বিভাগ সমূহ

সোমবার, ১৮ মে, ২০২০

পানি পান করার ১২টি মাদানী ফুল (সুন্নাত ও আদব)

১। রাসূলুল্লাহ صَلَّی اللهُ  تَعَالٰی عَلَیْهِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দুইটি আলীশান ফরমান: “উটের ন্যায় এক নিঃশ্বাসে (পানি) পান করো না। বরং দুই বা তিন (নিঃশ্বাসে) পান করো। আর পান করার পূর্বে بِسْمِ الله  বলে পান  করো এবং পান করার পর اَلْحَمْدُ لله  বলো।” (সুনানে তিরমিযী, ৩য় খন্ড, ৩৫২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-১৮৯২)
২। নবীয়ে আকরাম صَلَّی اللهُ  تَعَالٰی عَلَیْهِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم পাত্রের ভিতর শ্বাস ফেলতে কিংবা তাতে ফুঁক দিতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ, ৩য় খন্ড, ৪৭৪ পৃষ্ঠা, হাদীস নং৩৭২৮)।  প্রখ্যাত মুফাস্সীর, হাকিমুল উম্মত, হযরত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন  رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ আলোচ্য হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন: “পাত্রের ভিতর শ্বাস ফেলা জীব জন্তুদের কাজ। তাছাড়া নিঃশ্বাস কখনো বিষাক্ত হয়ে থাকে। তাই নিতান্তই যদি শ্বাস ফেলতে হয়, তবে পাত্র থেকে মুখ পৃথক করে শ্বাস ফেলবে অর্থাৎ শ্বাস ফেলার সময় মুখ থেকে পানির পাত্রটি সরিয়ে নিতে হবে। গরম দুধ বা চা ফুঁক দিয়ে ঠান্ডা করবেন না। বরং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, ঠান্ডা হওয়ার পরই পান করুন। (মিরআত, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৭৭ পৃষ্ঠা) তবে দরূদ শরীফ ইত্যাদি পাঠ  করে শিফার নিয়্যতে পানিতে ফুঁক দিলে তাতে কোন অসুবিধা নেই।”
৩। পান করার পূর্বে بِسْمِ الله পাঠ করে নিন।
৪। চুমুক দিয়ে ছোট ছোট ঢোঁকে পান করুন। বড় বড় ঢোঁকে পান করলে যকৃতের (Liver) রোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে।
৫। পানি তিন নিঃশ্বাসে পান করুন।
৬। বসে এবং ডান হাতে পানি পান করুন।
৭। বদনা (লোটা) ইত্যাদি দ্বারা অযু করা হলে সেটার অবশিষ্ট পানি পান করা ৭০টি রোগ থেকে শিফা স্বরূপ। কেননা, সেটা পবিত্র জমজমের পানির সাদৃশ্য রাখে। এই দুই প্রকার (অর্থাৎ অযুর অবশিষ্ট পানি এবং যমযমের পানি) ব্যতীত অন্য যে কোন পানি দাঁড়িয়ে পান করা মাকরূহ। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়্যাহ, ৪র্থ খন্ড, ৫৭৫ পৃষ্ঠ-, খন্ড-২১, পৃষ্ঠা-৬৬৯) এ দু’ধরণের পানি কিবলামূখী হয়ে দাঁড়িয়ে পান করবেন। 
৮। পান করার পূর্বে দেখে নিন পাত্রে ক্ষতিকর জিনিস ইত্যাদি আছে কিনা (ইত্তেহাফুস সাদাত লিয যুবাইদী, ৫ম খন্ড, ৫৯৪ পৃষ্ঠা)। 
৯। পানীয় বস্তু পান করার পর اَلْحَمْدُ لله বলবেন। 
১০। হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাযালী  رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ বলেন: بِسْمِ الله পাঠ  করে পান করা শুরু করবেন, ১ম নিঃশ্বাসের পর اَلْحَمْدُ لِلهِ! দ্বিতীয় নি:শ্বাসের পর اَلحَمدُ لِلهِ رَبِّ العلَمِين এবং   তৃতীয় নিঃশ্বাসের পর اَلحَمدُ لِلهِ رَبِّ العلَمِين الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ পাঠ করবেন। (ইহ্ইয়াউল উলূম, ২য় খন্ড, ৮ পৃষ্ঠা)। 
১১। গ্লাসে  অবশিষ্ট মুসলমানের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন উচ্ছিষ্ট পানি ব্যবহারের উপযোগী হওয়া সত্ত্বেও তা অযথা ফেলে দিবেন না। 
১২। বর্ণিত রয়েছে: سُوْرُ الْمُؤْمِنِ شِفَاءٌ অর্থাৎ মুসলমানের উচ্ছিষ্টে শিফা রয়েছে। (আল ফতোয়াল ফিকহিয়্যাতুল কুবরা লি ইবনে হাজর আল হায়তামী, ৪র্থ খন্ড, ১১৭ পৃষ্ঠা। কাশফুল খিফা, ১ম খন্ড, ৩৮৪ পৃষ্ঠা) পানি পান করার কিছুক্ষণ পর খালি গ্লাসের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে, গ্লাসের উপর থেকে বেয়ে কয়েক ফোঁটা পানি গ্লাসের তলায় জমা হয়ে যায়। তাও পান করে নিবেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for supporting.