আপডেট
সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপণমুক্ত সাইট। শিখুন-জানুন বিরক্তিছাড়া।
বাংলা ভাষায় অলাভজনক বৃহত্তম ইসলামিক ওয়েবসাইট বানানোর প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী জীবন টিম। আসছে মোবাইল অ্যাপলিকেশন... সাইট www.islamijibon.net

রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৭

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২৪- তাওয়াফে জিয়ারতের ব্যাপারে প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: ভদ্র মহিলা তাওয়াফে জিয়ারত করছিলেন। তাওয়াফ চলাকালীন সময়ে তার মাসিক শুরু হয়ে যায়, এখন তিনি কী করবেন?
উত্তর: খুব দ্রুত তাওয়াফ করা বন্ধ করে দিয়ে মসজিদুল হারাম থেকে বাইরে চলে আসবে। যদি তাওয়াফ চালু রাখে অথবা মসজিদের ভেতরেই থেকে যায় তাহলে গুনাহগার হবে।

তাওয়াফে জিয়ারতের ব্যাপারে প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: যদি চার চক্কর দেয়ার পর হায়েজ আসে তখন আর চার চক্করের পূর্বে (অর্থাৎ চার চক্কর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই) আসলে তখন কী হুকুম?

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২২- মক্কা ও মদীনার জিয়ারতের স্থান সমূহ

সারওয়ারে আলম ﷺ এর জন্মস্থান

হযরত আল্লামা কুতুব উদ্দীন رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: হুজুর আকরাম صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর জন্মস্থানে দোআ কবুল হয়। (বলদুল আমীন, ২০১ পৃষ্ঠা) এখানে পৌঁছার সহজ পদ্ধতি এই যে, আপনি মারওয়া পাহাড়ের যে কোন কাছের একটি দরজা দিয়ে বাইরে বের হয়ে যান সামনে নামাযীদের জন্য অনেক বড় ঘেরাও তৈরী করা হয়েছে। এই ঘেরাও এর ঐ প্রান্তে এই মহান আলীশান ঘর মোবারক নূরানী জালওয়া বিকিরণ করছে। اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ অনেক দূর থেকে তা দৃষ্টিতে পড়বে। খলিফা হারুনুর রশিদ رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর আম্মাজান رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیۡہَا কর্তৃক এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে ঐ পবিত্র স্থানকে লাইব্রেরী হিসেবে রূপান্তর করে নেয়া হয়েছে, আর এর উপর একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে লিখিত আছে ‘মক্কায়ে মুকার্‌রমা লাইব্রেরী’।

জবলে আবু কুবাইছ


হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২৩- অপরাধ ও তার কাফ্‌ফারা

সামনে আগত প্রশ্নোত্তর অধ্যায়টি পড়ার পূর্বে কতিপয় প্রয়োজনীয় পরিভাষা ইত্যাদি স্মৃতি পটে আয়ত্ব করে নিন।

দম ইত্যাদির সংজ্ঞা

﴾১﴿ দম: অর্থাৎ একটি ছাগল। (এতে নর ছাগল, মাদী ছাগল (ছাগী), দুম্বা, ভেড়া এবং গাভী কিংবা উটের সপ্তাংশ সবই অন্তর্ভূক্ত) 
﴾২﴿ বাদানাহ: অর্থাৎ উট কিংবা গাভী (এতে ষাড়, বলদ, মহিষ, মহিষী ইত্যাদি সবই অন্তর্ভূক্ত) গাভী, ছাগল ইত্যাদি সকল পশু ঐসব শর্ত সম্বলিত হতে হবে, যা কোরবানীর জন্য নির্ধারিত রয়েছে। 
﴾৩﴿ সদ্‌কা: অর্থাৎ সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ। বর্তমানের হিসাবানুযায়ী সদকায়ে ফিতরে পরিমাণ হল, ২ কিলো থেকে ৮০ গ্রাম কম গম অথবা তার আটা কিংবা এর মূল্য বা উহার দ্বিগুন জব বা খেজুর কিংবা এর মূল্য।
অপরাধ ও তার কাফ্‌ফারা

দম ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ


শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২১- নবী করীম ﷺ এর মহান দরবারে হাজির হওয়ার ১২ টি মাদানী ফুল

﴾১﴿ পবিত্র মিম্বরের পাশে দোআ করুন। 

﴾২﴿ জান্নাতের কেয়ারীতে (অর্থাৎ যে স্থান মিম্বর ও হুযুরা মোবারকের মধ্যবর্তী, এটাকে হাদীস শরীফে জান্নাতের কেয়ারী অর্থাৎ ‘জান্নাতের বাগান বলেছেন) এসে মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে দুই রাকাত নফল পড়ে দোআ করুন। 

﴾৩﴿ যতদিন পর্যন্ত মদীনা তৈয়্যবায় অবস্থান করার সুযোগ নসীব হয়। একটি নিঃশ্বাসও যেন অহেতুক ব্যয় না হয়। 

১২ টি মাদানী ফুল 
﴾৪﴿ বাইরে যাওয়ার বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অধিকাংশ সময় মসজিদে নববী শরীফে পবিত্রাবস্থায় উপস্থিত থাকুন। নামায ও তিলাওয়াত, যিকির ও দরূদ পাঠে সময় অতিবাহিত করুন। দুনিয়াবী কথাবার্তা যে কোন মসজিদে না বলা চাই এখানেতো আরো অধিক সতর্কতা। 

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ২০- মদীনার হাজেরী, মদীনা শরীফ জিয়ারতের পদ্ধতি ও দোআ

হাসান হজ্ব কর লিয়া কা’বে ছে আঁখো নে যিয়া পায়ী,
চলো দে খে ওহ বস্তি জিছকা রাস্তা দিল কে আন্দর হেঁ।

মদীনার হাজেরী 
আগ্রহ বাড়ানোর পদ্ধতি

মদীনা শরীফে আপনার পবিত্র সফরকে মোবারকবাদ! সারা রাস্তায় বেশী বেশী পরিমাণে দরূদ এবং সালাম পড়ুন এবং না’তে রাসুল পড়তে থাকুন। অথবা যদি সম্ভব হয় তাহলে টেপ রেকর্ডারের সাহায্যে সুললিত কণ্ঠের না’ত পরিবেশন কারীর ক্যাসেট শুনতে থাকুন। اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ আগ্রহ বৃদ্ধির মাধ্যম হয়ে যাবে। মদীনা শরীফের সম্মান এবং মহান মর্যাদার কল্পনা করতে থাকুন। উহার ফযীলত ও গুরুত্বের উপর চিন্তা করতে থাকুন১৮। এর দ্বারাও اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ আপনার আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পাবে। 

-------------------
১৮মক্কা ও মদীনায় অবস্থানকালীন সময়ে মক্কা ও মদীনার উপর লিখিত কিতাব সমূহ অধ্যয়ন আগ্রহ ও আগ্রহ বৃদ্ধির উত্তম পন্থা, আর ইশকে রসুল صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বাড়ানোর জন্য আ’লা হযরত رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর নাতের বই “হাদায়িকে বখশিশ” এবং উস্তাদে জামান মাওলানা হাসান রযা খান رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর লিখিত কালাম গ্রন্থ “যওকে না’ত”এর খুব বেশী করে অধ্যায়ণ করুন।
-------------------

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৯- বদলী হজ্ব

যার উপর হজ্ব ফরয হয়েছে তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে। কিন্তু নফল হজ্বের জন্য কোন শর্ত নেই। ইহা তো ইছালে সাওয়াবের একটি পদ্ধতি মাত্র। আর ঈসালে সাওয়াব ফরয নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, সদকা এবং দান খয়রাত ইত্যাদি সর্ব প্রকার আমলের হতে পারে। তাই যদি নিজের মৃত মা-বাবা ও অন্যান্যদের পক্ষ থেকে আপনি আপনার ইচ্ছায় হজ্ব করতে চান, অর্থাৎ তাদের উপর যা ফরযও ছিলনা আবার তারা অছিয়তও করেনি, তাহলে এর জন্য কোন রকম শর্ত নেই। হজ্বের ইহরাম পিতা অথবা মাতার পক্ষ হতে নিয়্যত করে বেঁধে নিন এবং হজ্বের যাবতীয় বিধানাবলী আদায় করে নিন। এই পদ্ধতিতে এ উপকার অর্জন হবে যে, তার (অর্থাৎ যার পক্ষ থেকে হজ্ব করা হয়েছে) নিকট একটি হজ্জের সাওয়াব মিলবে এবং হজ্ব আদায়কারীকে হাদীসের হুকুম অনুযায়ী দশটি হজ্বের সাওয়াব দান করা হবে। (দারু কুতনী, ২য় খন্ড, ৩২৯ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২৫৭৮) তাই যখনই নফল হজ্ব করবেন তখনই উত্তম হল যে, পিতা অথবা মাতার পক্ষ থেকে আদায় করবেন। মনে রাখবেন! ইছালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে করা হজ্বে তামাত্তু অথবা হজ্বে কিরান এর কোরবানী করা ওয়াজিব, আর হজ্বকারী স্বয়ং নিজের নিয়্যতে তা করবে এবং এর ইছালে সাওয়াব করে দিবে।
বদলী হজ্ব 
বদলী হজ্বের ১৭টি শর্তাবলী

যে সকল মানুষের উপর হজ্ব ফরয হয়েছে, তাদের বদলী হজ্বের জন্য যে সকল শর্তাবলী রয়েছে তা এখন উল্লেখ করা হচ্ছে:-

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৮- তাওয়াফে জিয়ারত, রমী ও বিদায়ী তাওয়াফ

তাওয়াফে জিয়ারতের ১০টি মাদানী ফুল

﴾১﴿ তাওয়াফে জিয়ারতকে তাওয়াফে ইফাজা বলে। এটা হজ্বের আরেকটি রুকন। এর সময় ১০ই জুলহিজ্জার দিন সুবহে সাদিক থেকে শুরু হয়। এর পূর্বে (তা আদায়) হতে পারেনা। এতে ৪ চক্কর ফরজ এটা (৪ চক্কর) ছাড়া তাওয়াফ হবেই না এবং হজ্ব হবে না, আর ৭ চক্কর পূর্ণ করা ওয়াজিব।
তাওয়াফে জিয়ারত, রমী ও বিদায়ী তাওয়াফ
﴾২﴿ তাওয়াফে জিয়ারত জিলহজ্জ মাসের দশ তারিখ করা উত্তম। সুতরাং প্রথমে জামরাতুল আকাবার রমী অতঃপর কোরবানী এবং এরপর হলক অথবা তাকছীর হতে অবসর হয়ে যাবেন। এখন উত্তম হল যে, কোরবানীর কিছু মাংস খেয়ে পায়ে হেঁটে মক্কা মুকাররমায় উপস্থিত হোন। আর ইহাও উত্তম যে, বাবুস সালাম দিয়ে মসজিদে হারাম শরীফে প্রবেশ করবেন। 
﴾৩﴿ (এর) উত্তম সময় তো ১০ তারিখ কিন্তু তিন দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাওয়াফে জিয়ারত করতে পারবেন। কেননা ১০ তারিখ খুব বেশী পরিমাণে ভীড় হয়ে থাকে। তাই নিজের জন্য যেভাবে যখন সহজ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাই খুব উপকারী। এভাবে اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ অনেক কষ্টদায়ক বস্তু এবং অনেক সময় অন্যদেরকে কষ্ট দেয়া, মহিলাদের সাথে (ভীড়ে) মিশে একাকার হয়ে যাওয়া, তাদের সাথে শরীর ঘর্ষণ হওয়া এবং নফস ও শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যাওয়া অনেক গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবেন।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৭- হাজীদের কুরবানী ও হলক করা

হজ্বের কোরবানীর ৭টি মাদানী ফুল

﴾১﴿ দশ তারিখে বড় শয়তানকে কংকর নিক্ষেপের পর কোরবানীর স্থানে তাশরীফ নিয়ে যাবেন এবং কোরবানী করবেন। ইহা ঐ কোরবানী নয়, যা ঈদুল আযহার সময় করা হয় বরং হজ্বের শোকরিয়া স্বরূপ ‘হজ্বে কিরানকারী’এবং ‘তামাত্তুকারীর’ উপর এটা ওয়াজিব, যদিও সে ফকির হোক, আর ‘হজ্জে ইফরাদকারীর’জন্য এই কোরবানী মুস্তাহাব যদিও সে ধনী হোক। 

হাজীদের কুরবানী ও হলক করা 
﴾২﴿ এখানেও প্রাণীর জন্য ঐ শর্তসমূহ প্রযোজ্য, যা ঈদুল আযহার কোরবানীর জন্য প্রযোজ্য। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১১৪০ পৃষ্ঠা) যেমন ছাগল (এর হুকুমের মধ্যে ছাগী, দুম্বা, দুম্বী এবং ভেড়া, ভেড়ী সব অন্তর্ভূক্ত) এক বৎসর বয়সী হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী হলে কোরবানী জায়েয হবে না। এক বছরের চাইতে বেশী বয়সী হলে জায়েয বরং উত্তম। হ্যাঁ তবে দুম্বা কিংবা ভেড়ার ছয় মাসের বাচ্চা যদি এতবড় হয় যে, দূর থেকে দেখতে এক বছর বয়সী মনে হয়, তাহলে তা দ্বারা কোরবানী জায়েয হবে। (দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ৫৩৩ পৃষ্ঠা) স্মরণ রাখবেন! সাধারণত ছয় মাসের দুম্বার কোরবানী জায়েয নয়। (জায়েয হওয়ার জন্য) তা এতটুকু মোটা তাজা ও উঁচু হওয়া জরুরী যে, দূর থেকে দেখতে যেন এক বছরের পশুর মত লাগে। যদি ৬ মাস নয় বরং এক বছর থেকে ১ দিন কম বয়সী দুম্বা অথবা ভেড়ার বাচ্চা যদি দূর থেকে ১ বছর বয়সীর মত না লাগে, তবে তা দ্বারা কোরবানী হবে না। 

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৬- মুজদালিফা ও রমী করা

মুজদালিফায় রওয়ানা

যখন দৃঢ় বিশ্বাস হয়ে যাবে যে, সূর্য অস্ত গিয়েছে, তখন আরাফাত শরীফ হতে মুজদালিফা শরীফের দিকে রওয়ানা হয়ে যাবেন। সারা রাস্তায় জিকির, দুরূদ এবং ‘লাব্বায়িক’ বারবার পড়তে থাকবেন। সারা পথ কান্না করে করে এগিয়ে যাবেন। কাল আরাফাতের ময়দানে আল্লাহর হক ক্ষমা হয়ে গেছে, এখানে (মুজদালিফায়) বান্দার হক ক্ষমা করার ওয়াদা রয়েছে।(বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১১৩১, ১১৩৩ পৃষ্ঠা)

মুজদালিফা ও রমী করা 
এই দেখুন! মুজদালিফা শরীফ এসে গেছে! চারিদিকে কিরণ এবং সৌন্দর্য্য লেগে আছে, মুজদালিফার সম্মুখভাগে খুব প্রচন্ড ভিড় হয়। আপনি নির্ভয়ে স্বাভাবিক ভাবে একেবারে সামনের দিকে চলে যান। اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ ভিতরে প্রশস্ত খোলামেলা জায়গা পেয়ে যাবেন। কিন্তু এ ব্যাপারে খুব বেশী সতর্ক থাকবেন যে, যেন আবার মীনা শরীফের সীমানায় ঢুকে না যান। যারা পায়ে হেঁটে যাবেন তাদের জন্য আমার পরামর্শ হল; মুজদালিফায় প্রবেশ করার পূর্বেই ইস্তিঞ্জা, অযু ইত্যাদি সেড়ে নিবেন। অন্যথায় ভিড়ে খুব চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৫- আরাফাতের বাংলা দোআ

আরাফাতের দোআ (বাংলা)
(দোআ চলাকালীন সময়ে সময়ে লাব্বায়িকা ও দরূদ শরীফ পড়ুন)

উভয় হাত বক্ষ পর্যন্ত অথবা কাঁধ পর্যন্ত অথবা চেহারা বরাবর অথবা মাথার একটু উপরে উঠিয়ে হাতের তালুগুলোকে আসমানের দিকে এমনভাবে প্রসারিত করে দিন যেন বগলের নিচের শুভ্র অংশ দেখা যায়, কেননা দোআর ক্বিবলা হল আসমান। এখন এভাবে দোআ প্রার্থনা করুন:

اَلْحَمْدُ لِلہِ رَبِّ العٰلَمِیْنَ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلامُ عَلٰی سَیِّدِ الْمُرْسَلِیْنَ۔ یَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِیْنَ یَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِیْنَ یَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِیْنَ ৯ یَا رَبَّنَا یَا رَبَّنَا یَا رَبَّنَا یَا رَبَّنَا یَا رَبَّنَا১০

আরাফাতে বাংলা দোআ 
যতটুকু পরিমাণ দোআয়ে মাসুরা (অর্থাৎ কোরআন ও হাদীসের দোআ সমূহ) আপনার মুখস্থ আছে, তা আরবীতে আরজ করার পর আপনার অন্তরের আবেগ নিজ মাতৃভাষায় আপন দয়ালু পরওয়ারদেগার এর মহান দরবারে এ রকম দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে যে আপনার দোআ কবুল হচ্ছে, এভাবে আরজ করুন یَا اَللہُ یَا رَحْمٰنُ یَا رَحِـیْمُ!

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৪- মীনা ও আরাফাতে অবস্থান এবং দোআ সমূহ

হজ্বের ইহরাম বেঁধে নিন

যদি আপনি এখনও পর্যন্ত হজ্বের ইহরাম না বেঁধে থাকেন, তাহলে জুলহিজ্জা মাসের ৮ তারিখেও বাঁধাতে পারেন। কিন্তু ৭ তারিখে বেঁধে নিলেই সুবিধা হয়। কেননা ‘মুআল্লিম’ আপন আপন হাজীদেরকে ৭ তারিখ ইশার নামাযের পর থেকে মীনা শরীফ পৌঁছানো শুরু করে দেয়। মসজিদে হারামে মাকরূহ ওয়াক্ত ব্যতীত অন্য সময়ে ইহরামের দুই রাকাত নামায আদায় করে শব্দের অর্থের প্রতি লক্ষ্য রেখে এভাবে হজ্জের নিয়্যত করুন:

اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اُرِیْدُ الْحَجَّ ط فَیَسِّرْہُ لِیْ وَتَقَبَّلْہُ مِنِّیْ ط وَاَعِنِّیْ عَلَیْہِ وَبَارِکْ لِیْ فِیْہِ ط نَوَیْتُ الْحَجَّ وَاَحْرَمْتُ بِہٖ لِلہِ تَعَالٰی ط

অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি হজ্বের ইচ্ছা করেছি। অতঃপর উহা আমার জন্য সহজ করে দাও এবং উহা আমার পক্ষ থেকে কবুল কর এবং এতে আমাকে সাহায্য কর এবং ইহার মধ্যে আমার জন্য বরকত দান কর। আমি হজ্বের ইচ্ছা করেছি, আর ইহার ইহরামও বেঁধেছি আল্লাহর জন্য।

মীনা ও আরাফাতে অবস্থান ও দোআ সমূহ
নিয়্যতের পরে ইসলামী ভাইয়েরা বড় আওয়াজে আর ইসলামী বোনেরা নিচু আওয়াজে তিনবার তিনবার “লাব্বায়িক” পড়বেন। এখন আবার আপনার উপর ইহরামের নিয়ম অনুসারে বাধ্যবাধকতা শুরু হয়ে গেল।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১৩- মাথা মুন্ডানো ও তাওয়াফ বিষয়ে জরুরী মাসআলা

তাওয়াফে কুদুম বা আগমনী তাওয়াফ

ইফরাদ হজ্বকারীর জন্য এই তাওয়াফ, তাওয়াফে কুদুম অর্থাৎ দরবারে উপস্থিতির অভিবাদন হয়ে গেল। হজ্জ্বে কিরানকারী এর পরে তাওয়াফে কুদুমের নিয়্যতে অতিরিক্ত একটি তাওয়াফও সাঈ করবে। তাওয়াফে কুদুম হজ্জ্বে কিরানকারী এবং হজ্জ্বে ইফরাদকারী উভয়ের জন্য সুন্নাতে মুআক্কাদা। যদি ছেড়ে দেন তাহলে অন্যায় করেছেন, তবে দম ইত্যাদি ওয়াজিব হবে না। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১১১১ পৃষ্ঠা)

মাথা মুন্ডানো ও তাওয়াফ 
মাথা মুন্ডানো বা চুলকাটা

এখন পুরুষেরা হলক করবে অর্থাৎ মাথা মুন্ডন করাবে অথবা তাকছীর করবে অর্থাৎ চুল কাটাবে। তবে হলক করে নেয়াটা উত্তম। হুযুর পুরনূর, নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم হুজ্জাতুল ওয়াদা (বিদায় হজ্ব) এর সময় হলক করিয়েছেন, আর মাথা মুন্ডনকারীদের জন্য তিনবার রহমতের দোআ করেন, আর চুল কর্তনকারীদের জন্য একবার (রহমতের দোআ) করেন।(বুখারী, ১ম খন্ড, ৫৭৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১৭২৮) 

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১২- ছাফা ও মারওয়ার সাঈ

এখন যদি কোন অপরাগতা কিংবা ক্লান্তি না আসে তাহলে দেরী না করে এখনই নতুবা বিশ্রাম করে সাফা ও মারওয়ার সাঈর জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। মনে রাখবেন যে, দৌঁড়ানোর সময় ইজতিবা অর্থাৎ কাঁধ খোলা রাখা যাবেনা। এখন সাঈ করার (দৌঁড়ানোর) জন্য হাজরে আসওয়াদের পূর্বের নিয়মানুসারে দুই হাত কান পর্যন্ত তুলে এই দোআটি পড়ে হাজরে আসওয়াদকে ইসতিলাম করুন। দোআটি হল:
بِسْمِ اللہِ وَالْحَمْدُ لِلہِ وَاللہُ اَکْبَرُ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی رَسُوْلِ اللہؕ

যদি ইসতিলাম করার সুযোগ না হয় হবে তার দিকে (অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদের দিকে) মুখ করে اَللہُ اَکْبَرُط وَلَآ اِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَ الْحَمْدُلِلہِ ط এবং দরূদ শরীফ পড়তে পড়তে দ্রুত বাবুস সাফায় চলে আসুন!

ছাফা ও মারওয়া সাঈ
সাফা পাহাড় যেহেতু মসজিদে হারামের বাহিরে অবস্থিত আর সবসময় মসজিদ হতে বের হওয়ার সময় বাম পায়ে বের হওয়া সুন্নাত। তাই এখানেও প্রথমে বাম পা বাইরে রাখুন এবং নিয়মানুযায়ী দরূদ শরীফ পড়ে মসজিদ হতে বের হওয়ার এই দোআ পড়ুন।


اَللّٰھُمَّ اِنِّیْۤ اَسْئَلُکَ مِنْ فَضْلِکَ وَرَحْمَتِکَ ط

অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তোমার দয়া এবং অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি।

বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৭

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১১- মকামে ইবরাহীম, মকামে মুলতাজিম ও জম জম-এ করণীয়

মকামে ইবরাহীম

এখন আপনি নিজের ডান কাঁধ ডেকে নিন আর মকামে ইবরাহীমের নিকট এসে এই আয়াতে মুকাদ্দাসা পড়ুন:

وَاتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰہٖمَ مُصَلًّی ط

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: (আর তোমরা) ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে নামাযের স্থান রূপে গ্রহণ করো,
হজ্ব ও ওমরা পদ্ধতি, দোআ ও মাসআলা

তাওয়াফের নামায

এখন মকামে ইবরাহীমের নিকটে জায়গা পাওয়া গেলে তো উত্তম না হলে মসজিদে হারামের যে কোন স্থানে মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে দু রাকাত নামাযে তাওয়াফ আদায় করুন। প্রথম রাকাআতে সূরা ফাতিহার পর সূরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস পড়ুন। এই নামায ওয়াজিব। যদি কোন অপারগতা না হয়, তাহলে তাওয়াফের পরপরই আদায় করা সুন্নাত। অধিকাংশ লোক কাঁধ খোলা রেখেই নামায আদায় করে থাকে, এ ধরনের করা মাকরূহ। ‘ইজতিবা’ অর্থাৎ কাঁধ খোলা রাখা শুধু মাত্র ঐ তাওয়াফের ৭ চক্করের মধ্যে রয়েছে, যার পরে সাঈ করতে হবে। যদি মাকরূহ ওয়াক্ত এসে যায় তাহলে পরে আদায় করে দিবেন। মনে রাখবেন! এই নামায আদায় করা জরুরী। মকামে ইবরাহীমে দুই রাকাত আদায় করে এই দোআ করুন। হাদীস শরীফে রয়েছে: “আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন: যে এই দোআ করবে তার গুনাহ ক্ষমা করে দিব, পেরেশানী (দুঃখ) দূর করে দিব, অভাব তার থেকে উঠায়ে নিব, প্রত্যেক ব্যবসায়ী থেকে তার ব্যবসাকে বৃদ্ধি করব, সে না চাইলেও বেচারা অক্ষম দুনিয়া তার কাছে ধরা দেবে।” (ইবনে আসাকির, ৭ম খন্ড, ৪৩১ পৃষ্ঠা) দোআটি হল এই:

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১০- ওমরার পদ্ধতি, তাওয়াফ ও তাওয়াফের দোআ

হারামের ব্যাখ্যা

সাধারণত সাধারণ কথাবার্তায় মানুষেরা মসজিদে হারামকেই ‘হারাম শরীফ’বলে থাকে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মসজিদে হারাম সম্মানিত হারামে অবস্থিত। তবে হারাম শরীফ মক্কা শরীফ সহ তার আশে পাশের বহু মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আর চর্তুদিকে তার সীমানা নির্ধারিত রয়েছে। যেমন: জিদ্দা শরীফ থেকে মক্কা শরীফ আসার পথে মক্কা শরীফ থেকে ২৩ কি:মি: আগে ‘পুলিশ বক্স’ পড়ে। এখানে সড়কের উপরে বড় অক্ষরে “লিল্‌ মুসলিমীনা ফাকাত” (অর্থাৎ শুধু মুসলমানদের জন্য) লিখা রয়েছে। এই সড়ক ধরে সামনে কিছুদূর আগালে “বীরে শামস” অর্থাৎ হুদায়বিয়ার স্থান সামনে পড়ে, আর এই দিকের হারাম শরীফের সীমানা এখান থেকেই শুরু হয়। এক ঐতিহাসিকের নতুন পরিমাপানুসারে হারামের দৈর্ঘ্য সীমা ১২৭ কি:মি:। আর এর সর্বমোট সীমানা ৫৫০ বর্গ কি:মি:। (তারিখে মক্কায়ে মুকার্‌রমা, ১৫ পৃষ্ঠা) 
(জঙ্গলের ঝোপ ঝাড় পরিষ্কার, পাহাড়ের সমানিকরণ এবং তৈরী ইত্যাদি ইত্যাদি মাধ্যমে তৈরী করা নতুন নতুন রাস্তা ও সড়কের কারণে উল্লেখিত দূরত্বে কম বেশী হতে পারে। হারামের আসল সীমানা তাই যার বর্ণনা বহু হাদীসে মোবারকায় এসেছে।
হজ্ব ও ওমরা পদ্ধতি, দোআ ও মাসআলা
ঠান্ডি ঠান্ডি হাওয়া হারাম কি হে
বারিশ আল্লাহ কে করম কি হে।
(ওয়াসায়িলে বখশিশ, ১২৫ পৃষ্ঠা)

মক্কা শরীফের হাজেরী

যখন আপনি হারামের সীমানায় নিকটবর্তী হবেন। তখন মাথা নত করে কৃত গুনাহের জন্য লজ্জায় চোখ নিচু করে খুবই নম্র ভদ্র হয়ে এর সীমানায় প্রবেশ করবেন। জিকির, দরূদ শরীফ এবং লাব্বায়িকের ধ্বনি অত্যাধিক হারে বাড়িয়ে দিবেন, আর যখনই রাব্বুল আলামীন এর পবিত্র শহর মক্কা শরীফ আপনার নজরে আসবে তখনই এই দোআটি পড়বেন:

اَللّٰھُمَّ اجْعَلْ لِّیْ قَرَارًا وَّارْزُقْنِیْ فِیْہَا رِزْقًاحَلَالًا

অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমার জন্য এই শহরে (আত্মার) প্রশান্তি এবং হালাল রিযিকের ব্যবস্থা করে দাও।

পোস্ট শ্রেণি

অযু-গোসল-পবিত্রতা (12) আপডেট চলমান (25) আমাদের কথা ও অন্যান্য বিষয়াবলী (6) আমাদের প্রিয় নবী ﷺ (5) আরবি মাস ও ফযীলত (11) ইসলামী ইতিহাস ও শিক্ষনীয় ঘটনা (6) ইসলামী জীবন ও সুন্দর চরিত্র (4) ঈদ-কাযা-জানাযা-তারাবী-নফল ও অন্যান্য নামায (5) উত্তম আমল ও সাওয়াবের কাজ (4) কুরআন-তাফসীর ও হাদিস (16) কুরবানী (6) চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কথন (14) জিকির-দোআ-দুরূদ ও ফযীলত (8) নবী-সাহাবী ও আওলিয়াদের জীবনী (8) নামায (17) পর্দা ও লজ্জাশীলতা (16) ফয়যানে জুমা (3) বদ আমল ও গুনাহের কাজ (3) মওত-কবর-হাশর ও আযাব (12) মাসআলা-মাসাইল ও প্রশ্নোত্তর (15) মাসাইল (21) যাকাত-ফিতরা ও সদক্বাহ'র বিধান (1) রোযা/রমযানের বিধান ও ফযীলত (9) সুন্নাত ও আদব/ মাদানী ফুল (41) হজ্ব-ওমরাহ ও যিয়ারতে মদিনা (27)

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন