আপডেট
সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপণমুক্ত সাইট। শিখুন-জানুন বিরক্তিছাড়া।
বাংলা ভাষায় অলাভজনক বৃহত্তম ইসলামিক ওয়েবসাইট বানানোর প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী জীবন টিম। আসছে মোবাইল অ্যাপলিকেশন... সাইট www.islamijibon.net

বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৭

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১১- মকামে ইবরাহীম, মকামে মুলতাজিম ও জম জম-এ করণীয়

মকামে ইবরাহীম

এখন আপনি নিজের ডান কাঁধ ডেকে নিন আর মকামে ইবরাহীমের নিকট এসে এই আয়াতে মুকাদ্দাসা পড়ুন:

وَاتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰہٖمَ مُصَلًّی ط

কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: (আর তোমরা) ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে নামাযের স্থান রূপে গ্রহণ করো,
হজ্ব ও ওমরা পদ্ধতি, দোআ ও মাসআলা

তাওয়াফের নামায

এখন মকামে ইবরাহীমের নিকটে জায়গা পাওয়া গেলে তো উত্তম না হলে মসজিদে হারামের যে কোন স্থানে মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে দু রাকাত নামাযে তাওয়াফ আদায় করুন। প্রথম রাকাআতে সূরা ফাতিহার পর সূরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস পড়ুন। এই নামায ওয়াজিব। যদি কোন অপারগতা না হয়, তাহলে তাওয়াফের পরপরই আদায় করা সুন্নাত। অধিকাংশ লোক কাঁধ খোলা রেখেই নামায আদায় করে থাকে, এ ধরনের করা মাকরূহ। ‘ইজতিবা’ অর্থাৎ কাঁধ খোলা রাখা শুধু মাত্র ঐ তাওয়াফের ৭ চক্করের মধ্যে রয়েছে, যার পরে সাঈ করতে হবে। যদি মাকরূহ ওয়াক্ত এসে যায় তাহলে পরে আদায় করে দিবেন। মনে রাখবেন! এই নামায আদায় করা জরুরী। মকামে ইবরাহীমে দুই রাকাত আদায় করে এই দোআ করুন। হাদীস শরীফে রয়েছে: “আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন: যে এই দোআ করবে তার গুনাহ ক্ষমা করে দিব, পেরেশানী (দুঃখ) দূর করে দিব, অভাব তার থেকে উঠায়ে নিব, প্রত্যেক ব্যবসায়ী থেকে তার ব্যবসাকে বৃদ্ধি করব, সে না চাইলেও বেচারা অক্ষম দুনিয়া তার কাছে ধরা দেবে।” (ইবনে আসাকির, ৭ম খন্ড, ৪৩১ পৃষ্ঠা) দোআটি হল এই:

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ১০- ওমরার পদ্ধতি, তাওয়াফ ও তাওয়াফের দোআ

হারামের ব্যাখ্যা

সাধারণত সাধারণ কথাবার্তায় মানুষেরা মসজিদে হারামকেই ‘হারাম শরীফ’বলে থাকে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মসজিদে হারাম সম্মানিত হারামে অবস্থিত। তবে হারাম শরীফ মক্কা শরীফ সহ তার আশে পাশের বহু মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আর চর্তুদিকে তার সীমানা নির্ধারিত রয়েছে। যেমন: জিদ্দা শরীফ থেকে মক্কা শরীফ আসার পথে মক্কা শরীফ থেকে ২৩ কি:মি: আগে ‘পুলিশ বক্স’ পড়ে। এখানে সড়কের উপরে বড় অক্ষরে “লিল্‌ মুসলিমীনা ফাকাত” (অর্থাৎ শুধু মুসলমানদের জন্য) লিখা রয়েছে। এই সড়ক ধরে সামনে কিছুদূর আগালে “বীরে শামস” অর্থাৎ হুদায়বিয়ার স্থান সামনে পড়ে, আর এই দিকের হারাম শরীফের সীমানা এখান থেকেই শুরু হয়। এক ঐতিহাসিকের নতুন পরিমাপানুসারে হারামের দৈর্ঘ্য সীমা ১২৭ কি:মি:। আর এর সর্বমোট সীমানা ৫৫০ বর্গ কি:মি:। (তারিখে মক্কায়ে মুকার্‌রমা, ১৫ পৃষ্ঠা) 
(জঙ্গলের ঝোপ ঝাড় পরিষ্কার, পাহাড়ের সমানিকরণ এবং তৈরী ইত্যাদি ইত্যাদি মাধ্যমে তৈরী করা নতুন নতুন রাস্তা ও সড়কের কারণে উল্লেখিত দূরত্বে কম বেশী হতে পারে। হারামের আসল সীমানা তাই যার বর্ণনা বহু হাদীসে মোবারকায় এসেছে।
হজ্ব ও ওমরা পদ্ধতি, দোআ ও মাসআলা
ঠান্ডি ঠান্ডি হাওয়া হারাম কি হে
বারিশ আল্লাহ কে করম কি হে।
(ওয়াসায়িলে বখশিশ, ১২৫ পৃষ্ঠা)

মক্কা শরীফের হাজেরী

যখন আপনি হারামের সীমানায় নিকটবর্তী হবেন। তখন মাথা নত করে কৃত গুনাহের জন্য লজ্জায় চোখ নিচু করে খুবই নম্র ভদ্র হয়ে এর সীমানায় প্রবেশ করবেন। জিকির, দরূদ শরীফ এবং লাব্বায়িকের ধ্বনি অত্যাধিক হারে বাড়িয়ে দিবেন, আর যখনই রাব্বুল আলামীন এর পবিত্র শহর মক্কা শরীফ আপনার নজরে আসবে তখনই এই দোআটি পড়বেন:

اَللّٰھُمَّ اجْعَلْ لِّیْ قَرَارًا وَّارْزُقْنِیْ فِیْہَا رِزْقًاحَلَالًا

অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমার জন্য এই শহরে (আত্মার) প্রশান্তি এবং হালাল রিযিকের ব্যবস্থা করে দাও।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ৯- ইহরাম বাঁধার পর যা করা জায়েয ও না জায়েয

ইহরামের অর্থ

ইহরামের শাব্দিক অর্থ: হারাম করা। কেননা ইহরাম পরিধান কারীর উপর অনেক হালাল জিনিসও হারাম হয়ে যায়। ইহরাম পরিধানকারী ইসলামী ভাইকে ‘মুহরিম’, আর ইসলামী বোনকে ‘মুহরিমা’ বলা হয়। 
হজ্ব ও ওমরা পদ্ধতি, দোআ ও মাসআলা

ইহরামে নিম্নের কাজসমূহ হারাম

﴾১﴿ ইসলামী ভাই কোন সেলাই করা কাপড় পরিধান করা। 
﴾২﴿ মাথায় টুপি কিংবা উড়না, ইমামা কিংবা রুমাল ইত্যাদি পরিধান করা। 
﴾৩﴿ পুরুষেরা মাথায় কাপড়ের গাইট উঠানো। (ইসলামী বোনেরা মাথায় চাদর জড়ানো এবং তাদের জন্য মাথার উপর কাপড়ের গাইট উঠানো নিষেধ নয়। 
﴾৪﴿ পুরুষের জন্য হাত মোজা পরিধান করা। (তবে ইসলামী বোনদের জন্য নিষেধ নয়।) 
﴾৫﴿ ইসলামী ভাই এমন কোন মোজা কিংবা জুতা পরিধান করতে পারবে না, যাতে নিজ পায়ের মধ্য ভাগ(অর্থাৎ পায়ের মধ্যভাগের খোলা অংশ) গোপন হয়ে যায়। (পাতলা চপ্পল পরতে পারবেন।) 
﴾৬﴿ শরীর, পোষাক কিংবা চুলে সুগন্ধি লাগানো। 
﴾৭﴿ বিশুদ্ধ সুগন্ধি যেমন এলাচী লং, দারুচিনি, জাফরান এসব বস্তু খাওয়া কিংবা আঁচলে বেঁধে নেয়া। এসব বস্তু যদি কোন খাদ্যে কিংবা তরকারী ইত্যাদিতে দিয়ে পাকানো হয়ে থাকে, এর পর তা থেকে যদি সুগন্ধিও ছড়ায় তারপরও খাওয়াতে তা কোন অসুবিধা নেই। 
﴾৮﴿ সহবাস করা, চুমু খাওয়া, শরীর স্পর্শ করা, আলিঙ্গন করা, (অর্থাৎ জড়িয়ে ধরা) স্ত্রীর লজ্জাস্থানের প্রতি দৃষ্টি দেয়া। শেষোক্ত ৪টি কাজ অর্থাৎ সহবাস ছাড়া বাক্বী কাজগুলো উত্তেজনা বশত হতে হবে।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ৮- ইহরাম বাঁধা, লাব্বায়িক ধ্বনি ও নিয়্যত প্রসঙ্গ

ইহরাম বাঁধার পদ্ধতি

হজ্ব হোক কিংবা ওমরা, উভয়ের ইহরাম বাঁধার পদ্ধতি একই তবে নিয়্যত ও শব্দাবলীতে সামান্য পার্থক্য আছে। নিয়্যতের বর্ণনা اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ সামনে আসছে। প্রথমে ইহরাম বাঁধার পদ্ধতি: 
﴾১﴿ নখ কেটে নিবেন। 
﴾২﴿ বগল ও নাভীর নিচের চুল পরিষ্কার করে নিবেন। বরং পিছনের লোমও পরিষ্কার করে নিবেন। 
﴾৩﴿ মিস্‌ওয়াক করবেন। 
﴾৪﴿ ওজু করবেন। 
﴾৫﴿ খুব ভালভাবে গোসল করবেন। 
﴾৬﴿ শরীরে ও ইহরামের কাপড়ে সুগন্ধি লাগাবেন, আর ইহা সুন্নাত। হ্যাঁ; এমন খুশবু (যেমন শুকনা আতর) লাগাবেন না যার চিহ্ন কাপড়ে লেগে যায়। 
হজ্ব ও ওমরা পদ্ধতি, দোআ ও মাসআলা
﴾৭﴿ ইসলামী ভাইয়েরা সেলাই যুক্ত কাপড় খুলে একটি নতুন কিংবা ধোলাই করা সাদা চাদর উপরে (গায়ে) পরিধান করবেন, আর হুবহু এক রঙ্গের কাপড় দিয়ে তাহবন্দ (লুঙ্গি) পড়বেন। (লুঙ্গির জন্য মোটা সুতির কাপড়, আর (উপরের) উড়নার জন্য (বড়) তোয়ালে জাতীয় কাপড় হলে সুবিধা হয়। তাহবন্দের কাপড় মোটা হতে হবে যেন শরীরের অবয়ব রং ইত্যাদি দেখা না যায়, আর তোয়ালেও বড় সাইজের হলে ভাল হয়।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ৭- জেনে নিন দোআ কবুলের স্থান ও হজ্বের প্রকার

দোআ কবুল হওয়ার ২৯টি স্থান

সম্মানিত হাজীরা! এমনিতো হারামাঈন শরীফাঈনের প্রত্যেক স্থানে নূর সমুহ ও তাজল্লিয়াতের (কুদরতি ঝলক) বৃষ্টিপাত সর্বদা বর্ষণ হচ্ছে। তারপরও “আহছানুল বিয়া লি আদাবিদ দোআ” নামক কিতাব থেকে কিছু দোআ কবুল হওয়ার বিশেষ স্থান সমূহের উল্লেখ করা হচ্ছে। যেন আপনারা সেসব স্থানে খুব আন্তরিকতা ও আগ্রহের সাথে দোআ করতে পারেন।

মক্কা শরীফের স্থান সমূহ এই, 

﴾১﴿ মাতাফ 
﴾২﴿ মুলতাজম 
﴾৩ ﴿ মুসতাজার 
﴾৪ ﴿ বাইতুল্লাহর ভিতরে 
﴾৫﴿ মিজাবে রহমতের নিচে 
﴾৬﴿ হাতীম 
﴾৭ ﴿ হাজরে আসওয়াদ 
﴾৮﴿ রুকনে ইয়ামানী, বিশেষত যখন তাওয়াফ কালীন সেদিক দিয়ে গমন করবে 
﴾৯﴿ মকামে ইবরাহীমের পিছনে 
﴾১০﴿ যমযম কুপের নিকটে 
﴾১১﴿ সাফা

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ৬- জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ কিছু আরবী পরিভাষা

স্মরণ রাখা জরুরী এমন ৫৫ টি পরিভাষা

হাজী সাহেবগণ নিম্নের পরিভাষাগুলো এবং স্থানের নাম সমূহ ইত্যাদি স্মৃতি পটে মুখস্থ করে নিন। এভাবে পরবর্তীতে সামনে পড়ার সময় اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ আপনার খুব সহজে বুঝে আসবে।

﴾১﴿ আশহুরে হজ্ব:- হজ্বের মাস সমূহ অর্থাৎ শাওয়ালুল মুকাররম ও যুলকা’দাহ (উভয়টি পূর্ণ মাস) এবং জুলহিজ্জার প্রথম দশদিন।
﴾২﴿ ইহরাম:- যখন হজ্ব কিংবা ওমরাহ অথবা একসঙ্গে উভয়ের নিয়্যত করে ‘তালবিয়াহ’ পাঠ করা হয়, তখন কিছু হালাল বস্তুও হারাম হয়ে যায়, ইহাকে ইহরাম বলা হয়। আর রূপকভাবে ঐ সেলাইবিহীন চাদর সমূহকেও ইহরাম বলা হয়, যেগুলো ইহরামকারী ব্যবহার করে থাকে।

﴾৩﴿ তালবিয়াহ:- অর্থাৎ لَبَّیْکَ اللّٰھُمَّ لَبَّیْک ....... শেষ পর্যন্ত পড়া। 

﴾৪﴿ ইজতিবা:- ইহরামের উপরের চাদরকে ডান বগলের নিচ দিয়ে এমন ভাবে বের করে বাম কাঁধের উপর রাখবেন, যেন ডান কাঁধ খোলা (উন্মুক্ত) থাকে। 
﴾৫﴿ রমল:- বুক ফুলিয়ে সদর্পে কাঁধদ্বয়কে হেলিয়ে দুলিয়ে ছোট্ট ছোট্ট করে পা ফেলে কিছুটা দ্রুতগতিতে চলা।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ৫- জেনে নিন কিছু জরুরী বিষয়

নবী করীম ﷺ এর ৩টি বাণী

﴾১﴿ “(একজন) হাজী সাহেব নিজ পরিবারের মধ্য হতে চারশত ব্যক্তিকে সুপারিশ করবে এবং গুনাহ থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে, যেন সে ঐ দিনই আপন মায়ের পেট থেকে জন্ম নিয়েছে।”(মুসনাদে বাজ্জার, ৮ম খন্ড, ১৬৯ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৩১৯৬)
﴾২﴿ “হাজীর ক্ষমা হয়ে যায়, আর হাজী যার জন্য মাগফিরাতের দোআ করে তার জন্যও ক্ষমা রয়েছে।”(মাজমাউয যাওয়ায়েদ, ৩য় খন্ড, ৪৮৩ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৫২৮৭)
﴾৩﴿ “যে ব্যক্তি হজ্ব অথবা ওমরার উদ্দেশ্যে বের হয় এবং পথিমধ্যে (রাস্তায়) মৃত্যুবরণ করল, তার হিসাব নিকাশ হবে না আর তাকে বলা হবে; اُدۡخُلِ الۡجَنَّةَ অর্থাৎ তুমি জান্নাতে প্রবেশ করো।” (আল মু’জামুল আওসাত, ৪র্থ খন্ড, ১১১ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৮৮৩৫)


প্রত্যেক কদমে সাত কোটি নেকী

আ’লা হযরত মাওলানা শাহ আহমদ রযা খান رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ “আনোয়ারুল বিশারত”গ্রন্থে পায়ে হেঁটে হজ্ব করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করতে গিয়ে বলেছেন যে, সম্ভব হলে আপনি পায়ে হেঁটে (মক্কা শরীফ থেকে মীনা, আরাফাত ইত্যাদিতে) যান, আর যখন আপনি মক্কা শরীফে ফিরে আসবেন, তখন আপনার প্রত্যেক কদমের বিনিময়ে সাত কোটি নেকী লিখা হবে, আর এই নেকী সমূহ আনুমানিক হিসাবে সাত লক্ষ চুরাশি হাজার কোটি হয় এবং আল্লাহ তাআলা এর অনুগ্রহ তাঁরই প্রিয় নবী, হুযুর صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সদকায় এই উম্মতের উপর অগণিত রয়েছে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ১০ম খন্ড, ৭৪৬ পৃষ্ঠা) (লিখক) সগে মদীনা عُفِیَ عَنہُ আরজ করেন যে, আ’লা হযরত رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ পুরাতন দীর্ঘ সড়কের অনুপাতে এই হিসাব করেছেন। এখন যেহেতু মক্কা শরীফ থেকে মীনায় যাওয়ার জন্য পাহাড় সমুহের মধ্যে সুড়ঙ্গ বের করা হয়েছে, আর পায়ে হেঁটে যাওয়া যাত্রীদের জন্য সড়ক খুবই সংক্ষিপ্ত ও সহজ হয়ে গেছে। সে হিসেবে নেকী সমুহের সংখ্যা ও কমে আসবে।
وَاللہ وَرَسُوۡلُہٗ اَعۡلَم عَزَّوَجَلَّ وَ صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم 

মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৭

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ৪- জেনে নিন কিছু জরুরী বিষয়

জিদ্দা শরীফ থেকে মক্কায়ে মুয়ায্‌যমা زَادَہَا للہُ شَرَفًا وَّ تَعۡظِیۡمًا

জিদ্দা শরীফের বিমান বন্দরে পৌঁছে আপনার হাতে থাকা জিনিস পত্র সঙ্গে নিয়ে “লাব্বায়িক”পড়তে পড়তে খুবই নম্র অন্তরে বিমান থেকে নেমে আসবেন। কাষ্টমস অফিসের কাউন্টারে নিজের পাসপোর্ট ও হেল্‌থ সার্টিফিকেট চেক করাবেন। অতঃপর জিনিস পত্রের ষ্টক থেকে নিজের জিনিসপত্র চিহ্নিত করে পৃথক করে নিবেন। কাস্টমস ইত্যাদি থেকে অব্যহতি পেতে এবং বাসের যাত্রার ব্যবস্থা করতে প্রায় ৬/৮ ঘন্টা সময় লাগতে পারে। খুব ধৈর্য্য ও সাহসিকতার সাথে কাজ করে যাবেন। জেদ্দা শরীফের হজ্ব টারমীনাল থেকে মক্কায়ে মুকাররমার زَادَ ہَا للہُ شَرَفًا وَّ تَعۡظِیۡمًا দূরত্ব প্রায় ১/১.৫ ঘন্টায় শেষ হতে পারে। কিন্তু গাড়ির ভিড় এবং সরকারী নিয়ম কানুনের কঠোরতার কারণে অনেক ধরণের পেরেশানী সামনে আসতে পারে। বাস ইত্যাদিরও অপেক্ষা করতে হয়। প্রত্যেক অবস্থায় ধৈর্য্য ও সন্তুষ্টির প্রতীক হয়ে لَبَّیۡکَ (তলবিয়া) পড়তে থাকবেন। রাগের বশবর্তী হয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যাপারে এবং শোরগোল করার দ্বারা সমস্যার সমাধান হওয়ার পরিবর্তে উল্টো আরো বেশী সমস্যায় পড়া, ধৈর্য্যের সাওয়াব নষ্ট হওয়া এবং আল্লাহর পানাহ! মুসলমানকে কষ্ট দেয়া, গীবত, অপবাদ দেয়া, দোষ অন্বেষণ করা ও কুধারণা ইত্যাদি ইত্যাদি গুনাহের আপদে ফেঁসে যাওয়ার মত অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এক চুপ, শত সুখ। রওয়ানার তরকীব (ব্যবস্থা) হওয়ার পর জিনিস পত্র সহ নিজের মুয়াল্লিমের বাসের মধ্যে বসে লাব্বায়িকা পড়তে পড়তে মক্কা মুয়ায্‌যমা زَادَ ہَا للہُ شَرَفًا وَّ تَعۡظِیۡمًا দিকে রওয়ানা হয়ে যান।

হজ্বের মাসাইল: পর্ব ৩ মদীনার মুসাফিরকে নবী করীম ﷺ এর সাহায্য

اَلۡحَمۡدُ لِلہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ وَالصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلٰی سَیِّدِ الۡمُرۡسَلِیۡنَ - اَمَّا بَعۡدُ فَاَعُوۡذُ بِا للہِ مِنَ الشَّیۡطٰنِ الرَّجِیۡمِ ط بِسۡمِ اللہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ ط


এক যুবক কাবা শরীফ তাওয়াফ করার সময় শুধু দরূদ শরীফই পড়ছিল। কেউ তাকে বলল: তোমার কি তাওয়াফের আর কোন দোআ জানা নেই নাকি এর ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য রয়েছে? সে বলল: দোআ তো আমার জানা আছে কিন্তু আসল ব্যাপার হচ্ছে যে, আমি আর আমার পিতা উভয়ে হজ্বের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম। পিতা মহোদয় পথিমধ্যে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। তাঁর চেহারা একেবারে কালো হয়ে গেল। চোখ উল্টে গেল এবং পেট ফুলে যায়! আমি খুবই কান্নাকাটি করলাম এবং বললাম: اِنَّا لِلّٰہِ وَاِنَّآ اِلَیْہِ رٰجِعُوْن যখন গভীর রাত হল তখন আমার চোখে ঘুম এসে গেল। আমি শুয়ে গেলাম তখন আমি স্বপ্নে সাদা পোষাক পরিহিত সুগন্ধিময় ও হাসোজ্জ্বল এক অসাধারণ ব্যক্তিত্বের জিয়ারত লাভ করলাম। তিনি আমার মরহুম পিতার লাশের পাশে তাশরীফ নিয়ে গেলেন, আর আপন নূরানী হাত আমার পিতার চেহারা ও পেটের উপর বুলিয়ে দিলেন। দেখতে দেখতেই আমার মরহুম পিতার চেহারা দুধের চেয়েও বেশী সাদা এবং উজ্জ্বল হয়ে যায়, আর পেটও পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। যখন ঐ বুজুর্গ ব্যক্তিটি ফিরে যাচ্ছিলেন তখন আমি তাঁর পবিত্র দামান আকঁড়ে ধরি আর আরজ করি: ইয়া সায়্যিদি! (অর্থাৎ হে আমার সরদার) আপনাকে ঐ স্বত্তার কসম, যিনি আপনাকে এই জঙ্গলে আমার মরহুম পিতার জন্য রহমত হিসাবে পাঠিয়েছেন। আপনি কে? ইরশাদ করলেন: “তুমি আমাকে চিন না? আমি তো মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم! তোমার পিতা খুবই গুনাহগার ছিল কিন্তু আমার প্রতি খুব বেশী দরূদ শরীফ পাঠ করত। যখন তার উপর এই মুসিবত অবতীর্ণ হল, তখন সে আমার নিকট সাহায্য চাইল। সুতরাং আমি তার ফরিয়াদ কবুল করলাম, আর আমি প্রত্যেক ঐ সকল ব্যক্তির ফরিয়াদে সাড়া দিয়ে থাকি, যে দুনিয়াতে আমার উপর বেশী পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করে।” (রওযুর রায়াহীন, ১২৫ পৃষ্ঠা)

শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭

কুরবানীর চামড়া সংগ্রহকারীর জন্য ২২ টি নিয়্যত এবং সতর্কতা

নবী করীম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দু’টি বাণী:

(১) “মুসলমানের নিয়্যত তার আমল থেকে উত্তম।”(মুজাম কবীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৮৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৫৯৪২)

(২) “ভাল নিয়্যত বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেয়।”(আল ফিরদাউছ বিমাছুরিল খাত্তাব, ৪র্থ খন্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৬৮৯৫)
কুরবানীর চামড়া সংগ্রহ
দু’টি মাদানী ফুল: 
 ভাল নিয়্যত ছাড়া কোন ভাল কাজের সাওয়াব অর্জিত হয়না।
 ভাল নিয়্যত যত বেশি, সাওয়াবও তত বেশি।

পশুর এমন ২২টি অংশ, যা খাওয়া যায়না

“ফয়যানে সুন্নাত” ১ম খন্ডের ৪০৫-৪০৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে: আমার আক্বা আ‘লা হযরত, ইমামে আহমদ রযা খাঁন رحمة الله عليه বলেন: হালাল পশুর সব অংশই হালাল কিন্তু কিছু অংশ আছে যা খাওয়া হারাম, নিষিদ্ধ অথবা মাকরূহ। যেমন: (১) রগের রক্ত (২) পিত্ত (৩) মূত্রথলি (৪, ৫) পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গ (৬) অন্ডকোষ (৭) জোড়া, শরীরের গাঁট (৮) হারাম মজ্জা (৯) ঘাড়ের দো পাট্টা, যা কাঁধ পর্যন্ত টানা থাকে (১০) কলিজার রক্ত (১১) তিলির রক্ত (১২) মাংসের রক্ত, যা যবেহ করার পর মাংস থেকে বের হয় (১৩) হৃদপিন্ডের রক্ত (১৪) পিত্ত অর্থাৎ ঐ হলদে পানি যা পিত্তের মধ্যে থাকে (১৫) নাকের আর্দ্রতা (ভেড়া-ভেড়ীর মধ্যে অধিক হারে থাকে) (১৬) পায়খানার রাস্তা (১৭) পাকস্থলি (১৮) নাড়িভূড়ি (১৯) বীর্য (২০) ঐ বীর্য, যা রক্ত হয়ে গেছে (২১) ঐ বীর্য, যা মাংসের টুকরো হয়ে গেছে (২২) ঐ বীর্য, যা পূর্ণ জানোয়ার হয়ে গেছে এবং মৃত অবস্থায় বের হয়েছে অথবা জবেহ করা ছাড়া মারা গেছে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২০তম খন্ড, ২৪০-২৪১ পৃষ্ঠা)

>>Donate Us<< ⬅ Click For More...



বিবেকবান কসাইরা এসব হারাম বস্তু বের করে ফেলে দিয়ে থাকে কিন্তু অনেকের তা জানা থাকে না কিংবা অসাবধানতাবশতঃ এরকম করে থাকে। তাই আজকাল প্রায় অজ্ঞাতবশতঃ যেসব জিনিস তরকারীর সাথে রান্না করা হয়, সেগুলোর পরিচয় প্রদানের চেষ্টা করছি।

রক্ত

জবাই করার সময় যে রক্ত বের হয় সেটাকে “দমে মাসফূহ” (প্রবাহিত রক্ত) বলা হয়। তা অপবিত্র, খাওয়া হারাম, জবাই করার পর যে রক্ত মাংসের মধ্যে থেকে যায়, যেমন- ঘাড়ের কাটা অংশে, হৃদপিন্ডের ভিতর, কলিজা, প্লীহা ও মাংসের আভ্যন্তরিণ ছোট ছোট রগের মধ্যে, এসব যদিও নাপাক নয় তবুও এসব রক্ত খাওয়া নিষিদ্ধ। তাই রান্না করার পূর্বে এগুলো পরিস্কার করে নিন। মাংসের মধ্যে কিছু জায়গায় ছোট ছোট রগে রক্ত থাকে তা চোখে পড়া খুবই কঠিন। রান্নার পর ঐ রগগুলো কালো রেখার ন্যায় হয়ে যায়। বিশেষতঃ মগজ, মাথা, পা ও মুরগীর রান ও ডানার মাংস ইত্যাদির মধ্যে হালকা কালো রেখা দেখা যায়, খাওয়ার সময় তা বের করে ফেলে দিন। মুরগীর হৃদপিন্ডও সরাসরি রান্না করবেন না, লম্বাতে চার ভাগ করে কেটে ফাঁক করে প্রথমে সেটার রক্ত ভালভাবে পরিস্কার করে নিন।

কসাইদের জন্য ২০টি মাদানী ফুল (করণীয়)

(১) প্রথমে কোন অভিজ্ঞ মাংস বিক্রেতার তত্ত্বাবধানে জবেহ ইত্যাদির কাজ শিখে নিবে, কেননা অনভিজ্ঞের জন্য এ কাজ জায়েয নেই। এ কারণে কারো পশুর মাংস এবং চামড়া ইত্যাদিকে প্রচলিত নিয়ম থেকে সরে গিয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(২) অভিজ্ঞ কসাইরও উচিত, তাড়াহুড়া করতে গিয়ে অসাবধানতাবশতঃ চামড়ার সাথে প্রচলিত নিয়মের চেয়ে বেশি মাংস লেগে থাকতে না দেয়া। এভাবে নাড়িভূড়ি বের করার সময়েও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী, যেন অযথা মাংস ও চর্বি এর সাথে চলে না যায়। এমনকি খাওয়ার উপযুক্ত হাঁড়গুলোও ফেলে না দিয়ে টুকরো টুকরো করে মাংসের সাথে ঢেলে দিন এবং অভিজ্ঞ মাংস বিক্রেতারও নিয়ম বহির্ভূত মাংস ও চামড়ার ক্ষতি করা জায়েয নেই।

কুরবানীর মাংস বন্টন করার বিস্তারিত জেনে নিন

কুরবানীতে আকীকার অংশ

কুরবানীর গরু বা উটে আকীকার অংশ হতে পারে। (রদ্দুল মুহতার, ৯ম খন্ড, ৫৪০ পৃষ্ঠা)


সম্মিলিত কুরবানীর মাংস ওজন করে বন্টন করতে হবে

একাধিক ব্যক্তি মিলে গরু দিয়ে কুরবানী করলে মাংস ওজন দিয়ে বন্টন করা আবশ্যক। অনুমান করে মাংস বন্টন করা জায়েয নেই, এরকম করলে গুনাহগার হবে। বেশি বা কম হলে সন্তুষ্টচিত্তে একে অপরকে ক্ষমা করে দেওয়াও যথেষ্ট নয়। (বাহারে শরীয়াত থেকে সংক্ষেপিত, ৩য় খন্ড, ৩৩৫ পৃষ্ঠা) তবে যদি অংশীদার সকলেই একই ঘরে বসবাস করে, মিলে-মিশে বন্টন করে এবং এক সাথে খায় অথবা অংশীদাররা নিজেদের অংশের মাংস নিতে না চায়, এমতাবস্থায় ওজন করে ভাগ করার প্রয়োজন নেই।

অনুমানের ভিত্তিতে মাংস বন্টনের দু’টি কৌশল

যদি অংশীদাররা নিজেদের অংশের মাংস নিয়ে যেতে চায়, তাহলে ওজন করার ঝামেলা ও পরিশ্রম থেকে বাঁচতে চাইলে নিম্নলিখিত দুটি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন।
১) জবেহ করার পর ঐ গরুর সম্পূর্ণ মাংস এমন একজন বালেগ মুসলমানকে দান করে মালিক বানিয়ে দিবে, যে তাদের সাথে কুরবানীতে অংশীদার নয়। এখন সে অনুমান করে সবাইকে মাংস বন্টন করে দিতে পারবে।

বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭

কুরবানীর পদ্ধতি

(কুরবানী হোক কিংবা এমনি অন্য কোন জবেহ হোক)
আমাদের দেশে এই নিয়মটা চলে আসছে যে, জবেহকারী কিবলামূখী হয় এবং পশুকেও কিবলামূখী করা হয়। কিবলা যেহেতু আমাদের পাক ভারত উপমহাদেশের (WEST) পশ্চিম দিকে, সেহেতু পশুর মাথা (SOUTH) দক্ষিণমুখী করতে হবে। যাতে পশুকে বাম পাজরে শোয়ালে এটির পিঠ (EAST) পূর্ব দিকে হয় এবং তার মুখমন্ডল কিবলামুখী হয়ে যায়। আর জবেহকারী নিজের ডান পা পশুর গর্দানের ডান অংশের (গর্দানের নিকটবর্তী অংশের) উপর রাখবে এবং জবেহ করবে। জবেহকারী নিজের কিংবা পশুর মুখমন্ডল কিবলামূখী না করলে মাকরূহ হবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২০তম খন্ড, ২১৬ ও ২১৭ পৃষ্ঠা)
কুরবানীর পদ্ধতি ও দোআ

কুরবানীর পশু জবেহ করার পূর্বে নিম্নলিখিত দোয়া পাঠ করবেন

إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيفًا ۖ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ
{কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: আমি আমার মুখমন্ডল তাঁর দিকে ফিরালাম একমাত্র তাঁরই জন্যে, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। একমাত্র তাঁরই হয়ে এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভূক্ত নই। (পারা-৮, সূরা- আনআম, আয়াত- ৭৯)}

ঘোড়ার আরোহী (কুরবানীর পূর্ণাঙ্গ মাসআলা মাসাইল)

হযরত সায়্যিদুনা আহমদ বিন ইছহাক رحمة الله عليه বলেন : আমার ভাই দরিদ্র হওয়া সত্বেও আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যতে প্রতি বছর কুরবানীর ঈদে কুরবানী করতেন। তাঁর ইন্তিকালের পর আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, কিয়ামত সংগঠিত হয়ে গেছে আর মানুষ তাদের নিজ নিজ কবর থেকে বের হয়েছে হঠাৎ আমার মরহুম ভাইকে একটি সুন্দর বিচিত্র বর্ণের ঘোড়ায় আরোহী অবস্থায় দেখলাম। তাঁর সাথে আরো অনেক ঘোড়া ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম : ‘হে আমার ভাই আল্লাহ্ তাআলা আপনার সাথে কি ধরনের আচরণ করেছেন? তিনি বললেন : ‘আল্লাহ্ তাআলা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’ (জিজ্ঞাসা করলাম) “কোন আমলের কারণে?” উত্তরে বললেন: “একদিন কোন এক গরীব বৃদ্ধা মহিলাকে সাওয়াবের নিয়্যতে আমি একটি দিরহাম দান করেছিলাম, ঐ দানই কাজে এসেছে।” আমি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম: “এগুলো কিভাবে পেলেন?” উত্তরে বললেন: “এই সব ঘোড়া আমার কুরবানীর ঈদের (আমার দেওয়া) কুরবানীর পশু এবং যেই ঘোড়ায় আমি আরোহণ করেছি তা আমার জীবনের প্রথম কুরবানী।” আমি জিজ্ঞাসা করলাম: “এখন কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন?” তিনি উত্তরে বললেন: “জান্নাতের উদ্দেশ্যে”। এই কথা বলে তিনি আমার দৃষ্টি থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। (দুররাতুন নাছেহীন, ২৯০ পৃষ্ঠা) 
আল্লাহ্ তাআলার রহমত তারঁ উপর বর্ষিত হোক এবং তাঁর সদকায় আমাদের বিনা হিসাবে ক্ষমা হোক। 

صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد

প্রিয় নবীর ﷺ চারটি বাণী

(১) “কুরবানী দাতার কুরবানীর পশুর প্রত্যেকটি লোমের পরিবর্তে একটি করে নেকী অর্জিত হয়।” (তিরমিযি, ৩য় খন্ড, ১৬২ পৃষ্ঠা, হাদীস- ১৪৯৮)

পোস্ট শ্রেণি

অযু-গোসল-পবিত্রতা (12) আপডেট চলমান (25) আমাদের কথা ও অন্যান্য বিষয়াবলী (6) আমাদের প্রিয় নবী ﷺ (5) আরবি মাস ও ফযীলত (11) ইসলামী ইতিহাস ও শিক্ষনীয় ঘটনা (6) ইসলামী জীবন ও সুন্দর চরিত্র (4) ঈদ-কাযা-জানাযা-তারাবী-নফল ও অন্যান্য নামায (5) উত্তম আমল ও সাওয়াবের কাজ (4) কুরআন-তাফসীর ও হাদিস (16) কুরবানী (6) চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কথন (14) জিকির-দোআ-দুরূদ ও ফযীলত (8) নবী-সাহাবী ও আওলিয়াদের জীবনী (8) নামায (17) পর্দা ও লজ্জাশীলতা (16) ফয়যানে জুমা (3) বদ আমল ও গুনাহের কাজ (3) মওত-কবর-হাশর ও আযাব (12) মাসআলা-মাসাইল ও প্রশ্নোত্তর (15) মাসাইল (21) যাকাত-ফিতরা ও সদক্বাহ'র বিধান (1) রোযা/রমযানের বিধান ও ফযীলত (9) সুন্নাত ও আদব/ মাদানী ফুল (41) হজ্ব-ওমরাহ ও যিয়ারতে মদিনা (27)

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন