির্ত বণর্না থেকে) জেনে নিন। পার্থক্য কেবল এই যে, সে ক্ষেত্রে (অর্থাৎ যিহারের কাফ্ফারায়) ৬০ জন মিসকিনের কথা উল্লেখ রয়েছে, আর এ ক্ষেত্রে (অর্থাৎ কসমের কাফ্ফারায়) ১০ জনের। (দুররে মুখতার ও রদ্দুল মুহতার, ৫ম খন্ড, ৫২৩ পৃষ্ঠা) 


কাফ্ফারার জন্য নিয়্যত শর্ত 
(৪)কাফ্ফারা আদায় হবার জন্য নিয়্যত শর্ত। নিয়্যত ছাড়া আদায় হবে না। অবশ্য যা মিসকিনকে দেওয়া হল, দেওয়ার সময় নিয়্যত করা হয়নি, কিন্তু তা এখনও তার নিকট বিদ্যমান আছে, এখন যদি নিয়্যত করে নেয়, তাহলে আদায় হয়ে যাবে। যেমন; যাকাতের বেলায় ফকিরকে দেওয়ার পর নিয়্যত করাতে একই শর্ত। অর্থা ৎ এখনও সেই জিনিসটি ফকিরটির নিকট বিদ্যমান আছে, তাহলে নিয়্যত কাজে আসবে, নতুবা না। (হাশিয়াতুত তাহতাভী আ’লাদ দুররিল মুখতার, ২য় খন্ড, ১৯৮ পৃষ্ঠা) 
(৫)রমজান মাসে কেউ কাফ্ফারার আহার করাতে চাইলে সন্ধ্যা ও সাহরী উভয় বেলাতেই করাবে। অথবা ১ জন মিসকিনকে ২০ দিন পর্যন্ত সন্ধ্যা বেলায় আহার করাবে। (আল জাওহারাতুন নাইয়িরা, ২৫৩ পৃষ্ঠা) 


কাফ্ফারায় ৩টি রোযার অনুমতি কখন? 
(৬)যদি গোলাম আযাদ করার কিংবা ১০ জন মিসকিনকে আহার করানোর অথবা পোষাক দান করার তৌফিক না থাকে, তাহলে লাগাতার ৩টি রোযা রেখে দিবে। (প্রাগুক্ত) কাফ্ফারা আদায় কালের অবস্থাই ধতর্ব্য যে, রোযা রাখবে কি না 
(৭)সেই সময়ের অপারগতাই গ্রহণযোগ্য, যে সময়ে কাফ্ফারা আদায় করার ইচ্ছা পোষণ করে। যেমন: ধরুন, যে সময়ে 
সে কসম ভঙ্গ করেছিল তখন সে সম্পদশালী ছিল, কিন্তু যখন কাফ্ফারা আদায় করবার ইচ্ছা করছে তখন সে (সম্পদহীন বা) অভাবী হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় রোযার মাধ্যমে কাফ্ফারা আদায় করতে পারবে। পক্ষান্তরে (কসম) ভঙ্গ করার সময় সে অভাবী ছিল, আর এখন (কাফ্ফারা আদায় করার সময়) সে সম্পদশালী হয়ে গেছে, তাহলে রোযার মাধ্যমে কাফ্ফারা আদায় করতে পারবে না। (আল জাওহারাতুন নাইয়িরা, ২৫৩ পৃষ্ঠা ইত্যাদি) 


কাফ্ফারার ৩টি রোযাই লাগাতার রাখা আবশ্যক 
(৮)৩টি রোযা এক সাথে (একটির পর একটি করে) না রাখলে অর্থাৎ মাঝখানে বিরতি দিলে কাফ্ফারা আদায় হবে না, যদিও একান্ত অপারগ হয়েও মাঝখানে বিরতি হয়ে থাকে। এমনকি কোন মহিলা যদি হায়েজপ্রাপ্ত হয়ে যায়, তাহলে তার পূর্বে রাখা রোযা ধতর্ব্য হবে না। অর্থাৎ হায়েজ থেকে পবিত্র হওয়ার পর নতুন সূত্রে লাগাতার ৩টি রোযা রাখতে হবে। (দুররে মুখতার, ৫ম খন্ড, ৫৬ পৃষ্ঠা) 


রোযার মাধ্যমে কাফ্ফারা আদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত 
(৯)রোযার মাধ্যমে কাফ্ফারা আদায় করার ক্ষেত্রে শর্ত হল, ৩টি রোযা শেষ হওয়ার এই (৩ দিনের) সময় কালে সম্পদ হস্তগত না হওয়া। যেমন: ধরুন, দুইটি রোযা রাখার পর এতটুকু পরিমাণ সম্পদ তার হস্তগত হল যে, সে কাফ্ফারা দিয়ে দিতে পারবে। এমতাবস্থায় রোযার মাধ্যমে সে কাফ্ফারা আদায় করতে পারবে না। বরং সে যদি তৃতীয় রোযাও রেখে ফেলে আর সূর্যাস্তের পূর্বে সে সম্পদ পায়, তাহলে রোযা যথেষ্ট নয়। যদিও সে এমনভাবে সম্পদের মালিক হয়, সে যে ব্যক্তির ওয়ারিশ হবে এমন লোকটি মারা গেল, আর সে পরিত্যক্ত সম্পত্তি এতটুকু পাবে, তা দিয়ে কাফ্ফারা আদায় করা যাবে। (দুররে মুখতার, ৫ম খন্ড, ৫২৬ পৃষ্ঠা) 


কাফ্ফারার রোযার নিয়্যতের দুইটি বিধান 
(১০) ঐ রোযাগুলোর নিয়্যত রাতেই করে নিতে হবে, এটি শর্ত।এও শর্ত যে, কাফ্ফারার নিয়্যত হতে হবে। শুধু সাধারণ রোযার নিয়্যত করলেই হবে না। (মাবসূত, ৪র্থ খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা) 


কসম ভঙ্গ করার পূর্বে কাফ্ফারা দিলে আদায় হবে না 
(১১) কসম ভঙ্গ করার পূর্বে কাফ্ফারা নেই। তাছাড়া দিয়ে থাকলেও (আদায় করলেও) আদায় হবে না। অর্থাৎ কাফ্ফারা 
দেওয়ার পরে কসম ভঙ্গ করে থাকলে পুনরায় দিবে। কারণ, যা পূর্বে দিয়েছিল তা দ্বারা কাফ্ফারা আদায় হয়নি। কিন্তু ফকিরকে দিয়ে দেওয়া বস্তু পুনরায় ফেরৎ নিতে পারবে না। (ফতোওয়ায়ে আলমগিরী, ২য় খন্ড, ৬৪ পৃষ্ঠা) 


কাফ্ফারার হকদার কে? 
(১২)কাফ্ফারা এমন সব মিসকিনকে দেওয়া যাবে, যাদের যাকাত দেওয়া যায়। অর্থাৎ নিজের পিতা, মাতা, সন্তান-সন্ততি ইত্যাদির ব্যক্তিবর্গকে যাদের যাকাত দেওয়া যায় না, কাফ্ফারাও দেওয়া যাবে না। (দুররে মুখতার, ৫ম খন্ড, ৫২৭ পৃষ্ঠা) 
(১৩)কসমের কাফ্ফারার টাকা-পয়সা মসজিদে ব্যয় করা যাবে না। কোন মুর্দার কাফনেও ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ যেসব ক্ষেত্রে যাকাত ব্যয় করা যায় না, সেসব ক্ষেত্রে কাফ্ফারার টাকা- পয়সাও ব্যয় করা যাবে না। (আলমগিরী, ২য় খন্ড, ৬২ পৃষ্ঠা) (কসম ও কাফ্ফারার বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত ১১৮২ পৃষ্ঠা সম্বলিত “বাহারে শরীয়াত” কিতাবের ২য় খন্ডের ২৯৮ থেকে ৩১১ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পাঠ করুন)। 
দ্বীনি বা সামাজিক কোন প্রতিষ্ঠানকে কাফ্ফারার অর্থ দান করার গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা যদি দ্বীনি বা সামাজিক কোন প্রতিষ্ঠানকে কাফ্ফারার টাকা দান করতে চান, তবে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বলে দিতে হবে যে, এটা কাফ্ফারার টাকা। এতে করে সে কাফ্ফারার টাকাগুলোকে আ’লাদা করে তাকে শরীয়াতে যেভাবে বলা হয়েছে সে নিয়মে কাজে লাগাতে পারবে। অর্থাৎ একই মিসকিনকে দশ দিন পর্যন্ত দুই বেলা করে আহার করানো কিংবা দশ জন মিসকিনকে দৈনিক এক ফিতরা পরিমাণ অথবা দশ মিসকিনকে একই দিনে এক একটি সদকায়ে ফিতর পরিমাণের মালিক বানিয়ে দেওয়া যেতে পারে। আর সে (মিসকীন) তা নিজের পক্ষ হতে দী¦ নের কাজের জন্যে (প্রতিষ্ঠানকে) পেশ করবে। 


তু জুটি কসমছে বাঁচা ইয়া ইলাহী! মুজে ছাঁচ কা আ’দী বানা ইয়া ইলাহী! 
মারহাবা! মাদানী তরবিয়্যতি কোর্স মারহাবা!! 
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! মিথ্যা কসম থেকে তাওবা করার আগ্রহ সৃষ্টির জন্য, কথায় কথায় কসম করার বদ অভ্যাস দূর করার জন্য, জরুরী দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং সুন্নাতের উপর আমল করার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশে ৬৩ দিনের মাদানী তরবিয়্যতি কোর্স করে নিন। উৎসাহ ও উদ্দীপনার জন্য আপনাদেরকে একটি মাদানী বাহার শুনাচ্ছি। যেমন: এক ইসলামী ভাইয়ের বক্তব্যের সারমর্ম এইরূপ: আমাদের এলাকার মাতা-পিতার একমাত্র সন্তান এক যুবক অসৎসঙ্গের কারণে চরস (গাঁজা জাতীয় নেশা) টানতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। ঘর ছেড়ে বাইরে থাকাই তার নিত্য দিনের কাজ ছিল। তার পিতা প্রায় সময় তাকে কবরস্থানে গিয়ে চরসিদের আড্ডা থেকে তুলে ঘরে নিতে আসতেন। তার ব্যাপারে ঘরের সবাই চিšিতÍ ছিল। এক দিন এক ইসলামী ভাই সেই যুবকটিকে ইনফিরাদি কৌশিশ করে মাদানী তরবিয়্যতি কোর্স করতে উদ্বুদ্ধ করলেন। সৌভাগ্যক্রমে সে তা মেনে নেয়।সে কুরআন ও সুন্নাত প্রচারের   বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক সংগঠন দা’ওয়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক মাদানী মারকায ফয়যানে মদীনায় এসে যায়। তার ঘরে আনন্দের সীমা রইল না। ঘরের সবাই তার জন্য দো‘আ করতে থাকে। যেন সে ভাল হয়ে যায়, কিন্তু ভয় রয়ে যায় যে আবার কখন ফিরে আসে। কিছু দিন পর সে ফোন করল,“তরবিয়্যতি কোর্স ও ফয়যানে মদীনায় আমি খুবই আনন্দে আছি। ফয়যানে মদীনায় এমন লাগছে যে, মদীনা শরীফ থেকে যেন সরাসরি ফয়য্ আসছে। 


আমি আমার সমস্ত গুনাহ্ হতে তাওবা করে নিয়েছি। এখন আমি জামাআত সহকারে নামায আদায় করি, সুন্নাত শিখছি। আমার খুব প্রশান্তি অনুভূত হচ্ছে।” মাদানী তরবিয়্যতি কোর্স থেকে ফিরার পর সে বাস্তবিকই বদলে গিয়েছিল। তার আশ্চর্যজনক পরিবর্তনে ঘরের সবাই সহ এলাকাবাসীরাও হতবাক হয়ে যায়। তার চেহারায় নূর বর্ষণকারী দাঁড়ি এবং মাথায় সবুজ পাগড়ীর মুকুট শোভা পেতে থাকে। সে আসার সাথে সাথেই ঘরের সকলের কাছে ইনফিরাদি কৌশিশ আরম্ভ করে দেয়। ফলশ্রুতিতে তার পিতা মাথায় সবুজ পাগড়ী ও মুখে দাঁড়ি সাজিয়ে নিলেন, আর নিয়মিত সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমায় যোগদান করতে থাকেন। সম্মাণিত মাতা ‘দরসে নেজামী’ এবং তার বোন ‘শরীয়াত কোর্স’ করার জন্য হয়ে যায়। যুবকটির পিতা দা’ওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগকে বলেন: আমি দা’ওয়াতে ইসলামী-ওয়ালাদের জন্য বরকতের দো‘আ করছি। বিশেষ করে তাদের জন্য যাঁরা আমার সন্তানের উপর ইনফিরাদি কৌশিশ করেছেন, আর ৬৩ দিনের মাদানী তরবিয়্যতি কোর্সে তাৎক্ষণিক ভাবে নিয়ে যান। কেননা  আমি তার চরিত্র নিয়ে ভীষণ চিন্তিত ছিলাম। তার মা তো এতই চিন্তিত ছিল যে, একদিন রাগের বশবর্তী হয়ে কীট-পতঙ্গ মারার ঔষধ পর্যন্ত এনে রেখেছিল, হয় সে খেয়ে মরে যাবে, না হয় তার ছেলেকে খাওয়াবে। এখন তার মা কানাœ করে করে এভাবে দো‘আ করছে। বলছে: আল্লাহ্! তুমি দা’ওয়াতে ইসলামী ওয়ালাদের উপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ কর। কারণ, তাদের প্রচেষ্টায় আমার পথহারা ছেলে নেক্কার হয়ে গেছে। 
আগর সুন্নাতে শিখনে কা হে জযবা তুম আ-যাও দেগা শিখায়ে মাদানী মাহল। তু দাড়ী বাড়ালে আমামা সাজালে নেহি হে ইয়ে হার গিজ বুড়া মাদানী মাহল। (ওয়াসায়িলে বখশিশ, ৬০৪ পৃষ্ঠা) 
--------
লেখাটি হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইলয়াস আত্তার কাদেরী রযভী কর্তৃক লিখিত “কসম সম্পর্কিত মাদানী ফুল" নামক বই থেকে সংগৃহীত। 
👉বইটি ফ্রি ডাউনলোড করুন।
ইসলামিক বাংলা বইয়ের লিংক এক সাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন।
মাদানী চ্যানেল দেখতে থাকুন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for supporting.