বিভাগ সমূহ

মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০

পাগড়ী বাঁধার ২৫টি মাদানী ফুল (সুন্নাত ও আদব)

নবীয়ে রহমত, শফিয়ে উম্মত, তাজেদারে রিসালাত, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর ৬টি বাণী:
১। “পাগড়ী সহকারে দুই রাকাত নামায পাগড়ী বিহীন সত্তর (৭০) রাকাত (নামাযের) চেয়ে উত্তম।” (আল ফিরদৌস বিমাসুরীল খাত্তাব, ২য় খন্ড, ২৬৫ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৩২৩৩, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ্, বৈরুত)
২। “আমাদের এবং মুশরিকদের মধ্যে পার্থক্য হলো টুপির উপর পাগড়ী (পরিধান করা)। মুসলমান নিজের মাথায় প্রতিটি প্যাঁচ দেওয়াতে কিয়ামতের দিন তাঁর জন্য একটি করে নূর দান করা হবে।” (আল জামেউস সগীর লিস সুয়ুতী, ৩৫৩ পৃষ্ঠা, হাদীস - ৫৭২৫)
৩। “নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাআলা ও তাঁর ফেরেশতাগণ জুমার দিন পাগড়ী পরিধানকারীর উপর দরূদ প্রেরণ করেন।” (আল ফিরদৌস বিমাসুরিল খাত্তাব, ১ম খন্ড, ১৪৭ পৃষ্ঠা, হাদীস৫২৯)
৪। “পাগড়ী সহকারে নামায আদায় করা দশ হাজার নেকীর সমপরিমাণ।” (প্রাগুক্ত, ২য় খন্ড, ৪০৬ পৃষ্ঠা, হাদীস - ৩৮০৫। ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২২০ পৃষ্ঠা)
৫। “পাগড়ী সহকারে একটি জুমা পাগড়ী বিহীন সত্তরটি জুমার সমান।” (তারিখে মদীনা দামেশক লি ইবনে আসাকির, ৩৭তম খন্ড, ৩৫৫ পৃষ্ঠা, দারুল ফিকর, বৈরুত)
৬। “পাগড়ী আরবের মুকুট স্বরূপ। তোমরা পাগড়ী বাঁধো, তোমাদের মযার্দা বৃদ্ধি পাবে। যে ব্যক্তি পাগড়ী বাঁধবে, তার জন্য প্রতিটি প্যাঁচের বিনিময়ে একটি করে নেকী রয়েছে।” (কানযুল উম্মাল, ১৫ম খন্ড, ১৩৩ পৃষ্ঠা, নং ৪১১৩৮)
৭। দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত ১১১৭ পৃষ্ঠা সম্বলিত “বাহারে শরীয়াত” কিতাবের ৩য় খন্ডের ৬৬০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে: পাগড়ী দাঁড়িয়ে আর পায়জামা বসে পরিধান করুন। যে ব্যক্তি এর বিপরীত করবে (অর্থাৎ দাঁড়িয়ে পায়জামা পরিধান করবে এবং বসে বসে পাগড়ী বাঁধবে) সে এমন রোগে আক্রান্ত হবে যার কোন চিকিৎসা নেই।
৮। পাগড়ী বাঁধার পূর্বে থামুন আর ভাল ভাল নিয়্যত করে নিন, যদি একটি ভাল নিয়্যত না থাকে, তবে তাতে সাওয়াব পাওয়া যাবে না। এজন্য অন্তত এই নিয়্যত করে নিন; আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য সুন্নাত পালনার্থে ইমামা (পাগড়ী) বাঁধছি।
৯। যথারীতি নিয়ম হলো; পাগড়ীর প্রথম প্যাঁচটি মাথার ডান দিকে যাবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২২তম খন্ড, ১৯৯ পৃষ্ঠা)।
১০। খাতামুল মুরসালীন, রাহমাতুলিল আলামীন, রাসূলে আমীন صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর পাগড়ীর শিমলা (বা প্রান্ত) প্রায়শ পেছন দিকেই (অর্থাৎ পিঠ মোবারকে) থাকতো। আবার কখনো কখনো ডান দিকে। কখনো দুই কাঁধের মাঝখানে দুইটি শিমলা থাকতো। শিমলাকে বাম দিকে রাখা সুন্নাতের পরিপন্থি। (আশিয়াতুল লুমআত, ৩য় খন্ড, ৫৮২ পৃষ্ঠা)
১১। পাগড়ীর শিমলার পরিমাণ কমপক্ষে চার আঙ্গুল।
১২। সর্বাধিক (পিঠের আধাআধি পর্যন্ত) অর্থাৎ প্রায় এক হাত। মাঝখানে আঙ্গুলের আগা থেকে কনুই পর্যন্ত পরিমাপকে এক হাত বলা হয়। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২২তম খন্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা)
১৩। কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে পাগড়ী বাঁধবেন। (কাশফুল ইলতিবাস ফি ইসতিহবা বিল লিবাস লিস শায়খ আব্দুল হক দেহরভী, ৩৮ পৃষ্ঠা)।
১৪। পাগড়ী যেন আড়াই গজের কম না হয়, আর ছয় গজের বেশি না হয়, কেননা, সেটিই সুন্নাত। আর সেটার বাধাঁ যেন গম্ভুজের মতো হয়। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২২তম খন্ড, ১৮৬ পৃষ্ঠা)।
১৫। রুমাল যদি বড় হয়, আর এতটি প্যাঁচ দেওয়া যায়, যা দ্বারা মাথা ঢেকে যাবে, তা হলে সেটি পাগড়ীই হয়ে গেল।
১৬। পক্ষান্তরে ছোট রুমাল, যা দ্বারা শুধু দুই এক প্যাঁচ দেওয়া যায়, সেটি বাঁধা মাকরূহ। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৭ম খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)
১৭। পাগড়ী যখন নতুন ভাবে বাঁধতে হয় তখন যেভাবে বেঁধেছেন ঐভাবে খুলবেন এক পার্শ্ব মাটিতে ফেলবেন না। (আলমগিরী, ৫ম খন্ড, ৩০০ পৃষ্ঠা)।
১৮। যদি প্রয়োজনে কেউ পাগড়ী নামিয়ে (খুলে) ফেলে। পুনরায় বাঁধার নিয়্যত করলো। তা হলে এক একটি করে প্যাঁচ খুলে নেওয়াতে এক একটি করে গুনাহ্ মিটিয়ে দেওয়া হবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২১৪ পৃষ্ঠা)।

ইমামা (পাগড়ী) শরীফের ৬টি ডাক্তারী উপকারিতা লক্ষ্য করুন: 

১৯। যারা মাথা খোলা রাখে, তাদের চুলে গরম, ঠান্ডা, রোদ অন্যান্য ক্ষতিকর বস্তু সরাসরি প্রভাবিত করে, যার কারণে শুধু চুল নয় বরং মস্তিস্ক এবং চেহারায় তার প্রভাব পড়ে এবং শরীরে ক্ষতি হয়, তাই সুন্নাত অনুসরণের নিয়্যতে ইমামা (পাগড়ী) বাঁধার মধ্যে উভয় জগতের কল্যাণ রয়েছে।
২০। ডাক্তারী বিশ্লেষণ অনুযায়ী মাথা ব্যথার জন্য ইমামা (পাগড়ী) শরীফ পরিধান করা অনেক উপকারী।
২১। ইমামা (পাগড়ী) শরীফের মাধ্যমে মস্তিস্কে শক্তি যোগায় এবং স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পায়।
২২। ইমামা (পাগড়ী) শরীফ বাঁধার ফলে দীর্ঘস্থায়ী সর্দি হয় না, হলেও তার প্রভাব কম হয়।
২৩। ইমামা শরীফের শিমলা দেহের নিন্মভাগের অর্ধাঙ্গ রোগ থেকে রক্ষা করে। কেননা, ইমামার (পাগড়ীর) শিমলা হারাম মজ্জাকে মৌসুমী প্রভাব যেমন- ঠান্ডা, গরম ইত্যাদি হতে রক্ষা করে।
২৪। পাগড়ীর শিমলা উন্মত্ততার আশংকা কমিয়ে দেয়। ২৫। খাতামুল মুহাদ্দিসীন, মুহাক্কিক আলাল ইতলাক হযরত আল্লামা শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: নবী করীম صَلَّی اللّٰهُ  تَعَالٰی عَلَیْهِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর পাগড়ী মোবারক অধিকাংশ সাদা, আবার কখনো কালো আবার কখনো সবুজ (রঙের) হতো। (কাশফুল ইলতিবাস ফি ইসতিহবা বিল লিবাস, ৩৮ পৃষ্ঠা, দারু ইহ্ইয়াউল উলুম, বাবুল মদীনা করাচী)
الحمد لله عز وجل ! সবুজ গম্ভুজ ওয়ালা আক্বা, প্রিয় নবী, রাসূলে আরবী صَلَّی اللّٰهُ  تَعَالٰی عَلَیْهِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم সবুজ রঙের ইমামা (পাগড়ী)ও আপন মাথা মোবারকে সাজিয়েছেন। দা’ওয়াতে ইসলামী সবুজ পাগড়ীকেই তাদের নিদর্শন বানিয়ে নিয়েছে। সবুজ রঙের ইমামার (পাগড়ীর) কথা কি বলব! আমার মক্কী মাদানী আক্বা, প্রিয় মুস্তফা صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَیْهِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর পবিত্র রওজা মোবারকের উপর সবুজ গম্বুজ শরীফ শোভা পাচ্ছে। আশিকানে রাসূলের উচিত, সর্বদা সবুজ রঙের ইমামা (পাগড়ী) দ্বারা মাথা “সবুজ” রাখা এবং সেই সবুজ রং যাতে বেশি “গাঢ়” না হওয়ার পরিবর্তে এমন সুন্দর ও লাবন্যময় হয়, যাতে অনেক দূর থেকে দেখতে এবং এমনকি রাতের অন্ধকারেও সবুজ গম্ভুজের সবুজ জলওয়ার বরকতে জলমল করা নূর বর্ষণ করতে দেখা যায়।


        নেহিঁ হে চাঁদ সূরজ কি মদীনে কো কূঈ হাজত
       ওহাঁ দিন রাত উন্ কা সব্জ গুম্বদ জগমগাতা হে।
      صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for supporting.